বিজয়ের দিন, বিজয়ের চিরদিন by পবিত্র সরকার
আজ মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের তেতাল্লিশ বছর পর,
বাঙালির বিজয়ের সেই দিনটির কথা যাদের মনে পড়বে, পরিণত যারা সেই বিপুল
উল্লাসের সবটুকু ধরে রাখবেন, তেমন খুব বেশি মানুষ বোধ হয় আর আমাদের মধ্যে
নেই। আমি কিছু আত্মজীবনী পড়েছি, দু-একটি উপন্যাসে বর্ণনাও দেখেছি, তার থেকে
ওই দিনটিকে মনে মনে নির্মাণ করার চেষ্টা করেছি। প্রায়ই মনে হয়, এমন একটা
দিনে যদি ঢাকা বা বাংলাদেশের কোথাও উপস্থিত থেকে মানুষের মুক্তির ওই উৎসব
প্রত্যক্ষ করতে পারতাম।
আমি যদিও এখন ভারতের নাগরিক, স্বাধীনতার দিনটিতে ছিলাম তখনকার পূর্ব পাকিস্তানে। ধামরাই হার্ডিঞ্জ স্কুলের ক্লাস ফোরে পড়ি, ১৪ আগস্ট স্কুলে কে যেন ছাত্রদের মধ্যে পটকা বিলি করে গেল। দুটি পটকা নিয়ে মহাখুশি হয়ে বাড়ি ফিরলাম। রাতে বারান্দায় টিনের দেয়ালের কাছে বিশাল আওয়াজ করে পটকা ফাটালাম, গুরুজনরা দৌড়ে এসে বকাবকি করতে লাগলেন, বললেন, গাধা, কীসের এত আহ্লাদ তোর? আমি কি জানতাম, পাকিস্তানের জন্মের উৎসব করছি পটকা ফাটিয়ে? কিন্তু উৎসব কোথায়? হিন্দুর গ্রাম, দেশ ভাগের যন্ত্রণা ও আতংকে বড়রা স্তব্ধ, তার মধ্যে ইতিহাসের চকিত অট্টহাস্যের মতো ওই দুটি পটকার আওয়াজ আবার মিলিয়ে গেল, সব গ্রাম আবার বিপুল স্তব্ধতায় ডুবে গেল। আবার জেগে উঠল পৃথিবীব্যাপ্ত ঝিঁঝির শব্দ, যে শব্দ ওই স্তব্ধতাকেই যেন গাঢ়তর করে।
ভারতের স্বাধীনতার দিনটিও আমি তাই প্রত্যক্ষ করতে পারিনি। আসলে একটা দেশের মুক্তির উৎসব দেখার জন্য রাজধানীতে এসে পৌঁছতে হয়। আমরা তখন রাজধানী থেকেই দূরে। তিন মাস পর যখন পশ্চিম বাংলার রাজধানীতে এসে পৌঁছলাম, তখন ১৫ বা ১৬ আগস্টের খবরের কাগজ কোথায় পাবে এগারো বছরের বালক? অনেক পরে, বড় হয়ে মানুষজনের স্মৃতিকথায় পেয়েছি সেই অবিশ্বাস্য দিনের কথা। কিছুদিন আগে ঘটে গেছে কলকাতার ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গা; কিন্তু সেদিন দলে দলে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মধ্যরাতে রাস্তায় বেরিয়ে এসে পরস্পরকে আলিঙ্গন করছে, সারা কলকাতার রাস্তায় মানুষের উল্লসিত মিছিল, মিষ্টির দোকানে মানুষকে মিষ্টি বিলানো হচ্ছে, তিনরঙা জাতীয় পতাকায় ছেয়ে গেছে সারা শহর, সারা কলকাতায় স্বদেশী গান বাজছে মাইক্রোফোনে। মানুষ রাজনৈতিক নেতাদের ভাগাভাগি, ভাঙাভাঙিকে উপেক্ষা করে এক গভীর সম্প্রীতির উৎসবে ভারতের স্বাধীনতাকে স্বাগত জানিয়েছে। তখন টেলিভিশন ছিল না, চলচ্চিত্র রঙিন হয়নি এ উপমহাদেশে, কাজেই ওই বালকের কাছে ওই দিনের সাদাকালো স্মৃতিরও তেমন কিছুই পৌঁছায়নি।
তারপর প্রতি বছর ১৫ আগস্ট উপলক্ষে খবরের কাগজের ক্রোড়পত্র বেরিয়েছে নানা রঙে, ছেলেমেয়েরা কাগজের পতাকা নিয়ে প্রভাতফেরি করেছে, তাদের সামনে ক্লাবের বাজনদাররা ড্রাম, বিউগল বাজিয়ে এগিয়ে গেছে, আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে সেসব দেখেছি, কাগজের রংচং থেকে সেই প্রথম দিনের বর্ণাঢ্যতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছি। কিছুতেই অবিকলটুকু উপলব্ধি করতে পারিনি। ইতিহাসের সম্পূর্ণ পুনর্নির্মাণ কী করে সম্ভব?
