পোশাক কারখানা নিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন-নিম্নতম মজুরি সবাই দেয় না by রোজিনা ইসলাম
বেতন-ভাতাসহ নানা ধরনের সমস্যা এবং দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনার জন্য কোনো শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করা যায় না পোশাকশিল্পে। এর পরিবর্তে প্রতিটি কারখানায় সব পক্ষকে নিয়ে একটি ‘পার্টিসিপেশন কমিটি’ করার কথা। পোশাকশিল্পের মালিকদের দাবি, নিয়মটি পুরোপুরি মানা হচ্ছে।
অথচ সরকারের পরিদর্শন প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় ৪০ শতাংশ কারখানায় এই কমিটি নেই।
সূত্র জানায়, পার্টিসিপেশন কমিটি নেই বলে অনেক কারখানাতেই বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। এ কারণেও নানা ধরনের সংকট তৈরি হয়। আর বাইরে থেকে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন পোশাকশ্রমিকদের নিয়ে কাজ করলেও কারখানার ভেতরে তাদের কোনো ভূমিকাই নেই, বরং এসব সংগঠনের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের পোশাক কারখানাগুলো এখনো পুরোপুরি মানসম্মত নয়। কোনো নিয়মই শতভাগ মানা হয় না। দেওয়া হয় না শতভাগ নিম্নতম মজুরি, সময়মতো মজুরিও পরিশোধ করে না অনেক কারখানা। অনিয়ম রয়েছে নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রেও।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের ১৫টি বিশেষ পরিদর্শন দল গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ১৫৬টি পোশাকশিল্প কারখানা পরিদর্শন করে। এর মধ্যে বিজিএমইএর ১৩২ ও বিকেএমইএর সদস্য কারখানা সাতটি। এর বাইরে কোনো সংস্থার সদস্য নয়, এমন ১৭টি কারখানাও পরিদর্শন করা হয়।
তবে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর নেতারা সরকারের এ প্রতিবেদন পুরোপুরি ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন। বিজিএমইএর সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রম মন্ত্রণালয় যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে, তার সঙ্গে আমাদের প্রতিবেদনের পার্থক্য রয়েছে। আমাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী কারখানাগুলোতে সব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি অবশ্য বলেন, এটা ঠিক, কোনো কোনো পোশাকশিল্প কারখানায় শতভাগ সুবিধা না-ও দেওয়া হতে পারে, তবে ধীরে ধীরে এসব ঠিক হয়ে যাবে।
বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘অন্য সুযোগ-সুবিধায় হেরফের থাকলেও আমাদের সব পোশাক কারখানায় নিম্নতম মজুরি বোর্ড শতভাগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি।’
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর এ বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমসচিব মিখাইল শিপার বলেন, ‘প্রতিবেদনেই সব উল্লেখ আছে। তাই আমি বাড়তি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজিএমইএর সদস্য ৯৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ কারখানায় নিয়োগপত্র এবং ৯১ দশমিক ৮২ শতাংশ কারখানায় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। অন্যদিকে বিকেএমইএর মাত্র ৭১ দশমিক ৪২ শতাংশ কারখানায় নিয়োগপত্র এবং ৮৫ দশমিক ৭১ শতাংশ কারখানায় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়।
বাস্তবায়িত হয় না তদন্ত কমিটির সুপারিশও: বিভিন্ন পোশাক কারখানায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর বিভিন্ন সময় সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি বিভিন্ন সুপারিশও করে। কিন্তু তার বেশির ভাগই বাস্তবায়িত হয়নি। ২০০৯ সালের ৩১ অক্টোবর গাজীপুরের টঙ্গীতে নিপ্পন কারখানা বন্ধ ঘোষণা করলে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে শ্রমিক নিহত হন। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রতিবেদনে যেকোনো কারখানার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কমিটিকে রোজা, ঈদ ও পূজার আগে অভ্যন্তরীণ বাধ্যতামূলক সভা এবং শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা বলা হয়েছিল। এ ছাড়া প্রতিটি কারখানায় পার্টিসিপেশন বা অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন, বেতন-ভাতা সুনির্দিষ্ট তারিখে দেওয়াসহ বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়িত হয়নি।
সংকট ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক আজ: কয়েক দিন ধরে শুরু হওয়া অস্থিরতা ও বন্ধ থাকা আশুলিয়া এলাকার পোশাক কারখানাগুলো চালু রাখার বিষয়ে আজ শ্রম মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে মালিকদের কারখানা খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হবে এবং শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করার পরামর্শ দেওয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
এর আগেও সংকট ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মূল কমিটির বৈঠকে শ্রমিক ছাঁটাই ও কারখানা বন্ধ করা নিরুৎসাহিত করতে মালিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া যেকোনো পরিস্থিতিতে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত সদস্যদের সঙ্গে মালিকদের যোগাযোগ রক্ষার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কেউই এসব কথা মানেননি।
