প্রেম-প্রতারণা অতঃপর... by রুদ্র মিজান
সবচেয়ে
প্রিয় মানুষটির ভয়ঙ্কর প্রতারণার শিকার কিশোরী। সবই ঘটে তার সরলতার সুযোগ
নিয়ে। তাকে বিক্রি করে দেয়া হয় পতিতালয়ে। তারপর কিশোরীকে সহ্য করতে হয়
নির্মম পাশবিক নির্যাতন। একপর্যায়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সহযোগিতায়
উদ্ধারও করা হয় তাকে। কিন্তু বিচার পায়নি কিশোরী। ঘটনাটি প্রায় আট মাস
আগের। দরিদ্র পরিবারের এই কিশোরী এখন রোগাক্রান্ত।
অভাব-অনটনে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে তাকে।
গতকাল দুপুরে কথা হয় তার সঙ্গে। তার জীবনে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের সেই করুণ গল্পটি বলতে গিয়ে সে জানায়, দরিদ্র পরিবারের বড় সন্তান সে। বাবা মারা যান ছোটবেলায়। সংসারে ছোট ভাই আর মা। অভাব লেগেই আছে। পরিবারের আর্থিক হাল ধরতেই বরিশাল থেকে এক রাতে লঞ্চে করে ঢাকায় আসে কিশোরী। এক আত্মীয়ের মাধ্যমে কর্মস্থান হয় পোষাক কারখানায়। যাত্রাবাড়ীতে মেসে থাকে। এক সপ্তাহ দিনে, পরের সপ্তাহে রাতে ডিউটি। সপ্তাহ শেষে বেতন। ভালোই চলছিল। এর মধ্যেই পরিচয় হয় মনিরের সঙ্গে। মাগুরার ছেলে মনির কাজ করতো একটি সোয়েটার কোম্পানিতে।
মোবাইল ফোনে টাকা রিচার্জের দোকান থেকে ফোন নম্বর সংগ্রহ করে কথা বলে কিশোরীর সঙ্গে। কথায়-কথায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের। সরাসরি দেখা হয়, কথা হয়। এভাবেই ঘনিষ্ঠতায় পৌঁছে যায় তারা। মেয়েটি জানায়, মনির তাকে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখাতো। স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই চলাফেরা করতো তারা। ধোলাইপাড়ে বন্ধুর বাসা থেকে মিরপুরের আবাসিক হোটেলসহ বিভিন্নস্থানে রাত্রি যাপন করেছে তার সঙ্গে। প্রায়ই এই কিশোরীর কাছ থেকে টাকা খুঁজে নিতো মনির। হঠাৎ একদিন মনির জানায়, আর দেরি না, তাকে বিয়ে করবে। কিশোরীর আনন্দের শেষ নেই। স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে! মনিরের বন্ধু রফিক, শফিক ও বিশ্বকর্মার সহযোগিতায় একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে যাত্রাবাড়ী থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মুগদা এলাকায়। সেখানে ছবি নামে এক নারীর বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। বাসায় কিশোরীকে রেখে বাইরে যায় মনির। আসি বলে গেলেও তার আর আসা হয় না। দ্রুত ওই এলাকা ত্যাগ করে। কিশোরী পথ চেয়ে থাকে। কিন্তু বাসায় ঢুকেই চোখ যেন কপালে উঠে তার। প্রতিটি রুমে নারী-পুরুষ। কোনো কোনো রুমে একাধিক তরুণী। তারা স্বল্প বসনা। গল্প করছে, শুয়ে আছে। প্রেমিক মনিরকে না পেয়ে অস্থির কিশোরী। ছবির কাছে জানতে চাইলে সে জানায়, মনির আর আসবে না। তার প্রেম ও বিয়ে করার কথাটি ছিল ছলনা। মনির মূলত দালাল। টাকার বিনিময়ে কিশোরীকে ছবির কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। কিশোরী কান্নাকাটি করে। ছবির পায়ে পড়ে। অনুনয় করে, আমাকে এখান থেকে যেতে দিন। আমার জীবনটা নষ্ট করবেন না। অনুরোধ-অনুনয়ে সাড়া দেয় না ছবি। বরং আরো নির্দয় হয়ে উঠে। ছবি জানায়, কোনোভাবেই এখান থেকে বের হতে পারবে না। টাকার বিনিময়ে মনিরের কাছ থেকে কেনা হয়েছে তাকে। এখানে শরীর বিক্রির কাজ করতে হবে। কিশোরী চিৎকার করে। সঙ্গে সঙ্গে চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হয় তাকে।