তারপর আস্তে আস্তে সবই কেমন কমে এসেছে। কাগজের ক্রোড়পত্র এখন আর বের হয় না, রাস্তায় ক্লাবের ছেলেমেয়েদের শোভাযাত্রা নেই, মিলিটারি ব্যান্ড নেই- সব কেমন ম্যাড়মেড়ে হয়ে গেছে। ১৫ আগস্ট হয়ে গেছে আর একটা জাতীয় ছুটির দিন মাত্র। খবরের কাগজে সরকারি বা কোনো দোকানের বিজ্ঞাপন দেখে মনে হয় যে, আজ ১৫ আগস্ট, এই দিনে ১৯০ বছরের পরাধীনতা অতিক্রম করে উপমহাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। এ দেশ ইংরেজের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যুদ্ধ করেনি, কোনো মুক্তিবাহিনী গঠন করেনি। দেশের বাইরে সুভাষচন্দ্র যে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেছিলেন, সে সম্বন্ধে অহিংসবাদী জাতীয় নেতাদের মনে খুব অভ্যর্থনা বা গর্ববোধ ছিল না। কিন্তু তবু এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, আজাদ হিন্দ বাহিনীর অভিযান এবং বোম্বাইয়ের নৌ-বিদ্রোহ ইংরেজকে বুঝিয়ে দিয়েছিল, একবার যখন তাদের সৈন্যদলের ওপর দখল নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে, তখন আর সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখা খুব সহজ কাজ হবে না, কারণ প্রশ্নহীন ও একান্ত বশংবদ সৈন্যবাহিনী ছাড়া সাম্রাজ্যের খুঁটি পোক্ত থাকে না। এ পারের স্বাধীনতাকে তাই বিজয় দিবস হিসেবে দাবি করার কোনো উপলক্ষ গড়ে ওঠেনি। তা যেন গূঢ় বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের ক্ষমতার দণ্ডটির হস্তান্তর মাত্র, হস্তান্তর দেশের এক ক্ষমতাকাক্সক্ষী নব্য শাসকশ্রেণীর হাতে- খানিকটা স্পোর্টসের রিলে রেসে নিজের দলের দৌড়বাজের হাতে ব্যাটন তুলে দেয়ার মতো।
২
বছর দুই-তিন ঢাকায় উপস্থিত থেকে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের উদযাপন আমি সামনে থেকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। সে দেশে স্বাধীনতার বয়স চল্লিশ হয়ে গেছে তখন, তবু এক আশ্চর্য উন্মাদনা জেগে উঠেছিল সেই দিনটিতে প্রত্যেকবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছিলাম, একবার টিএসসি, আর দুবার সেন্টার অব এক্সসেলেন্সে, প্রতিবারই দেখেছি ভোররাত থেকে ছেলেমেয়েদের গান শুরু হয়েছে, মিছিল বেরিয়ে রঙবেরঙের, ড্রাম-ঢাকের বাদ্য দুপাশের বাড়িগুলোর দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয়েছে আর গান চলেছে ১৬ ডিসেম্বর রাতজুড়ে। বিরাম নেই, ক্লান্তি নেই, ক্ষান্তি নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছোট ছোট স্টেজ বেঁধে নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি করে চলেছে সমবেত কণ্ঠের গান। