ভারতে আবার সতীদাহ ‘সহমরণ’
ভারতের
বিহার রাজ্যে এক প্রবীণ মহিলা স্বামীর চিতায় ঝাঁপ দিয়ে ‘সহমরণে’ গেছেন বলে
পুলিশ নিশ্চিত করেছে, যদিও তারা একে ঠিক সতীদাহ বলে বর্ণনা করতে রাজি
হননি। পুলিশের বক্তব্য, শ্মশান থেকে মৃত ব্যক্তির আত্মীয়রা যখন সবাই চলে
এসেছিলেন তখন তার স্ত্রী সবার অজান্তে স্বামীর জ্বলন্ত চিতায় ঝাঁপ দিয়ে
নিজের জীবন বিসর্জন দেন। স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, মৃত স্বামীর প্রতি
অগাধ ভালোবাসা থেকেই ওই মহিলা এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। পুলিশ এখন
অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে এই ঘটনার তদন্ত করছে।
ভারতে সতীদাহ নিবারণ আইন
ভারতে বিবাহিত হিন্দু মহিলাদের স্বামীর চিতায় একসঙ্গে জ্বালিয়ে দেওয়ার যে সতীদাহ প্রথা শত শত বছর প্রচলিত ছিল, ব্রিটিশ আমলে তা আইন করে নিষিদ্ধ হয় ১৮২৯ সালে। এরপরও ১৯৮৭-এ স্বাধীন ভারতের রাজস্থানে যখন রূপ কানোয়ার নামে ১৮ বছরের এক তরুণীকে সতী হিসেবে জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনা সামনে আসে, সেই আইন আরো কঠোর করে সতীপ্রথায় উৎসাহ দেয়া, সাহায্য করা বা সতীকে গৌরবান্বিত করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। তবে বিহারের সহর্ষ জেলার পারমানিয়া গ্রামে গত শনিবার যে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানেও এক মহিলা স্বামীর চিতাতেই পুড়ে মারা গেছেন। তবে পুলিশ দাবি করছে এই ঘটনা সতীদাহ নিবারণ আইনের আওতায় পড়ছে না।
পুলিশের বিবরণ
সহর্ষ জেলার পুলিশ প্রধান পঙ্কজ সিনহা বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ‘একে কোনোমতেই সতী বলা যাবে না। এখানে যেটা হয়েছে, পারমানিয়া গ্রামের রামচরিত মাহাতো প্রায় বছর দুয়েক ক্যান্সারে ভুগে শনিবার মারা যান।’
‘খবর পেয়ে বিকেলেই তার আত্মীয়স্বজন এসে বাড়ির কাছেই একটি দুর্গামন্দিরের সামনে তাকে দাহ করাতে নিয়ে যান। চিতায় আগুন ধরিয়ে শ্মশানযাত্রীরা এরপর স্নান করতে চলে যান। বাড়ি ফিরে তারা দেখেন মৃতের স্ত্রী গাহওয়া দেবী, যিনি সারা দিন বাড়িতেই ছিলেন, তিনি নেই।’
‘খুঁজতে খুঁজতে তারা বেশ কিছুক্ষণ পর গিয়ে দেখেন স্বামীর চিতাতেই ওই মহিলা ঝাঁপ দিয়েছেন, কিন্তু ততক্ষণে তিনি মারা গেছেন, পুরো দেহটাই প্রায় পুড়ে গেছে।’
পুলিশের এই বর্ণনা অনুসারে গাহওয়া দেবীর মৃত্যু এক ধরনের আত্মহত্যাই, যদিও তা রীতিমতো অস্বাভাবিক।
গ্রামবাসীরা গর্বিত
সহর্ষ-র জেলা সদর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে পারমানিয়ার বাসিন্দারা কিন্তু এই সহমরণের ঘটনায় রীতিমতো গর্বিত বোধ করছেন, কেউ কেউ তো রাজস্থানে রূপ কানোয়ারের ঘটনার সঙ্গে তুলনা টানতেও দ্বিধা করছেন না।
এক গ্রামবাসী যেমন বলছিলেন, ‘বছর কয়েক আগে রাজস্থানে যে-ঘটনার কথা শুনেছিলাম, আজ আমাদের গ্রামেও সেই একই জিনিস ঘটল। এ থেকে বোঝা যায় ওই দম্পতির মধ্যে কী গভীর প্রেম ছিল।’
