থান কাপড়, থ্রি-পিসের চাহিদা বেশি-বিপণিকেন্দ্রে ভিড় বাড়ছে by মেখ্যাইউ মারমা

রমজান শুরুর সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই নগরে ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামের বিপণিকেন্দ্রগুলোতে এখন তরুণী ও মহিলাদের ভিড়। ঈদ বাজারের বাড়তি দাম, ভিড় ও ভোগান্তি এড়াতে এই আগাম কেনাকাটা কিংবা আগাম একটা ধারণার জন্য তাঁরা বিপণিকেন্দ্রমুখী। বিকিকিনি শুরু হওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও।


গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার নগরের বিপণিকেন্দ্রগুলোতে ভিড় ছিল লক্ষণীয়। আসন্ন ঈদের জন্য পছন্দের পোশাক কিনতে এক বিপণিকেন্দ্র থেকে অন্য বিপণিকেন্দ্রে ছুটছেন তরুণীরা। দর যাচাইয়ের পাশাপাশি বিক্রিও জমে উঠেছে। কেউ কেউ থান কাপড় কিনে পছন্দসই ডিজাইনে পোশাক বানাতে ভিড় জমাচ্ছেন দর্জিপাড়ায়। দোকানিরাও ঈদকে সামনে রেখে এখনই নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাক তুলেছে।
শুক্রবার নগরের নাসিরাবাদ এলাকার সানমার ওশান সিটিতে ঈদের পোশাক কিনতে আসেন মোমিন রোডের বাসিন্দা গৃহিণী ফেরদৌস বেগম। আগাম কেনাকাটার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রোজা শুরু হলেই সব পোশাকের দাম বেড়ে যাবে। এ ছাড়া রাস্তায় যানজট আর দোকানে অতিরিক্ত ভিড় হবে। তাই গত সপ্তাহ থেকেই কেনাকাটা শুরু করেছি। কিন্তু দোকানিরা আগেই দাম বাড়িয়ে রেখেছেন।’
এ বছর পোশাকের দাম বাড়তি থাকার বিষয়টি স্বীকার করছেন বিক্রেতারাও। নগরের জিইসি মোড় এলাকার বিপণিকেন্দ্র সেন্ট্রাল প্লাজায় ‘অপসরীর’ ব্যবস্থাপক মো. শহীদুল আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘রমজান শনিবার থেকে শুরু হয়েছে। কিন্তু ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়েছে শবে বরাতের দিন থেকেই। ডলারের দাম বাড়ায় ভারত থেকে পোশাক আমদানিতে খরচ বেশি পড়ছে। তাই দাম কিছুটা বেশি।’
আগাম কেনাকাটার বিষয়ে শহীদুল আলম বলেন, ‘অনেকেই ঈদের কেনাকাটার সময় ভিড় এড়াতে আগেভাগেই কাপড়চোপড় কিনে নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ঈদের সময় নিজের পছন্দমতো ডিজাইনের পোশাক সেলাই করে পরতে চান। তাই আগেভাগেই বিভিন্ন ডিজাইন দিয়ে দর্জির দোকানে পোশাক তৈরি করান। মূলত তাঁরাই এখনকার ক্রেতা।’
বিপণিবিতান (নিউমার্কেট), টেরিবাজার, সেন্ট্রাল প্লাজা, লাকী প্লাজা, চিটাগং শপিং কমপ্লেক্সসহ নগরের বিভিন্ন বিপণিকেন্দ্রে গত দই ুদিন ঘুরে দেখা গেছে, থান কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় সবচেয়ে বেশি। পোশাক ও দর যাচাইয়ের পাশাপাশি বিকিকিনিও চলছে পুরোদমে। পছন্দের কাপড় কিনে ক্রেতারা ছুটছেন লেইস-ফিতা, জরি, চুমকির দোকানগুলোতে। তবে তৈরি পোশাক, অলংকার, ব্যাগ, জুতার দোকানে ক্রেতাদের আনাগোনা হলেও বেচাবিক্রি এখনো শুরু হয়নি।
বিক্রেতারা জানান, ভালো মানের সুতি, তসর এবং পিউর কাপড়ের ওপর জাঁকজমকপূর্ণ কারুকাজ করা থান কাপড় এবার বেশি চলছে। গজ প্রতি এসব কাপড়ের দাম মানভেদে সর্বনিম্ন ৯০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের কাপড় এবং ডিজাইনের সেলাইবিহীন থ্রি-পিস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত।
চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা শারমিন আক্তার মেয়ের জন্য কাপড় কিনতে শুক্রবার আসেন নগরের অন্যতম প্রধান পাইকারিকেন্দ্র টেরিবাজারে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতবারের তুলনায় এ বছর থান কাপড়ের দাম মানভেদে প্রতি গজে ১০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বেড়েছে তৈরি পোশাকের দামও।’
টেরিবাজারের নিউ আল ফালাহ স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. দিদার হোসেন বলেন, ‘আমাদের অধিকাংশ কাপড়ই ভারতীয়। ওই দেশের বাজারে কাপড়ের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি আনুষঙ্গিক সব খরচও বেড়েছে। তাই দাম বাড়তি। ঈদ উপলক্ষে দাম বাড়ানো হয়নি।’

No comments

Powered by Blogger.