নির্যাতিতা কিশোরী জানায়, তিনটি ছেলেকে ডেকে আনা হয়। জোর করে একটা কক্ষে আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করে ওই তিন যুবক। এভাবে একের পর এক ধর্ষণ করা হয় তাকে। ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করে কিশোরী। চিৎকার শুনে এগিয়ে যায় আশপাশের লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় মুগদা থানা পুলিশ। এলাকাবাসী ও পুলিশের সহযোগিতায় বাড়ির গেইট ভেঙ্গে অভিযান চালানো হয়। অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কিশোরীকে। আটক করা হয় ছবিসহ তার সঙ্গীদের। কিন্তু দালাল মনিরের কোনো হদিস নেই। কিশোরী জানায়, মনিরের বাড়ি মাগুরা। তার বাবার নাম সায়েম মোল্লা, মা রেখা বেগম।
নির্যাতিতা কিশোরী জানায়, পুলিশ তাকে উদ্ধার করেছে। কিন্তু তার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের নামে প্রতারণা করে বিক্রি করে দিলেও কোনো শাস্তি হয়নি মনিরের। মনির এখন কোথায় আছে তাও জানেনা কিশোরী। এমনকি ছবি নামের ওই নারী সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেনি সে। কিশোরী এখন অসুস্থ। পেটে টিউমার হয়েছে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছে। স্টাফ কোর্য়ার্টার এলাকায় থাকে সে। নির্যাতিতা কিশোরী বলে, আমি গরিব মানুষ। টাকা নেই। খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করি। চিকিৎসা ঠিকমতো করাতে পারছি না। কিছু টাকা ছিলো তাও প্রেমের অভিনয় করে মনির নিয়ে গেছে। টাকা নেই, সাহায্য করার মতো মানুষ নেই। তাই মনিরের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপও নিতে পারিনি। ছবি নামের ওই নারী সম্পর্কে মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রলয় কুমার সাহা বলেন, ছবি নামের ওই নারী অসামাজিক ব্যবসায় জড়িত। তার বাসা মুগদা মানিকনগর এলাকায়। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। কিছুদিন আগেও তাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। ছবি প্রায়ই স্থান পরিবর্তন করে। ওই কিশোরী মেয়েকে বিক্রি করে দেয়া, ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানান, তিনি তখন ওই থানার দায়িত্বে ছিলেন না, যে কারণে এ বিষয়ে অবগত না। তবে এ ঘটনায় মামলা করতে চাইলে ওসি সহযোগিতা করবেন বলে জানান।
অভাব-অনটনে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে তাকে।
গতকাল দুপুরে কথা হয় তার সঙ্গে। তার জীবনে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের সেই করুণ গল্পটি বলতে গিয়ে সে জানায়, দরিদ্র পরিবারের বড় সন্তান সে। বাবা মারা যান ছোটবেলায়। সংসারে ছোট ভাই আর মা। অভাব লেগেই আছে। পরিবারের আর্থিক হাল ধরতেই বরিশাল থেকে এক রাতে লঞ্চে করে ঢাকায় আসে কিশোরী। এক আত্মীয়ের মাধ্যমে কর্মস্থান হয় পোষাক কারখানায়। যাত্রাবাড়ীতে মেসে থাকে। এক সপ্তাহ দিনে, পরের সপ্তাহে রাতে ডিউটি। সপ্তাহ শেষে বেতন। ভালোই চলছিল। এর মধ্যেই পরিচয় হয় মনিরের সঙ্গে। মাগুরার ছেলে মনির কাজ করতো একটি সোয়েটার কোম্পানিতে।
মোবাইল ফোনে টাকা রিচার্জের দোকান থেকে ফোন নম্বর সংগ্রহ করে কথা বলে কিশোরীর সঙ্গে। কথায়-কথায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের। সরাসরি দেখা হয়, কথা হয়। এভাবেই ঘনিষ্ঠতায় পৌঁছে যায় তারা। মেয়েটি জানায়, মনির তাকে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখাতো। স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই চলাফেরা করতো তারা। ধোলাইপাড়ে বন্ধুর বাসা থেকে মিরপুরের আবাসিক হোটেলসহ বিভিন্নস্থানে রাত্রি যাপন করেছে তার সঙ্গে। প্রায়ই এই কিশোরীর কাছ থেকে টাকা খুঁজে নিতো মনির। হঠাৎ একদিন মনির জানায়, আর দেরি না, তাকে বিয়ে করবে। কিশোরীর আনন্দের শেষ নেই। স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে! মনিরের বন্ধু রফিক, শফিক ও বিশ্বকর্মার