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, অতুলপ্রসাদ, লালন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী এবং পল্লী বাংলার হৃদয়-উন্মথিত করা অজস্র পল্লী সঙ্গীত। আমার মনে হয়েছিল সারা দেশটা গান গাইছে। জাগরণের গান, মুক্তির গান। যে-আবেগ প্রথম বিস্ফোরণের মতো ফেটে পড়েছিল ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর, সেই আবেগ যেন আবার জেগে উঠেছে চার দশক পরও, মূলত তরুণ নাগরিকদের হৃদয়ে। আমার আশ্চর্য লেগেছিল এই ভেবে, এই তরুণ-তরুণীদের কেউ প্রথম বিজয় দিবস প্রত্যক্ষ করেনি, অনেকেরই জন্ম তার বেশ পরে, তবু তাদের মধ্যেই বেঁচে আছে বিজয়ের তীব্র স্বাদ। এ বিজয় কি কোনো শত্রুর বিরুদ্ধে? নাকি তা রূপান্তরিত হয়েছে প্রবল এক দেশপ্রেমে- যে দেশপ্রেমের সার্থকতম প্রকাশ তাদের নির্বাচিত জাতীয় সঙ্গীতে- আমার সোনার বাংলা,
আমি তোমায় ভালোবাসিতে? এ আবেগ কোথাও চিরন্তনভাবে জেগে আছে তো? নাকি তা বিশেষ বিশেষ উপলক্ষে জেগে উঠবে, কেবল একটা উদযাপনের সুযোগ খুঁজবে, তারপর আর বাকি পাঁচটা দিন ঘুমিয়ে থাকবে? পদ্মার এপারে যেমন হয়েছে।
ইতিহাস আমাদের বলে, একটা বিজয়ে সব শত্রু শেষ হয়ে যায় না। একটা বিজয়ে সব বিজয়ের সমাধাও হয় না। আরও অনেক যুদ্ধ থাকে লড়াই আর জয় করার। ভারতেও আমরা দেখেছি, শুধু ইংরেজ আমাদের শত্রু ছিল না। ছিল আমাদের নিজেদের অজস্র বিরোধ। জাতীয়তা, যে সাধনা স্বাধীনতার আসল সাধনা, তাতে আমরা এখনও সম্পূর্ণ জয় অর্জন করতে পারিনি। ইংরেজ আর অন্যরা তৈরি করেছিল সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে অশ্লীল বিরোধ, তাতে আমরাও কম ইন্ধন জোগাইনি। আর ভারতের বৃহত্তম ধর্মে ছিল জাতপাতের অজস্র দূরত্ব, কঠিন সব দেয়াল- যা পেরিয়ে মানুষের কাছে মানুষের পৌঁছানোই ছিল প্রায় অসম্ভব। এখন দলিতরা জেগে উঠেছে কিন্তু তাদের সবাই পূর্ণ মানবিক অধিকার এখনও পায়নি। তথাকথিত মূলস্রোত আর প্রান্তিক আদিবাসীদের মধ্যে অধিকারের সমবণ্টন হয়নি, সংবিধান যাই বলুক। ধনী আর দরিদ্রের ব্যবধানও বাড়ছে। সরকার আসছে সরকার যাচ্ছে, ভারত এখনও পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নিরক্ষরের দেশ হয়ে আছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের ছেলেমেয়েরা দিল্লি বা মাইশোরে নিগৃহীত হয়, কখনও কখনও খুনির রক্তাক্ত শিকারও হয়ে যায়। স্বাধীনতা এলো; কিন্তু অখণ্ড জাতীয়তা তৈরি হতে এখনও কত দেরি কে জানে। তাহলে এ স্বাধীনতা কী দিল আমাদের? সুইজ ব্যাংকে লক্ষ-কোটি কালো টাকা জমা রাখার মতো কিছু নোংরা ধনীর সংখ্যা?
