মানব পাচারের দায় সরকার এড়াতে পারে না
মানব
পাচারের দায় রাষ্ট্র এড়াতে পারে না মন্তব্য করে মানবাধিকার কমিশনের
চেয়াম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ভুক্তভোগীদের আর্থিক, মানসিক, শারীরিক
সব ক্ষতির দায় সরকারকেই নিতে হবে। তিনি বলেন, যারা বৈধভাবে অনুমোদিত
এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশ গিয়েও মানব পাচারের শিকার তার দায়ও সরকারের।
অভিযুক্ত এজেন্সির হাত যতই লম্বা হোক তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় সব ধরনের
ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি। গতকাল জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত
নির্যাতিতদের সমর্থনে ‘অভিবাসন ও বাংলাদেশে মানব পাচার’ শীর্ষক গণশুনানিতে
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। বিদেশে পাচারের শিকার কয়েকজন
ভুক্তভোগীর অংশগ্রহণে সকাল ১১টার দিকে এই গণশুনানির আয়োজন করে মানবাধিকার
সংগঠন যশোর রাইটস এবং শিক্ষা স্বাস্থ্য উন্নয়ন কার্যক্রম (শিসউক)।
‘মানব পাচারের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স পদক্ষেপ নেয়া হবে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মিজানুর রহমান তার প্রতি অনুনয় প্রার্থনা করে বলেন, যারা মানব পাচারের শিকার হয়ে নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের কথা শুনে ওইসব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবেন। আমরা সেই সুসময়ের অপেক্ষায় আছি বলেও আশা প্রকাশ করেন মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে যশোর রাইটস ইরাকে মানব পাচারের শিকার ১৮০ জন বাংলাদেশীর একটি এক ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করে। সেখানে পাচারের শিকার মানুষের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। ওই ভিডিও চিত্র প্রসঙ্গে ড. মিজানুর রহমান বলেন, আজ আমরা যা শুনলাম তাতে বোঝা যায়, রেজিস্টার্ড এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশ গিয়েও অনেকে মানব পাচারের চেয়ে নির্মম দাসত্বের শিকার হয়েছেন। এসব ক্ষেত্রে জড়িতদেরও কোনভাবেই আইনের আওতার বাইরে রাখা যায় না। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ভিডিও চিত্রে ভুক্তভোগীদের কথায় সরাসরি রাষ্ট্রদূত ও এজেন্সির বিরুদ্ধে যে কথা উঠে এসেছে এগুলো নতুন নয়। আপনারা ভুক্তভোগীদের বক্তব্য শুনুন। যাদের আপনি রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তারা তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে কিনা বা তারা জনবিরোধী কোন কাজে লিপ্ত আছে কিনা আমরা এর জবাব চাই। ভুক্তভোগীদের শুধু ট্রাভেলিং খরচ দিয়েই সরকার দায়ভার এড়াতে পারে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সব ক্ষতিপূরণসহ তাদের পুনর্বাসনেরও সুযোগ সরকারকে নিতে হবে। আমরা দেখতে চাই সরকার সর্বহারা এই মানুষের সহায় হবে। রিক্রুটিং এজেন্সির হাত যতই লম্বা হোক না কেন তা জনগণের হাতের চেয়ে লম্বা নয়। তিনি বলেন, পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সরকারকে জনগণের সরকার বলে প্রমাণ করতে হবে। কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, আগামী মাসে সর্বদলীয় সংসদীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে আমি মানবপাচারের বিরুদ্ধে বলব। যেসব রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপতি হয়েছে সেসব বিষয়েও আমি কথা বলব।
১৮০ জনের সঙ্গে ইরাকে পাচার হওয়ার বর্ণনা দিয়ে ইঞ্জনিয়ার সিদ্দিক হোসেন বলেন, দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল রেজানূর রহমান এই পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত। রিক্রুটিং এজেন্সি খান টুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’র মাধ্যমে জর্ডান যাওয়া মিনারা বেগম জানান, প্রায় দুই বছর আগে তিনি সে দেশে যান। সেখানে কাজ করেও কোন বেতন পাইনি। বেতন চাইলে বলতো তোর কোন বেতন নেই। তোকে আমরা অনেক টাকা দিয়ে কিনে এনেছি। তারা আমাকে অনেক নির্যাতন করত। রডের পিটুনিতে আমার পায়ের একটা রগ চিকন হয়ে গেছে। পরে দুই বছর থাকার পর আমি একদিন স্বামীর সঙ্গে কথা বলে জানাই, আমি আর থাকতে পারছি না। মিনারা জানান, স্বামীর চিকিৎসা ও সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন। কিন্তু খালি একেবারে খালি হাতে সেখান থেকে ফিরে এসেছি। টাকার অভাবে স্বামীর চিকিৎসাও করাতে পারছি না। আমার মতো আরও কোন মেয়ে যেন এমন পরিণতির শিকার না হয় সে ব্যবস্থা আপনারা নেবেন। তিনি ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানান। ইরানে পাচারের শিকার ইসহাক তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, চাকরির জন্য তিনি প্রথমে ওমানে যান। সেখান থেকে তাকে ইরানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আটকে রেখে সেখানে আমার ওপর তারা নির্যাতন চালায়। পাচারকারীদের আমি অনেক টাকা দিয়েছি। তারপর আমি ইরানি পুলিশের হাতে ধরা দেই। পরে বাংলাদেশী অ্যাম্বাসি আমার কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেয়। অথচ ইরান থেকে দেশে আসার জন্য বিমানের ভাড়া মাত্র ২৫ হাজার টাকা। গণশুনানি অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যশোর রাইটস-এর নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, শিসউকের নির্বাহী পরিচালক সাকিউল মিল্লাত, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ডেপুটি এটর্নি জেনারেল মোতাহের হোসেন সাজু প্রমুখ।
