সবার টার্গেট খালেদা জিয়া by পীর হাবিবুর রহমান
রাজনীতির
কঠিন বিপর্যয়ের মুখে পতিত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এখন সবার
টার্গেটে পরিণত। এতদিন সরকারের মন্ত্রী নেতা ও তাদের শরিক ছোট দলের বড়
নেতারা বিএনপি নেত্রীকে তুলোধুনো করে আসছিলেন। সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের
টেলিফোন কথোপকথন ফাঁস হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে দলের অভ্যন্তরেও নেতাদের
অভিযোগের তীর খালেদা জিয়ার দিকেই। এমনকি বিএনপির রাজনৈতিক ব্যর্থতার সব
দায়ভার তারা খালেদা জিয়ার ওপর চাপিয়ে নিজেরা যেন নিরাপদ দূরত্বে থাকতে
চাইছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রভাবশালী নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ
আহমদ, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. মঈন খানসহ যাদের ফোনালাপই ফাঁস
হয়েছে সেখানেই খালেদা জিয়াকে ব্যর্থতার কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। ‘এই
বিএনপিকে দিয়ে আর হবে না’, ‘রাস্তায় বের হলে শরম লাগে’— এমন হতাশার
বক্তব্যও বেরিয়ে এসেছে।
এক সময় বিএনপির অভ্যন্তরে খালেদা জিয়ার নির্বাসিত পুত্র তারেক রহমানের বিরুদ্ধেই ছিল ব্যর্থতার যত অভিযোগ। সিনিয়র নেতাদের যত অসন্তোষ। বিএনপির এই সিনিয়র নেতারা বরাবরই বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিকল্প বিএনপিতে নেই। দলের ফোরামে আন্দোলনের ব্যর্থতা নিয়ে, রাজনৈতিক হঠকারী পথ নিয়ে পোস্টমর্টেমের কথা কেউ বলছেন না। যারা এক সময় বিএনপি নেত্রীর আস্থার ওপর ভর করে মন্ত্রী হয়েছিলেন, দলের নেতৃত্বে অভিষিক্ত হয়েছেন সেই তারা যখন বিপদগ্রস্ত খালেদা জিয়ার আড়ালে সমালোচনায় মুখর; তখন অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে, একি আগামীতে দুর্নীতির বিচারে খালেদা-তারেক দণ্ডিত হলেই বিএনপিতে যে ভাঙন আসবে তারই আলামত। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও এই নাজুক পরিস্থিতির মুখে কাউকে তলব করে কিছু জানতেও চাইতে পারছেন না; কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথাও ভাবছেন না। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া যারা বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভাষায় হরহামেশাই বিষের তীর ছুড়ে আসছেন তাদের অন্যতম আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নাম সবার শীর্ষে। এদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি তো সংসদে দাঁড়িয়ে এও বলেছেন, আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু খালেদা জিয়ার ওপর আল্লাহর গজব। তথ্যমন্ত্রী ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বিরতিহীনভাবে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে তির্যক বাক্যবাণে আক্রমণ করছেন। গোটা রাজনীতিতে সরকারের সঙ্গে থাকা দলগুলোর মধ্যে খালেদা জিয়া কেবল এরশাদের জাতীয় পার্টি, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জেপি, রাশেদ খান মেননের ওয়ার্কার্স পার্টি চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণই করছে না, তারা পারলে বিষয়টি এড়িয়েই যাচ্ছেন। কিন্তু সরকার পক্ষের মন্ত্রী নেতাদের খালেদা জিয়ার প্রতি লাগামহীন বক্তব্যকে যারা আক্রোশমূলক বলে আসছিলেন, খোদ বিএনপির অভ্যন্তরে সিনিয়র নেতারা যখন ফোনালাপে ব্যর্থতার দায় তাদের নেত্রীর ঘাড়ে দিচ্ছেন তখন তারা একটু ভ্রু তুলে তাকাচ্ছেন। জানার চেষ্টা করছেন। বিএনপি নিয়ে আসলে কী হতে যাচ্ছে? কেনইবা খালেদা জিয়া সবার টার্গেট?
