চট্টগ্রামে তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনা- কর্ণফুলী নদীতে তেল ছড়াচ্ছে by প্রণব বল
বোয়ালখালীতে সেতু ভেঙে খালে পড়ে যায় তেলবাহী ট্রেন। এতে ট্রেনের তিনটি ওয়াগন থেকে ৭০ হাজার লিটারের বেশি তেল কর্ণফুলীর পানিতে ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল তোলা ছবি l প্রথম আলো |
চট্টগ্রামের
বোয়ালখালী রেলসেতু ভেঙে খালে পড়ে যাওয়া ট্রেনের তিনটি ওয়াগন থেকে
কর্ণফুলী নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়েছে। নদীর সঙ্গে সংযুক্ত এই খালে
জোয়ার-ভাটার প্রভাব রয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে কর্ণফুলী নদীর দূরত্ব
প্রায় ১০ কিলোমিটার। ছড়িয়ে পড়া তেলের দূষণে খালসহ আশপাশের এলাকার
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।
তেল ছড়িয়ে পড়ায় নদীর স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হবে বলে জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সস অ্যান্ড ফিশারিজ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক মো. শাহাদত হোসেন। তিনি জানান, নদীর পানির অক্সিজেন কমে গিয়ে ছোট মাছ মরে যাবে। এর পর বালুকণার সঙ্গে তেল মিশে নদীর নিচের অংশ দূষিত করবে। এতে পানির নিচে বসবাসকারী জীববৈচিত্র্য হুমকিতে পড়বে। এ ছাড়া যে এলাকায় তেল ছড়িয়ে পড়বে সেখানে মাছের আবাস নষ্ট হবে। এতে জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
গতকাল শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক মো. মকবুল হোসেনসহ প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। তাঁরা খালের পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। মো. মকবুল হোসেন জানান, ৭০ হাজার লিটারের বেশি তেল খাল-বিল, পুকুর ও কর্ণফুলী নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে আশপাশের ২০ কিলোমিটার এলাকায় এই তেল ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, দূষণ কমাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তবে রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মফিজুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, রশি ও খড় দিয়ে তেল অপসারণ করার চেষ্টা করছেন রেলের কর্মীরা। তিনি জানান, প্রতিটি ওয়াগনে ২৫ হাজার লিটার তেল ছিল। দুর্ঘটনাকবলিত তিনটি ওয়াগন থেকে বেশির ভাগ তেল বের হয়ে গেছে।
গত শুক্রবার দুপুরে বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার সীমান্তে শাইরাপুল এলাকায় হারগেজি খালের (বোয়ালখালী খাল) সেতু পার হওয়ার সময় সেটি ভেঙে খালে পড়ে যায় তেলবাহী ট্রেন। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা তেল ডিপো থেকে ফার্নেস অয়েল নিয়ে ট্রেনটি চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী যাচ্ছিল। দোহাজারী পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য আটটি ওয়াগনে করে তেল নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। দুর্ঘটনায় দুটি ওয়াগন খালে পড়ে যায়। আরেকটি ওয়াগন অর্ধেক ডুবে যায়। এ ছাড়া ট্রেনের ইঞ্জিন খালের পাশে কাত হয়ে পড়ে যায় এবং আরও একটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়।
সরেজমিনে গতকাল দুপুরে দুর্ঘটনাস্থলে দেখা যায়, খালের পানিতে কালচে তেল ভেসে আছে। দুই পাড়ের গাছের গোড়া ও সবজিখেতে কালো তেল লেগে রয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার ঘুরে খালের মিলিটারি পুল এলাকা দিয়ে তেল নদীতে মিশছে।
কর্ণফুলী নদীর মাঝি আবু জাকের জানান, শুক্রবার রাতেই নদীতে তেল ভাসতে দেখা যায়। কালুরঘাট সেতুর নিচে নদীতে গতকাল দুপুরেও তেল ভাসতে দেখেছেন তিনি।
হারগেজি খাল এলাকার বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন জানান, ট্রেন দুর্ঘটনার পর জোয়ারের সঙ্গে তেল করলডাঙ্গা পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। আবার ভাটার সঙ্গে তা গিয়ে মিশছে কর্ণফুলী নদীতে। জোয়ারের সঙ্গে পুকুরেও ছড়িয়ে পড়েছে তেল।
গতকাল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন স্থানীয় সাংসদ মঈন উদ্দীন খান বাদল। তিনি খাল থেকে তেল অপসারণের জন্য রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
দোহাজারী পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের মহাব্যবস্থাপক আরিফুর রহমান ভূঁইয়াও গতকাল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে তেল ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