‘মানব পাচারের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স পদক্ষেপ নেয়া হবে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মিজানুর রহমান তার প্রতি অনুনয় প্রার্থনা করে বলেন, যারা মানব পাচারের শিকার হয়ে নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের কথা শুনে ওইসব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবেন। আমরা সেই সুসময়ের অপেক্ষায় আছি বলেও আশা প্রকাশ করেন মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে যশোর রাইটস ইরাকে মানব পাচারের শিকার ১৮০ জন বাংলাদেশীর একটি এক ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করে। সেখানে পাচারের শিকার মানুষের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। ওই ভিডিও চিত্র প্রসঙ্গে ড. মিজানুর রহমান বলেন, আজ আমরা যা শুনলাম তাতে বোঝা যায়, রেজিস্টার্ড এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশ গিয়েও অনেকে মানব পাচারের চেয়ে নির্মম দাসত্বের শিকার হয়েছেন। এসব ক্ষেত্রে জড়িতদেরও কোনভাবেই আইনের আওতার বাইরে রাখা যায় না। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ভিডিও চিত্রে ভুক্তভোগীদের কথায় সরাসরি রাষ্ট্রদূত ও এজেন্সির বিরুদ্ধে যে কথা উঠে এসেছে এগুলো নতুন নয়। আপনারা ভুক্তভোগীদের বক্তব্য শুনুন। যাদের আপনি রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তারা তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে কিনা বা তারা জনবিরোধী কোন কাজে লিপ্ত আছে কিনা আমরা এর জবাব চাই। ভুক্তভোগীদের শুধু ট্রাভেলিং খরচ দিয়েই সরকার দায়ভার এড়াতে পারে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সব ক্ষতিপূরণসহ তাদের পুনর্বাসনেরও সুযোগ সরকারকে নিতে হবে। আমরা দেখতে চাই সরকার সর্বহারা এই মানুষের সহায় হবে। রিক্রুটিং এজেন্সির হাত যতই লম্বা হোক না কেন তা জনগণের হাতের চেয়ে লম্বা নয়। তিনি বলেন, পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সরকারকে জনগণের সরকার বলে প্রমাণ করতে হবে। কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, আগামী মাসে সর্বদলীয় সংসদীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে আমি মানবপাচারের বিরুদ্ধে বলব। যেসব রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপতি হয়েছে সেসব বিষয়েও আমি কথা বলব।
১৮০ জনের সঙ্গে ইরাকে পাচার হওয়ার বর্ণনা দিয়ে ইঞ্জনিয়ার সিদ্দিক হোসেন বলেন, দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল রেজানূর রহমান এই পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত। রিক্রুটিং এজেন্সি খান টুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস’র মাধ্যমে জর্ডান যাওয়া মিনারা বেগম জানান, প্রায় দুই বছর আগে তিনি সে দেশে যান। সেখানে কাজ করেও কোন বেতন পাইনি। বেতন চাইলে বলতো তোর কোন বেতন নেই। তোকে আমরা অনেক টাকা দিয়ে কিনে এনেছি। তারা আমাকে অনেক নির্যাতন করত। রডের পিটুনিতে আমার পায়ের একটা রগ চিকন হয়ে গেছে। পরে দুই বছর থাকার পর আমি একদিন স্বামীর সঙ্গে কথা বলে জানাই, আমি আর থাকতে পারছি না। মিনারা জানান, স্বামীর চিকিৎসা ও সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন। কিন্তু খালি একেবারে খালি হাতে সেখান থেকে ফিরে এসেছি। টাকার অভাবে স্বামীর চিকিৎসাও করাতে পারছি না। আমার মতো আরও কোন মেয়ে যেন এমন পরিণতির শিকার না হয় সে ব্যবস্থা আপনারা নেবেন। তিনি ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানান। ইরানে পাচারের শিকার ইসহাক তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, চাকরির জন্য তিনি প্রথমে ওমানে যান। সেখান থেকে তাকে ইরানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আটকে রেখে সেখানে আমার ওপর তারা নির্যাতন চালায়। পাচারকারীদের আমি অনেক টাকা দিয়েছি। তারপর আমি ইরানি পুলিশের হাতে ধরা দেই। পরে বাংলাদেশী অ্যাম্বাসি আমার কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেয়। অথচ ইরান থেকে দেশে আসার জন্য বিমানের ভাড়া মাত্র ২৫ হাজার টাকা। গণশুনানি অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যশোর রাইটস-এর নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, শিসউকের নির্বাহী পরিচালক সাকিউল মিল্লাত, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ডেপুটি এটর্নি জেনারেল মোতাহের হোসেন সাজু প্রমুখ।
No comments