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জামায়াত নিয়ে রাজনীতিটাই বিএনপির জন্য কাল হয়েছে। জামায়াত নিয়ে রাজনীতির ধারাবাহিকতায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিএনপি নেতৃত্ব বরাবর প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে। এখন পর্যন্ত নানা চাপের মধ্যেও জামায়াতকে ছাড়েনি। মাঝখানে হেফাজতে ইসলামের উগ্র আন্দোলনে দলের ঢাকা নেতা-কর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া নিজেই সন্ত্রাসবাদ বিরোধী রাজনীতির এই বিশ্বায়নের যুগে নিজেকে অন্ধকার সুড়ঙ্গের পথে ঠেলে দেন। জামায়াতসহ ধর্মান্ধ গোষ্ঠী হাতছাড়া না করার কারণে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার সেক্যুলার রাজনীতির ট্রাম্পকার্ডের কাছে বারবার মুখ থুবড়ে পড়ছেন। জামায়াতের বোঝা টানতে না টানতে দু’ বছর আগে হেফাজতের কলঙ্ক গায়ে মেখেছেন খালেদা জিয়া। সরকারের দমন কৌশলের কাছে পরাজিত হেফাজত চলে গেলেও জামায়াত হয়ে থাকে পাহাড়ের মতো ভারি বোঝা। এই বোঝা নামিয়ে আস্থা অর্জনের দুয়ার আদৌ খুলতে পারবেন কিনা- তা নিয়েও পর্যবেক্ষকদের সংশয় রয়েছে। এমনকি নরেন্দ্র মোদি খালেদা জিয়াকে বার্তা দিয়েছেন- আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে থাকলেও মৌলবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে একান্ত বৈঠকে নাকি বিএনপির শাসনামলের ভারত নিরাপত্তাবিরোধী সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সংগঠিত ঘটনা ঘিরে প্রশ্নও করেছেন। বিএনপির নেত্রীই জানেন এই সংকট ও ঘরে বাইরের সমালোচনার বিষাক্ত তীর কিভাবে সামলাবেন। এমনিতেই বিএনপির অভ্যন্তরে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মাত্রা দলের চেয়ারপার্সনের সঙ্গে বৈঠকে নেতাদের মোবাইল ফোন বাইরে রেখে ঢুকতে হতো। বর্তমানে সেই অবিশ্বাস ও সন্দেহের মাত্রা আরো তীব্র হয়েছে। তার সীমানাও বেড়েছে।
এক সময় বিএনপির অভ্যন্তরে খালেদা জিয়ার নির্বাসিত পুত্র তারেক রহমানের বিরুদ্ধেই ছিল ব্যর্থতার যত অভিযোগ। সিনিয়র নেতাদের যত অসন্তোষ। বিএনপির এই সিনিয়র নেতারা বরাবরই বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিকল্প বিএনপিতে নেই। দলের ফোরামে আন্দোলনের ব্যর্থতা নিয়ে, রাজনৈতিক হঠকারী পথ নিয়ে পোস্টমর্টেমের কথা কেউ বলছেন না। যারা এক সময় বিএনপি নেত্রীর আস্থার ওপর ভর করে মন্ত্রী হয়েছিলেন, দলের নেতৃত্বে অভিষিক্ত হয়েছেন সেই তারা যখন বিপদগ্রস্ত খালেদা জিয়ার আড়ালে সমালোচনায় মুখর; তখন অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে, একি আগামীতে দুর্নীতির বিচারে খালেদা-তারেক দণ্ডিত হলেই বিএনপিতে যে ভাঙন আসবে তারই আলামত। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও এই নাজুক পরিস্থিতির মুখে কাউকে তলব করে কিছু জানতেও চাইতে পারছেন না; কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথাও ভাবছেন না। