ফেরেনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সৌন্দর্য by আশীষ-উর-রহমান
(স্বাধীনতাস্তম্ভ
ঘিরে নির্মিত জলাধারে ভাসছে প্লাস্টিকের বোতল, বাটিসহ হরেক আবর্জনা। পানি
পচে গেছে। সবুজ শেওলায় ছেয়ে গেছে পানি ও তলার পাথর, পরিবেশ হয়ে উঠেছে
পূতিগন্ধময় l ছবি: সাজিদ হোসেন) সম্প্রতি
শেষ হলো স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ
স্থাপনার কাজের অগ্রগতি নিয়ে ২০১২ সালে প্রথম আলোয় ছাপা হয় সরেজমিন
প্রতিবেদন। গতকাল সেখানে ঘুরে সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে এই প্রতিবেদন ঐতিহাসিক
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৫০ ফুট উঁচু স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ হলো ঠিকই, তবে
কাছে না গেলে সেটি দেখা যাচ্ছে না। স্বচ্ছ কাচের এই অভিনব স্তম্ভটি
চারপাশের গাছপালার আড়ালে পড়ে গেছে। ফটক পেরিয়ে কাছে গেলে পচা পানির
মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা স্তম্ভটি দেখে মুগ্ধ হওয়ার চেয়ে বিরক্তিই জাগে
বেশি। দীর্ঘ ১৬ বছরের চেষ্টা আর ২৬২ কোটির বেশি টাকা খরচ করার পর
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যে হাল হয়েছে, তা দেখে সংবেদনশীল যেকোনো লোকের
ব্যথিত না হওয়ার কারণ নেই। ২০১২ সালে উদ্যান নিয়ে প্রথম আলোয় যে সরেজমিন
প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল, গতকাল রোববার সেখানে গিয়ে দেখা গেল দুই পর্যায়ে
নির্মাণ শেষেও এর কুৎসিত অবস্থা বদলায়নি। স্থাপনাটির তত্ত্বাবধান নিয়েও
চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তৃতীয় পর্যায়ে উদ্যানের সম্প্রসারণ ও
সৌন্দর্যবর্ধনের পরিকল্পনা রয়েছে।
স্তম্ভের ইতিহাস: ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ শুরু হয় ১৯৯৮ সালের ২৯ জুন। ‘ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্প’ নামে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের একটি বিশেষ সেল। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০০৭ সালে। বরাদ্দ ছিল ৮১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার বদল হওয়ায় কাজও বন্ধ হয়ে যায়। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয় ২০০৯ সালের জুলাই থেকে। বরাদ্দ হয় ১৮১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১২ সালের ৩০ জুনে। নানা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে নির্মাণ শেষ না হওয়ায় এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়। তাতেও হয়নি, পরে আরও এক বছর লাগে। প্রকল্প পরিচালক মিজান-উল-আলম প্রথম আলোকে জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ায় গত ৩০ জুন প্রকল্পটি গণপূর্ত বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁদের প্রকল্পও শেষ হয়েছে। উদ্যানটি রয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের নগর বিভাগের তত্ত্বাবধানে। নগর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শওকতউল্লাহ গতকাল প্রথম আলোকে জানান, প্রকল্পটি হস্তান্তর করা হলেও এখনো উদ্বোধন করা হয়নি। তাই ভূগর্ভস্থ জাদুঘর উন্মুক্ত করা যাচ্ছে না। প্রকল্পের পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ—এসবের জন্য তাঁদের অতিরিক্ত লোকবল নেই। এর জমি গণপূর্ত বিভাগের হলেও স্থাপনাটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি আলাদা কর্তৃপক্ষ থাকা প্রয়োজন। উচ্চপর্যায়ে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। এ ছাড়া প্রকল্প সম্প্রসারণের জন্য তৃতীয় পর্যায়ের কাজেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্থাপত্য অধিদপ্তর থেকে তৃতীয় পর্যায়ের নকশা করার কাজ চলছে বলে তিনি জানান।
