ডেড নিউজ ফেক নিউজ by আলী রাবাত
ডেড
নিউজের সংজ্ঞা কি? নিউজরুমে এর কোনো উত্তর নেই। সাংবাদিকতার আচরণবিধিতেও
তা অনুপস্থিত। তাহলে এটার জন্ম ইতিহাস কি? কোথায় এর জন্ম? আমাদের এখানেই বা
চালু হলো কীভাবে? আমরা এখন সবাই জানি কম-বেশি। বিশেষ করে নিউজ রুম টেবিলে
এই শব্দটি বেশ চালু হয়ে গেছে। যে খবরটি আপনি দিতে পারবেন না বা দেবেন না
সেটা হচ্ছে ডেড নিউজ। যাকে বাংলায় বলা হয় মৃত সংবাদ। দেশে দেশে মৃত সংবাদ
এখন বেশ জনপ্রিয়। সত্য বলার সাহস নেই, তাই কিল করে দিন খবরটি। আর এভাবে বেশ
পরিচিতি পেয়ে গেছে মৃত সংবাদ। ফেক নিউজ মানে ভুয়া সংবাদ। ইদানীং
বিশ্বব্যাপী ফেক নিউজের ছড়াছড়ি। ফেক নিউজের দাপটে আসল নিউজ হারিয়ে যাচ্ছে।
আসল সংবাদ খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে গেছে। প্রতিদিনই খুঁজি কিন্তু পাই না।
প্রয়াত সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ বই লিখে দালিলিক প্রমাণ রেখে গেছেন। সত্তর দশকের
শেষের দিকে তিনি লিখেছিলেন ‘সত্য বাবু মারা গেছেন’।
অনেকেই সেদিন ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘সত্য বাবু লাইফ সাপোর্টে’। মারা গেছেন এখনো বলা যায় না। এখন সবাই একবাক্যে কবুল করেন আসলেই সত্য বাবু আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। ফয়েজ ভাই বেঁচে থাকলে এখন কি লিখতেন? নিশ্চিত করে বলতে পারি, তিনি লিখতেন, সত্য বাবু মারা যাননি। আমরাই মরে গেছি। যাই হোক, বিতর্ক এখানে নয়। ফেক নিউজ কেন এতটা জনপ্রিয় হলো তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে অনেকে দায়ী করেন। আমি তাদের সঙ্গে আংশিক একমত। কোনো খবর যাচাই-বাছাই না করে খবর দেন অনেকে। এতে করে আসল সংবাদ কিছু সময়ের জন্য উধাও হয়ে যায়। অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করার এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা প্রতি মুহূর্তে দেখছি। টিভির স্ক্রলও এর বাইরে নয়। প্রয়াত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের মৃত্যু সংবাদ দিয়ে কোনো একটি টেলিভিশন বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছিল। আবার আরেকটা প্রবণতা লক্ষ্য করছি, নিছক প্রতিযোগিতার জন্য যাচাই-বাছাই না করে অনেকে খবরটি দিয়ে বসেন। অতিসম্প্রতি সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর মৃত্যু নিয়েও গুজবের তৈরি হয়।
সংবাদপত্রের অনলাইন সংস্করণেও একই প্রবণতা দেখা যায়। এর ফলে মানুষ সত্যকে ভুলে যাচ্ছে। মিথ্যার পেছনে ছুটছে। কেউ কেউ ভুয়া সংবাদ এমনভাবে প্রচার করেন যা দেখে বোঝা কঠিন আসল সত্য কোনটি। ইতিহাস নিয়েও একই কাণ্ড ঘটে চলেছে। এ কারণে সাংবাদিকতা এখন খুবই ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। আপনি হয়তো সত্য খুঁজতে গিয়ে খবরটি দিলেন না। অন্যরা দিয়ে বসলো। তখন আপনার অবস্থা কি? আখেরে হয়তো আপনি সঠিক, লোকজন বলবে।
এর আগে তো ট্রায়াল হয়ে যাবে। এভাবে প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে আমরা ট্রায়ালের মুখোমুখি হচ্ছি। পেট বানানো খবর, আর টেবিলে বসে বানানো খবরের মধ্যে তফাৎ কি? আসলে কোনো তফাৎই নেই। দুটি খবরের সূত্রই হচ্ছে ভুয়া খবর। অনেকে ভুয়া খবর দিয়ে মজা লুটেন। সুবিধা নেন। হতচকিত করেন জাতিকে। এটা নাকি এক ধরনের আনন্দ। কিন্তু তারা কি একবারও ভেবে দেখছেন এর ফলে গণমাধ্যম বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। ইলেকট্রনিক বলেন আর প্রিন্ট বলেন উভয় মিডিয়াই এখন নানা চাপের মধ্যে। এক অজানা ভয় পেয়ে বসেছে নিউজ রুমকে। এখন আর অদৃশ্য ফোনের কোনো দরকার হয় না। নিজেরাই রপ্ত করে ফেলেছি ফেক নিউজ কিভাবে প্রচার করতে হয়। আসল খবরের মৃত্যু নিয়ে এখন কেউ আর মোটেই চিন্তিত নয়। ওয়ার্ল্ড এডিটরস কাউন্সিলের সাম্প্রতিক বৈঠকে বলা হয়েছে, সাহস করে সত্য খুঁজতে হবে। অদৃশ্য শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করা চলবে না। বললেই হলো, বোকা নাকি! এতবড় প্রাপ্তি পায়ে ঠেলে দেবো। এই যখন অবস্থা তখন আপনার-আমার কি করার আছে?
