সুইস ব্যাংকের টাকা ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই
সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের অর্থ পাচার বাড়লেও তা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক চেষ্টা করলেও এ পর্যন্ত কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা কঠিন। সুইজারল্যান্ডের সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড ২০১৪’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, ২০১৩ সালের তুলনায় ২০১৪ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশী নাগরিকদের ৪০ দশমিক ৭২ শতাংশ অর্থ বেশি জমা হয়েছে। ৫ বছরের হিসেবে এ পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী সুইস ব্যাংকে ২০১৪ সালে বাংলাদেশীদের অর্থ জমা রয়েছে ৫০ কোটি ৬০ লাখ সুইস ফ্রা, বাংলাদেশী মুদ্রায় যা ৪ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা। ২০১৩ সালের জমা ৩ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা থেকে তা ১ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা বেশি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশে বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় টাকা পাচার হচ্ছে বিদেশে। তাদের মতে, যেভাবেই টাকা আয় করা হোক, অনেক সময় বিনিয়োগের সুযোগ থাকলেও হয়ত এখানকার ব্যাংকে অর্থ রাখতে একজন নিরাপদ বোধ করছে না, সেক্ষেত্রে অর্থ দেশেরে বাইরে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। তারা জানান, সঞ্চয় ও বিনিয়োগে ভারসাম্য নেই। আর কম দামি পণ্য বেশি দাম দেখিয়ে অর্থ পাচারের কথা তো সবারই জানা। বিনিয়োগ হচ্ছে না, অথচ মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে ২০ শতাংশ। এর মানে কি সরকার জানে না?
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পাচার হওয়া ৪ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। কারণ এখানে আইনি জটিলতা রয়েছে। এ ধাপগুলো পার হয়ে তারপর অর্থ ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তবে সেটা খুব সহজ কাজ নয় বলে জানান এ অর্থনীতিবিদ। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মীর্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম মনে করেন, দেশে বিনিয়োগ পরিবেশ না থাকায় অর্থ পাচারের মতো ঘটনা ঘটছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, নাগরিকত্ব গোপন রেখে যারা সুইস ব্যাংকে টাকা রেখেছেন, তাদের তথ্য অবশ্য প্রতিবেদনে আনা হয়নি। স্বর্ণালংকার, শিল্পকর্ম বা অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্রের আর্থিক মূল্যকেও রাখা হয়েছে হিসাবের বাইরে। সব বিবেচনায় নিলে পরিমাণ আরও বাড়বে। সুইস ব্যাংক কখনোই আমানতকারীদের তথ্য প্রকাশ করে না, টাকার পরিমাণও জানতে দেয় না। ব্যাংক টাকা জমা রাখে একটি কোড নম্বরের ভিত্তিতে। বেশ কয়েক বছর ধরেই আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে সুইজারল্যান্ড। তবে বিশ্বব্যাপী টাকা পাচার রোধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ব্যাপকভাবে কার্যকর হওয়ায় সুইস ব্যাংক গত বছর থেকে দেশওয়ারি অর্থের পরিমাণ প্রকাশ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদন।
গত বছর সুইস ব্যাংকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশীদের তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক তথ্য বিনিময়ের আগ্রহ দেখিয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) করতে চিঠি দেয় সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ওই চিঠির কোন জবাব দেয়নি তারা। হংকং-সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরও একই আগ্রহের কথা জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক আবারও চিঠি দেয় সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। এরও জবাব পায়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মাহফুজুর রহমান বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক দেশই এ বিষয়ে সোচ্চার। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের মনোভাব হচ্ছে আইন সংশোধন ছাড়া তারা কিছু করতে পারবে না।
এসএনবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৪ সালে বাংলাদেশীদের ৪ কোটি ১০ লাখ ফ্রা ছিল সুইস ব্যাংকে। এরপর ২০০৫ সালে ৯ কোটি ৭০ লাখ এবং ২০০৬ সালে ১২ কোটি ৪০ লাখ ফ্রা হয়। ২০০৭ সালে তা আগের বছরের দ্বিগুণ ছাড়িয়ে হয় ২৪ কোটি ৩০ লাখ। তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিছু পদক্ষেপ নিলে ২০০৮ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১০ কোটি ৭০ লাখ ফ্রাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকে টাকা নেয়ার সুযোগ নেই। প্রবাসী বাংলাদেশীরা যদি সুইস ব্যাংকে টাকা রাখেন, তাহলে কিছু করার নেই।
এসএনবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুইস ব্যাংকের সবচেয়ে বেশি অর্থ চীনা নাগরিকদের ৮১০ কোটি ফ্রা। এরপর মালয়েশিয়ার ৩৩৬ কোটি, থাইল্যান্ডের ৩০৫, দক্ষিণ কোরিয়ার ২৭৬, ভারতের ১৭৭, পাকিস্তানের ১২৩, বাংলাদেশের ৫০ কোটি ৬০ লাখ, নেপালের ১০ কোটি ২০ লাখ, শ্রীলঙ্কার ৮ কোটি ২০ লাখ, মিয়ানমারের ৬ কোটি, মালদ্বীপের ১ কোটি ৭০ লাখ এবং আফগানিস্তানের ১ কোটি ৪০ লাখ ফ্রা জমা আছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশে বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় টাকা পাচার হচ্ছে বিদেশে। তাদের মতে, যেভাবেই টাকা আয় করা হোক, অনেক সময় বিনিয়োগের সুযোগ থাকলেও হয়ত এখানকার ব্যাংকে অর্থ রাখতে একজন নিরাপদ বোধ করছে না, সেক্ষেত্রে অর্থ দেশেরে বাইরে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। তারা জানান, সঞ্চয় ও বিনিয়োগে ভারসাম্য নেই। আর কম দামি পণ্য বেশি দাম দেখিয়ে অর্থ পাচারের কথা তো সবারই জানা। বিনিয়োগ হচ্ছে না, অথচ মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে ২০ শতাংশ। এর মানে কি সরকার জানে না?
