সু চির নতুন কর্মসূচি কী
৭০ বছরে পা দিলেন অং সান সু চি। জন্মদিনে কেক কাটছেন তিনি। এ বছর সু চিকে বেশ কিছু নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। ছবি: এএফপি |
মিয়ানমারের
রাজনীতির নানা ঘটনায় আলোচ্যসূচির কেন্দ্রবিন্দুতে এখন নোবেলজয়ী
গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি। এর আগে গণতন্ত্রের পথে সরব থেকে সু চি
আলোচনায় এসেছেন। এখন তাঁকে নিয়ে কানাঘুষা তিনি নীরব বলে। জান্তা ও ভিন্ন
গোষ্ঠীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা দলে দলে দেশ ছাড়ছে,
অভিবাসী হতে সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে পড়ছে নানা দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনায়। কিন্তু এ
মানবিক বিষয়ে কোনো সাড়া নেই সু চির। জান্তার নানা কর্মকাণ্ডেও কোনো মন্তব্য
নেই তাঁর। কেন তাঁর মৌনতা? সম্প্রতি এএফপির এক প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়, মিয়ানমারের আসন্ন নির্বাচন ও
প্রেসিডেন্ট পদে যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন সু চি। দলে নিজের কোনো
উত্তরসূরি তৈরি না করায় সমালোচিত হচ্ছেন তিনি। কী করবেন, কী সিদ্ধান্ত
নেবেন—এ নিয়ে ভুগছেন দোনামোনায়।
মিয়ানমারে চলতি বছরে অক্টোবর বা নভেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। গত কয়েক দশকের জান্তার শাসনের পর গণতান্ত্রিক সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে এ নির্বাচনকে। তবে ওই নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) জয় পেলেও সংবিধান অনুযায়ী সু চি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। দেশটির সংবিধানে বিদেশি স্বামী-স্ত্রী বা সন্তান থাকা ব্যক্তির প্রেসিডেন্ট হওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সু চির স্বামী ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন। দুই ছেলেও তাই।
সু চি গত রোববার রাজধানী ইয়াঙ্গুনে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের দুদিনব্যাপী সম্মেলনের শুরুতে দেওয়া ভাষণে বলেন, চলতি বছরের শেষের দিকে ওই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে তাঁর দল এনএলডি অংশ নেবে কি না, এ ব্যাপারে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সু চির প্রেসিডেন্ট হওয়ার ব্যাপারে জান্তার শাসনামলের এই সাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করে আসছে এনএলডি। বিশ্লেষক মায়েল রেনড বলেন, সংবিধানের ওই বিতর্কিত ধারাকে উপেক্ষা করেও সু চি শীর্ষ ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু মিয়ানমারের প্রবীণ ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা বিষয়টিকে কীভাবে নেবেন, এটিও গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমারের জান্তা সরকার নিয়ন্ত্রিত সেনাবাহিনী ও ক্ষমতাসীন দল যে সু চিকে সহজে মেনে নেবে না, তা বলাই বাহুল্য। সু চিকে আটকাতে সংবিধানের এই ধারা কোনোভাবেই বদলাতে চায় না জান্তার প্রভাব বলয়ে থাকা সরকার। দেশটির সেনাবাহিনী পার্লামেন্টের এক চতুর্থাংশ আসনের দখল নিয়েছে। পার্লামেন্টের সদস্যরা সংবিধানে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে।
সু চির জনপ্রিয়তায় ভয় পেয়ে বছরের পর বছর তাঁকে গৃহবন্দী করে রেখেছিল মিয়ানমারের জান্তা সরকার। তবে জান্তার সঙ্গে এখনই কোনো সংঘর্ষে যেতে রাজি নন সু চি। বরং তিনি সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে চান। এভাবেই সম্ভবত সু চি সরকারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকতে চান। তিনি শান্তিপূর্ণ বিরোধী দল হিসেবে এনএলডির অবস্থান ও ভাবমূর্তি ধরে রাখতে চান। এই মধ্যপন্থী ভূমিকার কারণে সমালোচনার মুখে পড়ছেন সু চি। পোড় খাওয়া সু চির আগের সাহসী ভূমিকার সঙ্গে এই সমঝোতাপূর্ণ মানসিকতাকে অনেকে মেলাতে পারছেন না।
গত শুক্রবার সু চির জন্মদিনে ভিডিও বার্তায় তিনি ‘পরিচ্ছন্ন রাজনীতি’ করার আহ্বান জানিয়েছেন। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এই নেত্রী বলেন, ‘কেবল পরিচ্ছন্ন রাজনীতি নিশ্চিত করতে পারলেই দেশের শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন সম্ভব।’ তবে গণতন্ত্রের পক্ষে দীর্ঘদিনের লড়াইয়ে অসামান্য অবদান রাখলেও মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের নিপীড়নে পরিষ্কার অবস্থান না নেওয়ায় আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখেও পড়েছেন তিনি। সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্ট-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সু চি বললেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে খুব সাবধানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মিয়ানমারের নিপীড়িত সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছেন সু চি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকাকে বলেন, সংবেদনশীল বিষয়টি নিয়ে ‘খুব সতর্ক’ থাকতে হবে। সু চির এমন নরম ভূমিকায় অনেকে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন।