বিজয় দিবসের একটা দিকে আছে স্মৃতি, আর একটা দিকে ভবিষ্যৎ। কত মানুষের ত্যাগ, দুঃখ বহন, অত্যাচারিত হওয়ার স্মৃতি, লাখো মা-বোনের মর্যাদাহানির স্মৃতি, জীবিতের পৃথিবী থেকে কখনও হঠাৎ, কখনও অসহনীয় যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে মৃতের জগতে পৌঁছে যাওয়ার স্মৃতি। স্বজন হারানোর স্মৃতি, সর্বস্ব হারানোর স্মৃতি। ব্যক্তির স্মৃতি, জনপদের স্মৃতি, মহকুমা, জেলা, অঞ্চলের স্মৃতি। এ স্মৃতিগুলো যাতে
হারিয়ে না যায় তার জন্য লেখা হয়েছে অজস্র ব্যক্তির স্মৃতিকথন। আর জানি তারই পাশাপাশি প্রস্তুত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের মহাকায় ইতিহাস- সে এক অগণিত মহাকাব্যের গুচ্ছ হয়ে উঠবে। আমাদের মতো সাধারণ মানুষ হয়তো স্মৃতিকথাগুলোকেই সম্বল করে মুক্তিযুদ্ধের তীব্র আবেগকে বুঝে নেয়ার চেষ্টা করব।
কিন্তু সামনে তাকানোর একটা ব্যাপারও তো নিশ্চয়ই আছে। স্মৃতি নিয়ে তো চিরকাল বসে থাকা যায় না। বাইরের শত্র“কে আমরা পরাজিত করেছি, ঘরের শত্রু কি সব নিশ্চিহ্ন? আমরাই যে কখনও আমাদের শত্রু হয়ে উঠি- তা এ উপমহাদেশের জাতীয়তার এক ভয়ংকর সংকট। পাকিস্তান এ সংকটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে; কিন্তু গণতন্ত্র সে দেশে শক্ত ভিত তৈরি করতে পারেনি বলে তার যন্ত্রণা কমছে না। ভারতে গণতন্ত্র কিছুটা পরিসর পেয়েছে, কিন্তু সংখ্যাধিক্যের জোরে সে দেশে যারা ক্ষমতায় এসে যায় তারাই মনে করে আমরা একচ্ছত্র, যা হবে সব আমাদের ইচ্ছামতোই হবে। তাই সিবিএসই স্কুলে তৃতীয় ভাষা হিসেবে জার্মানকে তুলে দিয়ে সংস্কৃতকে এনে বসানো হয়, আর সুষমা স্বরাজের মতো পরিশীলিত মেজাজের এক ভদ্রমহিলা হঠাৎ খেপে উঠে ঘোষণা করেন গীতাকে ভারতের জাতীয় গ্রন্থ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। তখন তলে তলে কারা সব কী পরিকল্পনা করছে, সরকারের পেছনে কোন সরকার সক্রিয় তা ধরা পড়ে যায়। উপমহাদেশের, হয়তো পৃথিবীর আরও অনেক দেশের এ সংকট থেকে সব দেশেরই শিক্ষা নেয়ার আছে। পৃথিবীতে একভাষী দেশ যেমন নেই, তেমনই এক-সংস্কৃতির দেশও নেই। বিশ্বজুড়ে নানামুখী অভিবাসনের ফলে বড়লোকের দেশগুলোতে বহুমাত্রিক সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশগুলোয় সংস্কৃতি তো জন্ম থেকেই বহুমাত্রিক। তার একটা বড় দুর্ভাগ্য তৈরি হয়েছিল নানা ধরনের প্রশাসনে, সে দুর্ভাগ্য দূর হয়েছে। জাতিগুলো আত্মনির্মাণ শুরু করেছে, ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য স্থির রেখে। যেমন এ আত্মনির্মাণের জন্য মহান বিজয় দিবসের স্মৃতিটি উজ্জ্বলভাবে আমাদের মনে জাগরূক করা দরকার, তেমনই আমাদের নিজেদের মধ্যে যদি কোনো শত্রু লুকিয়ে থাকে তারও সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া দরকার। ওই ভূখণ্ডে জাত এক পরদেশীর নিয়ত প্রার্থনা- মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-উপজাতি-অনুপজাতি, নগর-গ্রামের মিলিত কর্মসাধনা বাংলাদেশকে এক মহামানবের উজ্জ্বল মিলনক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলুক। কাছ থেকে লক্ষ করি, বিজয় চিহ্নিত হয়ে চলেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে, তার শিক্ষায়, তার নানাবিধ উন্নয়নে, তার বিপুল আত্মবিশ্বাসে, স্বপ্নে- এ দেশ উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে উন্নতিশীল দেশ বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৭১ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখাননি, ঘোষণা করেছিলেন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল বাস্কেট কেস, এ এক আন্তর্জাতিক উচ্ছিষ্টভোগী রাষ্ট্রে পরিণত হবে। বাংলাদেশ কিসিঞ্জারকে ভ্রান্ত (নাকি মিথ্যাবাদী) প্রমাণ করেছে।