এ যাবৎ যা হয়েছে: প্রথম পর্যায়ে উদ্যানের উত্তর পাশে শিশুপার্কসংলগ্ন অংশে নির্মাণ করা হয়েছে শিখা চিরন্তন। শিখা চিরন্তন থেকে দক্ষিণ দিকে একটি ‘অ্যাপ্রোচ প্লাজা’। এটি মিলেছে স্বাধীনতাস্তম্ভের মূল স্থাপনায়। স্থাপনাটির পূর্ব দিকের দেয়াল সজ্জিত করা হয়েছে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সংগ্রাম, দেশের ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক নিদর্শনের আলোকে টেরাকোটার ম্যুরাল দিয়ে। পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম অংশজুড়ে অর্ধবৃত্তাকার জলাধার। এ ছাড়া আছে ফোয়ারা, ভূগর্ভস্থ জাদুঘর। এতে রাখা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের গণহত্যা এবং যুদ্ধের বিভিন্ন প্রামাণ্য নিদর্শন, আলোকচিত্র ও দলিলপত্র। একটি উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে উদ্যানের দক্ষিণ-পশ্চিমে, বাংলা একাডেমির সামনের অংশে।
দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রধান কাজ ছিল ১৫০ ফুট উচ্চতা ও ১৬ বাই ১৬ বর্গফুট আয়তনের কাচের স্তম্ভটি নির্মাণ। মেসার্স আরবানা নামের একটি নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানের স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী ও মেরিনা তাবাসসুম এর নকশা করেন। ‘এনডিই-নোভাম কনসোর্টিয়াম’ নামের বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের যৌথ প্রতিষ্ঠান স্তম্ভটি নির্মাণ করে। স্তম্ভটি নির্মাণ করতে গিয়ে কারিগরি জটিলতায় দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যায়। মূল স্তম্ভ নির্মাণের পর জলাধারটি সংস্কার করা হয়েছে। সীমানাপ্রাচীর সংস্কার করে স্টেইনলেস স্টিলের গ্রিল দিয়ে উদ্যানটি ঘিরে ফেলা হয়েছে। নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে উদ্যানে প্রবেশের ছয়টি নতুন ফটক।
যথাপূর্বং: টাকা খরচ হলো বিস্তর, কিন্তু সৌন্দর্য ফিরল না উদ্যানের। এটিকে এখন উদ্যান বলে মানাই কষ্টকর। পূর্ব প্রান্তের প্রায় পুরোটাজুড়েই খাপছাড়া স্থাপনা আর নির্মাণসামগ্রীর অবশিষ্টাংশে আকীর্ণ। স্বচ্ছ কাচের স্তম্ভ ঘিরে যে জলাধার, তার পানিকে পানি বলে চেনা যায় না। কৃত্রিম জলাধারের তলদেশটিতে পাথর বিছিয়ে রাখা। তার ওপর পানি। উদ্দেশ্য ছিল স্বচ্ছ পানির তলায় নানা আকৃতির পাথরগুলো সুশোভন হয়ে উঠবে। বাস্তবে হয়েছে তার বিপরীত। পাথরগুলোর ওপর জমেছে শেওলার পুরু স্তর। পানিতে ভাসছে ডাবের খোল, প্লাস্টিকের বোতল, চিপসের প্যাকেট থেকে শুরু করে যাবতীয় আবর্জনা। তো এই পচা পানির মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা স্বচ্ছ কাচের মহার্ঘ্য স্তম্ভটিকে একেবারেই বিসদৃশ্য দেখাচ্ছে।