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া যারা বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভাষায় হরহামেশাই বিষের তীর ছুড়ে আসছেন তাদের অন্যতম আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নাম সবার শীর্ষে। এদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি তো সংসদে দাঁড়িয়ে এও বলেছেন, আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু খালেদা জিয়ার ওপর আল্লাহর গজব। তথ্যমন্ত্রী ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বিরতিহীনভাবে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে তির্যক বাক্যবাণে আক্রমণ করছেন। গোটা রাজনীতিতে সরকারের সঙ্গে থাকা দলগুলোর মধ্যে খালেদা জিয়া কেবল এরশাদের জাতীয় পার্টি, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জেপি, রাশেদ খান মেননের ওয়ার্কার্স পার্টি চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণই করছে না, তারা পারলে বিষয়টি এড়িয়েই যাচ্ছেন। কিন্তু সরকার পক্ষের মন্ত্রী নেতাদের খালেদা জিয়ার প্রতি লাগামহীন বক্তব্যকে যারা আক্রোশমূলক বলে আসছিলেন, খোদ বিএনপির অভ্যন্তরে সিনিয়র নেতারা যখন ফোনালাপে ব্যর্থতার দায় তাদের নেত্রীর ঘাড়ে দিচ্ছেন তখন তারা একটু ভ্রু তুলে তাকাচ্ছেন। জানার চেষ্টা করছেন। বিএনপি নিয়ে আসলে কী হতে যাচ্ছে? কেনইবা খালেদা জিয়া সবার টার্গেট?
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জামায়াত নিয়ে রাজনীতিটাই বিএনপির জন্য কাল হয়েছে। জামায়াত নিয়ে রাজনীতির ধারাবাহিকতায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিএনপি নেতৃত্ব বরাবর প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে। এখন পর্যন্ত নানা চাপের মধ্যেও জামায়াতকে ছাড়েনি। মাঝখানে হেফাজতে ইসলামের উগ্র আন্দোলনে দলের ঢাকা নেতা-কর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া নিজেই সন্ত্রাসবাদ বিরোধী রাজনীতির এই বিশ্বায়নের যুগে নিজেকে অন্ধকার সুড়ঙ্গের পথে ঠেলে দেন। জামায়াতসহ ধর্মান্ধ গোষ্ঠী হাতছাড়া না করার কারণে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার সেক্যুলার রাজনীতির ট্রাম্পকার্ডের কাছে বারবার মুখ থুবড়ে পড়ছেন। জামায়াতের বোঝা টানতে না টানতে দু’ বছর আগে হেফাজতের কলঙ্ক গায়ে মেখেছেন খালেদা জিয়া। সরকারের দমন কৌশলের কাছে পরাজিত হেফাজত চলে গেলেও জামায়াত হয়ে থাকে পাহাড়ের মতো ভারি বোঝা। এই বোঝা নামিয়ে আস্থা অর্জনের দুয়ার আদৌ খুলতে পারবেন কিনা- তা নিয়েও পর্যবেক্ষকদের সংশয় রয়েছে। এমনকি নরেন্দ্র মোদি খালেদা জিয়াকে বার্তা দিয়েছেন- আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে থাকলেও মৌলবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে একান্ত বৈঠকে নাকি বিএনপির শাসনামলের ভারত নিরাপত্তাবিরোধী সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সংগঠিত ঘটনা ঘিরে প্রশ্নও করেছেন। বিএনপির নেত্রীই জানেন এই সংকট ও ঘরে বাইরের সমালোচনার বিষাক্ত তীর কিভাবে সামলাবেন। এমনিতেই বিএনপির অভ্যন্তরে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মাত্রা দলের চেয়ারপার্সনের সঙ্গে বৈঠকে নেতাদের মোবাইল ফোন বাইরে রেখে ঢুকতে হতো। বর্তমানে সেই অবিশ্বাস ও সন্দেহের মাত্রা আরো তীব্র হয়েছে। তার সীমানাও বেড়েছে।
No comments