মহান বিজয় দিবস শুধু এক সামরিক যুদ্ধজয়ের দিন নয়, দেশের প্রতি সর্বাঙ্গীন ভালোবাসার দিবস বটে। দেশের সুখকে ভালোবাসা শুধু নয়, ভালোবেসে দেশের দুঃখকে মুছে দেয়ার দিবস। দেশের পিছিয়ে থাকাকে মুছে ফেলার জন্য অফুরন্ত ইচ্ছা ও নিরন্তর চেষ্টার দিবস।
পবিত্র সরকার : সাবেক উপাচার্য, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
আমি যদিও এখন ভারতের নাগরিক, স্বাধীনতার দিনটিতে ছিলাম তখনকার পূর্ব পাকিস্তানে। ধামরাই হার্ডিঞ্জ স্কুলের ক্লাস ফোরে পড়ি, ১৪ আগস্ট স্কুলে কে যেন ছাত্রদের মধ্যে পটকা বিলি করে গেল। দুটি পটকা নিয়ে মহাখুশি হয়ে বাড়ি ফিরলাম। রাতে বারান্দায় টিনের দেয়ালের কাছে বিশাল আওয়াজ করে পটকা ফাটালাম, গুরুজনরা দৌড়ে এসে বকাবকি করতে লাগলেন, বললেন, গাধা, কীসের এত আহ্লাদ তোর? আমি কি জানতাম, পাকিস্তানের জন্মের উৎসব করছি পটকা ফাটিয়ে? কিন্তু উৎসব কোথায়? হিন্দুর গ্রাম, দেশ ভাগের যন্ত্রণা ও আতংকে বড়রা স্তব্ধ, তার মধ্যে ইতিহাসের চকিত অট্টহাস্যের মতো ওই দুটি পটকার আওয়াজ আবার মিলিয়ে গেল, সব গ্রাম আবার বিপুল স্তব্ধতায় ডুবে গেল। আবার জেগে উঠল পৃথিবীব্যাপ্ত ঝিঁঝির শব্দ, যে শব্দ ওই স্তব্ধতাকেই যেন গাঢ়তর করে।
ভারতের স্বাধীনতার দিনটিও আমি তাই প্রত্যক্ষ করতে পারিনি। আসলে একটা দেশের মুক্তির উৎসব দেখার জন্য রাজধানীতে এসে পৌঁছতে হয়। আমরা তখন রাজধানী থেকেই দূরে। তিন মাস পর যখন পশ্চিম বাংলার রাজধানীতে এসে পৌঁছলাম, তখন ১৫ বা ১৬ আগস্টের খবরের কাগজ কোথায় পাবে এগারো বছরের বালক? অনেক পরে, বড় হয়ে মানুষজনের স্মৃতিকথায় পেয়েছি সেই অবিশ্বাস্য দিনের কথা। কিছুদিন আগে ঘটে গেছে কলকাতার ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গা; কিন্তু সেদিন দলে দলে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মধ্যরাতে রাস্তায় বেরিয়ে এসে পরস্পরকে আলিঙ্গন করছে, সারা কলকাতার রাস্তায় মানুষের উল্লসিত মিছিল, মিষ্টির দোকানে মানুষকে মিষ্টি বিলানো হচ্ছে, তিনরঙা জাতীয় পতাকায় ছেয়ে গেছে সারা শহর, সারা কলকাতায় স্বদেশী গান বাজছে মাইক্রোফোনে। মানুষ রাজনৈতিক নেতাদের ভাগাভাগি, ভাঙাভাঙিকে উপেক্ষা করে এক গভীর সম্প্রীতির উৎসবে ভারতের স্বাধীনতাকে স্বাগত জানিয়েছে। তখন টেলিভিশন ছিল না, চলচ্চিত্র রঙিন হয়নি এ উপমহাদেশে, কাজেই ওই বালকের কাছে ওই দিনের সাদাকালো স্মৃতিরও তেমন কিছুই পৌঁছায়নি।
তারপর প্রতি বছর ১৫ আগস্ট উপলক্ষে খবরের কাগজের ক্রোড়পত্র বেরিয়েছে নানা রঙে, ছেলেমেয়েরা কাগজের পতাকা নিয়ে প্রভাতফেরি করেছে, তাদের সামনে ক্লাবের বাজনদাররা ড্রাম, বিউগল বাজিয়ে এগিয়ে গেছে, আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে সেসব দেখেছি, কাগজের রংচং থেকে সেই প্রথম দিনের বর্ণাঢ্যতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছি। কিছুতেই অবিকলটুকু উপলব্ধি করতে পারিনি। ইতিহাসের সম্পূর্ণ পুনর্নির্মাণ কী করে সম্ভব?
