মডেল রাউধার লাশ উত্তোলন
দাফনের ২৩ দিন পর পুনঃময়নাতদন্তের জন্য মডেল কন্যা রাউধা আতিফের লাশ কবর থেকে তোলা হয়েছে। সোমবার সকাল ৯টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর হেতেমখাঁ কবরস্থান থেকে তার লাশ তোলা হয়। এর আগে সকাল ৮টার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডির) কর্মকর্তারা কবরস্থানে যান। সিআইডি কর্মকর্তাদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. শফি ইকবাল ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আসমাউল হক উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডা. রক্তিম চৌধুরীর উপস্থিতিতে লাশ কবর থেকে তোলা হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করার পর বেলা পৌনে ১১টার দিকে লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়। সেখানে লাশের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার দিনের মধ্যে পুনরায় দাফনের সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির কর্মকর্তারা। লাশের ময়নাতদন্ত করতে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আমিরুল চৌধুরী, সিরাজগঞ্জের নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাহবুব হাফিজ এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজুর রহমানকে নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। লাশ তোলার সময় কবরস্থানে রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফও উপস্থিত ছিলেন।
তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রথম ময়নাতদন্তে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন, তার মেয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।' দ্বিতীয় ময়নাতদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলেও আশাবাদী ডা. মোহাম্মদ আতিফ। প্রসঙ্গত, গত ২৯ মার্চ রাজশাহীর নওদাপাড়ায় ইসলামী মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেল থেকে রাউধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাউধা এ কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। নীলনয়না রাউধা ছিলেন মালদ্বীপের একজন উঠতি মডেল। মাত্র একুশ বছরের রাউধার ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতি। এ ঘটনায় ওইদিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে নগরীর শাহমখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে। এরপর রামেকের মর্গেই রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। পরে মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত ও পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে গত ১ এপ্রিল রাউধার লাশ দাফন করা হয়। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, রাউধাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ অভিযোগে গত ১০ এপ্রিল রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আতিফ রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে তিনি রাজশাহীতেই অবস্থান করছেন। হত্যা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রাউধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ মামলায় রাউধার সহপাঠী সিরাত পারভীন মাহমুদকে (২১) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। সিরাতের বাড়ি ভারতের কাশ্মীরে। মামলা হলেও এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।
No comments