আলী রাবাত, ঢাকা
অনেকেই সেদিন ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘সত্য বাবু লাইফ সাপোর্টে’। মারা গেছেন এখনো বলা যায় না। এখন সবাই একবাক্যে কবুল করেন আসলেই সত্য বাবু আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। ফয়েজ ভাই বেঁচে থাকলে এখন কি লিখতেন? নিশ্চিত করে বলতে পারি, তিনি লিখতেন, সত্য বাবু মারা যাননি। আমরাই মরে গেছি। যাই হোক, বিতর্ক এখানে নয়। ফেক নিউজ কেন এতটা জনপ্রিয় হলো তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে অনেকে দায়ী করেন। আমি তাদের সঙ্গে আংশিক একমত। কোনো খবর যাচাই-বাছাই না করে খবর দেন অনেকে। এতে করে আসল সংবাদ কিছু সময়ের জন্য উধাও হয়ে যায়। অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করার এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা প্রতি মুহূর্তে দেখছি। টিভির স্ক্রলও এর বাইরে নয়। প্রয়াত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের মৃত্যু সংবাদ দিয়ে কোনো একটি টেলিভিশন বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছিল। আবার আরেকটা প্রবণতা লক্ষ্য করছি, নিছক প্রতিযোগিতার জন্য যাচাই-বাছাই না করে অনেকে খবরটি দিয়ে বসেন। অতিসম্প্রতি সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর মৃত্যু নিয়েও গুজবের তৈরি হয়।
সংবাদপত্রের অনলাইন সংস্করণেও একই প্রবণতা দেখা যায়। এর ফলে মানুষ সত্যকে ভুলে যাচ্ছে। মিথ্যার পেছনে ছুটছে। কেউ কেউ ভুয়া সংবাদ এমনভাবে প্রচার করেন যা দেখে বোঝা কঠিন আসল সত্য কোনটি। ইতিহাস নিয়েও একই কাণ্ড ঘটে চলেছে। এ কারণে সাংবাদিকতা এখন খুবই ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। আপনি হয়তো সত্য খুঁজতে গিয়ে খবরটি দিলেন না। অন্যরা দিয়ে বসলো। তখন আপনার অবস্থা কি? আখেরে হয়তো আপনি সঠিক, লোকজন বলবে।
এর আগে তো ট্রায়াল হয়ে যাবে। এভাবে প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে আমরা ট্রায়ালের মুখোমুখি হচ্ছি। পেট বানানো খবর, আর টেবিলে বসে বানানো খবরের মধ্যে তফাৎ কি? আসলে কোনো তফাৎই নেই। দুটি খবরের সূত্রই হচ্ছে ভুয়া খবর। অনেকে ভুয়া খবর দিয়ে মজা লুটেন। সুবিধা নেন। হতচকিত করেন জাতিকে। এটা নাকি এক ধরনের আনন্দ। কিন্তু তারা কি একবারও ভেবে দেখছেন এর ফলে গণমাধ্যম বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। ইলেকট্রনিক বলেন আর প্রিন্ট বলেন উভয় মিডিয়াই এখন নানা চাপের মধ্যে। এক অজানা ভয় পেয়ে বসেছে নিউজ রুমকে। এখন আর অদৃশ্য ফোনের কোনো দরকার হয় না। নিজেরাই রপ্ত করে ফেলেছি ফেক নিউজ কিভাবে প্রচার করতে হয়। আসল খবরের মৃত্যু নিয়ে এখন কেউ আর মোটেই চিন্তিত নয়। ওয়ার্ল্ড এডিটরস কাউন্সিলের সাম্প্রতিক বৈঠকে বলা হয়েছে, সাহস করে সত্য খুঁজতে হবে। অদৃশ্য শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করা চলবে না। বললেই হলো, বোকা নাকি! এতবড় প্রাপ্তি পায়ে ঠেলে দেবো। এই যখন অবস্থা তখন আপনার-আমার কি করার আছে?
আলী রাবাত, ঢাকা
No comments