ড. মুহাম্মদ আশকার ইবনে শাইখ-শেখ হাসিনার ব্রিটেন সফরের ইতিবাচক দিক
সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ব্রিটেন সফর করে গেলেন। লেখাটি যখন প্রকাশিত হবে ততক্ষণে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ পেঁৗছে যাবেন। তাঁর এ সফর প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বার্থরক্ষায়ই কেবল নয়, উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নসহ অনেক দিকে গুরুত্বপূর্ণ কিংবা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, তা আশা করা যাচ্ছে।
এই সফরকালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে তাঁর ৪০ মিনিট স্থায়ী একটি বৈঠক হয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পাঁচ দিনের ব্রিটেন সফরে অনেক ব্যস্ত ছিলেন কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ তিনি এরই মধ্যে সম্পাদন করতে সক্ষম হয়েছেন পর্যবেক্ষকদের ধারণা তা-ই।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে, তা ব্রিটেনের গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। বাংলাদেশি স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় ওই বৈঠকে স্থান পায় এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সে বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন তা-ও গণমাধ্যম মারফতই জানা গেল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় বসার দুই বছর পর প্রধানমন্ত্রী এ সফর করেছেন। তবে ইতিমধ্যে তিনি ১৯ বার বিদেশ সফর (বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে) করেছেন যে সফরগুলো থেকে বাংলাদেশের জন্য অর্জন কিছু না কিছু তো হয়েছেই। ব্রিটেন সফরও সে রকমই।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিটি সফরেই বাংলাদেশের স্বার্থ অগ্রাধিকার পেয়েছে এবং তার সুফলও মিলতে শুরু করেছে।
ব্রিটেনে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। সাম্প্রতিককালে এখানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও ক্রমেই বাড়ছে। আমরা যাঁরা এখানে আছি তাঁরা অন্য প্রবাসীদের মতোই দেশের অর্থনীতিতে কমবেশি অবদান রাখছি। প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে শিক্ষার্থীদের প্রতি গুরুত্ব দিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে যে আহ্বান জানিয়েছেন তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আশা করা যায়, বাংলাদেশিদের প্রতি ব্রিটিশ সরকারের মনোভাব আরো উদার হবে। তাঁদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দুই দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়েও আলাপ-আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির যে আহ্বান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন এরও ইতিবাচক সাড়া আশা করা যায়। সন্ত্রাস দমনে ব্রিটিশ সরকারের তরফে আরো সহযোগিতার আশ্বাস বাংলাদেশের জন্য কম পাওয়া নয়। শেখ হাসিনার সঙ্গে যে প্রতিনিধিদলটি এসেছিল তারাও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সফল যোগাযোগ করতে পেরেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের মহাজোট সরকার ইতিমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজে হাত দিয়েছে। এর মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্যোগ, সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম ইত্যাদি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিষয়।
এসব ব্যাপারেই ব্রিটেনের মতো বড় আন্তর্জাতিক শক্তির সহযোগিতা অনেক শক্তি জোগাবে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের শত্রু ঘরে-বাইরে। সরকারকে নানা দিক সামলে খুব সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক কার্যক্রম আরো জোরদার করা দরকার। শেখ হাসিনা ব্রিটেন থেকে একটি পুরস্কারও অর্জন করেছেন। বিশ্বশান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখায় শেখ হাসিনাকে 'গ্লোবাল ডাইভারসিটি' অ্যাওয়ার্ড দেন ব্রিটিশ হাউস অব কমন্সের স্পিকার জন বারকো। নিশ্চয়ই এ জন্য শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন। এই পুরস্কার গ্রহণ শেষে শেখ হাসিনা দেশের মানুষের সেবায় নিজেকে আরো বিলিয়ে দেওয়ার যে পুনর্বার উচ্চারণ করেছেন তা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের সর্বহারা এই প্রধানমন্ত্রীর তো হারানোর আর কিছু নেই, কিন্তু জয় করার মতো রয়েছে বিশ্ব। তিনি ক্রমেই যে অধিকতর দায়িত্ববান ও দূরদর্শী হচ্ছেন এটি সবার জন্যই শুভ বার্তা বটে।
ব্রিটেন বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। কমনওয়েলথভুক্ত দেশ হিসেবেও বাংলাদেশের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক সুদৃঢ়। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ব্রিটেন সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরো মজবুত করবে_তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির পক্ষে শেখ হাসিনা ব্রিটেন সফরকালে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যেভাবে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন, এর ইতিবাচক প্রভাব লক্ষণীয় হয়ে উঠবে_এ-ও আশা করা যায়। তাঁর এ সফর বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে।
