বিদেশি বিনিয়োগ কমার তথ্য মানছে না সরকার
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলন-বিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের ‘বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদন-২০১৫’-এর হিসাবে বাংলাদেশে ২০১৪ সালে প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগ আগের বছরের চেয়ে ৫ শতাংশ কমে হয়েছে ১৫৩ কোটি মার্কিন ডলার।
তবে আঙ্কটাডের এ প্রতিবেদনকে ‘বিভ্রান্তিমূলক’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি-বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। তিনি বলছেন, আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে বিনিয়োগ-সংক্রান্ত তথ্যের ‘অবমূল্যায়ন’ রয়েছে। তাঁর দাবি, মোট বিনিয়োগের হিসাবে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ২০০ কোটি টাকার বেশি।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ও গবেষকেরা বলছেন, বিতর্কটি হচ্ছে মূলত ৫০ থেকে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার নিয়ে। এটি অনর্থক বিতর্ক। সরকারের যেখানে বিদেশি বিনিয়োগ দরকার ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি ডলার, সেখানে ৫০-৬০ কোটি ডলার নিয়ে চলছে বিতর্ক। তাঁরা আরও বলছেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে না পারার ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়ে সরকারের উচিত বিনিয়োগ আকর্ষণে মনোযোগী হওয়া। গতানুগতিক প্রচেষ্টা দিয়ে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ আসবে না। এ জন্য দরকার বড় ধরনের উদ্যোগ।
গতকাল বুধবার সকালে বিনিয়োগ বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে আঙ্কটাডের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৌফিক-ই-ইলাহী। বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এস এ সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর।
আঙ্কটাডের হিসাবে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৩ কোটি মার্কিন ডলার। আগের বছর যার পরিমাণ ছিল প্রায় ১৬০ কোটি মার্কিন ডলার। সেই হিসাবে প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগ আগের বছরের চেয়ে ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে গেছে। আবার এ সময়ে দেশে আসা বিদেশি বিনিয়োগের অধিকাংশই পুনর্বিনিয়োগ। ১৫৩ কোটি ডলারের মধ্যে ৯৯ কোটি ডলারই এসেছে পুনর্বিনিয়োগ খাত থেকে। নতুন বিনিয়োগ এসেছে মাত্র ২৮ কোটি ডলারের।
আঙ্কটাডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এ পাঁচ বছরের মধ্যে প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি ২০১৪ সালে এসে ঋণাত্মক হয়ে গেছে। আগের চার বছরে যেখানে ১৪ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ঘটেছে।
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর দাবি, মোট বিনিয়োগের হিসাবে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লেও আঙ্কটাডের ভ্রান্ত পরিসংখ্যানের কারণে প্রতিবেদনে তার প্রতিফলন ঘটেনি।
তৌফিক-ই-ইলাহী প্রতিবেদনের পরিসংখ্যানকে ভ্রান্তিমূলক উল্লেখ করে বলেন, পরিসংখ্যান বেদবাক্য নয়। পরিসংখ্যান সব সময় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। এ সময় তাঁর কাছে সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন ছিল দেশের অর্থনীতি, বিনিয়োগ নিয়ে সরকার যেসব তথ্য বা পরিসংখ্যান দিচ্ছে সেগুলোও কী তাহলে ভ্রান্তিমূলক? তখন তিনি জানান, সরকারের তথ্য ও পরিসংখ্যান সঠিক, অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে সেই বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।
যদিও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করেই আঙ্কটাড তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
আঙ্কটাডের প্রতিবেদন ও বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, প্রয়োজন ও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ব্যর্থ। সেই ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়ে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বড় ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। যেখানে বিনিয়োগ দরকার ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি ডলারের সেখানে ২০ থেকে ৩০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে বিতর্ক করে বা আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই।
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকার বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ৩ শতাংশে উন্নীত করতে চায়। সেটি করতে হলে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে। আর গতানুগতিক উদ্যোগ দিয়ে সেটি সম্ভব নয়। এ জন্য দরকার বাড়তি প্রচেষ্টা।
ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বারের সভাপতি রূপালী চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগে আমরা ভালো করছি। কিন্তু সেটি আমাদের প্রয়োজন বা সামর্থ্যের তুলনায় অপ্রতুল। আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। ১৫০ কোটি ডলারের বিনিয়োগকে কীভাবে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটিতে নিয়ে যাওয়া যায়, সেটিই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেগুলো দূর করে বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারকে আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে।’
আঙ্কটাডের হিসাবে, ২০১৪ সালে মোট প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগের বড় অংশই এসেছে উৎপাদন খাতে। যার পরিমাণ প্রায় ৭২ কোটি ডলার। এরপরের অবস্থানে রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য তথা ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও লেনদেন খাতে। এ খাতে বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় ৩৭ কোটি ডলার। আর বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে। এরপরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, হংকং, নরওয়ে, জাপান, নেদারল্যান্ডস, ভারত ও শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমলেও আঙ্কটাডের প্রতিবেদন বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে। ২০১৪ সালে এ বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ বিলিয়ন ডলারে। আর এটি সম্ভব হয়েছে ভারতের কল্যাণে। ভারতে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ২২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে। পাকিস্তানে তা আগের বছরের চেয়ে ৩১ শতাংশ বেড়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় বিদেশি বিনিয়োগপ্রবাহ বাড়লেও বিশ্বজুড়ে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ আগের বছরের চেয়ে ১৬ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের এ সংস্থাটি।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়টি বাজারে চাহিদা ও আকারের ওপর নির্ভর করে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের আকার বেড়েছে। তার সঙ্গে সঙ্গে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও বেড়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ গ্রহণের ক্ষেত্রে সাবধানী হওয়ারও পরামর্শ দেন সাবেক এ মন্ত্রী। সে সঙ্গে আরও বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে জমির অপ্রতুলতাসহ বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করার পরামর্শ দেন।
