বাংলাদেশের জন্য দ্রুত খুলছে জাপানের দুয়ার by রাজীব আহমেদ
চীন,
থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ফিলিপাইন আজকে যে অবস্থানে পৌঁছেছে,
তার পেছনে একটা বড় অবদান জাপানিদের। জাপানি কোম্পানিগুলো ওই সব দেশে
কারখানা করেছে, প্রযুক্তি হস্তান্তর করেছে, তাতে স্থানীয় শিল্পের সক্ষমতা
তৈরি হয়েছে। ফলাফল মানুষের জীবনমানের উন্নতি হয়েছে।
বাংলাদেশেও এখন জাপানি কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ বাড়ছে। পাশাপাশি জাপান সরকারও বাংলাদেশে তাদের উন্নয়ন সহায়তা বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে জাপানের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের রপ্তানি বাড়ছে। এতে করে জাপান বাংলাদেশের বড় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদার হয়ে উঠছে।
জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, একটি হাঁস উড়াল দিলে তাকে দেখে অন্য হাঁসও উড়তে শুরু করে। তেমনি জাপানের মতো বিনিয়োগকারী দেশ যখন কোনো দেশে যায়, তখন অন্য বিনিয়োগকারীরাও সেখানে বিনিয়োগের চিন্তা করে।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আরও বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আজকের উত্থানের পেছনে জাপানের ভূমিকাকে অনেক বড় বলে মনে করা হয়। জাপান অনেক দিন ধরেই চীনের পাশাপাশি অন্য দেশে কারখানা করার ওপর জোর দিচ্ছে, যাকে ‘চীন প্লাস ওয়ান’ নীতি বলা হয়। বাংলাদেশের উচিত যেসব ক্ষেত্রে নিজেদের সক্ষমতা কম, সেখানে জাপানিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করা। বিশেষ করে যন্ত্রপাতি, সংযোগ শিল্প, কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্য উৎপাদনে জাপানি বিনিয়োগ ভালো হবে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালে বাংলাদেশে কার্যরত জাপানি কোম্পানির সংখ্যা ছিল ৭০টি। এক দশক পর ২০১৮ সালে সংখ্যাটি ২৭৮-এ উন্নীত হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে কারখানা করেছে জাপানের মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড হোন্ডা। এছাড়া ইয়ামাহা মোটরসাইকেলের কারখানা করেছে এসিআই, যেখানে সহায়তা দিয়েছে জাপানের ইয়ামাহা মোটর করপোরেশন। তামাকজাত পণ্য উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান জাপান টোব্যাকো গত জুনে দেশের আকিজ গ্রুপের তামাক ব্যবসা কিনে নেয়। এতে জাপানের কোম্পানিটি বিনিয়োগ করছে ১৪৭ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ইস্পাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নিপ্পন স্টিল অ্যান্ড সুমিতমো মেটাল দেশীয় প্রতিষ্ঠান ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্টসের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইস্পাত কারখানা করছে। তারা ১০০ একর জমি বরাদ্দের বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে চুক্তি করেছে।
জাপানের সজিত করপোরেশন মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প পার্ক করতে চাইছে। জাপানের সুমিতমো করপোরেশন জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নকাজ করতে গত রোববার চুক্তি করেছে বেজার সঙ্গে। ঢাকায় একের পর এক স্টোর খুলছে জাপানি পোশাকের ব্র্যান্ড ইউনিক্লো ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড মিনিসো।
জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিনিয়োগ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে জাপানি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ১ হাজার ৫৭০ কোটি ইয়েন বিনিয়োগ করেছে। প্রতি ইয়েনের বিনিময়মূল্য ৭৭ পয়সা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ২১২ কোটি টাকা। আগের বছরের চেয়ে এ দেশে জাপানের বিনিয়োগ বেড়েছে ৩৯ শতাংশ বেশি। অবশ্য ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, এমনকি মিয়ানমারের তুলনায় পরিমাণটি নগণ্য।
জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস, অর্থাৎ জুলাই-এপ্রিল সময়ে জাপানে ১১৭ কোটি ডলারের বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৩ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে জাপান থেকে বাংলাদেশের পণ্য আমদানিও বাড়ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে ১৮৭ কোটি ডলারের জাপানি পণ্য আমদানি হয়েছে, এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি প্রায় ৪ শতাংশ।
জাপান ও বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেবিসিসিআই) জেনারেল সেক্রেটারি তারেক রাফি ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, জাপানিরা কোনো দেশে বিনিয়োগ করলে শুধু মুনাফা করে চলে যায় না। তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য কাজ করে। তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশে আরও অনেক জাপানি কোম্পানি বিনিয়োগ করবে।
