যুগ্ম জজের বাসা থেকে এজাহারভুক্ত আসামি আশরাফ গ্রেপ্তার, ১০ দিনের রিমান্ডে, পরিকল্পনায় মন্ত্রীর ভাই ও এপিএস by কামরুল হাসান ও মনিরুজ্জামান
নরসিংদীর পৌর মেয়র লোকমান হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনায় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর ভাই সালাউদ্দিন আহমেদ ও মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মাসুদুর রহমান ওরফে মুরাদ যুক্ত ছিলেন বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। মামলার বাদী ও নিহত লোকমানের ভাই কামরুজ্জামান অভিযোগ করেন, লোকমানকে হত্যা করতে মন্ত্রীর ভাই সালাউদ্দিন যে পরিকল্পনা ও বৈঠক করেছিলেন, ঘটনার আগেই তা লোকমান জানতে পেরেছিলেন। তিনি এ কথা তাঁর স্ত্রীকেও বলেছিলেন।
লোকমানের স্ত্রী তামান্না নুসরাত প্রথম আলোকে বলেন, ২৭ অক্টোবর অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি লোকমানকে মোবাইল ফোনে খুনের পরিকল্পনার কথা জানান। লোকমান তা ওই দিনই পুলিশকে জানিয়েছেন।
কামরুজ্জামান দাবি করেন, ‘মন্ত্রী তাঁর ভাইয়ের গ্রেপ্তার ঠেকাতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। আমরা তাঁর অপসারণ চাই।’
এ ব্যাপারে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য জানতে তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তিনি ধরেননি। এরপর তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমেও যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
এজাহারভুক্ত হওয়ার পরও মন্ত্রীর ভাই ও এপিএসকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন—এ প্রশ্নের জবাবে নরসিংদীর পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, যার বিরুদ্ধেই তথ্য-প্রমাণ মিলবে, তাকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই লোকমান খুন হয়েছেন। পেশাদার খুনি ভাড়া করা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব পালন করেছেন শহর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মোবারক হোসেন ওরফে মোবা। হত্যাকাণ্ডের ছক তৈরি করে ঘটনার কয়েক দিন আগে তিনি মালয়েশিয়ায় চলে যান।
এ ঘটনায় সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগের নেতা আশরাফ হোসেন সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মোবারক হোসেনের ভূমিকা সম্পর্কে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে নরসিংদী পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আশরাফকে গতকাল ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
১ নভেম্বর রাতে নরসিংদীর পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেনকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ভেতরে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় তাঁর ভাই কামরুজ্জামান ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
দুজন ছাড়া বাকি সব আসামি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ পর্যন্ত এজাহারভুক্ত একজনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন—হাজি সেলিম (আসামি মোবারকের ভাতিজির স্বামী), স্থানীয় সন্ত্রাসী টিপন কাজি ও আশরাফ হোসেন সরকার। তাঁদের সবাইকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
যুগ্ম জেলা জজের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হলো খুনের আসামি: পুলিশ জানায়, সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া আশরাফ হোসেন সরকার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। আশরাফ শহর যুবলীগের সভাপতি। তাঁর ভাই আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল মতিন সরকারও আসামি।
লোকমান হত্যার পর আশরাফ ঢাকায় আত্মগোপন করেন। তাঁকে গত মঙ্গলবার রাতে সহকারী কমিশনার ছানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল দক্ষিণ খিলগাঁওয়ের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। ওই বাসাটি চুয়াডাঙ্গার যুগ্ম জেলা জজ সালাহউদ্দিন মো. আকরামের। ডিবির অভিযানের সময় যুগ্ম জেলা জজ আকরাম বাসাতেই ছিলেন। তিনি নিজেকে আশরাফের আত্মীয় পরিচয় দেন বলে পুলিশের একটি সূত্র জানায়।
খুনের মামলার আসামিকে কেন আশ্রয় দিলেন—প্রথম আলোর পক্ষ থেকে মোবাইল ফোনে এ কথা জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আকরাম কোনো জবাব না দিয়ে লাইন কেটে দেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, কোনো কারণ ছাড়াই আকরাম দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। তাঁকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
তিন-চার মাস ধরে পরিকল্পনা: পুলিশ সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফ বলেন, লোকমানকে খুন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যুক্ত ছিলেন মোবারক হোসেন। খুনের পরিকল্পনা হয় তিন-চার মাস আগে। খুনি ভাড়া করার জন্য তাঁকে তিন লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেন মোবারক। মোবারক এ জন্য কয়েকজনের সঙ্গে বৈঠকও করেন। দুটি বৈঠক হয় ঢাকায়।
প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফ দাবি করেন, তিনি খুনের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আশরাফের ছোড়া গুলি লোকমানের বুকের বাঁ পাশে লাগে। নরসিংদীর পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, আশরাফ খুনের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করলেও নিজে গুলি ছোড়ার কথা স্বীকার করেননি।
পুলিশ যা বলেছে: নরসিংদী জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা দাবি করেন, এ হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাঁরা পেয়েছেন। পরিকল্পনাকারীদের শনাক্ত করতে পেরেছেন। তবে খুনের ঘটনায় সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের সবাইকে চিহ্নিত করতে পারেননি এখনো।
অবশ্য নরসিংদীর পুলিশ সুপার দাবি করেন, ‘তদন্তের অনেক অগ্রগতি হয়েছে।’