তারপর আস্তে আস্তে সবই কেমন কমে এসেছে। কাগজের ক্রোড়পত্র এখন আর বের হয় না, রাস্তায় ক্লাবের ছেলেমেয়েদের শোভাযাত্রা নেই, মিলিটারি ব্যান্ড নেই- সব কেমন ম্যাড়মেড়ে হয়ে গেছে। ১৫ আগস্ট হয়ে গেছে আর একটা জাতীয় ছুটির দিন মাত্র। খবরের কাগজে সরকারি বা কোনো দোকানের বিজ্ঞাপন দেখে মনে হয় যে, আজ ১৫ আগস্ট, এই দিনে ১৯০ বছরের পরাধীনতা অতিক্রম করে উপমহাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। এ দেশ ইংরেজের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যুদ্ধ করেনি, কোনো মুক্তিবাহিনী গঠন করেনি। দেশের বাইরে সুভাষচন্দ্র যে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করেছিলেন, সে সম্বন্ধে অহিংসবাদী জাতীয় নেতাদের মনে খুব অভ্যর্থনা বা গর্ববোধ ছিল না। কিন্তু তবু এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, আজাদ হিন্দ বাহিনীর অভিযান এবং বোম্বাইয়ের নৌ-বিদ্রোহ ইংরেজকে বুঝিয়ে দিয়েছিল, একবার যখন তাদের সৈন্যদলের ওপর দখল নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে, তখন আর সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখা খুব সহজ কাজ হবে না, কারণ প্রশ্নহীন ও একান্ত বশংবদ সৈন্যবাহিনী ছাড়া সাম্রাজ্যের খুঁটি পোক্ত থাকে না। এ পারের স্বাধীনতাকে তাই বিজয় দিবস হিসেবে দাবি করার কোনো উপলক্ষ গড়ে ওঠেনি। তা যেন গূঢ় বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের ক্ষমতার দণ্ডটির হস্তান্তর মাত্র, হস্তান্তর দেশের এক ক্ষমতাকাক্সক্ষী নব্য শাসকশ্রেণীর হাতে- খানিকটা স্পোর্টসের রিলে রেসে নিজের দলের দৌড়বাজের হাতে ব্যাটন তুলে দেয়ার মতো।
২
বছর দুই-তিন ঢাকায় উপস্থিত থেকে বাংলাদেশের বিজয় দিবসের উদযাপন আমি সামনে থেকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। সে দেশে স্বাধীনতার বয়স চল্লিশ হয়ে গেছে তখন, তবু এক আশ্চর্য উন্মাদনা জেগে উঠেছিল সেই দিনটিতে প্রত্যেকবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছিলাম, একবার টিএসসি, আর দুবার সেন্টার অব এক্সসেলেন্সে, প্রতিবারই দেখেছি ভোররাত থেকে ছেলেমেয়েদের গান শুরু হয়েছে, মিছিল বেরিয়ে রঙবেরঙের, ড্রাম-ঢাকের বাদ্য দুপাশের বাড়িগুলোর দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হয়েছে আর গান চলেছে ১৬ ডিসেম্বর রাতজুড়ে। বিরাম নেই, ক্লান্তি নেই, ক্ষান্তি নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছোট ছোট স্টেজ বেঁধে নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি করে চলেছে সমবেত কণ্ঠের গান। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, অতুলপ্রসাদ, লালন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী এবং পল্লী বাংলার হৃদয়-উন্মথিত করা অজস্র পল্লী সঙ্গীত। আমার মনে হয়েছিল সারা দেশটা গান গাইছে। জাগরণের গান, মুক্তির গান। যে-আবেগ প্রথম বিস্ফোরণের মতো ফেটে পড়েছিল ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর, সেই আবেগ যেন আবার জেগে উঠেছে চার দশক পরও, মূলত তরুণ নাগরিকদের হৃদয়ে। আমার আশ্চর্য লেগেছিল এই ভেবে, এই তরুণ-তরুণীদের কেউ প্রথম বিজয় দিবস প্রত্যক্ষ করেনি, অনেকেরই জন্ম তার বেশ পরে, তবু তাদের মধ্যেই বেঁচে আছে বিজয়ের তীব্র স্বাদ। এ বিজয় কি কোনো শত্রুর বিরুদ্ধে? নাকি তা রূপান্তরিত হয়েছে প্রবল এক দেশপ্রেমে- যে দেশপ্রেমের সার্থকতম প্রকাশ তাদের নির্বাচিত জাতীয় সঙ্গীতে- আমার সোনার বাংলা,
