কারখানা বন্ধ বেতনও বন্ধ by জাহাঙ্গীর শাহ
রাজধানীর অদূরে আশুলিয়া এলাকায় বন্ধ থাকা সব তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন দেবেন না মালিকেরা। শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করায় তাঁরা বেতন-ভাতা দিতে রাজি নন। ফলে যত দিন এসব শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে, তত দিন শ্রমিকেরা বেতন পাবেন না।
মালিকদের দাবি, বেআইনিভাবে ধর্মঘট করায় কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। এ জন্য বেতন দেওয়া হবে না। আর শ্রমিকেরা ১১ জুন থেকে বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন।
শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে গত রোববার থেকে আশুলিয়া ও তার আশপাশের এলাকার সব কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখেছেন মালিকেরা। মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত দেয়। ফলে আশুলিয়া এলাকার তিন শতাধিক তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ৮৬টি নিট পোশাক কারখানা। উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়া হয়ে বাইপাইল পর্যন্ত এসব কারখানায় তিন লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করেন বলে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে।
এসব কারখানা খুলে দেওয়ার বিষয়ে গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত সরকার, মালিক কিংবা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে বিজিএমএই সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উচ্চমহলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা চলছে।
শ্রম আইনের প্রয়োগে মতভেদ: বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৩(১) ধারা অনুযায়ী, কোনো শিল্প-কারখানার কোনো শাখা বা বিভাগের শ্রমিকেরা যদি বেআইনিভাবে ধর্মঘট করেন, তবে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক পুরো কারখানা বা আংশিক বন্ধ করে দিতে পারেন। এ জন্য বেআইনি ধর্মঘটে অংশ নেওয়া শ্রমিকেরা বেতন বা মজুরি পাবেন না।
বিজিএমইএ সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, অসহায়ত্ব ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাধ্য হয়ে ওই এলাকার তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। অবৈধ ধর্মঘটের কারণে শ্রম আইনের আওতায় ১৩(১) ধারায় যত দিন এসব কারখানা বন্ধ রাখা হবে, তত দিনের বেতন বা মজুরি পাবেন না শ্রমিকেরা।
তবে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর এই সিদ্ধান্তকে আইনসম্মত নয় বলে মনে করছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতানউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, দলবদ্ধ হয়ে কোনো এলাকার কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার সুযোগ শ্রম আইনে নেই। এ ছাড়া বিজিএমএই ও বিকেএমইএ শ্রম আইনে নিবন্ধিত কোনো সংগঠন নয়। এই প্রতিষ্ঠান দুটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনের সংগঠন। তাই এই দুটি প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে কারখানা বন্ধ রাখতে পারে না।
শ্রম আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাটির ব্যাখ্যা করে সৈয়দ সুলতানউদ্দিন আহমেদ জানান, শুধু বেআইনিভাবে কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কোনো একটি শাখা বা বিভাগের শ্রমিকেরা যদি ধর্মঘট করেন আর সে জন্য যদি ওই শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অন্য শাখা বা বিভাগের কার্যক্রম বিঘ্নিত হয় বা কার্যক্রম চালাতে না পারে, তবেই কেবল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মালিক কারখানা বন্ধ করতে পারেন। এ জন্য শুধু বেআইনিভাবে ধর্মঘটে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের বেতন বা মজুরি বন্ধ রাখতে পারেন মালিকেরা। ঢালাওভাবে সব শ্রমিকের বেতন কেটে রাখতে পারেন না। বেআইনি ধর্মঘটে অংশ নেননি এমন অন্য শ্রমিকদের বেতনভাতা দিতে হবে।
তবে সহিংস ঘটনার সঙ্গে প্রতিটি তৈরি পোশাক কারখানার প্রতিটি শাখার সব শ্রমিকেরা অংশ নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মালিকেরা। বিকেএমইএর সহসভাপতি হাতেম আলী জানান, কারখানার ভেতরে প্রত্যেক শ্রমিকই ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন। তাই কোনো বিভাগেই কাজ করা সম্ভব হয়নি। তাই যত দিন কারখানা বন্ধ থাকবে, তত দিন শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হবে না।
এদিকে কারখানা বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের ধর্মঘটকে ‘অবৈধ’ হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন মালিকেরা। রোববার সকালেই আবদুল্লাহপুর, আশুলিয়া, জামগড়া, বাইপাইলসহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন কারখানায় প্রধান ফটকে ‘বন্ধ ঘোষণা’র নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি আরেকটি নোটিশে বলা হয়, ১১ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত এসব কারখানার শ্রমিকেরা অবৈধভাবে কারখানার কাজ বন্ধ করে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, ভাঙচুরসহ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। আর কর্তৃপক্ষের আহ্বান সত্ত্বেও কাজে যোগ না দিয়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে অবরোধ, যানবাহন ভাঙচুর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। শ্রমিকদের এই আচরণ অবৈধ ধর্মঘটের শামিল।
শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে গত রোববার থেকে আশুলিয়া ও তার আশপাশের এলাকার সব কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখেছেন মালিকেরা। মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত দেয়। ফলে আশুলিয়া এলাকার তিন শতাধিক তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ৮৬টি নিট পোশাক কারখানা। উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়া হয়ে বাইপাইল পর্যন্ত এসব কারখানায় তিন লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করেন বলে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে।
এসব কারখানা খুলে দেওয়ার বিষয়ে গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত সরকার, মালিক কিংবা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে বিজিএমএই সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উচ্চমহলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা চলছে।
শ্রম আইনের প্রয়োগে মতভেদ: বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৩(১) ধারা অনুযায়ী, কোনো শিল্প-কারখানার কোনো শাখা বা বিভাগের শ্রমিকেরা যদি বেআইনিভাবে ধর্মঘট করেন, তবে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক পুরো কারখানা বা আংশিক বন্ধ করে দিতে পারেন। এ জন্য বেআইনি ধর্মঘটে অংশ নেওয়া শ্রমিকেরা বেতন বা মজুরি পাবেন না।
বিজিএমইএ সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, অসহায়ত্ব ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাধ্য হয়ে ওই এলাকার তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। অবৈধ ধর্মঘটের কারণে শ্রম আইনের আওতায় ১৩(১) ধারায় যত দিন এসব কারখানা বন্ধ রাখা হবে, তত দিনের বেতন বা মজুরি পাবেন না শ্রমিকেরা।
তবে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর এই সিদ্ধান্তকে আইনসম্মত নয় বলে মনে করছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতানউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, দলবদ্ধ হয়ে কোনো এলাকার কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার সুযোগ শ্রম আইনে নেই। এ ছাড়া বিজিএমএই ও বিকেএমইএ শ্রম আইনে নিবন্ধিত কোনো সংগঠন নয়। এই প্রতিষ্ঠান দুটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনের সংগঠন। তাই এই দুটি প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে কারখানা বন্ধ রাখতে পারে না।
শ্রম আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাটির ব্যাখ্যা করে সৈয়দ সুলতানউদ্দিন আহমেদ জানান, শুধু বেআইনিভাবে কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কোনো একটি শাখা বা বিভাগের শ্রমিকেরা যদি ধর্মঘট করেন আর সে জন্য যদি ওই শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অন্য শাখা বা বিভাগের কার্যক্রম বিঘ্নিত হয় বা কার্যক্রম চালাতে না পারে, তবেই কেবল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মালিক কারখানা বন্ধ করতে পারেন। এ জন্য শুধু বেআইনিভাবে ধর্মঘটে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের বেতন বা মজুরি বন্ধ রাখতে পারেন মালিকেরা। ঢালাওভাবে সব শ্রমিকের বেতন কেটে রাখতে পারেন না। বেআইনি ধর্মঘটে অংশ নেননি এমন অন্য শ্রমিকদের বেতনভাতা দিতে হবে।
তবে সহিংস ঘটনার সঙ্গে প্রতিটি তৈরি পোশাক কারখানার প্রতিটি শাখার সব শ্রমিকেরা অংশ নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মালিকেরা। বিকেএমইএর সহসভাপতি হাতেম আলী জানান, কারখানার ভেতরে প্রত্যেক শ্রমিকই ধর্মঘটে অংশ নিয়েছেন। তাই কোনো বিভাগেই কাজ করা সম্ভব হয়নি। তাই যত দিন কারখানা বন্ধ থাকবে, তত দিন শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হবে না।
এদিকে কারখানা বন্ধ করে দিয়ে শ্রমিকদের ধর্মঘটকে ‘অবৈধ’ হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন মালিকেরা। রোববার সকালেই আবদুল্লাহপুর, আশুলিয়া, জামগড়া, বাইপাইলসহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন কারখানায় প্রধান ফটকে ‘বন্ধ ঘোষণা’র নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি আরেকটি নোটিশে বলা হয়, ১১ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত এসব কারখানার শ্রমিকেরা অবৈধভাবে কারখানার কাজ বন্ধ করে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, ভাঙচুরসহ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। আর কর্তৃপক্ষের আহ্বান সত্ত্বেও কাজে যোগ না দিয়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে অবরোধ, যানবাহন ভাঙচুর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। শ্রমিকদের এই আচরণ অবৈধ ধর্মঘটের শামিল।
No comments