বাংলাদেশেও এখন জাপানি কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ বাড়ছে। পাশাপাশি জাপান সরকারও বাংলাদেশে তাদের উন্নয়ন সহায়তা বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে জাপানের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের রপ্তানি বাড়ছে। এতে করে জাপান বাংলাদেশের বড় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অংশীদার হয়ে উঠছে।
জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, একটি হাঁস উড়াল দিলে তাকে দেখে অন্য হাঁসও উড়তে শুরু করে। তেমনি জাপানের মতো বিনিয়োগকারী দেশ যখন কোনো দেশে যায়, তখন অন্য বিনিয়োগকারীরাও সেখানে বিনিয়োগের চিন্তা করে।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আরও বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আজকের উত্থানের পেছনে জাপানের ভূমিকাকে অনেক বড় বলে মনে করা হয়। জাপান অনেক দিন ধরেই চীনের পাশাপাশি অন্য দেশে কারখানা করার ওপর জোর দিচ্ছে, যাকে ‘চীন প্লাস ওয়ান’ নীতি বলা হয়। বাংলাদেশের উচিত যেসব ক্ষেত্রে নিজেদের সক্ষমতা কম, সেখানে জাপানিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করা। বিশেষ করে যন্ত্রপাতি, সংযোগ শিল্প, কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্য উৎপাদনে জাপানি বিনিয়োগ ভালো হবে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালে বাংলাদেশে কার্যরত জাপানি কোম্পানির সংখ্যা ছিল ৭০টি। এক দশক পর ২০১৮ সালে সংখ্যাটি ২৭৮-এ উন্নীত হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে কারখানা করেছে জাপানের মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড হোন্ডা। এছাড়া ইয়ামাহা মোটরসাইকেলের কারখানা করেছে এসিআই, যেখানে সহায়তা দিয়েছে জাপানের ইয়ামাহা মোটর করপোরেশন। তামাকজাত পণ্য উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান জাপান টোব্যাকো গত জুনে দেশের আকিজ গ্রুপের তামাক ব্যবসা কিনে নেয়। এতে জাপানের কোম্পানিটি বিনিয়োগ করছে ১৪৭ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ইস্পাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নিপ্পন স্টিল অ্যান্ড সুমিতমো মেটাল দেশীয় প্রতিষ্ঠান ম্যাকডোনাল্ড স্টিল বিল্ডিং প্রোডাক্টসের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইস্পাত কারখানা করছে। তারা ১০০ একর জমি বরাদ্দের বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সঙ্গে চুক্তি করেছে।
জাপানের সজিত করপোরেশন মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প পার্ক করতে চাইছে। জাপানের সুমিতমো করপোরেশন জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নকাজ করতে গত রোববার চুক্তি করেছে বেজার সঙ্গে। ঢাকায় একের পর এক স্টোর খুলছে জাপানি পোশাকের ব্র্যান্ড ইউনিক্লো ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড মিনিসো।
জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিনিয়োগ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে জাপানি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ১ হাজার ৫৭০ কোটি ইয়েন বিনিয়োগ করেছে। প্রতি ইয়েনের বিনিময়মূল্য ৭৭ পয়সা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ২১২ কোটি টাকা। আগের বছরের চেয়ে এ দেশে জাপানের বিনিয়োগ বেড়েছে ৩৯ শতাংশ বেশি। অবশ্য ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, এমনকি মিয়ানমারের তুলনায় পরিমাণটি নগণ্য।
জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস, অর্থাৎ জুলাই-এপ্রিল সময়ে জাপানে ১১৭ কোটি ডলারের বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৩ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে জাপান থেকে বাংলাদেশের পণ্য আমদানিও বাড়ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে ১৮৭ কোটি ডলারের জাপানি পণ্য আমদানি হয়েছে, এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি প্রায় ৪ শতাংশ।
জাপান ও বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেবিসিসিআই) জেনারেল সেক্রেটারি তারেক রাফি ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, জাপানিরা কোনো দেশে বিনিয়োগ করলে শুধু মুনাফা করে চলে যায় না। তারা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য কাজ করে। তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশে আরও অনেক জাপানি কোম্পানি বিনিয়োগ করবে।
বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগ ৩৯% বেড়েছে। জাপানে রপ্তানি বেড়েছে ২৩%। বিনিয়োগ-বাণিজ্যে বড় অংশীদার হয়ে উঠছে জাপান। |
No comments