বৈঠক বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমসচিব বলেন, ‘পোশাকশিল্প কারখানার শ্রমিকদের এ অস্থিরতা বেতন বাড়ানোর জন্য নয়, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। এ কারণে আমরা মালিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর কোনো প্রস্তাব দেব না। তবে শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত কারখানা খুলে দেওয়ার জন্য মালিকদের আহ্বান জানাব।’
সূত্র জানায়, পার্টিসিপেশন কমিটি নেই বলে অনেক কারখানাতেই বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। এ কারণেও নানা ধরনের সংকট তৈরি হয়। আর বাইরে থেকে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন পোশাকশ্রমিকদের নিয়ে কাজ করলেও কারখানার ভেতরে তাদের কোনো ভূমিকাই নেই, বরং এসব সংগঠনের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশের পোশাক কারখানাগুলো এখনো পুরোপুরি মানসম্মত নয়। কোনো নিয়মই শতভাগ মানা হয় না। দেওয়া হয় না শতভাগ নিম্নতম মজুরি, সময়মতো মজুরিও পরিশোধ করে না অনেক কারখানা। অনিয়ম রয়েছে নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রেও।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের ১৫টি বিশেষ পরিদর্শন দল গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ১৫৬টি পোশাকশিল্প কারখানা পরিদর্শন করে। এর মধ্যে বিজিএমইএর ১৩২ ও বিকেএমইএর সদস্য কারখানা সাতটি। এর বাইরে কোনো সংস্থার সদস্য নয়, এমন ১৭টি কারখানাও পরিদর্শন করা হয়।
তবে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর নেতারা সরকারের এ প্রতিবেদন পুরোপুরি ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন। বিজিএমইএর সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রম মন্ত্রণালয় যে প্রতিবেদন তৈরি করেছে, তার সঙ্গে আমাদের প্রতিবেদনের পার্থক্য রয়েছে। আমাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী কারখানাগুলোতে সব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি অবশ্য বলেন, এটা ঠিক, কোনো কোনো পোশাকশিল্প কারখানায় শতভাগ সুবিধা না-ও দেওয়া হতে পারে, তবে ধীরে ধীরে এসব ঠিক হয়ে যাবে।
বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘অন্য সুযোগ-সুবিধায় হেরফের থাকলেও আমাদের সব পোশাক কারখানায় নিম্নতম মজুরি বোর্ড শতভাগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি।’
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর এ বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমসচিব মিখাইল শিপার বলেন, ‘প্রতিবেদনেই সব উল্লেখ আছে। তাই আমি বাড়তি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজিএমইএর সদস্য ৯৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ কারখানায় নিয়োগপত্র এবং ৯১ দশমিক ৮২ শতাংশ কারখানায় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। অন্যদিকে বিকেএমইএর মাত্র ৭১ দশমিক ৪২ শতাংশ কারখানায় নিয়োগপত্র এবং ৮৫ দশমিক ৭১ শতাংশ কারখানায় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়।
বাস্তবায়িত হয় না তদন্ত কমিটির সুপারিশও: বিভিন্ন পোশাক কারখানায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর বিভিন্ন সময় সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি বিভিন্ন সুপারিশও করে। কিন্তু তার বেশির ভাগই বাস্তবায়িত হয়নি। ২০০৯ সালের ৩১ অক্টোবর গাজীপুরের টঙ্গীতে নিপ্পন কারখানা বন্ধ ঘোষণা করলে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে শ্রমিক নিহত হন। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রতিবেদনে যেকোনো কারখানার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কমিটিকে রোজা, ঈদ ও পূজার আগে অভ্যন্তরীণ বাধ্যতামূলক সভা এবং শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা বলা হয়েছিল। এ ছাড়া প্রতিটি কারখানায় পার্টিসিপেশন বা অংশগ্রহণকারী কমিটি গঠন, বেতন-ভাতা সুনির্দিষ্ট তারিখে দেওয়াসহ বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়িত হয়নি।
সংকট ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক আজ: কয়েক দিন ধরে শুরু হওয়া অস্থিরতা ও বন্ধ থাকা আশুলিয়া এলাকার পোশাক কারখানাগুলো চালু রাখার বিষয়ে আজ শ্রম মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে মালিকদের কারখানা খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হবে এবং শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করার পরামর্শ দেওয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
এর আগেও সংকট ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মূল কমিটির বৈঠকে শ্রমিক ছাঁটাই ও কারখানা বন্ধ করা নিরুৎসাহিত করতে মালিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া যেকোনো পরিস্থিতিতে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত সদস্যদের সঙ্গে মালিকদের যোগাযোগ রক্ষার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কেউই এসব কথা মানেননি।
বৈঠক বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমসচিব বলেন, ‘পোশাকশিল্প কারখানার শ্রমিকদের এ অস্থিরতা বেতন বাড়ানোর জন্য নয়, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। এ কারণে আমরা মালিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর কোনো প্রস্তাব দেব না। তবে শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত কারখানা খুলে দেওয়ার জন্য মালিকদের আহ্বান জানাব।’
No comments