গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতে নৈরাজ্য ও বৈষম্য-শিল্প-কারখানা রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে
যখন যে সরকার থাকে, সে সরকারই বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার কথা বলে। কল-কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থানের কথা বলে। কিন্তু বাস্তব অবস্থাটা কী? গ্যাস-বিদ্যুতের অভাবে বিদ্যমান বহু কল-কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে অথবা যাচ্ছে। নতুন উদ্যোক্তারা কল-কারখানা চালু করতে পারছেন না।
শুধু কল-কারখানাই নয়, জনজীবনেও দুর্ভোগের অন্ত নেই। ঠিকমতো গ্যাস পাওয়া যায় না। কোনো কোনো এলাকায় গ্যাসের চুলা জ্বলে টিম টিম করে, গ্যাস থাকে না দিনের বেশির ভাগ সময়। ফলে গৃহস্থের দুর্ভোগ অবর্ণনীয়। এদিকে দফায় দফায় বাড়ছে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম। তার ওপর শুরু হয়েছে এসব সেবা সংস্থার কিছু অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি। অত্যাচারও বলা যেতে পারে। পদে পদে গ্রাহকদের বাধ্য করা হয় অনৈতিক সুবিধা দিতে। এর পরও রয়েছে অঞ্চলভিত্তিক বৈষম্য। শিল্প মালিকরা বলছেন, বৈষম্যের অবসান না হলে তাঁরা কল-কারখানা বন্ধ রেখে রাস্তায় নেমে আসবেন। তাঁদের অভিযোগ, গ্যাস-বিদ্যুৎ বিতরণে তাঁরা চরম বৈষম্যের শিকার। চট্টগ্রাম চেম্বার ভবনে শুক্রবার শিল্প মালিকরা মতবিনিময় করতে গিয়ে এ বৈষম্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, ঢাকাসহ অন্য কিছু অঞ্চলের শিল্প মালিকদের সঙ্গে তাঁরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না। তাঁরা এমনও অভিযোগ করেছেন যে বিদ্যুতের লাইনম্যানদের প্রতিদিন ঘুষ দিতে হয়, তা না হলে বিদ্যুৎ পেতে নানা ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।
সরকার বলছে, তিন হাজার মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। জানা যায়, একই সঙ্গে বেড়েছে 'সিস্টেম লস', যা মূলত বিদ্যুৎ চুরিরই নামান্তর। এখন এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৮ শতাংশের মতো। বলা হয়, কেবল পুরনো যন্ত্রপাতি ও সঞ্চালন লাইনের কারণেই প্রায় ১৮ শতাংশ বিদ্যুতের অপচয় হয়। এটা কারিগরি সিস্টেম লস। অথচ উন্নত দেশগুলোতে এই পর্যায়ের সিস্টেম লস সাধারণত ৪ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে থাকে। বাকি সিস্টেম লসের বেশির ভাগই হয় সরাসরি চুরির কারণে। অবৈধ সংযোগ দিয়ে এক শ্রেণীর দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা-কর্মচারী চুরি করে বিদ্যুৎ বিক্রি করছে। এই চুরির সঙ্গে রাজনৈতিক মদদপুষ্ট ইউনিয়নগুলোরও বড় ভূমিকা রয়েছে। অথচ এর দায়ও বহন করতে হচ্ছে দেশের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের। বিদ্যুৎ সংকটের আরেকটি অনুষঙ্গ হচ্ছে পানি সংকট। এই দুই সংকটে জনজীবন রীতিমতো দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
২০০৯ সালের জুলাই থেকে নতুন কারখানায় গ্যাস সংযোগ প্রদান বন্ধ রাখায় বহু কারখানা চালু করা যাচ্ছে না। আর দেশীয় উদ্যোক্তারাই যদি গ্যাসের অভাবে কারখানা চালু করতে না পারেন, তাহলে বিদেশি বিনিয়োগ এখানে আসবে কী করে? ফলে কর্মসংস্থান পরিস্থিতির উন্নতি না হয়ে বরং দিন দিন অবনতিই হচ্ছে। জানা যায়, গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখা সত্ত্বেও এই সময়ের মধ্যে প্রায় পাঁচ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ব্যবহার বেড়েছে। তা কী করে সম্ভব হলো? সম্ভব হয়েছে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে। ফলে বৈধ গ্রাহকরা গ্যাস না পেলেও অবৈধ গ্রাহকরা বিশেষ যোগসাজশে ঠিকই গ্যাস পেয়ে যাচ্ছে। এমনো অভিযোগ রয়েছে, দৈনিক ছয় ঘণ্টা বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও কিছু সিএনজি স্টেশনে বিশেষ যোগসাজশে ২৪ ঘণ্টাই গ্যাস বিক্রি করা হয়। তাহলে ছয় ঘণ্টা বন্ধ রেখে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সরকারি সিদ্ধান্ত মানাটাই কি তাদের জন্য অপরাধ হয়ে