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পাচার হওয়া ৪ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। কারণ এখানে আইনি জটিলতা রয়েছে। এ ধাপগুলো পার হয়ে তারপর অর্থ ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তবে সেটা খুব সহজ কাজ নয় বলে জানান এ অর্থনীতিবিদ। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মীর্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম মনে করেন, দেশে বিনিয়োগ পরিবেশ না থাকায় অর্থ পাচারের মতো ঘটনা ঘটছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, নাগরিকত্ব গোপন রেখে যারা সুইস ব্যাংকে টাকা রেখেছেন, তাদের তথ্য অবশ্য প্রতিবেদনে আনা হয়নি। স্বর্ণালংকার, শিল্পকর্ম বা অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্রের আর্থিক মূল্যকেও রাখা হয়েছে হিসাবের বাইরে। সব বিবেচনায় নিলে পরিমাণ আরও বাড়বে। সুইস ব্যাংক কখনোই আমানতকারীদের তথ্য প্রকাশ করে না, টাকার পরিমাণও জানতে দেয় না। ব্যাংক টাকা জমা রাখে একটি কোড নম্বরের ভিত্তিতে। বেশ কয়েক বছর ধরেই আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে সুইজারল্যান্ড। তবে বিশ্বব্যাপী টাকা পাচার রোধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ব্যাপকভাবে কার্যকর হওয়ায় সুইস ব্যাংক গত বছর থেকে দেশওয়ারি অর্থের পরিমাণ প্রকাশ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদন।
গত বছর সুইস ব্যাংকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশীদের তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক তথ্য বিনিময়ের আগ্রহ দেখিয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) করতে চিঠি দেয় সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ওই চিঠির কোন জবাব দেয়নি তারা। হংকং-সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরও একই আগ্রহের কথা জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক আবারও চিঠি দেয় সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। এরও জবাব পায়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মাহফুজুর রহমান বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক দেশই এ বিষয়ে সোচ্চার। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের মনোভাব হচ্ছে আইন সংশোধন ছাড়া তারা কিছু করতে পারবে না।
এসএনবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৪ সালে বাংলাদেশীদের ৪ কোটি ১০ লাখ ফ্রা ছিল সুইস ব্যাংকে। এরপর ২০০৫ সালে ৯ কোটি ৭০ লাখ এবং ২০০৬ সালে ১২ কোটি ৪০ লাখ ফ্রা হয়। ২০০৭ সালে তা আগের বছরের দ্বিগুণ ছাড়িয়ে হয় ২৪ কোটি ৩০ লাখ। তখনকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিছু পদক্ষেপ নিলে ২০০৮ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১০ কোটি ৭০ লাখ ফ্রাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকে টাকা নেয়ার সুযোগ নেই। প্রবাসী বাংলাদেশীরা যদি সুইস ব্যাংকে টাকা রাখেন, তাহলে কিছু করার নেই।
এসএনবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুইস ব্যাংকের সবচেয়ে বেশি অর্থ চীনা নাগরিকদের ৮১০ কোটি ফ্রা। এরপর মালয়েশিয়ার ৩৩৬ কোটি, থাইল্যান্ডের ৩০৫, দক্ষিণ কোরিয়ার ২৭৬, ভারতের ১৭৭, পাকিস্তানের ১২৩, বাংলাদেশের ৫০ কোটি ৬০ লাখ, নেপালের ১০ কোটি ২০ লাখ, শ্রীলঙ্কার ৮ কোটি ২০ লাখ, মিয়ানমারের ৬ কোটি, মালদ্বীপের ১ কোটি ৭০ লাখ এবং আফগানিস্তানের ১ কোটি ৪০ লাখ ফ্রা জমা আছে।
No comments