কচ্ছপ নিয়ে তুলকালাম
উদ্ধার করা কচ্ছপগুলোকে অ্যাকুরিয়ামে রেখে খাওয়ানো হচ্ছে। ছবি: নিউইয়র্ক টাইমস |
সাগরসৈকতে ব্যাপকহারে উঠে আসা কচ্ছপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বেশ কটি সমুদ্রতীর এলাকায় স্থলভূমির দিকে পাড়ি জমিয়েছে অসংখ্য কচ্ছপ। তাদের এই ‘পদযাত্রা’ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তীরে উঠে এসে বিপন্ন হয়ে পড়া কচ্ছপদের উদ্ধার ও পুনর্বাসনে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক উদ্যোগ। স্বেচ্ছাসেবী থেকে শুরু করে বিমানের পাইলটদের এ কাজে লাগানো হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্ব সমুদ্র উপকূলের কেপ কড বে এলাকায় ছয় প্রজাতির কচ্ছপের দেখা পাওয়া যায়। এবারে শীতের শুরুতেই ওই এলাকায় ব্যাপকসংখ্যক কচ্ছপ জলাশয় ছেড়ে ডাঙার দিকে চলে আসতে শুরু²করে। প্রতিবছর শীতের এ সময়ে সমুদ্রতীরে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কচ্ছপের দেখা পাওয়া যায়।
সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা কমে গেলে ওই কচ্ছপেরা দক্ষিণে ফ্লোরিডার উষ্ণ জলরাশির দিকে পাড়ি জমায়। এ বছর গত এক মাসে এক হাজারের বেশি কচ্ছপকে ডাঙা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা তাদের সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ রকম ব্যাপক হারে কচ্ছপের স্থলভূমিতে চলে আসাকে অস্বাভাবিক বলে উল্লেখ করেছে। এক মাস ধরে ১৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী কচ্ছপ উদ্ধারের জন্য দিনে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করছেন। উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, শীতের কাবু কচ্ছপগুলো উদ্ধার করেই পশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক্স-রেসহ যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ঠান্ডাজনিত সমস্যার চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রতিদিন কচ্ছপগুলোর শরীরের তাপমাত্রা পাঁচ ডিগ্রি ফারেনহাইট করে বাড়ানো হয়। দেওয়া হয় প্রয়োজনীয় ওষুধ। পরবর্তী পর্যায়ে অগভীর সুইমিংপুলে ছেড়ে দিয়ে সাঁতার দিতে সক্ষম কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। অরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রাণিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ সেলিনা হ্যাপেল বলেছেন, ব্যাপক হারে কচ্ছপের স্থলভূমির দিকে যাত্রার পেছনে স্থানীয় কোনো কারণ থাকতে পারে। সমুদ্রের তাপমাত্রার দ্রুত পরিবর্তন কিংবা সমুদ্রস্রোতের পরিবর্তন কচ্ছপের জীবনকে বিপন্ন করছে কি না তা, পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
No comments