যদি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানো যায়, অবকাঠামোর উন্নতি করা হয় এবং গ্যাস-বিদ্যুৎসহ বিনিয়োগসংশ্লিষ্ট অন্য বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা দেওয়া হয়, তাহলে শুধু সরকারি পর্যায় থেকেই নয়, বেসরকারি পর্যায় থেকেও অনেকেই অর্থাৎ প্রবাসীরাও বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন। আমরা আশা করব, সরকার এ বিষয়গুলোর ব্যাপারে অধিকতর কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
লেখক : ব্রিটেনপ্রবাসী গণমাধ্যম গবেষক
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে, তা ব্রিটেনের গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। বাংলাদেশি স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় ওই বৈঠকে স্থান পায় এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সে বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন তা-ও গণমাধ্যম মারফতই জানা গেল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় বসার দুই বছর পর প্রধানমন্ত্রী এ সফর করেছেন। তবে ইতিমধ্যে তিনি ১৯ বার বিদেশ সফর (বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে) করেছেন যে সফরগুলো থেকে বাংলাদেশের জন্য অর্জন কিছু না কিছু তো হয়েছেই। ব্রিটেন সফরও সে রকমই।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিটি সফরেই বাংলাদেশের স্বার্থ অগ্রাধিকার পেয়েছে এবং তার সুফলও মিলতে শুরু করেছে।
ব্রিটেনে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। সাম্প্রতিককালে এখানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও ক্রমেই বাড়ছে। আমরা যাঁরা এখানে আছি তাঁরা অন্য প্রবাসীদের মতোই দেশের অর্থনীতিতে কমবেশি অবদান রাখছি। প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে শিক্ষার্থীদের প্রতি গুরুত্ব দিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে যে আহ্বান জানিয়েছেন তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আশা করা যায়, বাংলাদেশিদের প্রতি ব্রিটিশ সরকারের মনোভাব আরো উদার হবে। তাঁদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দুই দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়েও আলাপ-আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির যে আহ্বান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন এরও ইতিবাচক সাড়া আশা করা যায়। সন্ত্রাস দমনে ব্রিটিশ সরকারের তরফে আরো সহযোগিতার আশ্বাস বাংলাদেশের জন্য কম পাওয়া নয়। শেখ হাসিনার সঙ্গে যে প্রতিনিধিদলটি এসেছিল তারাও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সফল যোগাযোগ করতে পেরেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের মহাজোট সরকার ইতিমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজে হাত দিয়েছে। এর মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্যোগ, সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম ইত্যাদি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিষয়।
এসব ব্যাপারেই ব্রিটেনের মতো বড় আন্তর্জাতিক শক্তির সহযোগিতা অনেক শক্তি জোগাবে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের শত্রু ঘরে-বাইরে। সরকারকে নানা দিক সামলে খুব সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক কার্যক্রম আরো জোরদার করা দরকার। শেখ হাসিনা ব্রিটেন থেকে একটি পুরস্কারও অর্জন করেছেন। বিশ্বশান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখায় শেখ হাসিনাকে 'গ্লোবাল ডাইভারসিটি' অ্যাওয়ার্ড দেন ব্রিটিশ হাউস অব কমন্সের স্পিকার জন বারকো। নিশ্চয়ই এ জন্য শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন। এই পুরস্কার গ্রহণ শেষে শেখ হাসিনা দেশের মানুষের সেবায় নিজেকে আরো বিলিয়ে দেওয়ার যে পুনর্বার উচ্চারণ করেছেন তা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের সর্বহারা এই প্রধানমন্ত্রীর তো হারানোর আর কিছু নেই, কিন্তু জয় করার মতো রয়েছে বিশ্ব। তিনি ক্রমেই যে অধিকতর দায়িত্ববান ও দূরদর্শী হচ্ছেন এটি সবার জন্যই শুভ বার্তা বটে।
ব্রিটেন বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। কমনওয়েলথভুক্ত দেশ হিসেবেও বাংলাদেশের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক সুদৃঢ়। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ব্রিটেন সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরো মজবুত করবে_তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির পক্ষে শেখ হাসিনা ব্রিটেন সফরকালে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যেভাবে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন, এর ইতিবাচক প্রভাব লক্ষণীয় হয়ে উঠবে_এ-ও আশা করা যায়। তাঁর এ সফর বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলের ক্ষেত্রেও যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে।
যদি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানো যায়, অবকাঠামোর উন্নতি করা হয় এবং গ্যাস-বিদ্যুৎসহ বিনিয়োগসংশ্লিষ্ট অন্য বিষয়গুলোর নিশ্চয়তা দেওয়া হয়, তাহলে শুধু সরকারি পর্যায় থেকেই নয়, বেসরকারি পর্যায় থেকেও অনেকেই অর্থাৎ প্রবাসীরাও বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন। আমরা আশা করব, সরকার এ বিষয়গুলোর ব্যাপারে অধিকতর কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
লেখক : ব্রিটেনপ্রবাসী গণমাধ্যম গবেষক
No comments