তবে আঙ্কটাডের এ প্রতিবেদনকে ‘বিভ্রান্তিমূলক’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি-বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। তিনি বলছেন, আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে বিনিয়োগ-সংক্রান্ত তথ্যের ‘অবমূল্যায়ন’ রয়েছে। তাঁর দাবি, মোট বিনিয়োগের হিসাবে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ২০০ কোটি টাকার বেশি।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ও গবেষকেরা বলছেন, বিতর্কটি হচ্ছে মূলত ৫০ থেকে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার নিয়ে। এটি অনর্থক বিতর্ক। সরকারের যেখানে বিদেশি বিনিয়োগ দরকার ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি ডলার, সেখানে ৫০-৬০ কোটি ডলার নিয়ে চলছে বিতর্ক। তাঁরা আরও বলছেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে না পারার ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়ে সরকারের উচিত বিনিয়োগ আকর্ষণে মনোযোগী হওয়া। গতানুগতিক প্রচেষ্টা দিয়ে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ আসবে না। এ জন্য দরকার বড় ধরনের উদ্যোগ।
গতকাল বুধবার সকালে বিনিয়োগ বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে আঙ্কটাডের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৌফিক-ই-ইলাহী। বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এস এ সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর।
আঙ্কটাডের হিসাবে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৩ কোটি মার্কিন ডলার। আগের বছর যার পরিমাণ ছিল প্রায় ১৬০ কোটি মার্কিন ডলার। সেই হিসাবে প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগ আগের বছরের চেয়ে ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে গেছে। আবার এ সময়ে দেশে আসা বিদেশি বিনিয়োগের অধিকাংশই পুনর্বিনিয়োগ। ১৫৩ কোটি ডলারের মধ্যে ৯৯ কোটি ডলারই এসেছে পুনর্বিনিয়োগ খাত থেকে। নতুন বিনিয়োগ এসেছে মাত্র ২৮ কোটি ডলারের।
আঙ্কটাডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এ পাঁচ বছরের মধ্যে প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি ২০১৪ সালে এসে ঋণাত্মক হয়ে গেছে। আগের চার বছরে যেখানে ১৪ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি ঘটেছে।
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর দাবি, মোট বিনিয়োগের হিসাবে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়লেও আঙ্কটাডের ভ্রান্ত পরিসংখ্যানের কারণে প্রতিবেদনে তার প্রতিফলন ঘটেনি।
তৌফিক-ই-ইলাহী প্রতিবেদনের পরিসংখ্যানকে ভ্রান্তিমূলক উল্লেখ করে বলেন, পরিসংখ্যান বেদবাক্য নয়। পরিসংখ্যান সব সময় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। এ সময় তাঁর কাছে সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন ছিল দেশের অর্থনীতি, বিনিয়োগ নিয়ে সরকার যেসব তথ্য বা পরিসংখ্যান দিচ্ছে সেগুলোও কী তাহলে ভ্রান্তিমূলক? তখন তিনি জানান, সরকারের তথ্য ও পরিসংখ্যান সঠিক, অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে সেই বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।
যদিও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করেই আঙ্কটাড তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
আঙ্কটাডের প্রতিবেদন ও বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, প্রয়োজন ও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ব্যর্থ। সেই ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়ে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বড় ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। যেখানে বিনিয়োগ দরকার ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি ডলারের সেখানে ২০ থেকে ৩০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে বিতর্ক করে বা আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই।
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকার বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ৩ শতাংশে উন্নীত করতে চায়। সেটি করতে হলে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে। আর গতানুগতিক উদ্যোগ দিয়ে সেটি সম্ভব নয়। এ জন্য দরকার বাড়তি প্রচেষ্টা।
ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বারের সভাপতি রূপালী চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগে আমরা ভালো করছি। কিন্তু সেটি আমাদের প্রয়োজন বা সামর্থ্যের তুলনায় অপ্রতুল। আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। ১৫০ কোটি ডলারের বিনিয়োগকে কীভাবে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটিতে নিয়ে যাওয়া যায়, সেটিই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেগুলো দূর করে বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারকে আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে।’
আঙ্কটাডের হিসাবে, ২০১৪ সালে মোট প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগের বড় অংশই এসেছে উৎপাদন খাতে। যার পরিমাণ প্রায় ৭২ কোটি ডলার। এরপরের অবস্থানে রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য তথা ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও লেনদেন খাতে। এ খাতে বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় ৩৭ কোটি ডলার। আর বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে। এরপরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, হংকং, নরওয়ে, জাপান, নেদারল্যান্ডস, ভারত ও শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমলেও আঙ্কটাডের প্রতিবেদন বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে। ২০১৪ সালে এ বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ বিলিয়ন ডলারে। আর এটি সম্ভব হয়েছে ভারতের কল্যাণে। ভারতে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ২২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে। পাকিস্তানে তা আগের বছরের চেয়ে ৩১ শতাংশ বেড়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় বিদেশি বিনিয়োগপ্রবাহ বাড়লেও বিশ্বজুড়ে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ আগের বছরের চেয়ে ১৬ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের এ সংস্থাটি।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়টি বাজারে চাহিদা ও আকারের ওপর নির্ভর করে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের আকার বেড়েছে। তার সঙ্গে সঙ্গে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও বেড়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ গ্রহণের ক্ষেত্রে সাবধানী হওয়ারও পরামর্শ দেন সাবেক এ মন্ত্রী। সে সঙ্গে আরও বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে জমির অপ্রতুলতাসহ বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করার পরামর্শ দেন।
No comments