সাড়ে সাত মাসে ১২১ বিচারবহির্ভূত হত্যা by আবু সালেহ আকন
এবার
‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হলেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই নেতা। নিহত দুই নেতার
বিরুদ্ধেই হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় নিহত হয়েছেন ছাত্রলীগ
হাজারীবাগ থানা সভাপতি রফিকুল ইসলাম আরজু (২৮) এবং মাগুরায় আলোচিত মাতৃজঠরে
শিশু গুলিবিদ্ধ ও হত্যা মামলার আসামি মেহেদী হাসান আজিবর (৩৮)। এ ছাড়া
ঢাকায় শান্তিনগরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে মারা গেছেন ফয়েজ বাবু (২৮)
নামের এক যুবক।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে গত সাড়ে সাত মাসে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ১২১ জন। এদের অনেকের বিরুদ্ধেই হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগের কথা জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে মানবাধিকার কর্মী ও বিশ্লেষকেরা বিচারবহির্ভূত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বিগ্ন। অনেকেই বলেছেন দেশে আইনের শাসনহীনতায় এ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে। কোনো কোনো ঘটনা নিয়ে বিতর্কও আছে পরিবারের পক্ষ থেকে। ওই সব পরিবার দাবি করেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরপরাধ মানুষকে ধরে নিয়ে গুলি করে মেরে ফেলেছে।
রাজধানীর হাজারীবাগে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম আরজু র্যাবের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। গত সোমবার সকালে মোবাইল চুরির অভিযোগ প্রতিবেশী রাজা নামে ১৭ বছরের কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় রাজার পরিবার আরজুকে প্রধান আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরই র্যাব-১০ এর একটি দল আরজুকে গ্রেফতার করে। পরে তিনি র্যাবের ক্রস ফায়ারে নিহত হন।
গত ২৩ জুলাই মাগুরায় যুবলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে গোলাগুলির ঘটনায় নিহত হন মোমিন ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন নাজমা ও তার গর্ভের সন্তান। গুলিতে শিশুটি মাতৃজঠরে এ ফোঁড় ও ফোঁড় হয়ে যায়। মা-মেয়ে এখনো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এই মামলার এজাহারভুক্ত দ্বিতীয় আসামি মেহেদী হাসান আজিবর (৩৮) গ্রেফতারের পর গত সোমবার রাতে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। মাগুরা শহরতলির দোয়ারপাড় এলাকার মোহাম্মদ আলীর মেহগনি বাগান থেকে পুলিশ আজিবরের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে।
এ দিকে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় র্যাবের তাড়া খেয়ে পালানোর সময় তিন তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে কাউছার রহমান বাবু ওরফে ফয়েজ বাবু (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। র্যাব বলেছে, গত রোববার সন্ধ্যায় শান্তিনগর মসজিদ মার্কেটের তৃতীয় তলায় ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে খবর পেয়ে র্যাব-৩ এর একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদকব্যবসায়ী ফয়েজ বাবু ওই ভবনের ছাদে উঠে যায়। পরে পাইপ বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করলে সেখান থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয় ফয়েজ। পরে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে গতকাল মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টায় তার মৃত্যু হয়।
গত ৯ আগস্ট সুন্দরবনে বাঘের চামড়া পাচারের অভিযোগে আটককৃত ছয় ব্যক্তি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি তারা বনদস্যু। বন্দুকযুদ্ধে তারা নিহত হয়েছেন। তবে পরিবারের দাবি তাদের আটকের পর হত্যা করা হয়েছে।
এভাবেই চলছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে গত সাড়ে সাত মাসে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ১২১ জন। এর মধ্যে ‘ক্রসফায়ার’এ নিহত হয়েছেন ৯৫ জন। গুলিতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন, পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে দুইজন, শ্বাস রোধে হত্যা করা হয়েছে একজন, নির্যাতনে তিনজন ও অন্যান্য কারণে চারজন। নিহতদের মধ্যে জানুয়ারি মাসে ১৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৮ জন, মার্চে ১২ জন, এপ্রিলে ৯ জন, মে মাসে ১৮ জন, জুনে ৯ জন, জুলাইয়ে সাতজন এবং চলতি মাসের এ ক’দিনে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে গতকালই নিহত হয়েছেন তিনজন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত থাকায় দেশে আইনের শাসন ও বিচারব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। অপরাধ প্রমাণের আগেই রাষ্ট্রীয় বাহিনী বিনাবিচারে অভিযুক্তদের হত্যা করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।’
