জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকি বাড়ছেঃ সমন্বিত প্রতিরোধের বিকল্প নেই
জলবায়ুর পরিবর্তন ও পরিবেশের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে সারা বিশ্বসহ বাংলাদেশও এখন মারাত্মক ঝুঁকির সম্মুখীন। এই ঝুঁকির রূপরেখা নিয়ে অনেক দিন ধরেই ভাবছেন বিশ্বের বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ গবেষকরা। তারা সমূহ বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য সম্ভাব্য করণীয় সম্পর্কেও নির্দেশনা দিয়ে আসছেন; কিন্তু বিশ্বের সব দেশের সমন্বিত রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং সদিচ্ছা না থাকায় এখন পর্যন্ত কোনো বাস্তব উদ্যোগ নেয়া যায়নি।
জলবায়ু পরিবর্তন অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত থাকায় বিষয়টি রাজনৈতিক বৃত্তের স্বার্থেই ঘুরপাক খাচ্ছে। সাম্প্রতিককালে জাতিসংঘসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশ্বকে বৈরী জলবায়ুর হাত থেকে বাঁচানোর বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের জন্য যে ভয়াবহ বিপদের আশঙ্কা করেছেন বিজ্ঞানীরা, তার চালচিত্র শিউরে ওঠার মতো। জলবায়ুর বিরূপ অভিঘাত থেকে বাঁচার জন্য সব দেশের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়াও প্রতিটি দেশকে সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়ার ব্যাপারেও আর দেরি করার অবকাশ নেই। এ ব্যাপারে গত ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়েছেন এবং বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়ার কথাও বলেছেন। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা আগাগোড়াই বলে আসছেন, জলবায়ু বিগড়ে যাওয়ার প্রধান উপাদান হচ্ছে কার্বন ডাই-অক্সাইডসহ অন্যান্য গ্রিন-হাউস গ্যাস। এসব ক্ষতিকর গ্যাস নির্গমনের কারণে চলতি শতাব্দীতেই বিশ্বের প্রাণী ও উদ্ভিদের এক-তৃতীয়াংশ প্রজাতি স্লমকির সম্মুখীন হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। এতে বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রার দিকে ধাবিত হবে। এরই মধ্যে তার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। হিমালয়সহ মেরু অঞ্চলে হিমবাহ বেশি মাত্রায় গলে যাচ্ছে। ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বাড়ছে এবং বিশ্বের নিম্নাঞ্চল জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, মালদ্বীপ বর্তমানে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র সাত ফুট উচ্চতায় জেগে আছে। বাংলাদেশের জন্যও বিষয়টি চরম উদ্বেগজনক। উষ্ণতা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চল শুধু প্লাবিতই হবে না, প্রাকৃতিক পরিবেশে ঝুঁকি বেড়ে বিপর্যয়ের কবলে পড়বে আর্থ-সামাজিক অবস্থা।
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের এই ঝুঁকি কমিয়ে আনতে হলে প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোকে, বিশেষত সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। রাজনৈতিক স্বার্থের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে জলবায়ুর ক্ষতিকর পরিবর্তন থেকে বিশ্বকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না। রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং পারস্পরিক সহযোগিতাই এই বিপর্যয় রোধের মূল চাবিকাঠি। উন্নত দেশগুলোকে বুঝতে হবে, জলবায়ুর পরিবর্তন উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে আগে ক্ষতিগ্রস্ত করলেও তা থেকে তাদেরও নিস্তার নেই। প্রকৃতির রোষ কাউকেই ক্ষমা করবে না। আগামী ডিসেম্বর মাসে জলবায়ু সংক্রান্ত বিশ্ব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কোপেনহেগেনে। এই সম্মেলনের সাফল্যের ওপর জলবায়ুর বিপর্যয় মোকাবিলা করার অনেক কিছুই নির্ভর করছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এ সম্মেলনে উন্নত ও ধনী রাষ্ট্রগুলো সত্যিকার অর্থে কিছু করতে চাইলে তাদেরকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য এই শিল্পোন্নত দেশগুলোই মূলত দায়ী। এদিকে দৃষ্টি রেখে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষত কোপেনহেগেন সম্মেলনে যে কর্মসূচি গৃহীত হবে সেই সিদ্ধান্তের প্রতি বাংলাদেশসহ সব দেশকে দিতে হবে জোরালো সমর্থন। পাশাপাশি বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে যেসব বিপদের আশঙ্কা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে সম্ভাব্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এখন থেকেই।
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের এই ঝুঁকি কমিয়ে আনতে হলে প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোকে, বিশেষত সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। রাজনৈতিক স্বার্থের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে জলবায়ুর ক্ষতিকর পরিবর্তন থেকে বিশ্বকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না। রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং পারস্পরিক সহযোগিতাই এই বিপর্যয় রোধের মূল চাবিকাঠি। উন্নত দেশগুলোকে বুঝতে হবে, জলবায়ুর পরিবর্তন উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে আগে ক্ষতিগ্রস্ত করলেও তা থেকে তাদেরও নিস্তার নেই। প্রকৃতির রোষ কাউকেই ক্ষমা করবে না। আগামী ডিসেম্বর মাসে জলবায়ু সংক্রান্ত বিশ্ব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কোপেনহেগেনে। এই সম্মেলনের সাফল্যের ওপর জলবায়ুর বিপর্যয় মোকাবিলা করার অনেক কিছুই নির্ভর করছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এ সম্মেলনে উন্নত ও ধনী রাষ্ট্রগুলো সত্যিকার অর্থে কিছু করতে চাইলে তাদেরকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য এই শিল্পোন্নত দেশগুলোই মূলত দায়ী। এদিকে দৃষ্টি রেখে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষত কোপেনহেগেন সম্মেলনে যে কর্মসূচি গৃহীত হবে সেই সিদ্ধান্তের প্রতি বাংলাদেশসহ সব দেশকে দিতে হবে জোরালো সমর্থন। পাশাপাশি বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে যেসব বিপদের আশঙ্কা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে সম্ভাব্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এখন থেকেই।
No comments