শোকসভা: গতকাল লোকমানের স্মরণে নরসিংদী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদ শোকসভা ও দোয়া মাহফিল করে।
নরসিংদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এই শোকসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নরসিংদী-১ আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম।
বিকেলে শহরের সেবা সংঘের মোড়ে পৌরবাসীর পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অহিভূষণ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে আরেকটি শোকসভা হয়।
কামরুজ্জামান দাবি করেন, ‘মন্ত্রী তাঁর ভাইয়ের গ্রেপ্তার ঠেকাতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। আমরা তাঁর অপসারণ চাই।’
এ ব্যাপারে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য জানতে তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তিনি ধরেননি। এরপর তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমেও যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
এজাহারভুক্ত হওয়ার পরও মন্ত্রীর ভাই ও এপিএসকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন—এ প্রশ্নের জবাবে নরসিংদীর পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, যার বিরুদ্ধেই তথ্য-প্রমাণ মিলবে, তাকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই লোকমান খুন হয়েছেন। পেশাদার খুনি ভাড়া করা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব পালন করেছেন শহর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মোবারক হোসেন ওরফে মোবা। হত্যাকাণ্ডের ছক তৈরি করে ঘটনার কয়েক দিন আগে তিনি মালয়েশিয়ায় চলে যান।
এ ঘটনায় সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগের নেতা আশরাফ হোসেন সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মোবারক হোসেনের ভূমিকা সম্পর্কে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে নরসিংদী পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আশরাফকে গতকাল ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
১ নভেম্বর রাতে নরসিংদীর পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেনকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ভেতরে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় তাঁর ভাই কামরুজ্জামান ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
দুজন ছাড়া বাকি সব আসামি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ পর্যন্ত এজাহারভুক্ত একজনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন—হাজি সেলিম (আসামি মোবারকের ভাতিজির স্বামী), স্থানীয় সন্ত্রাসী টিপন কাজি ও আশরাফ হোসেন সরকার। তাঁদের সবাইকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
যুগ্ম জেলা জজের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হলো খুনের আসামি: পুলিশ জানায়, সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া আশরাফ হোসেন সরকার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। আশরাফ শহর যুবলীগের সভাপতি। তাঁর ভাই আওয়ামী লীগের নেতা আবদুল মতিন সরকারও আসামি।
লোকমান হত্যার পর আশরাফ ঢাকায় আত্মগোপন করেন। তাঁকে গত মঙ্গলবার রাতে সহকারী কমিশনার ছানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল দক্ষিণ খিলগাঁওয়ের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। ওই বাসাটি চুয়াডাঙ্গার যুগ্ম জেলা জজ সালাহউদ্দিন মো. আকরামের। ডিবির অভিযানের সময় যুগ্ম জেলা জজ আকরাম বাসাতেই ছিলেন। তিনি নিজেকে আশরাফের আত্মীয় পরিচয় দেন বলে পুলিশের একটি সূত্র জানায়।
খুনের মামলার আসামিকে কেন আশ্রয় দিলেন—প্রথম আলোর পক্ষ থেকে মোবাইল ফোনে এ কথা জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আকরাম কোনো জবাব না দিয়ে লাইন কেটে দেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, কোনো কারণ ছাড়াই আকরাম দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। তাঁকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
তিন-চার মাস ধরে পরিকল্পনা: পুলিশ সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফ বলেন, লোকমানকে খুন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যুক্ত ছিলেন মোবারক হোসেন। খুনের পরিকল্পনা হয় তিন-চার মাস আগে। খুনি ভাড়া করার জন্য তাঁকে তিন লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেন মোবারক। মোবারক এ জন্য কয়েকজনের সঙ্গে বৈঠকও করেন। দুটি বৈঠক হয় ঢাকায়।
প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে আশরাফ দাবি করেন, তিনি খুনের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আশরাফের ছোড়া গুলি লোকমানের বুকের বাঁ পাশে লাগে। নরসিংদীর পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, আশরাফ খুনের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করলেও নিজে গুলি ছোড়ার কথা স্বীকার করেননি।
পুলিশ যা বলেছে: নরসিংদী জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা দাবি করেন, এ হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাঁরা পেয়েছেন। পরিকল্পনাকারীদের শনাক্ত করতে পেরেছেন। তবে খুনের ঘটনায় সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের সবাইকে চিহ্নিত করতে পারেননি এখনো।
অবশ্য নরসিংদীর পুলিশ সুপার দাবি করেন, ‘তদন্তের অনেক অগ্রগতি হয়েছে।’
শোকসভা: গতকাল লোকমানের স্মরণে নরসিংদী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদ শোকসভা ও দোয়া মাহফিল করে।
নরসিংদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এই শোকসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নরসিংদী-১ আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম।
বিকেলে শহরের সেবা সংঘের মোড়ে পৌরবাসীর পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অহিভূষণ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে আরেকটি শোকসভা হয়।
No comments