‘টাকা দিবি, নইলে গুলি করে মাথার খুলি উড়িয়ে দেবো’ by মহিউদ্দীন জুয়েল
টাকা দিবি। নইলে গুলি করে মাথার খুলি উড়িয়ে দেবো। তুই তো মাদক ব্যবসা করিস। আমাদের কাছে খবর আছে। আগে সিএনজিতে উঠ। তারপর কোথায় যাই দেখবি।’ এভাবে হুমকি দিয়েই জোর করে জিয়াউল করিমকে একটি সিএনজিতে উঠিয়ে নেয় চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের এসআই মাহবুবুর রহমানসহ তার এক সহযোগী। এরপর সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কর্মরত ওই ব্যক্তিকে কয়েক ঘণ্টা ঘুরিয়ে নেয়া যাওয়া হয় শহরের স্টেশন রোডের এক আবাসিক হোটেলে। সেখানে একটি কক্ষে রাতভর নির্যাতনের পর চাঁদা দাবি করা হয়।
প্রাণে বাঁচতে ওই ব্যক্তি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে দেয়ার কথা বলে পুলিশকে খবর দেন। শেষমেশ ধরা পড়ার পর জানা যায়, এসআই মাহবুব মাদকাসক্ত থাকার কারণে মাঝে চাকরিচ্যুত হয়েছিল। পুনরায় সুস্থ হয়ে আবার যোগদানের পর অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাটি জানার পর গতকাল দুপুরে কোতোয়ালি থানায় গেলে কথা হয় ভুক্তভোগী জিয়াউল করিম নামের সোনালী ওই লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তার সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, আমি রাত ১টার সময় নগরীর সুগন্ধা এলাকা থেকে বের হয়ে হালিশহরের বাসায় যাওয়ার জন্য সিএনজি খুঁজছিলাম।
ঠিক সেই সময় টাইগার পাস এলাকায় সিএনজিতে উঠতে গিয়ে আমাকে ঘিরে ধরে এসআই মাহবুব ও ফরিদ নামের ওই ব্যক্তি। একপর্যায়ে জোর করে সিএনজিতে উঠিয়ে নিয়ে তাকে মাদক ব্যবসায়ী বলে ফাঁসিয়ে মামলা দেয়ার হুমকি জানায়। এতে ভীষণ ভয় পেয়ে জিয়া বাকবিতণ্ডা শুরু করলে তারা কোমরে থাকা পিস্তল দেখিয়ে চিৎকার না করার জন্য বলে।
রাত ৩টার সময় সিএনজিটি ঘুরিয়ে তাকে নিয়ে আসা হয় স্টেশন রোডের মার্টিন হোটেলে। সেখানে একটি কক্ষে চড় থাপ্পড় মেরে প্রথমে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরে আপসে ৫০,০০০ টাকা দেয়ার কথা হলে সকালে তাদের নিয়ে জিয়া জুবলি রোডের ডাচ্-বাংলা রোডে যায়।
কথা বলার একপর্যায়ে সে কৌশলে তার এক বন্ধুর কাছ থেকে কোতোয়ালি থানার ডিউটি অফিসারের নম্বর নিয়ে তাকে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানান। এর মধ্যে কয়েক দফা জিয়া এসআই মাহবুবকে জানায়, ব্যাংকে টাকা না থাকায় তার বন্ধু নিয়ে আসছে। তাই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। সকাল সাড়ে ১১টায় কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল কৌশলে মাহবুব ও তার সহযোগী ফরিদকে হাতেনাতে আটক করে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে কোতয়ালি থানার ওসি মোহম্মদ জসীম উদ্দিন ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানোর অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, ঘটনাটি আসলে কি তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এখানে মাহবুব কেন তাকে নিয়ে পুরো শহর ঘুরলো তাও আমরা জানার চেষ্টা করছি। অন্যদিকে ব্যাংকে তার সঙ্গে জিয়ার কি কাজ ছিল সেটাও তদন্ত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এসআই মাহাবুব শিল্প পুলিশে আছে। তারাই বিষয়টি দেখবে। মন্ডল স্যার (পুলিশ কমিশনার) এই নিয়ে তাদের ডিরেক্টরকে ফোন করেছেন। সে এখন আমাদের হেফাজতেই আছে।
তবে নগর পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মাহাবুব মাদকাসক্ত হওয়ায় এর আগে তার চাকরি চলে যায়। পরে সুস্থ শেষে বরখাস্ত কাটিয়ে সে আবার যোগদান করলে শুরু করে চাঁদাবাজির ঘটনা।
ভুক্তভোগী জিয়াউল বলেন, ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে আমি আগে থেকে চিনতাম না। তাকে হ্যান্ডকাপ বেঁধে নিয়ে আসা হয় থানায়। আমি লিখিত অভিযোগ দায়ের করছি। রাতেই মামলার বিবরনে সব জানাবো পুলিশকে।