উদ্যানের পরিস্থিতিও যথাপূর্বং। ৬৭ একরের এই পুরো উদ্যানটি সম্ভবত এখন ঢাকা শহরের সবচেয়ে নোংরা স্থানে পরিণত হয়েছে। ছেঁড়া কাগজের টুকরা, ডাবের খোল, বাদামের খোসা, চিপস ও সিগারেটের প্যাকেট, পলিথিন, বোতল, কৌটা, তরিতরকারির খোসা, উচ্ছিষ্ট ভাত, ন্যাকড়া, কাঠকুটো—এসবে ছেয়ে আছে চত্বর। উপরন্তু নির্মাণকাজের অবশিষ্ট ইট, বালু প্রভৃতি তো রয়েছেই। বেশির ভাগ গাছের তলা ভিজে স্যাঁতসেঁতে। পানি নয়, মূত্রে। ঝাঁজালো গন্ধে আশপাশে যাওয়া যায় না। আবর্জনা তো আছেই বহাল তবিয়তে, আছে চা-চটপটির দোকান, ভাতের হোটেল—এই সব। পশ্চিম পাশের উন্মুক্ত মঞ্চের আশপাশে ভবঘুরেদের আশ্রয়ও আছে আগের মতোই। এ ছাড়া চলছে প্রচুরসংখ্যক ঝালমুড়ি, বাদাম, চিপস বিক্রেতার ভ্রাম্যমাণ বেচাকেনা। ক্রেতারা মুড়ি-বাদামের ঠোঙা ফেলে রাখছে মাঠে।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শওকতউল্লাহ জানান, তাঁরা বেশ কয়েক দফা ফুচকা-চটপটির দোকান উচ্ছেদ করেছেন। কিন্তু উচ্ছেদের কয়েক দিন পরেই আবার দোকান বসে যাচ্ছে। লোকবলের অভাবে উদ্যানে হকার ও অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। উদ্যানের নিরাপত্তায় মাত্র ২০ জন আনসার সদস্য আছেন।
স্তম্ভের ইতিহাস: ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ শুরু হয় ১৯৯৮ সালের ২৯ জুন। ‘ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতাস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্প’ নামে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের একটি বিশেষ সেল। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০০৭ সালে। বরাদ্দ ছিল ৮১ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকার বদল হওয়ায় কাজও বন্ধ হয়ে যায়। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয় ২০০৯ সালের জুলাই থেকে। বরাদ্দ হয় ১৮১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১২ সালের ৩০ জুনে। নানা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে নির্মাণ শেষ না হওয়ায় এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়। তাতেও হয়নি, পরে আরও এক বছর লাগে। প্রকল্প পরিচালক মিজান-উল-আলম প্রথম আলোকে জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ায় গত ৩০ জুন প্রকল্পটি গণপূর্ত বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁদের প্রকল্পও শেষ হয়েছে। উদ্যানটি রয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের নগর বিভাগের তত্ত্বাবধানে। নগর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শওকতউল্লাহ গতকাল প্রথম আলোকে জানান, প্রকল্পটি হস্তান্তর করা হলেও এখনো উদ্বোধন করা হয়নি। তাই ভূগর্ভস্থ জাদুঘর উন্মুক্ত করা যাচ্ছে না। প্রকল্পের পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ—এসবের জন্য তাঁদের অতিরিক্ত লোকবল নেই। এর জমি গণপূর্ত বিভাগের হলেও স্থাপনাটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি আলাদা কর্তৃপক্ষ থাকা প্রয়োজন। উচ্চপর্যায়ে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। এ ছাড়া প্রকল্প সম্প্রসারণের জন্য তৃতীয় পর্যায়ের কাজেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্থাপত্য অধিদপ্তর থেকে তৃতীয় পর্যায়ের নকশা করার কাজ চলছে বলে তিনি জানান।
এ যাবৎ যা হয়েছে: প্রথম পর্যায়ে উদ্যানের উত্তর পাশে শিশুপার্কসংলগ্ন অংশে নির্মাণ করা হয়েছে শিখা চিরন্তন। শিখা চিরন্তন থেকে দক্ষিণ দিকে একটি ‘অ্যাপ্রোচ প্লাজা’। এটি মিলেছে স্বাধীনতাস্তম্ভের মূল স্থাপনায়। স্থাপনাটির পূর্ব দিকের দেয়াল সজ্জিত করা হয়েছে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সংগ্রাম, দেশের ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক নিদর্শনের আলোকে টেরাকোটার ম্যুরাল দিয়ে। পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম অংশজুড়ে অর্ধবৃত্তাকার জলাধার। এ ছাড়া আছে ফোয়ারা, ভূগর্ভস্থ জাদুঘর। এতে রাখা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের গণহত্যা এবং যুদ্ধের বিভিন্ন প্রামাণ্য নিদর্শন, আলোকচিত্র ও দলিলপত্র। একটি উন্মুক্ত মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে উদ্যানের দক্ষিণ-পশ্চিমে, বাংলা একাডেমির সামনের অংশে।
দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রধান কাজ ছিল ১৫০ ফুট উচ্চতা ও ১৬ বাই ১৬ বর্গফুট আয়তনের কাচের স্তম্ভটি নির্মাণ। মেসার্স আরবানা নামের একটি নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানের স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী ও মেরিনা তাবাসসুম এর নকশা করেন। ‘এনডিই-নোভাম কনসোর্টিয়াম’ নামের বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের যৌথ প্রতিষ্ঠান স্তম্ভটি নির্মাণ করে। স্তম্ভটি নির্মাণ করতে গিয়ে কারিগরি জটিলতায় দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যায়। মূল স্তম্ভ নির্মাণের পর জলাধারটি সংস্কার করা হয়েছে। সীমানাপ্রাচীর সংস্কার করে স্টেইনলেস স্টিলের গ্রিল দিয়ে উদ্যানটি ঘিরে ফেলা হয়েছে। নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে উদ্যানে প্রবেশের ছয়টি নতুন ফটক।
যথাপূর্বং: টাকা খরচ হলো বিস্তর, কিন্তু সৌন্দর্য ফিরল না উদ্যানের। এটিকে এখন উদ্যান বলে মানাই কষ্টকর। পূর্ব প্রান্তের প্রায় পুরোটাজুড়েই খাপছাড়া স্থাপনা আর নির্মাণসামগ্রীর অবশিষ্টাংশে আকীর্ণ। স্বচ্ছ কাচের স্তম্ভ ঘিরে যে জলাধার, তার পানিকে পানি বলে চেনা যায় না। কৃত্রিম জলাধারের তলদেশটিতে পাথর বিছিয়ে রাখা। তার ওপর পানি। উদ্দেশ্য ছিল স্বচ্ছ পানির তলায় নানা আকৃতির পাথরগুলো সুশোভন হয়ে উঠবে। বাস্তবে হয়েছে তার বিপরীত। পাথরগুলোর ওপর জমেছে শেওলার পুরু স্তর। পানিতে ভাসছে ডাবের খোল, প্লাস্টিকের বোতল, চিপসের প্যাকেট থেকে শুরু করে যাবতীয় আবর্জনা। তো এই পচা পানির মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা স্বচ্ছ কাচের মহার্ঘ্য স্তম্ভটিকে একেবারেই বিসদৃশ্য দেখাচ্ছে।
উদ্যানের পরিস্থিতিও যথাপূর্বং। ৬৭ একরের এই পুরো উদ্যানটি সম্ভবত এখন ঢাকা শহরের সবচেয়ে নোংরা স্থানে পরিণত হয়েছে। ছেঁড়া কাগজের টুকরা, ডাবের খোল, বাদামের খোসা, চিপস ও সিগারেটের প্যাকেট, পলিথিন, বোতল, কৌটা, তরিতরকারির খোসা, উচ্ছিষ্ট ভাত, ন্যাকড়া, কাঠকুটো—এসবে ছেয়ে আছে চত্বর। উপরন্তু নির্মাণকাজের অবশিষ্ট ইট, বালু প্রভৃতি তো রয়েছেই। বেশির ভাগ গাছের তলা ভিজে স্যাঁতসেঁতে। পানি নয়, মূত্রে। ঝাঁজালো গন্ধে আশপাশে যাওয়া যায় না। আবর্জনা তো আছেই বহাল তবিয়তে, আছে চা-চটপটির দোকান, ভাতের হোটেল—এই সব। পশ্চিম পাশের উন্মুক্ত মঞ্চের আশপাশে ভবঘুরেদের আশ্রয়ও আছে আগের মতোই। এ ছাড়া চলছে প্রচুরসংখ্যক ঝালমুড়ি, বাদাম, চিপস বিক্রেতার ভ্রাম্যমাণ বেচাকেনা। ক্রেতারা মুড়ি-বাদামের ঠোঙা ফেলে রাখছে মাঠে।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শওকতউল্লাহ জানান, তাঁরা বেশ কয়েক দফা ফুচকা-চটপটির দোকান উচ্ছেদ করেছেন। কিন্তু উচ্ছেদের কয়েক দিন পরেই আবার দোকান বসে যাচ্ছে। লোকবলের অভাবে উদ্যানে হকার ও অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। উদ্যানের নিরাপত্তায় মাত্র ২০ জন আনসার সদস্য আছেন।
No comments