উদ্ধারকাজ: দুর্ঘটনার পর চারটি ওয়াগনকে রিলিফ ট্রেনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া লাইনচ্যুত একটি ওয়াগন থেকে পাইপের মাধ্যমে তেল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রেলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মফিজুর রহমান জানান, উদ্ধারকাজ শেষ করতে অনেক সময় লাগবে। দুই দিনের মধ্যে ইঞ্জিনটি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। রেললাইন সচল করতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লাগবে।
তেল ছড়িয়ে পড়ায় নদীর স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হবে বলে জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সস অ্যান্ড ফিশারিজ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক মো. শাহাদত হোসেন। তিনি জানান, নদীর পানির অক্সিজেন কমে গিয়ে ছোট মাছ মরে যাবে। এর পর বালুকণার সঙ্গে তেল মিশে নদীর নিচের অংশ দূষিত করবে। এতে পানির নিচে বসবাসকারী জীববৈচিত্র্য হুমকিতে পড়বে। এ ছাড়া যে এলাকায় তেল ছড়িয়ে পড়বে সেখানে মাছের আবাস নষ্ট হবে। এতে জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
গতকাল শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক মো. মকবুল হোসেনসহ প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। তাঁরা খালের পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। মো. মকবুল হোসেন জানান, ৭০ হাজার লিটারের বেশি তেল খাল-বিল, পুকুর ও কর্ণফুলী নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে আশপাশের ২০ কিলোমিটার এলাকায় এই তেল ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, দূষণ কমাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তবে রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মফিজুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, রশি ও খড় দিয়ে তেল অপসারণ করার চেষ্টা করছেন রেলের কর্মীরা। তিনি জানান, প্রতিটি ওয়াগনে ২৫ হাজার লিটার তেল ছিল। দুর্ঘটনাকবলিত তিনটি ওয়াগন থেকে বেশির ভাগ তেল বের হয়ে গেছে।
গত শুক্রবার দুপুরে বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার সীমান্তে শাইরাপুল এলাকায় হারগেজি খালের (বোয়ালখালী খাল) সেতু পার হওয়ার সময় সেটি ভেঙে খালে পড়ে যায় তেলবাহী ট্রেন। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা তেল ডিপো থেকে ফার্নেস অয়েল নিয়ে ট্রেনটি চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী যাচ্ছিল। দোহাজারী পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য আটটি ওয়াগনে করে তেল নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। দুর্ঘটনায় দুটি ওয়াগন খালে পড়ে যায়। আরেকটি ওয়াগন অর্ধেক ডুবে যায়। এ ছাড়া ট্রেনের ইঞ্জিন খালের পাশে কাত হয়ে পড়ে যায় এবং আরও একটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়।
সরেজমিনে গতকাল দুপুরে দুর্ঘটনাস্থলে দেখা যায়, খালের পানিতে কালচে তেল ভেসে আছে। দুই পাড়ের গাছের গোড়া ও সবজিখেতে কালো তেল লেগে রয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার ঘুরে খালের মিলিটারি পুল এলাকা দিয়ে তেল নদীতে মিশছে।
কর্ণফুলী নদীর মাঝি আবু জাকের জানান, শুক্রবার রাতেই নদীতে তেল ভাসতে দেখা যায়। কালুরঘাট সেতুর নিচে নদীতে গতকাল দুপুরেও তেল ভাসতে দেখেছেন তিনি।
হারগেজি খাল এলাকার বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন জানান, ট্রেন দুর্ঘটনার পর জোয়ারের সঙ্গে তেল করলডাঙ্গা পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। আবার ভাটার সঙ্গে তা গিয়ে মিশছে কর্ণফুলী নদীতে। জোয়ারের সঙ্গে পুকুরেও ছড়িয়ে পড়েছে তেল।
গতকাল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন স্থানীয় সাংসদ মঈন উদ্দীন খান বাদল। তিনি খাল থেকে তেল অপসারণের জন্য রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
দোহাজারী পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের মহাব্যবস্থাপক আরিফুর রহমান ভূঁইয়াও গতকাল দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে তেল ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
উদ্ধারকাজ: দুর্ঘটনার পর চারটি ওয়াগনকে রিলিফ ট্রেনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া লাইনচ্যুত একটি ওয়াগন থেকে পাইপের মাধ্যমে তেল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রেলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মফিজুর রহমান জানান, উদ্ধারকাজ শেষ করতে অনেক সময় লাগবে। দুই দিনের মধ্যে ইঞ্জিনটি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। রেললাইন সচল করতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লাগবে।
No comments