দাঁড়াচ্ছে? অন্যদিকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে দুই ঘণ্টা অতিরিক্ত গ্যাস বন্ধ রাখা কতটুকু নৈতিক বা যৌক্তিক! একই অবস্থা বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও। এখানেও প্রায় তিন বছর আগে থেকে শিল্প-কারখানায় বিদ্যুতের নতুন সংযোগ প্রদান বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু এ সময়ে অবৈধভাবে সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকেনি। অবৈধ সংযোগ প্রদানের মাধ্যমে কিছু লোক লাভবান হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার। আর দুর্ভোগে হাবুডুবু খাচ্ছে সাধারণ মানুষ ও কল-কারখানার মালিকরা। এই অবস্থা চলতে পারে না। চলা উচিত নয়। আর এ বিষয়গুলো দেখার জন্যই দেশে সরকার থাকে। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার তাদের সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করবে।
সরকার বলছে, তিন হাজার মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। জানা যায়, একই সঙ্গে বেড়েছে 'সিস্টেম লস', যা মূলত বিদ্যুৎ চুরিরই নামান্তর। এখন এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৮ শতাংশের মতো। বলা হয়, কেবল পুরনো যন্ত্রপাতি ও সঞ্চালন লাইনের কারণেই প্রায় ১৮ শতাংশ বিদ্যুতের অপচয় হয়। এটা কারিগরি সিস্টেম লস। অথচ উন্নত দেশগুলোতে এই পর্যায়ের সিস্টেম লস সাধারণত ৪ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে থাকে। বাকি সিস্টেম লসের বেশির ভাগই হয় সরাসরি চুরির কারণে। অবৈধ সংযোগ দিয়ে এক শ্রেণীর দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা-কর্মচারী চুরি করে বিদ্যুৎ বিক্রি করছে। এই চুরির সঙ্গে রাজনৈতিক মদদপুষ্ট ইউনিয়নগুলোরও বড় ভূমিকা রয়েছে। অথচ এর দায়ও বহন করতে হচ্ছে দেশের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের। বিদ্যুৎ সংকটের আরেকটি অনুষঙ্গ হচ্ছে পানি সংকট। এই দুই সংকটে জনজীবন রীতিমতো দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
২০০৯ সালের জুলাই থেকে নতুন কারখানায় গ্যাস সংযোগ প্রদান বন্ধ রাখায় বহু কারখানা চালু করা যাচ্ছে না। আর দেশীয় উদ্যোক্তারাই যদি গ্যাসের অভাবে কারখানা চালু করতে না পারেন, তাহলে বিদেশি বিনিয়োগ এখানে আসবে কী করে? ফলে কর্মসংস্থান পরিস্থিতির উন্নতি না হয়ে বরং দিন দিন অবনতিই হচ্ছে। জানা যায়, গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখা সত্ত্বেও এই সময়ের মধ্যে প্রায় পাঁচ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ব্যবহার বেড়েছে। তা কী করে সম্ভব হলো? সম্ভব হয়েছে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে। ফলে বৈধ গ্রাহকরা গ্যাস না পেলেও অবৈধ গ্রাহকরা বিশেষ যোগসাজশে ঠিকই গ্যাস পেয়ে যাচ্ছে। এমনো অভিযোগ রয়েছে, দৈনিক ছয় ঘণ্টা বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও কিছু সিএনজি স্টেশনে বিশেষ যোগসাজশে ২৪ ঘণ্টাই গ্যাস বিক্রি করা হয়। তাহলে ছয় ঘণ্টা বন্ধ রেখে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সরকারি সিদ্ধান্ত মানাটাই কি তাদের জন্য অপরাধ হয়ে দাঁড়াচ্ছে? অন্যদিকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে দুই ঘণ্টা অতিরিক্ত গ্যাস বন্ধ রাখা কতটুকু নৈতিক বা যৌক্তিক! একই অবস্থা বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও। এখানেও প্রায় তিন বছর আগে থেকে শিল্প-কারখানায় বিদ্যুতের নতুন সংযোগ প্রদান বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু এ সময়ে অবৈধভাবে সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকেনি। অবৈধ সংযোগ প্রদানের মাধ্যমে কিছু লোক লাভবান হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার। আর দুর্ভোগে হাবুডুবু খাচ্ছে সাধারণ মানুষ ও কল-কারখানার মালিকরা। এই অবস্থা চলতে পারে না। চলা উচিত নয়। আর এ বিষয়গুলো দেখার জন্যই দেশে সরকার থাকে। আমরা আশা করি, বর্তমান সরকার তাদের সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করবে।
No comments