জলবায়ুর পরিবর্তনে আক্রান্ত হবে বাংলাদেশের লাখো মানুষ
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সন্ত্রাস বৃদ্ধি পাবে। যুক্তরাজ্যে আরও অভিবাসী
যেতে শুরু করবে। কেননা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে লাখ লাখ মানুষ
বাস্তুচ্যুত হবে। এভাবেই জলবায়ু পরিবর্তন সমপর্কে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন
বাংলাদেশের এক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল মুনির মুনিরুজ্জামান। তিনি
বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের সাবেক সেনা উপদেষ্টা। এ খবর দিয়েছে বৃটেনের
প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য টেলিগ্রাফ। এতে বলা হয়, বর্তমানে মেজর জেনারেল
মুনির মুনিরুজ্জামান গ্লোবাল মিলিটারি অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল অন ক্লাইমেট
চেঞ্জ (জিএমএসিসি) নামের একটি সংস্থার প্রধান। এটি মূলত কর্মরত ও
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করেন
তাদের একটি সংগঠন। এ সংগঠনে রয়েছে যুক্তরাজ্যের রিয়ার অ্যাডমিরাল নেইল
মোরিসেট্টি। তিনি সাবেক বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগের পরিবেশ
প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। জেনারেল মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে এ
বিপুল পরিমাণ বাস্তুচ্যুত মানুষকে রাখার জায়গা অবশিষ্ট নেই। বৈশ্বিক
উষ্ণতার ফলে বাংলাদেশের লাখো মানুষ নিজ বসত ভিটা ছেড়ে যেতে বাধ্য হবেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, এ বিপুল পরিমাণ জলবায়ু বিষয়ক শরণার্থী হবে মৌলবাদী ও
চরমপন্থি সংগঠনগুলোর সদস্য সংগ্রহের জন্য আদর্শ ক্ষেত্র। এ সব বাস্তচ্যুত
মানুষ বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেতে চাইবে। এদের অনেকে যুক্তরাজ্যে শরণার্থী
হিসেবে আশ্রয় চাইবে। কেননা, সেখানে আগে থেকেই অনেক বাংলাদেশী বসবাস করেন।
পেরুর রাজধানী লিমাতে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সমপর্কিত আলোচনায় ১৯০টি
দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এসময় জেনারেল মুনিরুজ্জামান টেলিগ্রাফকে বলেন,
বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই ধীরে ধীরে এ সমস্যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
বাস্তুচ্যুত দরিদ্র মানুষ রাজধানী ঢাকার বস্তিতে পাড়ি জমাচ্ছেন। অথচ ঢাকা
নিজেই জনসংখ্যার ভারে ন্যুব্জ। নদী ভাঙন ও ফসল উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় এমনটি
ঘটছে। তিনি বলেন, এসব হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব। আগামী দশক ও
তার পরবর্তী সময়ে এটি খুব মারাত্মক সমস্যা হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এ সমস্ত
ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে থেকে সন্ত্রাসবাদী ও চরমপন্থি সংগঠনগুলোর সদস্য
সংগ্রহ করার আশঙ্কা আমরা লক্ষ্য করছি। আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ২ কোটি
মানুষ বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত হবে। এ সমস্ত পরিবেশ শরণার্থীদের স্থানান্তর
বাংলাদেশের মতো অতি জনসংখ্যার ঘনত্বের দেশে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি করবে। ফলে
অভিবাসনই দেশটির একমাত্র উপায় হয়ে পড়বে। তারা এখন ভারতে যেতে পারছে না।
কেননা সেখানে অভিবাসন নিয়ে অনেক কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। তাছাড়া ভারত নিজেই
এখন জনসংখ্যার ভারে আক্রান্ত। তাই ছিন্নমূল মানুষ যেখানেই সুযোগ পায়, চলে
যেতে চাইবে। আর যেহেতু যুক্তরাজ্যে বহু বাংলাদেশী বসবাস করেন, সেহেতু
সেদিকেই আকৃষ্ট হতে চাইবে অনেকে।
No comments