উত্তর ভারতের কোনও কোনও জায়গায় চিতায় আগুন ধরিয়েই শ্মশান ত্যাগ করার রেওয়াজ আছে ঠিকই, কিন্তু গ্রামের একটি দুর্গামন্দিরের সামনে সাজানো চিতাতেও এক মহিলার ঝাঁপিয়ে পড়ার ঘটনা কিভাবে গ্রামের সবার নজর এড়িয়ে গেল, এই ধরনের নানা প্রশ্ন কিন্তু এখনও রয়েই যাচ্ছে।
কিন্তু ঘটনাটা যে কিছুতেই সতী নয়, পুলিশ ও প্রশাসন আপাতত সেটা প্রমাণ করতেই ব্যস্ত।
সূত্র : বিবিসি বাংলা।
ভারতে সতীদাহ নিবারণ আইন
ভারতে বিবাহিত হিন্দু মহিলাদের স্বামীর চিতায় একসঙ্গে জ্বালিয়ে দেওয়ার যে সতীদাহ প্রথা শত শত বছর প্রচলিত ছিল, ব্রিটিশ আমলে তা আইন করে নিষিদ্ধ হয় ১৮২৯ সালে। এরপরও ১৯৮৭-এ স্বাধীন ভারতের রাজস্থানে যখন রূপ কানোয়ার নামে ১৮ বছরের এক তরুণীকে সতী হিসেবে জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনা সামনে আসে, সেই আইন আরো কঠোর করে সতীপ্রথায় উৎসাহ দেয়া, সাহায্য করা বা সতীকে গৌরবান্বিত করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। তবে বিহারের সহর্ষ জেলার পারমানিয়া গ্রামে গত শনিবার যে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানেও এক মহিলা স্বামীর চিতাতেই পুড়ে মারা গেছেন। তবে পুলিশ দাবি করছে এই ঘটনা সতীদাহ নিবারণ আইনের আওতায় পড়ছে না।
পুলিশের বিবরণ
সহর্ষ জেলার পুলিশ প্রধান পঙ্কজ সিনহা বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ‘একে কোনোমতেই সতী বলা যাবে না। এখানে যেটা হয়েছে, পারমানিয়া গ্রামের রামচরিত মাহাতো প্রায় বছর দুয়েক ক্যান্সারে ভুগে শনিবার মারা যান।’
‘খবর পেয়ে বিকেলেই তার আত্মীয়স্বজন এসে বাড়ির কাছেই একটি দুর্গামন্দিরের সামনে তাকে দাহ করাতে নিয়ে যান। চিতায় আগুন ধরিয়ে শ্মশানযাত্রীরা এরপর স্নান করতে চলে যান। বাড়ি ফিরে তারা দেখেন মৃতের স্ত্রী গাহওয়া দেবী, যিনি সারা দিন বাড়িতেই ছিলেন, তিনি নেই।’
‘খুঁজতে খুঁজতে তারা বেশ কিছুক্ষণ পর গিয়ে দেখেন স্বামীর চিতাতেই ওই মহিলা ঝাঁপ দিয়েছেন, কিন্তু ততক্ষণে তিনি মারা গেছেন, পুরো দেহটাই প্রায় পুড়ে গেছে।’
পুলিশের এই বর্ণনা অনুসারে গাহওয়া দেবীর মৃত্যু এক ধরনের আত্মহত্যাই, যদিও তা রীতিমতো অস্বাভাবিক।
গ্রামবাসীরা গর্বিত
সহর্ষ-র জেলা সদর থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে পারমানিয়ার বাসিন্দারা কিন্তু এই সহমরণের ঘটনায় রীতিমতো গর্বিত বোধ করছেন, কেউ কেউ তো রাজস্থানে রূপ কানোয়ারের ঘটনার সঙ্গে তুলনা টানতেও দ্বিধা করছেন না।
এক গ্রামবাসী যেমন বলছিলেন, ‘বছর কয়েক আগে রাজস্থানে যে-ঘটনার কথা শুনেছিলাম, আজ আমাদের গ্রামেও সেই একই জিনিস ঘটল। এ থেকে বোঝা যায় ওই দম্পতির মধ্যে কী গভীর প্রেম ছিল।’
উত্তর ভারতের কোনও কোনও জায়গায় চিতায় আগুন ধরিয়েই শ্মশান ত্যাগ করার রেওয়াজ আছে ঠিকই, কিন্তু গ্রামের একটি দুর্গামন্দিরের সামনে সাজানো চিতাতেও এক মহিলার ঝাঁপিয়ে পড়ার ঘটনা কিভাবে গ্রামের সবার নজর এড়িয়ে গেল, এই ধরনের নানা প্রশ্ন কিন্তু এখনও রয়েই যাচ্ছে।
কিন্তু ঘটনাটা যে কিছুতেই সতী নয়, পুলিশ ও প্রশাসন আপাতত সেটা প্রমাণ করতেই ব্যস্ত।
সূত্র : বিবিসি বাংলা।
No comments