তিনি বলেন, টাকা না পেয়ে ওই পুলিশ সদস্য হিংস্র হয়ে উঠেছিল। হোটেলে আমাকে নাজেহাল করে তার এক সহযোগীসহ।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে কতিপয় পুলিশ সদস্যের অপকর্মের ঘটনায় বিব্রত পুরো প্রশাসন। এই নিয়ে একাধিকবার বৈঠকেও বিষয়টি আলোচনা হওয়ার পর কিছুতেই কমছে না সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা। গত ১১ই জুন এক ব্যবসায়ীকে পরিকল্পনা অনুযায়ী ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে বরখাস্ত হন ৫ পুলিশ সদস্য। ঘটনাটি ঘটেছিল নগরীর পাঁচলাইশ থানার কেবি ফজলুল কাদের সড়কে ল্যানসেট হাসপাতাল ভবনের নিচতলায় অবস্থিত একটি অফিসে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক নাসিম আহমেদ এই ঘটনায় শহরের পাঁচলাইশ থানায় জিডি করেন।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার অফিস থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা লুট করে নিয়েছেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই (সহকারী উপপরিদর্শক) জহির উদ্দিন। জহির উদ্দিনের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ দল ওই অফিসে গিয়ে তার কাছে ইয়াবা আছে বলে জানায়। একপর্যায়ে অস্ত্র আছে বলে গ্রেপ্তার করার হুমকি দেয়। ঘটনা থেকে বাঁচতে নিরাপরাধ নাসিম ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের চাহিদামতো ৩ লাখ টাকা তুলে দেয়। এই বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী সৈয়দ নাসিম আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের মধ্যে অনেকে পুলিশের লোক ছিল। ওরা যখন জানতে পারে আমার কাছে ফুটেজ আছে তখন দ্রুত আমার অফিসে আসে। এরপর ক্ষমা চায়।
কেবল এই ঘটনাই নয়, গত ২১শে জুন কক্সবাজার থেকে ২৪ কোটি টাকার ইয়াবা নিয়ে ফেনীতে গিয়ে ধরা পড়ে স্পেশাল ব্রাঞ্চের আরেক পুলিশ এএসআই মাহফুজুর রহমান। ঢাকায় কর্মরত থাকা এই সদস্যকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের কয়েকজন এসআই-কনস্টেবল ইয়াবা দিয়ে তা বিক্রি করতে সহায়তা করছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
প্রাণে বাঁচতে ওই ব্যক্তি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে দেয়ার কথা বলে পুলিশকে খবর দেন। শেষমেশ ধরা পড়ার পর জানা যায়, এসআই মাহবুব মাদকাসক্ত থাকার কারণে মাঝে চাকরিচ্যুত হয়েছিল। পুনরায় সুস্থ হয়ে আবার যোগদানের পর অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাটি জানার পর গতকাল দুপুরে কোতোয়ালি থানায় গেলে কথা হয় ভুক্তভোগী জিয়াউল করিম নামের সোনালী ওই লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তার সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, আমি রাত ১টার সময় নগরীর সুগন্ধা এলাকা থেকে বের হয়ে হালিশহরের বাসায় যাওয়ার জন্য সিএনজি খুঁজছিলাম।
ঠিক সেই সময় টাইগার পাস এলাকায় সিএনজিতে উঠতে গিয়ে আমাকে ঘিরে ধরে এসআই মাহবুব ও ফরিদ নামের ওই ব্যক্তি। একপর্যায়ে জোর করে সিএনজিতে উঠিয়ে নিয়ে তাকে মাদক ব্যবসায়ী বলে ফাঁসিয়ে মামলা দেয়ার হুমকি জানায়। এতে ভীষণ ভয় পেয়ে জিয়া বাকবিতণ্ডা শুরু করলে তারা কোমরে থাকা পিস্তল দেখিয়ে চিৎকার না করার জন্য বলে।
রাত ৩টার সময় সিএনজিটি ঘুরিয়ে তাকে নিয়ে আসা হয় স্টেশন রোডের মার্টিন হোটেলে। সেখানে একটি কক্ষে চড় থাপ্পড় মেরে প্রথমে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। পরে আপসে ৫০,০০০ টাকা দেয়ার কথা হলে সকালে তাদের নিয়ে জিয়া জুবলি রোডের ডাচ্-বাংলা রোডে যায়।