সু চিকে নিয়ে সমালোচনার আরেকটি কারণ হলো, নিজ দল এনএলডির মধ্যে সু চি যোগ্য কোনো উত্তরসূরি তৈরি করতে পারেননি। অর্থাৎ, প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য এনএলডিতে সু চি ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। অবশ্য এনএলডিতে সু চির সমকক্ষ ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া কঠিন। এর পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। সু চির বাবা মিয়ানমারের অবিসংবাদিত স্বাধীনতাকামী নেতা। এ রকম একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির মেয়ে হিসেবে সু চির ভাবমূর্তি একেবারেই অন্যরকম। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মহলেও সু চির যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও সু চির ভক্ত। সু চির মতো এমন ভাবমূর্তি মিয়ানমারের আর কোনো রাজনৈতিক নেতা বা দলের নেই। জীবনীলেখক পিটার পপহ্যামের মতে, সু চির সমকক্ষ আর কেউ নেই। মিয়ানমারের সাধারণ জনগণের মনে সু চির প্রতি যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা, তা আর কারও পক্ষে অর্জন করা সময়সাপেক্ষ ও কঠিন ব্যাপার। মিয়ানমারের রাস্তায় নামলেও এ কথার প্রমাণ মেলে। ইয়াঙ্গুনের গাড়িচালক ওয়াই লিন বলেন, সু চির মতো কেউ নেই।
মিয়ানমারে সু চির এই ভাবমূর্তি গড়ে ওঠার পেছনে তাঁর জীবনের ত্যাগ-তিতিক্ষাও অনেকটা ভূমিকা রেখেছে। ১৯৮৮ সালে অসুস্থ মায়ের সেবা করতে যুক্তরাজ্য থেকে মিয়ানমারে আসেন সু চি। এর পরই জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ উত্তাল হয়ে ওঠে। জান্তা প্রভাবিত সরকারের বিরুদ্ধে ওই লড়াইয়ে কমপক্ষে তিন হাজার লোক নিহত হয়। সু চি এরপর গণতন্ত্র আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। এক বছরের মাথায় ১৯৮৯ সালে সু চিকে গৃহবন্দী করা হয়। এর পর বহু বছর গৃহবন্দী থাকেন সু চি। ১৯৯৯ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সু চির স্বামী মিখাইল আরিস। মৃত্যুশয্যায়ও সু চি তাঁর পাশে যেতে পারেননি।
গৃহবন্দী থাকা সত্ত্বেও ১৯৯০ সালে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন সু চি। তবে তাঁকে কখনো ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। সদস্য হিসেবে ২০১২ সালে সু চি পার্লামেন্টে ঢোকেন। সু চি সে সময় থেকেই জান্তা সরকারের সঙ্গে একধরনের মধ্যপন্থী অবস্থানে রয়েছেন।
সব মিলিয়ে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে, তা নিয়ে হিসেব-নিকেশ চলছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ বলছে, মিয়ানমারের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।
মিয়ানমারে চলতি বছরে অক্টোবর বা নভেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। গত কয়েক দশকের জান্তার শাসনের পর গণতান্ত্রিক সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে এ নির্বাচনকে। তবে ওই নির্বাচনে সু চির ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) জয় পেলেও সংবিধান অনুযায়ী সু চি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। দেশটির সংবিধানে বিদেশি স্বামী-স্ত্রী বা সন্তান থাকা ব্যক্তির প্রেসিডেন্ট হওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সু চির স্বামী ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন। দুই ছেলেও তাই।
সু চি গত রোববার রাজধানী ইয়াঙ্গুনে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের দুদিনব্যাপী সম্মেলনের শুরুতে দেওয়া ভাষণে বলেন, চলতি বছরের শেষের দিকে ওই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে তাঁর দল এনএলডি অংশ নেবে কি না, এ ব্যাপারে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সু চির প্রেসিডেন্ট হওয়ার ব্যাপারে জান্তার শাসনামলের এই সাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করে আসছে এনএলডি। বিশ্লেষক মায়েল রেনড বলেন, সংবিধানের ওই বিতর্কিত ধারাকে উপেক্ষা করেও সু চি শীর্ষ ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু মিয়ানমারের প্রবীণ ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা বিষয়টিকে কীভাবে নেবেন, এটিও গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমারের জান্তা সরকার নিয়ন্ত্রিত সেনাবাহিনী ও ক্ষমতাসীন দল যে সু চিকে সহজে মেনে নেবে না, তা বলাই বাহুল্য। সু চিকে আটকাতে সংবিধানের এই ধারা কোনোভাবেই বদলাতে চায় না জান্তার প্রভাব বলয়ে থাকা সরকার। দেশটির সেনাবাহিনী পার্লামেন্টের এক চতুর্থাংশ আসনের দখল নিয়েছে। পার্লামেন্টের সদস্যরা সংবিধানে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে।