বিচারবহির্ভূত হত্যা সম্পর্কে মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন বলেন, দেশ যারা পরিচালনা করছে বা শাসন করছে এবং যাদের ওপর আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব তাদের ভেতরে হয়তো শটকার্ট পথে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি করার মনোভাব বিরাজ করছে। ফলে যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে বা যারা অপরাধী তাদের ব্যাপারে এই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। হয়তো তাদের ধারণা এতে ভয়ার্ত পরিবেশের সৃষ্টি হলে অপরাধীরা আর অপরাধ করবে না। তবে প্রতিটি ক্রিয়ারই একটি প্রতিক্রিয়া আছে। ফলে সমাজে এই ধরণের ভয় সৃষ্টির ঘটনা আরো ঘটছে। এই অবস্থা থেকেই শিশু হত্যা, কারো চুল কেটে নেয়ার মতো মানসিকতার সৃষ্টি হচ্ছে। নুর খান লিটন বলেন, কোনো সভ্য দেশে এই হত্যাকান্ড সমর্থন করা যায় না। আমাদের ভাবতে হবে আমরা সাময়িক সমাধান চাই, না স্থায়ী সমাধান চাই।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান গতকাল একটি টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে বলেন, বিচারবহির্ভূত কোনো কিছুই সমর্থনযোগ্য নয়।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি মিডিয়া নজরুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলতে আমাদের আইনে কোনো শব্দ নেই। হত্যা না ব্যক্তিগত আত্মরক্ষায় ঘটনা ঘটেছে, এটি বৈধ না অবৈধ তা বলার এখতিয়ার একমাত্র ম্যাজিস্ট্র্রেটের। কোনো ঘটনা ঘটলে ম্যাজিস্ট্র্রেট তদন্ত করে তা বলবেন। এর বাইরে কেউ এটি নিয়ে কথা বললে সেটি আইনকে চ্যালেঞ্জ করার শামিল। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে কেউ নিহত হলে সেটি যদি যথার্থ না হয় তবে সরাসরি খুনের মামলা হবে। তিনি বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন এবং একে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলছেন তারা আইনের ঊর্ধ্বে নন। তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি পুলিশকে যেমন তার কাজের জন্য আইনের সীমারেখার মধ্যে কাজ করতে হবে। তেমনি যখন সমালোচনা করা হবে তখন আইনের দৃষ্টিকোণ থেকেই তিনি সমালোচনার অনুরোধ জানান।
র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং প্রধান মুফতি মাহমুদ খান নয়া দিগন্তকে বলেন, র্যাবের সাথে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তা কখনোই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নয়। তিনি বলেন, র্যাব অপরাধীদের ধরতে গেলে সেখানে দেখা যায় অনেক সময় অপরাধীরা প্রথমে র্যাবের ওপর গুলি চালায়। র্যাব সদস্যরা তখন আত্মরক্ষা ও জানমাল রক্ষার্থে গুলিবর্ষণে বাধ্য হয়। এতে কেউ কেউ মারা যায়। আগে দুর্বৃত্তরা ফায়ার করে এবং পরে র্যাব বাধ্য হয়ে গুলিবর্ষণ করে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে গত সাড়ে সাত মাসে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ১২১ জন। এদের অনেকের বিরুদ্ধেই হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগের কথা জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে মানবাধিকার কর্মী ও বিশ্লেষকেরা বিচারবহির্ভূত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বিগ্ন। অনেকেই বলেছেন দেশে আইনের শাসনহীনতায় এ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে। কোনো কোনো ঘটনা নিয়ে বিতর্কও আছে পরিবারের পক্ষ থেকে। ওই সব পরিবার দাবি করেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরপরাধ মানুষকে ধরে নিয়ে গুলি করে মেরে ফেলেছে।
রাজধানীর হাজারীবাগে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম আরজু র্যাবের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। গত সোমবার সকালে মোবাইল চুরির অভিযোগ প্রতিবেশী রাজা নামে ১৭ বছরের কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় রাজার পরিবার আরজুকে প্রধান আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরই র্যাব-১০ এর একটি দল আরজুকে গ্রেফতার করে। পরে তিনি র্যাবের ক্রস ফায়ারে নিহত হন।
গত ২৩ জুলাই মাগুরায় যুবলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে গোলাগুলির ঘটনায় নিহত হন মোমিন ভূঁইয়া নামের এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন নাজমা ও তার গর্ভের সন্তান। গুলিতে শিশুটি মাতৃজঠরে এ ফোঁড় ও ফোঁড় হয়ে যায়। মা-মেয়ে এখনো ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এই মামলার এজাহারভুক্ত দ্বিতীয় আসামি মেহেদী হাসান আজিবর (৩৮) গ্রেফতারের পর গত সোমবার রাতে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। মাগুরা শহরতলির দোয়ারপাড় এলাকার মোহাম্মদ আলীর মেহগনি বাগান থেকে পুলিশ আজিবরের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে।