আমি তোমায় ভালোবাসিতে? এ আবেগ কোথাও চিরন্তনভাবে জেগে আছে তো? নাকি তা বিশেষ বিশেষ উপলক্ষে জেগে উঠবে, কেবল একটা উদযাপনের সুযোগ খুঁজবে, তারপর আর বাকি পাঁচটা দিন ঘুমিয়ে থাকবে? পদ্মার এপারে যেমন হয়েছে।
ইতিহাস আমাদের বলে, একটা বিজয়ে সব শত্রু শেষ হয়ে যায় না। একটা বিজয়ে সব বিজয়ের সমাধাও হয় না। আরও অনেক যুদ্ধ থাকে লড়াই আর জয় করার। ভারতেও আমরা দেখেছি, শুধু ইংরেজ আমাদের শত্রু ছিল না। ছিল আমাদের নিজেদের অজস্র বিরোধ। জাতীয়তা, যে সাধনা স্বাধীনতার আসল সাধনা, তাতে আমরা এখনও সম্পূর্ণ জয় অর্জন করতে পারিনি। ইংরেজ আর অন্যরা তৈরি করেছিল সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে অশ্লীল বিরোধ, তাতে আমরাও কম ইন্ধন জোগাইনি। আর ভারতের বৃহত্তম ধর্মে ছিল জাতপাতের অজস্র দূরত্ব, কঠিন সব দেয়াল- যা পেরিয়ে মানুষের কাছে মানুষের পৌঁছানোই ছিল প্রায় অসম্ভব। এখন দলিতরা জেগে উঠেছে কিন্তু তাদের সবাই পূর্ণ মানবিক অধিকার এখনও পায়নি। তথাকথিত মূলস্রোত আর প্রান্তিক আদিবাসীদের মধ্যে অধিকারের সমবণ্টন হয়নি, সংবিধান যাই বলুক। ধনী আর দরিদ্রের ব্যবধানও বাড়ছে। সরকার আসছে সরকার যাচ্ছে, ভারত এখনও পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নিরক্ষরের দেশ হয়ে আছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের ছেলেমেয়েরা দিল্লি বা মাইশোরে নিগৃহীত হয়, কখনও কখনও খুনির রক্তাক্ত শিকারও হয়ে যায়। স্বাধীনতা এলো; কিন্তু অখণ্ড জাতীয়তা তৈরি হতে এখনও কত দেরি কে জানে। তাহলে এ স্বাধীনতা কী দিল আমাদের? সুইজ ব্যাংকে লক্ষ-কোটি কালো টাকা জমা রাখার মতো কিছু নোংরা ধনীর সংখ্যা?
বিজয় দিবসের একটা দিকে আছে স্মৃতি, আর একটা দিকে ভবিষ্যৎ। কত মানুষের ত্যাগ, দুঃখ বহন, অত্যাচারিত হওয়ার স্মৃতি, লাখো মা-বোনের মর্যাদাহানির স্মৃতি, জীবিতের পৃথিবী থেকে কখনও হঠাৎ, কখনও অসহনীয় যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে মৃতের জগতে পৌঁছে যাওয়ার স্মৃতি। স্বজন হারানোর স্মৃতি, সর্বস্ব হারানোর স্মৃতি। ব্যক্তির স্মৃতি, জনপদের স্মৃতি, মহকুমা, জেলা, অঞ্চলের স্মৃতি। এ স্মৃতিগুলো যাতে
হারিয়ে না যায় তার জন্য লেখা হয়েছে অজস্র ব্যক্তির স্মৃতিকথন। আর জানি তারই পাশাপাশি প্রস্তুত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের মহাকায় ইতিহাস- সে এক অগণিত মহাকাব্যের গুচ্ছ হয়ে উঠবে। আমাদের মতো সাধারণ মানুষ হয়তো স্মৃতিকথাগুলোকেই সম্বল করে মুক্তিযুদ্ধের তীব্র আবেগকে বুঝে নেয়ার চেষ্টা করব।
