ক্লাসিকোর সঙ্গে মনও জিতলেন মেসি
ইনানিং আলোচনাটা খুব বেশি। লিওলেন মেসি শেষ, ফুরিয়ে গেছে। 'শেষ' দেখে ফেলা আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর মেসিই শেষ করে দিলেন রিয়াল মাদ্রিদকে। চ্যাম্পিয়নস লীগে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে উড়তে থাকা জিনেদিন জিদানের দলকে ৩-২ গোলে ধরাশায়ী করেছে বার্সেলোনা। রোববার রাতে রিয়ালের ঘরের মাঠ বার্না ব্যুতে জোড়া গোল করেন লিওলেন মেসি। এর মধ্যে শেষ মিনিটে শ্বাসরুদ্ধকর জয়সূচক গোল। বাকি গোলটি ইভান রাকিতিচের। রিয়ালের পক্ষে গোল দুটি করেন কাসেমিরা ও হামেস রদ্রিগেজ। এদিন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর থেকে ম্যাচের সব আলো নিজের দিকে কেড়ে নেন মেসি। মর্যাদার এল ক্লাসিকোর সঙ্গে তিনি জয় করেন ফুটবলপ্রেমীদের মনও। বার্সেলোনার জয়ে লা লীগার শিরোপা লড়াই এখন উন্মুক্ত হয়ে গেল। ৩৩ ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লুইস এনরিখের বার্সা। এক ম্যাচ কম খেলে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রিয়াল মাদ্রিদ। আর তৃতীয় অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট ৬৮, ৩৩ ম্যাচ শেষে। বার্না ব্যুতে সত্যিকারের এল ক্লাসিকো উপহার দিয়েছে দু'দলের খেলোয়াড়েরা। কী ছিল না এই ম্যাচে! আক্রমণ, পাল্টা-আক্রমণ, গোল-পাল্টা গোল, খেলোয়াড়দের মেজাজ হারানো, নাটকীয়তা, সবকিছু যেন পসরা সাজিয়ে বসেছিল। ২৮ মিনিটে কাসেমিরোর গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল।
প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ৩৩ মিনিটে লিওনেল মেসির গোলে সমতায় ফেরে বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধের ৭৩ মিনিটে ইভান রাকিতিচের গোলে বার্সেলোনা আবার এগিয়ে যখন ম্যাচটা প্রায় নিজেদের করে এনেছে, ঠিক তখনই ৮৫ মিনিটে হামেজ রদ্রিগেজের জাদুতে রিয়ালের সমতা। অবশ্য দুই মিনিট পরই মেসিকে বাজে ট্যাকল করে সার্জিও রামোস লাল কার্ড দেখলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় রিয়াল। তবে সবচেয়ে বড় চমকটা ফুটলপ্রেমীদের জন্য শেষ মুহূর্তের জন্যই তুলে রেখেছিলেন লিওলেন মেসি। ম্যাচের যোগ করা সময়ে সার্জি রবার্তো নিজেদের সীমানা থেকে বল নিয়ে প্রায় একক প্রচেষ্টায় রিয়ালের সীমানায় এসে বল বাড়ান আন্দ্রে গোমেজের কাছে। গোমেজ বলটি ডান দিকে ঠেলে দেন জর্ডি আলবার কাছে। আলবা চমৎকার এক পাসে বক্সের মধ্যে ঠিকই খুঁজে নেন দলের সেরা তারকা মেসিকে। আর্জেন্টাইন তারকা বল ধরেই রিয়াল গোলকিপার নাভাসকে ফাঁকি দিয়ে জালে পাঠান। স্বাগতিক শিবিরে তখন রাজ্যের হতাশা। আর বার্না ব্যুর কোনো এক কোণায় বসা বার্সাদের গুটি কয়েক সমর্থকরাই তখন মাঠের সংখ্যাগরিষ্ট দর্শক। জয়সূচক গোলের পর কেমন যেন আবেগপ্রবণ হয়ে উঠলেন মেসি। স্বভাববিরুদ্ধ এক আচরণ করে বসলেন। জার্সি খুলে সেটি মেলে ধরলেন গ্যালারির দিকে। মেসির আবেগ তো আর ফুটবলের আইন বোঝে না। হলুদ কার্ডই দেখতে হল তাকে। তাতে কি, ২০১৪ সালের পর এই প্রথম বার্না ব্যুতে গোল পেলেন মেসি। তবে স্বাগতিকদের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় জয় পেল বার্সা। বার্না ব্যুতে গত মৌসুমের এল ক্লাসিকো বার্সা জিতেছিল ৪-০ ব্যবধানে।
No comments