বর্তমানে ঋণ নিয়ে খুব কম উদ্যোক্তাই শিল্প গড়তে পারে
উচ্চ সুদের হার বিনিয়োগে বড় বাধা। পৃথিবীর
অন্যান্য দেশে সুদের হার ২-৪ থেকে শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশে আমানত এবং ঋণের
সুদ হারের ব্যবধান (স্প্রেড) ৫ শতাংশের ওপরে। বর্তমানে ব্যাংকগুলো
শিল্পঋণে যে হারে সুদ নিচ্ছে, তাতে খুব কম উদ্যোক্তাই নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান
গড়তে পারেন। এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার। সামগ্রিকভাবে ব্যাংক ব্যবস্থায়
সংস্কার আনতে হবে। রোববার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে বিনিয়োগ বোর্ড আয়োজিত
এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. এমএ সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল)। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পাবলিক অ্যাকাউন্ট-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক অর্থনীতি সম্পাদক জাহিদুজ্জামান ফারুক এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সদস্য আরিফ খান প্রমুখ।
লোটাস কামাল বলেন, দেশে সুদের হার অত্যন্ত বেশি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সুদের হার ২ থেকে ৪ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশে স্প্রেডই ৫ শতাংশের ওপরে। তিনি বলেন, সরকার এ বছর ব্যাংক থেকে ১ টাকাও ঋণ নেয়নি। এরপরও ব্যাংকগুলো কেন সুদের হার কমাবে না। এর বড় কারণ হল- একদিকে আমরা ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমাতে বলছি। অপরদিকে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বাড়িয়ে দিচ্ছি। এটি সাংঘর্ষিক। সুদের হার কমাতে হলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও সমন্বয় জরুরি। লোটাস কামাল আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি আজব দেশ। কারণ সরকার রফতানি উন্নয়নে প্রণোদনা দিচ্ছে। আবার প্রণোদনার টাকায় কর বসানো হচ্ছে। এটি হতে পারে না।
তার মতে, সময়মতো সিদ্ধান্ত না নেয়া এবং অপচয়, দুর্নীতির চেয়ে বড় অপরাধ। তিনি বলেন, আমরা ফিলিপাইনকে অনুসরণ করব। আর যারা কর ফাঁকি দেয় তাদের জেলে পাঠানো হবে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না। তবে ভালো ব্যবসায়ীদের সহায়তা দেয়া হবে। তার মতে, ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় উৎপাদনে বেশি জোর দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নীতিমালায় সংস্কার আনা হবে। বিশেষ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কার্যক্রমে সংস্কার আনা হবে। আরও বেশি মানুষকে করের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। কোনোভাবেই কর ফাঁকিবাজদের ছাড় দেয়া হবে না।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, শিগগিরই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ছে। এটি বাড়তি টাকা যাতে তারা বাজারে সব খরচ করতে না পারে, সে জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বেতনের কমপক্ষে এক-চতুর্থাংশ জোরপূর্বক সঞ্চয় করা হবে। অন্যান্য খাতেও এভাবে জোরপূর্বক সঞ্চয় জরুরি। আর এই টাকা দিয়ে পুঁজির যোগান দিলে সুদের হারও কমবে।
মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, আমাদের রাজস্ব ও মুদ্রানীতির মধ্যে সমন্বয় জরুরি। দেশের অর্থনীতি সম্প্রসারণমূলক। কিন্তু মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক। এটি সাংঘর্ষিক। ফলে এই দুই নীতির সমন্বয় অধিকতর জরুরি। তিনি বলেন, সুদের হার কমাতে হবে। বর্তমানে ব্যাংকগুলো যে হারে সুদ নিচ্ছে, তাতে খুব কম উদ্যোক্তাই ঋণ নিয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়তে পারে। বিষয়টি পর্যালোচনা করে বিনিয়োগ বাড়াতে হলে পুঁজি প্রাপ্তি সহজ করতে হবে। সামগ্রিকভাবে ব্যাংক ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। এ ছাড়া আমাদের বন্ড মার্কেট আছে। কিন্তু ভেনচার কেপিটালের সুযোগ নেই। এ ছাড়া বিলিয়ন-বিলিয়ন রিজার্ভ মজুদ রেখে কোনো লাভ নেই। এটি ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের দিকে জোর দিচ্ছি। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমনের সস্তা স্লোগান দিয়ে পৃথিবীর কোনো দেশ উন্নয়ন করতে পারেনি। এ জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ ছাড়াও আমাদের ট্যারিফ পদ্ধতির সংস্কার আনতে হবে। এক্সচেঞ্জ রেটেও সমস্যা রয়েছে। স্থানীয় সরকারের আয় কীভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে কারও নজর নেই। রুগ্ন শিল্পেরও কোনো নীতিমালা নেই। এ জন্য নীতিমালা জরুরি। এ ছাড়া গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপন এবং বনজ সম্পদের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের মোট বাজেটের এক-তৃতীয়াংশ উন্নয়নে ব্যয় হয়। কিন্তু বাজেটের বড় একটি অংশই বিনিয়োগে যায় না। এ খাতে সবাইকে নজর দেয়া উচিত। তার মতে, উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে জ্বালানি নীতির সমন্বয় নেই। জাতীয় আয়ের দ্বিগুণ হারে জ্বালানি উৎপাদন করতে হবে।
