পশ্চিম তীরে ইসরাইলি দখলদারদের তাণ্ডব
ইসরাইলি বাহিনীর সহযোগিতায় পশ্চিমতীরের সালফিট শহরে তাণ্ডব চালিয়েছে আট হাজার অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনকারী। সেখানে ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি ভাংচুর ও দখল করেছে তারা। দখলকৃত এলাকায় ইহুদি রীতির ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করেছে ওই অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা। ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার এমন একটি ভিডিও অনলাইনে ছেড়েছেন ইসরাইলের এক মানবাধিকার কর্মী। খবর আল জাজিরার। ভিডিওতে দেখা যায়, মুখোশ পরা ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীরা কেবল ফিলিস্তিনিদের নয়, পশ্চিম তীরে অবস্থানরত মানবাধিকার কর্মী ও সমাজকর্মীদেরও মারধর করেছে। পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের বাড়িতে পাথরও নিক্ষেপ করে তারা। ইসরাইলি সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল সেভেনের এক খবরে বলা হয়েছে, ওই আট হাজার বসতি স্থাপনকারীর মধ্যে ফ্রান্স থেকে সম্প্রতি আসা ২৫০ ইহুদিও রয়েছে। তারা পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি গড়তে যাচ্ছে। এরই মধ্যে পশ্চিম তীরের তিনটি ঐতিহাসিক স্থানে অস্থায়ী আবাস গড়েছে তারা। তাঁবু তৈরি ও টয়লেট নির্মাণ করে তারা ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ফিলিস্তিনে অভিবাসন এবং বসতি স্থাপন অবৈধ। ২০ বছরের বিরতি শেষে সম্প্রতি অধিকৃত পশ্চিম তীরে নতুন বসতি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ইসরাইলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিপরিষদ। পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি কমিয়ে আনতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও ওয়াশিংটনের মধ্যে আলোচনা চলাকালেই বসতি সম্প্রসারণের এ বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয় ইসরাইল।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নতুন অবৈধ বসতি অনুমোদনের নিন্দা জানিয়ে আবারও ইসরাইলকে শান্তির পথে বাধা হিসেবে শনাক্ত করেছে জাতিসংঘ। ’৯০-এর দশকের শুরু থেকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় শান্তি আলোচনা হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা চায় পশ্চিম তীরে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে এর রাজধানী বানাতে। ১৯৬৭ সালের আরব যুদ্ধের পর থেকে ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে। পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের অবিভাজ্য রাজধানী বলে দাবি করে থাকে ইসরাইল। অবশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পূর্ব জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৬৭ সালের পর পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে একশরও বেশি বসতি স্থাপন করেছে ইসরাইল। পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে স্থাপিত প্রায় ১৪০টি বসতিতে ৬ লাখেরও ইসরাইলি বসবাস করে। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এ বসতি স্থাপনকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হলেও তা মানতে নারাজ তেলআবিব। গত বছর ডিসেম্বরে ইসরাইলি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে এক প্রস্তাব পাস হয়। ওবামা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ভূমিকায় পাস হওয়া ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ‘১৯৬৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইল যে বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে, তার কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’
No comments