কথা বলার একপর্যায়ে সে কৌশলে তার এক বন্ধুর কাছ থেকে কোতোয়ালি থানার ডিউটি অফিসারের নম্বর নিয়ে তাকে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানান। এর মধ্যে কয়েক দফা জিয়া এসআই মাহবুবকে জানায়, ব্যাংকে টাকা না থাকায় তার বন্ধু নিয়ে আসছে। তাই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। সকাল সাড়ে ১১টায় কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল কৌশলে মাহবুব ও তার সহযোগী ফরিদকে হাতেনাতে আটক করে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে কোতয়ালি থানার ওসি মোহম্মদ জসীম উদ্দিন ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানোর অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, ঘটনাটি আসলে কি তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এখানে মাহবুব কেন তাকে নিয়ে পুরো শহর ঘুরলো তাও আমরা জানার চেষ্টা করছি। অন্যদিকে ব্যাংকে তার সঙ্গে জিয়ার কি কাজ ছিল সেটাও তদন্ত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এসআই মাহাবুব শিল্প পুলিশে আছে। তারাই বিষয়টি দেখবে। মন্ডল স্যার (পুলিশ কমিশনার) এই নিয়ে তাদের ডিরেক্টরকে ফোন করেছেন। সে এখন আমাদের হেফাজতেই আছে।
তবে নগর পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মাহাবুব মাদকাসক্ত হওয়ায় এর আগে তার চাকরি চলে যায়। পরে সুস্থ শেষে বরখাস্ত কাটিয়ে সে আবার যোগদান করলে শুরু করে চাঁদাবাজির ঘটনা।
ভুক্তভোগী জিয়াউল বলেন, ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে আমি আগে থেকে চিনতাম না। তাকে হ্যান্ডকাপ বেঁধে নিয়ে আসা হয় থানায়। আমি লিখিত অভিযোগ দায়ের করছি। রাতেই মামলার বিবরনে সব জানাবো পুলিশকে।
তিনি বলেন, টাকা না পেয়ে ওই পুলিশ সদস্য হিংস্র হয়ে উঠেছিল। হোটেলে আমাকে নাজেহাল করে তার এক সহযোগীসহ।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে কতিপয় পুলিশ সদস্যের অপকর্মের ঘটনায় বিব্রত পুরো প্রশাসন। এই নিয়ে একাধিকবার বৈঠকেও বিষয়টি আলোচনা হওয়ার পর কিছুতেই কমছে না সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা। গত ১১ই জুন এক ব্যবসায়ীকে পরিকল্পনা অনুযায়ী ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে বরখাস্ত হন ৫ পুলিশ সদস্য। ঘটনাটি ঘটেছিল নগরীর পাঁচলাইশ থানার কেবি ফজলুল কাদের সড়কে ল্যানসেট হাসপাতাল ভবনের নিচতলায় অবস্থিত একটি অফিসে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক নাসিম আহমেদ এই ঘটনায় শহরের পাঁচলাইশ থানায় জিডি করেন।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার অফিস থেকে প্রায় তিন লাখ টাকা লুট করে নিয়েছেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই (সহকারী উপপরিদর্শক) জহির উদ্দিন। জহির উদ্দিনের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ দল ওই অফিসে গিয়ে তার কাছে ইয়াবা আছে বলে জানায়। একপর্যায়ে অস্ত্র আছে বলে গ্রেপ্তার করার হুমকি দেয়। ঘটনা থেকে বাঁচতে নিরাপরাধ নাসিম ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের চাহিদামতো ৩ লাখ টাকা তুলে দেয়। এই বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী সৈয়দ নাসিম আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের মধ্যে অনেকে পুলিশের লোক ছিল। ওরা যখন জানতে পারে আমার কাছে ফুটেজ আছে তখন দ্রুত আমার অফিসে আসে। এরপর ক্ষমা চায়।
কেবল এই ঘটনাই নয়, গত ২১শে জুন কক্সবাজার থেকে ২৪ কোটি টাকার ইয়াবা নিয়ে ফেনীতে গিয়ে ধরা পড়ে স্পেশাল ব্রাঞ্চের আরেক পুলিশ এএসআই মাহফুজুর রহমান। ঢাকায় কর্মরত থাকা এই সদস্যকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের কয়েকজন এসআই-কনস্টেবল ইয়াবা দিয়ে তা বিক্রি করতে সহায়তা করছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
No comments