লিবিয়ায় যাচ্ছে মার্কিন মেরিন সেনা

লিবিয়ায় উদ্দেশে ডেস্ট্রয়ার (ছোট ও দ্রুতগামী রণতরী) ও মেরিন সেনাদল পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। বেনগাজি শহরে মার্কিন কনস্যুলেটে রকেটচালিত গ্রেনেড হামলার ঘটনায় রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফার স্টিভেন্সসহ চারজন নিহত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


ওই হামলায় আল-কায়েদা সম্পৃক্ত ছিল বলে তাঁরা ধারণা করছেন।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল, যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ নামের একটি চলচ্চিত্রে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)কে বিদ্রূপ করা হয়েছে—এমন অভিযোগ এনে ক্ষুব্ধ জনতা ওই হামলা চালায়। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখন বলছে, তারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদা বা তাদের সহযোগীরা হামলায় জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখছে। আল-কায়েদা যুক্তরাষ্ট্রে নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার ১১তম বর্ষপূর্তিতে একটি সমন্বিত হামলার উপলক্ষ হিসেবে বেছে নিতে পারে এই বিক্ষোভকে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করার জন্য লিবিয়া ও মিসরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। হোয়াইট হাউস জানায়, প্রেসিডেন্ট ওবামা লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মাগারিফের সঙ্গে বুধবার সন্ধ্যায় টেলিফোনে কথা বলেছেন। হামলাকারীদের শনাক্ত করতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। পৃথক টেলিফোন আলাপে মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি তাঁর দেশে মার্কিন কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ ছাড়া টেলিভিশনে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রচারিত এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট মুরসি বলেন, তিনি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে সমর্থন করেন। তবে জনসাধারণের ওপর বা কোনো দূতাবাসে হামলা করা ভুল।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান, বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাসগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মার্কিন নিরাপত্তাবিষয়ক কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানান, লিবিয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী মেরিন সেনাদের একটি দল মোতায়েন করা হচ্ছে। লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দূতাবাসকে সুরক্ষায় ৫০ মেরিন সেনার একটি দল অতিদ্রুততার সঙ্গে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া পূর্ব সতর্কতা হিসেবে লিবিয়ার উপকূলে দুটি ডেস্ট্রয়ার পাঠানো হচ্ছে বলেও জানানো হয়।
মার্কিন কর্মকর্তারা আরও জানান, ত্রিপোলি দূতাবাসে কর্মীর সংখ্যা কমিয়ে জরুরি পর্যায়ে যে রকম থাকে, সে রকম সংখ্যায় নামিয়ে আনা হয়েছে। এ ছাড়া বেনগাজিতে হামলার শিকার মার্কিন কনস্যুলেট থেকে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, বেনগাজি কনস্যুলেট থেকে একটি গাড়িতে করে বের হওয়ার সময় উত্তেজিত জনতার হামলায় নিহত হন রাষ্ট্রদূত স্টিভেন্স। এখন ধারণা করা হচ্ছে, সন্দেহভাজন জঙ্গিদের গুলিবর্ষণ ও রকেটচালিত গ্রেনেড হামলার সময় কনস্যুলেটে আটকা পড়ে বিষাক্ত ধোঁয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সবার বিবেককেই নাড়া দেয়। তবে ‘একটি বর্বর ও ছোট গোষ্ঠীর’ কাজের জের ধরে ওয়াশিংটন লিবিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে না। এএফপি ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.