মুড়ির গ্রাম by রিপন আনসারী
মানিকগঞ্জের
নবগ্রাম, ধলাই, উপাজানি ও সরুপাই গ্রামের গৃহবধূরা পরম মমতা দিয়ে এই মুড়ি
তৈরি করে আসছেন। পাইকাররা এখান থেকে মুড়ি ক্রয় করে নিয়ে যান মানিকগঞ্জ
শহরের বড় বড় দোকানে। তারপর জেলা শহরের গণ্ডি পেরিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের
বিভিন্ন অঞ্চলেও রয়েছে এর কদর।
গৃহকর্ত্রী আনোয়ারা বেগম বলেন, এই বাড়িতে যে দিন বধূ হয়ে আসি সেদিন থেকেই
ব্যস্ত হয়ে পড়ি মুড়ি তৈরিতে। প্রায় ৩০ বছর ধরে এক হাতে মুড়ি তৈরি করছি।
আমাদের তৈরি হাতেভাজা মুড়ির কদর সব চাইতে বেশি। প্রতিদিন পাইকাররা এসে
আমাদের কাছ থেকে মুড়ি কিনে বেশি দামে শহরে বিক্রি করে। আমারা এখানে যে মুড়ি
ভাজি তার নাম ভুষিভাঙা মুড়ি। হাতে ভাজা এই মুড়িতে নেই কোন রাসায়নিক
ক্ষতিকার পদার্থ। যে কারণে এই মুড়ির চাহিদা অনেক বেশি। তবে রোজার সময় এর
চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এই মুড়ি প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৮৫-৯০ টাকা। অনেক
কষ্ট হয় তারপরও পূর্বের এই পেশাকে ছাড়তে পারি না। আবদুল মান্নান জানান,
ভুষিভাঙা মুড়ির ধান আনতে হয় বরিশাল থেকে। সেখান থেকে প্রতি মণ ধান আনতে খরচ
পড়ে যায় ১২শ টাকা। এক মণ ধানে ২২ থেকে ২৪ কেজি মুড়ি হয়। হাতে ভেজে মুড়ি
তৈরি করতে খুবই পরিশ্রম হয় ঠিকই কিন্তু এই মুড়ি বিক্রি করেই আমাদের সংসারে
স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। একটি দোকান দিয়েছি এবং গাড়িও কিনেছি। সারা বছরের
চাইতে প্রতি বছর রমজান মাসে মুড়ির কদর সব চাইতে বেশি। মুড়ি বানিয়ে সারতে
পারি না। পাইকাররা বাড়িতে ভিড় জমায়। ধলাই গ্রামের সকিনা বেগম জানান, বরিশাল
থেকে চড়া দামে ধান কিনে আনার কারনে লাভ কম হয়। সরকার ধানের দাম কমিয়ে
দিলে আমাদের জন্য ভাল হতো।
আবদুস সালাম জানান, বাজারে মেশিনে সার দিয়ে ভেজাল মুড়ি তৈরি করায় আমাদের মুড়ি উৎপাদন অনেক কমে গেছে। কারণ, ওই মুড়ি ৪০-৪৫টায় পাওয়া যায়। আর আমাদের কাছ থেকে এক কেজি মুড়ি কিনতে হলে কমপক্ষে ৮৫-৯০ টাকা লাগে। স্থানীয় ফেরদৌস রহমান জানান, এক সময় এই গ্রামগুলো মুড়ির গ্রাম হিসেবে পরিচিত ছিল। প্রত্যেকটি বাড়িতে মুড়ি তৈরি করা হতো। কিন্তু বর্তমানে বাজারে আধুনিক মেশিন দিয়ে রাসয়নিক পদার্থ মিশিয়ে মুড়ি উৎপাদন করায় এ অঞ্চলের মানুষ হাতে ভাজা মুড়ি তৈরিতে আগ্রহ হারিয়ে গেছে। ব্যবসায়ী পাইকার আবদুল আলিম সরকার জানান, ৩০ বছর ধরে মুড়ি বেচাকেনার সঙ্গে রয়েছি। তবে গ্রামের হাতে ভাজা মুড়ি শহরের মানুষের কাছে কদর বেশি। সেখান থেকে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় কিনে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করি। কারণ এই মুড়িতে কোন ভেজাল নেই।
আবদুস সালাম জানান, বাজারে মেশিনে সার দিয়ে ভেজাল মুড়ি তৈরি করায় আমাদের মুড়ি উৎপাদন অনেক কমে গেছে। কারণ, ওই মুড়ি ৪০-৪৫টায় পাওয়া যায়। আর আমাদের কাছ থেকে এক কেজি মুড়ি কিনতে হলে কমপক্ষে ৮৫-৯০ টাকা লাগে। স্থানীয় ফেরদৌস রহমান জানান, এক সময় এই গ্রামগুলো মুড়ির গ্রাম হিসেবে পরিচিত ছিল। প্রত্যেকটি বাড়িতে মুড়ি তৈরি করা হতো। কিন্তু বর্তমানে বাজারে আধুনিক মেশিন দিয়ে রাসয়নিক পদার্থ মিশিয়ে মুড়ি উৎপাদন করায় এ অঞ্চলের মানুষ হাতে ভাজা মুড়ি তৈরিতে আগ্রহ হারিয়ে গেছে। ব্যবসায়ী পাইকার আবদুল আলিম সরকার জানান, ৩০ বছর ধরে মুড়ি বেচাকেনার সঙ্গে রয়েছি। তবে গ্রামের হাতে ভাজা মুড়ি শহরের মানুষের কাছে কদর বেশি। সেখান থেকে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় কিনে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করি। কারণ এই মুড়িতে কোন ভেজাল নেই।
No comments