সু চির জনপ্রিয়তায় ভয় পেয়ে বছরের পর বছর তাঁকে গৃহবন্দী করে রেখেছিল মিয়ানমারের জান্তা সরকার। তবে জান্তার সঙ্গে এখনই কোনো সংঘর্ষে যেতে রাজি নন সু চি। বরং তিনি সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে চান। এভাবেই সম্ভবত সু চি সরকারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকতে চান। তিনি শান্তিপূর্ণ বিরোধী দল হিসেবে এনএলডির অবস্থান ও ভাবমূর্তি ধরে রাখতে চান। এই মধ্যপন্থী ভূমিকার কারণে সমালোচনার মুখে পড়ছেন সু চি। পোড় খাওয়া সু চির আগের সাহসী ভূমিকার সঙ্গে এই সমঝোতাপূর্ণ মানসিকতাকে অনেকে মেলাতে পারছেন না।
গত শুক্রবার সু চির জন্মদিনে ভিডিও বার্তায় তিনি ‘পরিচ্ছন্ন রাজনীতি’ করার আহ্বান জানিয়েছেন। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এই নেত্রী বলেন, ‘কেবল পরিচ্ছন্ন রাজনীতি নিশ্চিত করতে পারলেই দেশের শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন সম্ভব।’ তবে গণতন্ত্রের পক্ষে দীর্ঘদিনের লড়াইয়ে অসামান্য অবদান রাখলেও মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের নিপীড়নে পরিষ্কার অবস্থান না নেওয়ায় আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখেও পড়েছেন তিনি। সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্ট-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সু চি বললেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে খুব সাবধানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মিয়ানমারের নিপীড়িত সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানিয়েছেন সু চি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকাকে বলেন, সংবেদনশীল বিষয়টি নিয়ে ‘খুব সতর্ক’ থাকতে হবে। সু চির এমন নরম ভূমিকায় অনেকে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন।
সু চিকে নিয়ে সমালোচনার আরেকটি কারণ হলো, নিজ দল এনএলডির মধ্যে সু চি যোগ্য কোনো উত্তরসূরি তৈরি করতে পারেননি। অর্থাৎ, প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য এনএলডিতে সু চি ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। অবশ্য এনএলডিতে সু চির সমকক্ষ ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া কঠিন। এর পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। সু চির বাবা মিয়ানমারের অবিসংবাদিত স্বাধীনতাকামী নেতা। এ রকম একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির মেয়ে হিসেবে সু চির ভাবমূর্তি একেবারেই অন্যরকম। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মহলেও সু চির যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও সু চির ভক্ত। সু চির মতো এমন ভাবমূর্তি মিয়ানমারের আর কোনো রাজনৈতিক নেতা বা দলের নেই। জীবনীলেখক পিটার পপহ্যামের মতে, সু চির সমকক্ষ আর কেউ নেই। মিয়ানমারের সাধারণ জনগণের মনে সু চির প্রতি যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা, তা আর কারও পক্ষে অর্জন করা সময়সাপেক্ষ ও কঠিন ব্যাপার। মিয়ানমারের রাস্তায় নামলেও এ কথার প্রমাণ মেলে। ইয়াঙ্গুনের গাড়িচালক ওয়াই লিন বলেন, সু চির মতো কেউ নেই।
মিয়ানমারে সু চির এই ভাবমূর্তি গড়ে ওঠার পেছনে তাঁর জীবনের ত্যাগ-তিতিক্ষাও অনেকটা ভূমিকা রেখেছে। ১৯৮৮ সালে অসুস্থ মায়ের সেবা করতে যুক্তরাজ্য থেকে মিয়ানমারে আসেন সু চি। এর পরই জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ উত্তাল হয়ে ওঠে। জান্তা প্রভাবিত সরকারের বিরুদ্ধে ওই লড়াইয়ে কমপক্ষে তিন হাজার লোক নিহত হয়। সু চি এরপর গণতন্ত্র আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। এক বছরের মাথায় ১৯৮৯ সালে সু চিকে গৃহবন্দী করা হয়। এর পর বহু বছর গৃহবন্দী থাকেন সু চি। ১৯৯৯ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সু চির স্বামী মিখাইল আরিস। মৃত্যুশয্যায়ও সু চি তাঁর পাশে যেতে পারেননি।
গৃহবন্দী থাকা সত্ত্বেও ১৯৯০ সালে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন সু চি। তবে তাঁকে কখনো ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। সদস্য হিসেবে ২০১২ সালে সু চি পার্লামেন্টে ঢোকেন। সু চি সে সময় থেকেই জান্তা সরকারের সঙ্গে একধরনের মধ্যপন্থী অবস্থানে রয়েছেন।
সব মিলিয়ে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে, তা নিয়ে হিসেব-নিকেশ চলছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ বলছে, মিয়ানমারের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।
No comments