তিনি বলেন, কেউ কেউ বলেন আগে জ্বালানির চাহিদা বাড়াতে হবে। কিন্তু এ ধারণা ঠিক নয়। কারণ সরবরাহ বাড়লেই চাহিদা সৃষ্টি হয়। ম খা আলমগীর বলেন, মাটির ভেতরে সম্পদ রেখে আমরা বসে থাকব, এটা হতে পারে না। গ্যাস ও কয়লার ব্যবহার বাড়াতে হবে। পৃথিবীর কোনো দেশ কয়লার ব্যবহার না করে উন্নত হতে পারেনি।
বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. এমএ সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল (লোটাস কামাল)। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পাবলিক অ্যাকাউন্ট-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক অর্থনীতি সম্পাদক জাহিদুজ্জামান ফারুক এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সদস্য আরিফ খান প্রমুখ।
লোটাস কামাল বলেন, দেশে সুদের হার অত্যন্ত বেশি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সুদের হার ২ থেকে ৪ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশে স্প্রেডই ৫ শতাংশের ওপরে। তিনি বলেন, সরকার এ বছর ব্যাংক থেকে ১ টাকাও ঋণ নেয়নি। এরপরও ব্যাংকগুলো কেন সুদের হার কমাবে না। এর বড় কারণ হল- একদিকে আমরা ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমাতে বলছি। অপরদিকে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বাড়িয়ে দিচ্ছি। এটি সাংঘর্ষিক। সুদের হার কমাতে হলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও সমন্বয় জরুরি। লোটাস কামাল আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি আজব দেশ। কারণ সরকার রফতানি উন্নয়নে প্রণোদনা দিচ্ছে। আবার প্রণোদনার টাকায় কর বসানো হচ্ছে। এটি হতে পারে না।
তার মতে, সময়মতো সিদ্ধান্ত না নেয়া এবং অপচয়, দুর্নীতির চেয়ে বড় অপরাধ। তিনি বলেন, আমরা ফিলিপাইনকে অনুসরণ করব। আর যারা কর ফাঁকি দেয় তাদের জেলে পাঠানো হবে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না। তবে ভালো ব্যবসায়ীদের সহায়তা দেয়া হবে। তার মতে, ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় উৎপাদনে বেশি জোর দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নীতিমালায় সংস্কার আনা হবে। বিশেষ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কার্যক্রমে সংস্কার আনা হবে। আরও বেশি মানুষকে করের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। কোনোভাবেই কর ফাঁকিবাজদের ছাড় দেয়া হবে না।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, শিগগিরই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ছে। এটি বাড়তি টাকা যাতে তারা বাজারে সব খরচ করতে না পারে, সে জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বেতনের কমপক্ষে এক-চতুর্থাংশ জোরপূর্বক সঞ্চয় করা হবে। অন্যান্য খাতেও এভাবে জোরপূর্বক সঞ্চয় জরুরি। আর এই টাকা দিয়ে পুঁজির যোগান দিলে সুদের হারও কমবে।
মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেন, আমাদের রাজস্ব ও মুদ্রানীতির মধ্যে সমন্বয় জরুরি। দেশের অর্থনীতি সম্প্রসারণমূলক। কিন্তু মুদ্রানীতি সংকোচনমূলক। এটি সাংঘর্ষিক। ফলে এই দুই নীতির সমন্বয় অধিকতর জরুরি। তিনি বলেন, সুদের হার কমাতে হবে। বর্তমানে ব্যাংকগুলো যে হারে সুদ নিচ্ছে, তাতে খুব কম উদ্যোক্তাই ঋণ নিয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়তে পারে। বিষয়টি পর্যালোচনা করে বিনিয়োগ বাড়াতে হলে পুঁজি প্রাপ্তি সহজ করতে হবে। সামগ্রিকভাবে ব্যাংক ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। এ ছাড়া আমাদের বন্ড মার্কেট আছে। কিন্তু ভেনচার কেপিটালের সুযোগ নেই। এ ছাড়া বিলিয়ন-বিলিয়ন রিজার্ভ মজুদ রেখে কোনো লাভ নেই। এটি ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের দিকে জোর দিচ্ছি। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমনের সস্তা স্লোগান দিয়ে পৃথিবীর কোনো দেশ উন্নয়ন করতে পারেনি। এ জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ ছাড়াও আমাদের ট্যারিফ পদ্ধতির সংস্কার আনতে হবে। এক্সচেঞ্জ রেটেও সমস্যা রয়েছে। স্থানীয় সরকারের আয় কীভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে কারও নজর নেই। রুগ্ন শিল্পেরও কোনো নীতিমালা নেই। এ জন্য নীতিমালা জরুরি। এ ছাড়া গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপন এবং বনজ সম্পদের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের মোট বাজেটের এক-তৃতীয়াংশ উন্নয়নে ব্যয় হয়। কিন্তু বাজেটের বড় একটি অংশই বিনিয়োগে যায় না। এ খাতে সবাইকে নজর দেয়া উচিত। তার মতে, উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে জ্বালানি নীতির সমন্বয় নেই। জাতীয় আয়ের দ্বিগুণ হারে জ্বালানি উৎপাদন করতে হবে।
তিনি বলেন, কেউ কেউ বলেন আগে জ্বালানির চাহিদা বাড়াতে হবে। কিন্তু এ ধারণা ঠিক নয়। কারণ সরবরাহ বাড়লেই চাহিদা সৃষ্টি হয়। ম খা আলমগীর বলেন, মাটির ভেতরে সম্পদ রেখে আমরা বসে থাকব, এটা হতে পারে না। গ্যাস ও কয়লার ব্যবহার বাড়াতে হবে। পৃথিবীর কোনো দেশ কয়লার ব্যবহার না করে উন্নত হতে পারেনি।
No comments