অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা-চিকিৎসা ভাতার ব্যবস্থা হোক
উজিরপুরে গুটিয়া বানকাঠি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা দেশমাতৃকার মুক্তির লড়াইয়ে জয়ী হলেও জীবনযুদ্ধে হেরে গেছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত তাকে কায়িক শ্রমেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করতে হয়েছে।
বার্ধক্যে কাজ করার সামর্থ্য না থাকায় তাকে সরকারি সামান্য ভাতার ওপরই গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা করতে হয়। কিন্তু এতে তো আর রোগের চিকিৎসা হয় না! একমাত্র ছেলেটিও তার সাহায্যে এগিয়ে আসার মতো সামর্থ্য নেই। কারণ, অভাবের সংসারে মুক্তিযোদ্ধা পিতা তার পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে পারেননি। তাই নিজের চিকিৎসার অর্থ জোগাড়ের জন্য মুক্তিযোদ্ধা খালেককে পথের ধারে বসে জনে জনে ভিক্ষা মাঙ্গতে হচ্ছে। এটাকে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস না বলে প্রকৃত বীর ও গুণীজনদের প্রতি রাষ্ট্র ও রাজনীতির ঔদাসীন্য বা অবহেলার পরিণতি বলা যায় নাকি! সমাজ ও রাষ্ট্র এগিয়ে এলে আজ মুক্তিযোদ্ধা খালেকের একমাত্র ছেলেটি হয়তো উপযুক্ত শিক্ষা পেত এবং তিনি পেতেন একটি সুখী ও স্বচ্ছন্দ জীবন। তাহলে সমকালে সোমবার 'মুক্তিযোদ্ধা খালেকের চিকিৎসা হবে ভিক্ষার টাকায়!' শিরোনামের প্রতিবেদন প্রকাশের প্রয়োজন পড়ত না। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজ স্বাধীনতার ৪১ বছরেও জাতীয় বীরদের প্রতি সবক্ষেত্রে সুবিচার করতে পারেনি। কেউ বলবেন, আমলাতান্ত্রিক খামখেয়ালিপনা বা অবহেলা বা বিষয়টি সঠিকভাবে উপলব্ধি করার মতো প্রজ্ঞার অভাবে এহেন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রায় মুক্তিযুদ্ধের সোল এজেন্সি দাবি করতে গিয়ে মুখে ফেনা ওঠান। কিন্তু অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা কীভাবে বেঁচে থাকেন সেটা হৃদয় দিয়ে অনুভব করা দু'একজনের পক্ষে সম্ভব হলেও অধিকাংশের পক্ষেই সম্ভব হয় না। তা না হলে আজও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোকে এতটা মানবেতর জীবনযাপন করতে হতো না। তবে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের জন্য চাকরির কোটা, ভাতার ব্যবস্থা করা নিঃসন্দেহে উপকারী পদক্ষেপ। কিন্তু এ সুযোগ কয়জন মুক্তিযোদ্ধার নেওয়ার যোগ্যতা রয়েছে? তাদের অধিকাংশই তো খালেকের মতো সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে পর্যন্ত পারেনি।
সরকার যদি সাধারণ ভাতার সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চিকিৎসা ভাতার ব্যবস্থা করতেন তাহলে মুক্তিযোদ্ধা খালেককে আজ নিজের চিকিৎসার অর্থ জোগাড়ের জন্য পথের ধারে ভিক্ষায় বসতে হতো না। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা তো এখন ৬০ বছরের কোঠা অতিক্রম করে গেছেন। এ অবস্থায় রোগশোকে তারা আক্রান্ত হবেনই। তাই অবস্থা নির্বিশেষে সকল মুক্তিযোদ্ধার জন্য চিকিৎসা ভাতার ব্যবস্থা করে সরকার বিষয়টি সুরাহা করতে পারে। তদুপরি মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির তালিকায় এটিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সরকার যদি সাধারণ ভাতার সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চিকিৎসা ভাতার ব্যবস্থা করতেন তাহলে মুক্তিযোদ্ধা খালেককে আজ নিজের চিকিৎসার অর্থ জোগাড়ের জন্য পথের ধারে ভিক্ষায় বসতে হতো না। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা তো এখন ৬০ বছরের কোঠা অতিক্রম করে গেছেন। এ অবস্থায় রোগশোকে তারা আক্রান্ত হবেনই। তাই অবস্থা নির্বিশেষে সকল মুক্তিযোদ্ধার জন্য চিকিৎসা ভাতার ব্যবস্থা করে সরকার বিষয়টি সুরাহা করতে পারে। তদুপরি মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির তালিকায় এটিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
No comments