এ দিকে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় র্যাবের তাড়া খেয়ে পালানোর সময় তিন তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে কাউছার রহমান বাবু ওরফে ফয়েজ বাবু (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। র্যাব বলেছে, গত রোববার সন্ধ্যায় শান্তিনগর মসজিদ মার্কেটের তৃতীয় তলায় ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে খবর পেয়ে র্যাব-৩ এর একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদকব্যবসায়ী ফয়েজ বাবু ওই ভবনের ছাদে উঠে যায়। পরে পাইপ বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করলে সেখান থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয় ফয়েজ। পরে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে গতকাল মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টায় তার মৃত্যু হয়।
গত ৯ আগস্ট সুন্দরবনে বাঘের চামড়া পাচারের অভিযোগে আটককৃত ছয় ব্যক্তি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি তারা বনদস্যু। বন্দুকযুদ্ধে তারা নিহত হয়েছেন। তবে পরিবারের দাবি তাদের আটকের পর হত্যা করা হয়েছে।
এভাবেই চলছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে গত সাড়ে সাত মাসে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন ১২১ জন। এর মধ্যে ‘ক্রসফায়ার’এ নিহত হয়েছেন ৯৫ জন। গুলিতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন, পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে দুইজন, শ্বাস রোধে হত্যা করা হয়েছে একজন, নির্যাতনে তিনজন ও অন্যান্য কারণে চারজন। নিহতদের মধ্যে জানুয়ারি মাসে ১৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৮ জন, মার্চে ১২ জন, এপ্রিলে ৯ জন, মে মাসে ১৮ জন, জুনে ৯ জন, জুলাইয়ে সাতজন এবং চলতি মাসের এ ক’দিনে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে গতকালই নিহত হয়েছেন তিনজন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত থাকায় দেশে আইনের শাসন ও বিচারব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। অপরাধ প্রমাণের আগেই রাষ্ট্রীয় বাহিনী বিনাবিচারে অভিযুক্তদের হত্যা করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।’
বিচারবহির্ভূত হত্যা সম্পর্কে মানবাধিকার কর্মী নুর খান লিটন বলেন, দেশ যারা পরিচালনা করছে বা শাসন করছে এবং যাদের ওপর আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব তাদের ভেতরে হয়তো শটকার্ট পথে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি করার মনোভাব বিরাজ করছে। ফলে যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে বা যারা অপরাধী তাদের ব্যাপারে এই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। হয়তো তাদের ধারণা এতে ভয়ার্ত পরিবেশের সৃষ্টি হলে অপরাধীরা আর অপরাধ করবে না। তবে প্রতিটি ক্রিয়ারই একটি প্রতিক্রিয়া আছে। ফলে সমাজে এই ধরণের ভয় সৃষ্টির ঘটনা আরো ঘটছে। এই অবস্থা থেকেই শিশু হত্যা, কারো চুল কেটে নেয়ার মতো মানসিকতার সৃষ্টি হচ্ছে। নুর খান লিটন বলেন, কোনো সভ্য দেশে এই হত্যাকান্ড সমর্থন করা যায় না। আমাদের ভাবতে হবে আমরা সাময়িক সমাধান চাই, না স্থায়ী সমাধান চাই।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান গতকাল একটি টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে বলেন, বিচারবহির্ভূত কোনো কিছুই সমর্থনযোগ্য নয়।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি মিডিয়া নজরুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলতে আমাদের আইনে কোনো শব্দ নেই। হত্যা না ব্যক্তিগত আত্মরক্ষায় ঘটনা ঘটেছে, এটি বৈধ না অবৈধ তা বলার এখতিয়ার একমাত্র ম্যাজিস্ট্র্রেটের। কোনো ঘটনা ঘটলে ম্যাজিস্ট্র্রেট তদন্ত করে তা বলবেন। এর বাইরে কেউ এটি নিয়ে কথা বললে সেটি আইনকে চ্যালেঞ্জ করার শামিল। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে কেউ নিহত হলে সেটি যদি যথার্থ না হয় তবে সরাসরি খুনের মামলা হবে। তিনি বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন এবং একে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলছেন তারা আইনের ঊর্ধ্বে নন। তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি পুলিশকে যেমন তার কাজের জন্য আইনের সীমারেখার মধ্যে কাজ করতে হবে। তেমনি যখন সমালোচনা করা হবে তখন আইনের দৃষ্টিকোণ থেকেই তিনি সমালোচনার অনুরোধ জানান।
র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং প্রধান মুফতি মাহমুদ খান নয়া দিগন্তকে বলেন, র্যাবের সাথে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তা কখনোই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নয়। তিনি বলেন, র্যাব অপরাধীদের ধরতে গেলে সেখানে দেখা যায় অনেক সময় অপরাধীরা প্রথমে র্যাবের ওপর গুলি চালায়। র্যাব সদস্যরা তখন আত্মরক্ষা ও জানমাল রক্ষার্থে গুলিবর্ষণে বাধ্য হয়। এতে কেউ কেউ মারা যায়। আগে দুর্বৃত্তরা ফায়ার করে এবং পরে র্যাব বাধ্য হয়ে গুলিবর্ষণ করে।
No comments