বাবা দিবস আজ
ভাষা
ভেদে শব্দ বদলায়। স্থান ভেদে বদলায় উচ্চারণও। তবে বদলায় না রক্তের টান।
জার্মানিতে যিনি ‘ফ্যাট্যা’, এই বাংলায় তিনি ‘বাবা’। ইংরেজ সন্তান যতটা
আপ্লুত হয়ে ‘ফাদার বা ড্যাড’ ডাকে, ভারতীয়দের ‘পিতাজি’ নিশ্চয় একই ব্যঞ্জনা
তৈরি করে।
বাবার প্রতি সন্তানের সেই চিরন্তন ভালোবাসার প্রকাশ
প্রতিদিনই ঘটে। তারপরও
পৃথিবীর মানুষ বছরের একটা দিনকে বাবার জন্য রেখে দিতে চায়। যেমনটা মায়ের
জন্য করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাবা দিবসের প্রচলন। আজ বছর ঘুরে সেই
রোববার, বিশ্ব বাবা দিবস। বিভিন্ন দেশে জুন মাসের তৃতীয় রোববারকে বাবা দিবস
হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। সন্তানের কাছে বাবা বন্ধুর মতো। কারো বাবা
পথপ্রদর্শক। অনেকেই বাবাকে ফুল
দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। অনেক দেশে কার্ডও উপহার দেয়া হয়। যাদের বাবা বেঁচে
নেই, তারা হয়তো আকাশে তাকিয়ে অলক্ষ্যে বাবার স্মৃতি হাতড়ায়।
বাবা দিবসের প্রচলন বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই। ১৯১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে
পিতৃ দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণার বিল উত্থাপন করা হয়। ১৯৯৬ সালে
যুক্তরাষ্ট্রে বাবা দিবসকে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
ধারণা করা হয়, ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই প্রথম ‘বাবা দিবস’ পালিত হয়। এ দিনটি
প্রথম পালিত হয় আমেরিকার পশ্চিম ভার্জেনিয়ার ফেয়ারমন্টের এক গির্জায়। আবার
সনোরা স্মার্ট ডড নামের ওয়াশিংটনের এক ভদ্রমহিলার মাথাতেও বাবা দিবসের
ধারণা আসে। যদিও তিনি ১৯০৮-এর ভার্জিনিয়ার বাবা দিবসের কথা একেবারেই জানতেন
না। এক গির্জায় পুরোহিতের বক্তব্য থেকে ডড এ ধারণাটা পান। ওই পুরোহিত মাকে
নিয়ে অনেক ভালো ভালো কথা বলছিলেন। তাতে ডডের মনে হয়, তাহলে বাবাদের নিয়েও
তো কিছু করা দরকার। ডড তার বাবাকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি সম্পূর্ণ নিজ
উদ্যোগেই পরের বছর অর্থাৎ ১৯১০ সালের ১৯ জুন থেকে ‘বাবা দিবস’ পালন করা
শুরু করেন। প্রথমদিকে ‘মা দিবস’-এর মতো ‘বাবা দিবস’ নিয়ে মানুষের মধ্যে
তেমন কোনো উৎসাহ ছিল না। তবে ধীরে ধীরে ধারণা পাল্টায়। পরে ১৯১৩ সালে
আমেরিকান সংসদে বাবা দিবসকে ছুটির দিন ঘোষণা করার জন্য একটা বিল উত্থাপন
করা হয়। ১৯২৪ সালে তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কলিজ বিলটিতে
পূর্ণ সমর্থন দেন। অবশেষে ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন বাবা দিবসকে
ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে জুনের তৃতীয় রোববার
‘বাবা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে পালিত হয় এ দিবসটি।
এই দিনের মূল বিষয় হচ্ছে গিফট। অর্থাৎ এদিনে ছেলেমেয়েরা তাদের বাবাদের
কোনো না কোনো গিফট দিতে খুব পছন্দ করে। আর বাবারাও ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে
গিফট পেয়ে অভিভূত হন।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশেও নানা আয়োজন করা হয়েছে। বাবাকে শুভেচ্ছা জানাতে
কার্ড, গিফট হিসেবে ফাদারস ডে মগ, টি-শার্ট ইত্যাদি তৈরি করেছে গিফট
কর্নারগুলো। পাশাপাশি এ দিবসকে ঘিরে নাটক, টকশোসহ টিভি অনুষ্ঠানের আয়োজন
করা হয়েছে।
No comments