সহযোগিতায় একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে যাত্রাবাড়ী থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মুগদা এলাকায়। সেখানে ছবি নামে এক নারীর বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। বাসায় কিশোরীকে রেখে বাইরে যায় মনির। আসি বলে গেলেও তার আর আসা হয় না। দ্রুত ওই এলাকা ত্যাগ করে। কিশোরী পথ চেয়ে থাকে। কিন্তু বাসায় ঢুকেই চোখ যেন কপালে উঠে তার। প্রতিটি রুমে নারী-পুরুষ। কোনো কোনো রুমে একাধিক তরুণী। তারা স্বল্প বসনা। গল্প করছে, শুয়ে আছে। প্রেমিক মনিরকে না পেয়ে অস্থির কিশোরী। ছবির কাছে জানতে চাইলে সে জানায়, মনির আর আসবে না। তার প্রেম ও বিয়ে করার কথাটি ছিল ছলনা। মনির মূলত দালাল। টাকার বিনিময়ে কিশোরীকে ছবির কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। কিশোরী কান্নাকাটি করে। ছবির পায়ে পড়ে। অনুনয় করে, আমাকে এখান থেকে যেতে দিন। আমার জীবনটা নষ্ট করবেন না। অনুরোধ-অনুনয়ে সাড়া দেয় না ছবি। বরং আরো নির্দয় হয়ে উঠে। ছবি জানায়, কোনোভাবেই এখান থেকে বের হতে পারবে না। টাকার বিনিময়ে মনিরের কাছ থেকে কেনা হয়েছে তাকে। এখানে শরীর বিক্রির কাজ করতে হবে। কিশোরী চিৎকার করে। সঙ্গে সঙ্গে চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হয় তাকে।
নির্যাতিতা কিশোরী জানায়, তিনটি ছেলেকে ডেকে আনা হয়। জোর করে একটা কক্ষে আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করে ওই তিন যুবক। এভাবে একের পর এক ধর্ষণ করা হয় তাকে। ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করে কিশোরী। চিৎকার শুনে এগিয়ে যায় আশপাশের লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় মুগদা থানা পুলিশ। এলাকাবাসী ও পুলিশের সহযোগিতায় বাড়ির গেইট ভেঙ্গে অভিযান চালানো হয়। অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কিশোরীকে। আটক করা হয় ছবিসহ তার সঙ্গীদের। কিন্তু দালাল মনিরের কোনো হদিস নেই। কিশোরী জানায়, মনিরের বাড়ি মাগুরা। তার বাবার নাম সায়েম মোল্লা, মা রেখা বেগম।
নির্যাতিতা কিশোরী জানায়, পুলিশ তাকে উদ্ধার করেছে। কিন্তু তার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের নামে প্রতারণা করে বিক্রি করে দিলেও কোনো শাস্তি হয়নি মনিরের। মনির এখন কোথায় আছে তাও জানেনা কিশোরী। এমনকি ছবি নামের ওই নারী সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেনি সে। কিশোরী এখন অসুস্থ। পেটে টিউমার হয়েছে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছে। স্টাফ কোর্য়ার্টার এলাকায় থাকে সে। নির্যাতিতা কিশোরী বলে, আমি গরিব মানুষ। টাকা নেই। খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করি। চিকিৎসা ঠিকমতো করাতে পারছি না। কিছু টাকা ছিলো তাও প্রেমের অভিনয় করে মনির নিয়ে গেছে। টাকা নেই, সাহায্য করার মতো মানুষ নেই। তাই মনিরের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপও নিতে পারিনি। ছবি নামের ওই নারী সম্পর্কে মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রলয় কুমার সাহা বলেন, ছবি নামের ওই নারী অসামাজিক ব্যবসায় জড়িত। তার বাসা মুগদা মানিকনগর এলাকায়। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। কিছুদিন আগেও তাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। ছবি প্রায়ই স্থান পরিবর্তন করে। ওই কিশোরী মেয়েকে বিক্রি করে দেয়া, ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানান, তিনি তখন ওই থানার দায়িত্বে ছিলেন না, যে কারণে এ বিষয়ে অবগত না। তবে এ ঘটনায় মামলা করতে চাইলে ওসি সহযোগিতা করবেন বলে জানান।
No comments