কিন্তু সামনে তাকানোর একটা ব্যাপারও তো নিশ্চয়ই আছে। স্মৃতি নিয়ে তো চিরকাল বসে থাকা যায় না। বাইরের শত্র“কে আমরা পরাজিত করেছি, ঘরের শত্রু কি সব নিশ্চিহ্ন? আমরাই যে কখনও আমাদের শত্রু হয়ে উঠি- তা এ উপমহাদেশের জাতীয়তার এক ভয়ংকর সংকট। পাকিস্তান এ সংকটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে; কিন্তু গণতন্ত্র সে দেশে শক্ত ভিত তৈরি করতে পারেনি বলে তার যন্ত্রণা কমছে না। ভারতে গণতন্ত্র কিছুটা পরিসর পেয়েছে, কিন্তু সংখ্যাধিক্যের জোরে সে দেশে যারা ক্ষমতায় এসে যায় তারাই মনে করে আমরা একচ্ছত্র, যা হবে সব আমাদের ইচ্ছামতোই হবে। তাই সিবিএসই স্কুলে তৃতীয় ভাষা হিসেবে জার্মানকে তুলে দিয়ে সংস্কৃতকে এনে বসানো হয়, আর সুষমা স্বরাজের মতো পরিশীলিত মেজাজের এক ভদ্রমহিলা হঠাৎ খেপে উঠে ঘোষণা করেন গীতাকে ভারতের জাতীয় গ্রন্থ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। তখন তলে তলে কারা সব কী পরিকল্পনা করছে, সরকারের পেছনে কোন সরকার সক্রিয় তা ধরা পড়ে যায়। উপমহাদেশের, হয়তো পৃথিবীর আরও অনেক দেশের এ সংকট থেকে সব দেশেরই শিক্ষা নেয়ার আছে। পৃথিবীতে একভাষী দেশ যেমন নেই, তেমনই এক-সংস্কৃতির দেশও নেই। বিশ্বজুড়ে নানামুখী অভিবাসনের ফলে বড়লোকের দেশগুলোতে বহুমাত্রিক সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে। আমাদের দেশগুলোয় সংস্কৃতি তো জন্ম থেকেই বহুমাত্রিক। তার একটা বড় দুর্ভাগ্য তৈরি হয়েছিল নানা ধরনের প্রশাসনে, সে দুর্ভাগ্য দূর হয়েছে। জাতিগুলো আত্মনির্মাণ শুরু করেছে, ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য স্থির রেখে। যেমন এ আত্মনির্মাণের জন্য মহান বিজয় দিবসের স্মৃতিটি উজ্জ্বলভাবে আমাদের মনে জাগরূক করা দরকার, তেমনই আমাদের নিজেদের মধ্যে যদি কোনো শত্রু লুকিয়ে থাকে তারও সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া দরকার। ওই ভূখণ্ডে জাত এক পরদেশীর নিয়ত প্রার্থনা- মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-উপজাতি-অনুপজাতি, নগর-গ্রামের মিলিত কর্মসাধনা বাংলাদেশকে এক মহামানবের উজ্জ্বল মিলনক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলুক। কাছ থেকে লক্ষ করি, বিজয় চিহ্নিত হয়ে চলেছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে, তার শিক্ষায়, তার নানাবিধ উন্নয়নে, তার বিপুল আত্মবিশ্বাসে, স্বপ্নে- এ দেশ উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে উন্নতিশীল দেশ বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৭১ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখাননি, ঘোষণা করেছিলেন বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল বাস্কেট কেস, এ এক আন্তর্জাতিক উচ্ছিষ্টভোগী রাষ্ট্রে পরিণত হবে। বাংলাদেশ কিসিঞ্জারকে ভ্রান্ত (নাকি মিথ্যাবাদী) প্রমাণ করেছে।
মহান বিজয় দিবস শুধু এক সামরিক যুদ্ধজয়ের দিন নয়, দেশের প্রতি সর্বাঙ্গীন ভালোবাসার দিবস বটে। দেশের সুখকে ভালোবাসা শুধু নয়, ভালোবেসে দেশের দুঃখকে মুছে দেয়ার দিবস। দেশের পিছিয়ে থাকাকে মুছে ফেলার জন্য অফুরন্ত ইচ্ছা ও নিরন্তর চেষ্টার দিবস।
পবিত্র সরকার : সাবেক উপাচার্য, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়
No comments