নিরঙ্কুশ জয় পাবে ক্ষমতাসীন দল
ব্রিটেনের আগাম নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল। ৮ জুন অনুষ্ঠিতব্য ওই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’কেই সমর্থন দিতে যাচ্ছেন যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ ভোটার। ব্রিটিশ দৈনিক সানডে মিররের পক্ষে কমরেস জরিপ, সানডে টাইমসের পক্ষে ইউগভের জরিপ ও দ্য অবজার্ভারের মতামত জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর দ্য ইনডিপেনডেন্টের। সানডে মিরর জানায়, যুক্তরাজ্যের ভোটারদের ৫০ শতাংশ তেরেসা মের দল কনজারভেটিভকে ভোট দেবে জানিয়েছে। ১৯৯১ সালের পর এ সমর্থন সর্বোচ্চ। জরিপ সংস্থা কমরেসের মতে, ২০০২ সালের এপ্রিলের পর যুক্তরাজ্যের কোনো দল ৫০ শতাংশ জনসমর্থন পায়নি। আর রক্ষণশীল টরি দল সর্বশেষ এত সমর্থন পেয়েছিল ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে। ইউগভ পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, কনজারভেটিভ দলের প্রতি ভোটারদের সমর্থন ৪৮ শতাংশ।
লেবার পার্টিকে সমর্থন দেয়ার কথা জানিয়েছেন মাত্র ২৫ শতাংশ ভোটার। দ্য অবজারভারের মতামত জরিপে তেরেসা মের দল সমর্থন পেয়েছে ৪৫ শতাংশ। আর লেবার পার্টি পেয়েছে মাত্র ২৬ শতাংশ। জেরোমি করবিন দায়িত্ব নেয়ার পর লেবার পার্টি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বিভক্তিতে ভুগছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বের হয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) রায়ের পর সৃষ্ট অস্থির সময়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন তেরেসা মে। ব্রেক্সিটের বিপক্ষে থাকায় গণভোটে হেরে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ইইউ ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে নিজের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন তেরেসা মে। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে ইউরোপের সঙ্গে ব্রেক্সিট সমঝোতার দরকষাকষি করা তার জন্য সহজ হবে।
বোরকা নিষিদ্ধের প্রতিশ্রুতি ইউকিপের : ব্রিটেনে ৮ জুনের নির্বাচনকে সামনে রেখে অভিবাসনবিরোধী দল ইউকে ইনডিপেনডেন্টস পার্টি বা ইউকিপ বোরকা নিষিদ্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আজ দলটি তাদের নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো বা ইশতেহার ঘোষণা করবে। রোববার দলের নেতা পল নাটাল বিবিসিকে বলেন, তাদের ইশতেহারে মুসলিম মহিলাদের বোরকা বা নিকাব নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি থাকবে। কেউ না মানলে জরিমানা করা হবে। তিনি বলেন, জনসমক্ষে বোরকা নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছে। ব্রিটেনে এখন নিরাপত্তা ঝুঁকি অনেকে বেড়েছে, কিন্তু মুখ ঢাকা থাকলে সিসিটিভিতে তো তাকে শনাক্ত করা যাবে না। তিনি বলেন, আমি তো মুখোশ পরে বা মাথা-মুখ ঢাকা হেলমেট পরে ব্যাংকে ঢুকতে পারব না। আমি যদি না পারি, অন্যরা যদি না পারে, তাহলে কোনো একটি সম্প্রদায়ের জন্য ব্যতিক্রমী কেন হবে। নাটালের মতে, বোরকা মুসলিম নারীদের ব্রিটিশ সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত হওয়ার পথে বাধা তৈরি করছে।
তিনি বলেন, ব্রিটেনে ৫৮ শতাংশ মুসলিম নারী যে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে, তার অন্যতম কারণ বোরকা। ফ্রান্সসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে জনসমক্ষে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বোরকা নিষিদ্ধের পাশাপাশি ইউকিপ নেতা বলেন, ব্রিটেনে এখন মূল আইনের সমান্তরালে মুসলিম শারিয়াহ আইনের প্রয়োগ হচ্ছে। তার দল জিতলে তা বন্ধ করে দেয়া হবে। তিনি বলেন, এ দেশে এমন কোনো আদালত বা পরিষদ থাকতে পারে না, যেখানে নারীদের কথার দাম পুরুষের অর্ধেক। একটি উদার, গণতান্ত্রিক পশ্চিমা দেশে এটা চলতে পারে না। শারিয়াহ আদালত নিষিদ্ধের কথা বললেও রক্ষণশীল ইহুদি সমাজে প্রচলিত ধর্মীয় আদালতের বিরুদ্ধে কথা বলতে অস্বীকার করেন ইউকিপ নেতা।
No comments