পবিত্র কোরআনের আলো-মুমিন নর-নারীদের জন্য আল্লাহর রহমত ও নিয়ামতের আশ্বাস
৭১. ওয়াল মু'মিনুনা ওয়াল মু'মিনাতু বা'দ্বুহুম আউলিইয়াউ বা'দ্বিন; ইয়া'মুরূনা বিলমা'রূফি ওয়া ইয়ানহাওনা আ'নিল মুনকারি ওয়া ইউক্বীমূনাস্সালাতা ওয়া ইউ'তূনায্ যাকাতা ওয়া ইউত্বীঊনাল্লাহা ওয়া রাছূলাহূ; উলায়িকা ছাইয়ারহামুহুমুল্লাহু; ইন্নাল্লাহা আ'যীযুন হাকীম।
৭২. ওয়া আ'দাল্লাহুল্ মু'মিনীনা ওয়াল মু'মিনাতি জান্নাতিন তাজরী মিন তাহ্তিহাল আনহারু খালিদীনা ফীহা ওয়া মাছাকিনা ত্বায়্যিবাতান ফী জান্নাতি আ'দ্নিন; ওয়া রিদ্বওয়ানুম্ মিনাল্লাহি আকবার্; যালিকা হুয়াল ফাওযুল আ'যীম।
৭৩. ইয়া আইয়্যুহান্নাবিয়্যু জাহিদিল কুফ্ফারা ওয়াল মুনাফিক্বীনা ওয়াগ্লুয্ আ'লাইহিম; ওয়া মা'ওয়াহুম জাহান্নাম; ওয়া বি'ছাল মাসীর।
[সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ৭১-৭৩]
অনুবাদ : ৭১. মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী পরস্পরের সহযোগী। তারা সৎ কাজের আদেশ করে ও অসৎ কাজে বাধা দেয়। নামাজ কায়েম করে, জাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে। তারা হচ্ছে সেইসব লোক, যাদের ওপর আল্লাহ অতিসত্বর তাঁর রহমত বর্ষণ করবেন। অবশ্যই আল্লাহ পরাক্রমশালী ও কুশলী।
৭২. আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের এমন এক জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার তলদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়েছে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। আর এটা তাদের পবিত্র বাসস্থান হবে, চিরসজীব উদ্যানে যার অবস্থান। তা ছাড়া আল্লাহর সন্তুষ্টি তো বড় বিষয় (যা তাদের ওপর থাকবে)। এটা এক মহাসাফল্য।
৭৩. হে নবী, আপনি কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম আর তা খুবই মন্দ ঠিকানা।
ব্যাখ্যা : ৭১ ও ৭২ নম্বর আয়াতে মুমিন নর-নারীদের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো বর্ণনা করার পর তাদের জন্য নির্ধারিত করে দেওয়া আল্লাহর রহমত ও নিয়ামতগুলোর বিবরণ দেওয়া হয়েছে। পূর্ববর্তী অনেক আয়াতে কাফির ও মুনাফিকদের অবাধ্যতা, অপকর্ম ও বিপথগামিতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাদের তিরস্কার করা হয়েছে। বিভিন্ন নজির-নসিহত বর্ণনা করে তাদের উপলব্ধি জাগ্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং ভয়ংকর শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য ভয় ও শাস্তির প্রসঙ্গ বেশিক্ষণ বর্ণনা করতে চান না। একপর্যায়ে এসে বর্ণনা করা হয়েছে, এর বিপরীত দিকে যারা মুমিন নর-নারী, যারা আল্লাহর আনুগত্য করে, তাদের প্রাপ্য আল্লাহর রহমত ও নিয়ামতগুলোর কথা। তাদের প্রতি আল্লাহর যে সন্তুষ্টি এবং ইহকাল ও পরকালের যে নিয়ামত, সেটা অনেক বড় আর এখানেই জীবনের সাফল্য।
৭৩ নম্বর আয়াতে কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। 'জিহাদ' শব্দটির মূল অর্থ চেষ্টা, মেহনত ও আত্মনিয়োগ করা। দ্বীনের হেফাজত ও প্রতিরক্ষার জন্য সত্য ও ন্যায়ের বিরোধিতাকারীদের আক্রমণাত্মক অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে এই জিহাদ সশস্ত্র সংগ্রামরূপেও হতে পারে; এ ছাড়া মৌখিক দাওয়াত ও তাবলিগ, আলোচনা-পর্যালোচনা, যুক্তি-তর্ক, উদ্বুদ্ধকরণ ও সংঘবদ্ধকরণের মাধ্যমেও তা হতে পারে। যারা প্রকাশ্য কাফির বা যুদ্ধের প্রতিপক্ষ, তাদের বেলায় 'জিহাদ' দ্বারা এখানে সশস্ত্র সংগ্রামই বোঝানো হয়েছে। আর মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ দ্বারা এখানে দ্বিতীয় স্তরের পন্থাগুলো বুঝতে হবে। এখানে কঠোরতার দ্বারা মূলত দৃঢ়তাই বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ নীতি ও আদর্শের ক্ষেত্রে অবস্থান দৃঢ় রাখতে হবে। তা ছাড়া জিহাদের অর্থ কেবল শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ নয়, আল্লাহর পথে অর্থাৎ সত্য ও ন্যায়ের পথে আত্মত্যাগ, সাধনা ও আত্মনিয়োগও জিহাদ। এ জিহাদের মাধ্যমে নিজেকে, নিজের পরিবার ও সমাজকে এবং মানব সভ্যতাকে পরিশীলিত, পাপমুক্ত ও শান্তিময় করে তোলার সব কর্মকাণ্ডকেই অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৭৩. ইয়া আইয়্যুহান্নাবিয়্যু জাহিদিল কুফ্ফারা ওয়াল মুনাফিক্বীনা ওয়াগ্লুয্ আ'লাইহিম; ওয়া মা'ওয়াহুম জাহান্নাম; ওয়া বি'ছাল মাসীর।
[সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ৭১-৭৩]
অনুবাদ : ৭১. মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী পরস্পরের সহযোগী। তারা সৎ কাজের আদেশ করে ও অসৎ কাজে বাধা দেয়। নামাজ কায়েম করে, জাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে। তারা হচ্ছে সেইসব লোক, যাদের ওপর আল্লাহ অতিসত্বর তাঁর রহমত বর্ষণ করবেন। অবশ্যই আল্লাহ পরাক্রমশালী ও কুশলী।
৭২. আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের এমন এক জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার তলদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়েছে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। আর এটা তাদের পবিত্র বাসস্থান হবে, চিরসজীব উদ্যানে যার অবস্থান। তা ছাড়া আল্লাহর সন্তুষ্টি তো বড় বিষয় (যা তাদের ওপর থাকবে)। এটা এক মহাসাফল্য।
৭৩. হে নবী, আপনি কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করুন এবং তাদের প্রতি কঠোর হোন। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম আর তা খুবই মন্দ ঠিকানা।
ব্যাখ্যা : ৭১ ও ৭২ নম্বর আয়াতে মুমিন নর-নারীদের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো বর্ণনা করার পর তাদের জন্য নির্ধারিত করে দেওয়া আল্লাহর রহমত ও নিয়ামতগুলোর বিবরণ দেওয়া হয়েছে। পূর্ববর্তী অনেক আয়াতে কাফির ও মুনাফিকদের অবাধ্যতা, অপকর্ম ও বিপথগামিতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তাদের তিরস্কার করা হয়েছে। বিভিন্ন নজির-নসিহত বর্ণনা করে তাদের উপলব্ধি জাগ্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং ভয়ংকর শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য ভয় ও শাস্তির প্রসঙ্গ বেশিক্ষণ বর্ণনা করতে চান না। একপর্যায়ে এসে বর্ণনা করা হয়েছে, এর বিপরীত দিকে যারা মুমিন নর-নারী, যারা আল্লাহর আনুগত্য করে, তাদের প্রাপ্য আল্লাহর রহমত ও নিয়ামতগুলোর কথা। তাদের প্রতি আল্লাহর যে সন্তুষ্টি এবং ইহকাল ও পরকালের যে নিয়ামত, সেটা অনেক বড় আর এখানেই জীবনের সাফল্য।
৭৩ নম্বর আয়াতে কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। 'জিহাদ' শব্দটির মূল অর্থ চেষ্টা, মেহনত ও আত্মনিয়োগ করা। দ্বীনের হেফাজত ও প্রতিরক্ষার জন্য সত্য ও ন্যায়ের বিরোধিতাকারীদের আক্রমণাত্মক অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে এই জিহাদ সশস্ত্র সংগ্রামরূপেও হতে পারে; এ ছাড়া মৌখিক দাওয়াত ও তাবলিগ, আলোচনা-পর্যালোচনা, যুক্তি-তর্ক, উদ্বুদ্ধকরণ ও সংঘবদ্ধকরণের মাধ্যমেও তা হতে পারে। যারা প্রকাশ্য কাফির বা যুদ্ধের প্রতিপক্ষ, তাদের বেলায় 'জিহাদ' দ্বারা এখানে সশস্ত্র সংগ্রামই বোঝানো হয়েছে। আর মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ দ্বারা এখানে দ্বিতীয় স্তরের পন্থাগুলো বুঝতে হবে। এখানে কঠোরতার দ্বারা মূলত দৃঢ়তাই বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ নীতি ও আদর্শের ক্ষেত্রে অবস্থান দৃঢ় রাখতে হবে। তা ছাড়া জিহাদের অর্থ কেবল শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ নয়, আল্লাহর পথে অর্থাৎ সত্য ও ন্যায়ের পথে আত্মত্যাগ, সাধনা ও আত্মনিয়োগও জিহাদ। এ জিহাদের মাধ্যমে নিজেকে, নিজের পরিবার ও সমাজকে এবং মানব সভ্যতাকে পরিশীলিত, পাপমুক্ত ও শান্তিময় করে তোলার সব কর্মকাণ্ডকেই অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments