সীমান্ত প্রহরায় বিএসএফের অতিরিক্ত ব্যাটালিয়ন গঠন করবে ভারত
সীমান্তে
মোতায়েনের জন্য বিএসএফের অতিরিক্ত চারটি ব্যাটালিয়ন গঠন করবে ভারত। এ
বিষয়টি এখন প্রস্তাব আকারে রয়েছে। এমন ব্যাটালিয়ন ২০১৫-১৬ সালে মোতায়েন
করতে চায় ভারত। একই সঙ্গে আসাম সীমান্তে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রতিরোধ গড়ে
তুলতে ৩ হাজারের বেশি নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করতে চায়। এ সবই করা হবে
বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্য। একই উদ্দেশে সীমান্তের
মানচিত্রের ওপর ভিত্তি করে আগামী বছর ১৫ই ফেব্রুয়ারি থেকে ভারত নিরাপত্তা ও
নজরদারি বৃদ্ধি করবে। এ তথ্য দিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
কর্মকর্তারা। দিল্লি ভিত্তিক দ্য সানডে স্ট্যান্ডার্ড গতকাল এ খবর দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সীমান্তে কড়াকড়ি নিয়ে ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের রাজ্য
সরকারগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার। আগামী
বছর ১৫ই জানুয়ারির মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্তের স্পর্শকাতর
স্থানগুলো চিহ্নিত করে তার তালিকা করবে, কোন কোন পথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে
অনুপ্রবেশ হয় তা শনাক্ত করবে। এরপরই ওই কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদি অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি যে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ করেছেন
এ সব পদক্ষেপ তারই অংশ। উল্লেখ্য, এ বছরে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায়
২৮শে এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের শ্রিরামপুরে এক বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশী অবৈধ
অভিবাসীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। মোদি বলেন, ১৬ই মে’র পর
বাংলাদেশী অবৈধ অভিবাসীদের তল্পিতল্পা গুছিয়ে প্রস্তুত থাকা ভাল। তিনি
ক্ষমতায় এসেছেন ৬ মাসের বেশি। এখন তার সেই পদক্ষেপ বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে
যাচ্ছে ভারত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, মানচিত্রে যেসব
এলাকা অরক্ষিত বলে মনে হবে তার পুরোটায় গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হবে।
সীমান্তরক্ষীদের ওপর ঘনিষ্ঠ নজর রাখা হবে। যদি দেখা যায় অনুপ্রবেশে বিএসএফ
সহায়তা করছে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে তাদের বিরুদ্ধে। যে সব এলাকায়
ভূমি অধিগ্রহণ ও পরিবেশগত ছাড়পত্র না পাওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া কঠিন
হয়ে পড়েছে সীমান্তের সে সব এলাকায় নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হবে। ওই রিপোর্টে
আরও বলা হয়েছে, বর্ধমান বিস্ফোরণ ও তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে ভারত-বাংলাদেশ
সীমান্তের নাজুক পরিস্থিতি প্রকাশ হয়ে পড়েছে। ভারতে সন্ত্রাসী মডিউলের
অনুপ্রবেশ গত কয়েক বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই নরেন্দ্র মোদি ত্রিপুরা,
পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম সীমান্তের ১৮৮ কিলোমিটার নাজুক সীমান্তে কঠোর পদক্ষেপ
নেয়ার জন্য তৎপরতা দেখাচ্ছেন। এছাড়া, কেন্দ্রীয় সরকার মেঘালয়ের ৮৭.৫
কিলোমিটার সীমান্ত সুরক্ষিত করার জন্য রাজ্য সরকারকে উদ্বুদ্ধ করছে। সরকার
সীমান্তে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে প্রহরা জোরদার করতে চাইছে। সীমান্তের ৬১০
কিলোমিটারে এখনও বেড়া দিতে বাকি। কর্মকর্তারা বলেছেন, সড়ক প্রকল্পের কাজ
২০১৬ সালের মে মাসের মধ্যে শেষ হতে পারে। দ্বিতীয় পর্যায়ের পরিকল্পনার
মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা শক্ত করা। এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে প্রিভেনশন অব
ইনফিলট্রেশন অব ফরেনারস্ পরিকল্পনা। এর অধীনে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আসাম
সীমান্তে মোতায়েন করা হবে ৩ হাজারের বেশি সীমান্ত রক্ষী। সূত্র বলেছেন,
সীমান্তে সন্দেহজনক চলাফেরা চিহ্নিত করতে গ্রাম প্রতিরক্ষা দল গঠন করেছে
সরকার। দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রতিরোধের ফলে অনুপ্রবেশকারীরা সীমান্ত পেরুতে
পারবে না। বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের ধরিয়ে দিতে কেন্দ্রীয় সহায়তার
আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
No comments