যোগ ব্যায়াম নিয়ে মাতোয়ারা ভারত
যোগ
ব্যায়াম নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে মাতোয়ারা গোটা ভারত।
আজ আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে ভারতের নানা প্রান্তে নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে
যোগাসনে অংশ নেবেন সরকারি কর্মচারী, করপোরেট কর্তা, ছাত্র-যুব-মহিলা থেকে
শুরু করে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও। যোগ দিবসের প্রস্তুতি হয়েছে সরকারি দপ্তরে
যোগাসন শেখার ধুম দেখা গেছে। মন্ত্রী থেকে আমলাও নিয়মিত যোগ অনুশীলন
করেছেন। আর খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত পক্ষকাল ধরে প্রতিদিন তার
টুইটারে বিভিন্ন যোগাসনের কার্যকারিতা বর্ণনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর
নির্দেশে অমিতাভ বচ্চন থেকে পুনম পাণ্ডে বেশ কয়েকজনকে ব্র্যান্ড
অ্যাম্ব্যাসাডরও করা হয়েছে। আর মিডিয়াতে যোগ ব্যায়াম নিয়ে বিজ্ঞাপনের ঢল
দেখা গেছে। আসলে তারই উদ্যোগে রাষ্ট্রসংঘ ২১শে জুনকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস
হিসেবে ঘোষণা করেছে। ফলে যোগ পালনের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ভারত ছাড়িয়ে
বিশ্বের নানা প্রান্তেও পৌঁছে গিয়েছেন ভারতের প্রতিনিধিরা। ভারতের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ যেমন গিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। গিয়েছেন অরুণ
জেটলিও। তবে ভারতে দিল্লির রাজপথে প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে যোগাসনে অংশ নেবেন
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে। মোদির সঙ্গে মঞ্চে থাকবেন যোগগুরু
হিসেবে জনপ্রিয় বাবা রামদেব। থাকবেন মন্ত্রীরাও। মোদি অবশ্য তার ভাষণে যোগ
অভ্যাসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করবেন। ছাত্র-যুব ও মহিলাসহ কয়েক হাজার মানুষ এই
অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক তো
জানিয়েছে, ২১শে জুন একটি টাইম জোনে যখন সূর্যোদয় হবে, প্রশান্ত মহাসাগর
থেকে ভূ-মধ্যমহাসাগর, সেই প্রত্যেকটি স্থানে ভারতের নৌ সেনারা যোগাসনের
মাধ্যমে সূর্যকে স্বাগত জানাবেন। অবশ্য সূর্য প্রণাম নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক
তৈরি হয়েছে। অন্য ধর্মমতের কিছু মানুষ এটিকে যোগ দিবসের অনুষ্ঠানে
অন্তর্ভুক্ত না করার আবেদন জানিয়েছেন। তবে যোগ পালন নিয়ে ট্রেইনাররাও এখন
খুব ব্যস্ত। তাদের ডাক পড়েছে নানা জায়গায়। পশ্চিমবঙ্গেও যোগ দিবস পালনের
ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারও এ ব্যাপারে মতভেদ ভুলে
সক্রিয় হয়েছে। রাজ্যের সর্বত্র সরকারিভাবে পালিত হবে যোগাভ্যাসের অনুষ্ঠান।
গোটা কলকাতা শহরজুড়ে যোগ নিয়ে পোস্টার ও হোর্ডিংয়ের ছাড়াছড়ি। তবে ভারতে
যোগ সাধনার ইতিহাস বহু প্রাচীন। এতদিন যোগ নিয়ে তেমন আগ্রহ ছিল না।
স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও যোগের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কোন সচেতনতা ছিল না। এ
কিন্তু এবার গোটা দেশ যেভাবে যোগ নিয়ে মেতে উঠেছে সেটাও কি মোদি ম্যাজিক?
তবে বিরোধীদের বক্তব্য, এ সবই লোক ঠকানোর কল। বিজেপি এর আগে ঝাঁটা হাতে
স্বচ্ছ ভারত অভিযানে নেমেছিল। আর এবার যোগশিবির করে মানুষের নজর ঘোরাতে
চাইছে।
No comments