ক্রমবর্ধমান ছিনতাই-সন্ত্রাসীদের তালিকা হালনাগাদ করুন
বিশ্বকাপের সময়কার ছিমছাম ঢাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নয়ন ঘটেছিল বলেই জনমনে ধারণা। কিন্তু প্রকৃত অবস্থা কতটা উন্নত হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কিছু এলাকায় পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেও পরিসংখ্যান বলছে, ছিনতাইয়ের হার আগের মতোই বা কিছুটা বেড়েছে।
সমকালসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ছিনতাই সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এসব প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, রাজধানীর কিছু স্থানে চিহ্নিত অপরাধীরাই ছিনতাইসহ নানা অপরাধে লিপ্ত। অপরাধের অতীত রেকর্ড থেকেও দেখা যায়, একটি নির্দিষ্ট স্থানে সাধারণত একটি বিশেষ অপরাধী গোষ্ঠীই ছিনতাইসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকে। তাই আন্তরিকতা থাকলে থানায় সংরক্ষিত রেকর্ড অনুসরণ করেই পুলিশ ও অন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর পক্ষে ছিনতাইকারীদের নিয়ন্ত্রণ ও দমন করা সম্ভব। এখন রাজধানীতে উদ্বেগজনকভাবে ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার পরও ছিনতাই হ্রাস করতে বা ছিনতাইকারীদের দমনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না কেন সে প্রশ্ন সহজেই উঠবে। সংবাদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, পুলিশের কাছে অপরাধীদের সর্বসাম্প্রতিক তালিকা নেই। তালিকা হালনাগাদ করার কোনো উদ্যোগও কার্যকর নয়। সাধারণ নিয়মে সার্বক্ষণিকভাবে সন্ত্রাসীদের তালিকা আপডেটেড রাখা উচিত। থানাগুলো নিয়মিত নতুন সন্ত্রাসীদের তালিকাভুক্ত করবে এবং সে অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সেটিই প্রত্যাশিত। কিন্তু তা না করে যখন সন্ত্রাসীদের পুরনো তালিকা অনুসারে অভিযান পরিচালিত হয়, তখন আসল সন্ত্রাসী ধরা পড়বে না সেটিই স্বাভাবিক। ফলে এ বিষয়ে একটি দ্রুততম ও কার্যকর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা দরকার। রাজধানীতে মানুষের চলাফেরার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে তৎপর হতে হবে। এ বিষয়ে তারা তৎপর না হলে মানুষের নিরাপদ চলাফেরা বিঘি্নত হবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর নাগরিকদের অনাস্থা তৈরি হবে। এটি কিছুতেই কাম্য নয়। তাই আমরা মনে করি, স্থানীয়ভাবে থানাগুলো ছিনতাইকারীদের ধরতে ছিনতাইপ্রবণ এলাকাগুলোতে তৎপর থাকবে। সন্ত্রাসীদের তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। কিন্তু হালনাগাদ তালিকার অভাবে যেন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সন্ত্রাস ঘটে রাস্তায়, সন্ত্রাসীদের ধরতে রাস্তাতেই নামতে হবে। রাস্তার সন্ত্রাসীদের নাম কেতাবে থাকতে পারে, না-ও পারে। কিন্তু তালিকা খুঁজে সন্ত্রাসী ধরার রেওয়াজ চালু হলে আখেরে সন্ত্রাসী দমনের কাজটিই বিলম্বিত হবে।
No comments