চট্টগ্রামে ডাকাত আতঙ্ক রাত জেগে পাহারা by মহিউদ্দীন জুয়েল
রাত হলেই বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে ডাকাতের দল। কেবল তাই নয়, কখনও সড়ক কিংবা মহাসড়কে ব্যারিকেড দিয়েও তারা লুটে নিচ্ছে নগদ টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান মালামাল। সংঘবদ্ধ হয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ছে পুলিশ পরিচয়ে। বেশ কয়েক জায়গায় আবার রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে ঘটানো হচ্ছে এমন ঘটনা। গুলিতে মারা গেছেন ৭ জন। চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করায় লোকজনের মনে ভয় ঢুকে পড়েছে। গত ৩ মাসে ৫টি উপজেলায় ২০টির বেশি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছেন। ডাকাত আতঙ্কে পুলিশ প্রশাসন কার্যত কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। বাধ্য হয়ে রাত জেগে তাই অনেকে পাহারা দেয়ার কথা জানিয়েছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত ৩০শে নভেম্বর চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এই সময় ২০টির বেশি সিএনজি ও ছোট-বড় গাড়ি থেকে কেড়ে নেয়া হয়েছে নগদ টাকা, মোবাইল সেটসহ ৫ লাখ টাকার মালামাল। স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা সাধারণ লোকজনের। তারা জানান, ওই রাতে কেরানীরহাট-বাঁশখালী সড়কের এঁওচিয়ার কাটাপাহাড় এলাকায় ২০-২৫ জনের মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাতদল হানা দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়। এরপর বৈদ্যুতিক খুঁটি ফেলে সড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। এতে সাতকানিয়া ও বাঁশখালী থেকে আসা প্রচুর গাড়ি আটকা পড়ে। পরে ধারালো ছুরি ও অস্ত্র দেখিয়ে কেড়ে নেয়া হয় মালামাল।
প্রতিবাদ করতে গেলে দুই যাত্রী মারাত্মকভাবে আহত হন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পৌর এলাকার সিএনজি ট্যাক্সিচালক আবদুর রহিম জানান, সবাই প্রথমে মনে করেছিল আশপাশের পাহাড় থেকে বন্য হাতির পাল নেমেছে। পরে সন্ত্রাসীদের দেখে সবাই আঁৎকে ওঠে। সাতকানিয়া থানার এসআই মোজাম্মেল হক বলেন, এই ব্যাপারে লিখিত কোন বক্তব্য পাইনি। ডাকাতির বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। তারপরও আমরা খোঁজখবর করবো।
২০শে নভেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারীর চৌধুরীহাট এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে এক বাড়িতে ঘটে আরেক ঘটনা। সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সন্ত্রাসীরা ওই বাড়িতে ঢুকে নিয়ে যায় দুই লাখ টাকার মালামাল। ঘটনাটি ঘটে অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়কের চৌধুরীহাট এলাকায় রাস্তার পাশের প্রবাসী সেকান্দর আলমের মালিকানাধীন দোতলা ভবনে। ঘটনার শিকার সেকান্দরের ছেলে হাটহাজারী থানায় এই বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। এতে তিনি জানান, পুলিশ পরিচয়ে অজ্ঞাত ডাকাত দল প্রথমে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর ইয়াবা তল্লাশির কথা বলে বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে নিয়ে যায় ল্যাপটপ, মোবাইল সেট ও স্বর্ণালঙ্কার।
হাটহাজারী থানার ওসি মো. ইসমাইল বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। কারা ঘটিয়েছে তা জানার চেষ্টা করছি। ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এর আগে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় ডাকাতের গুলিতে একজন নিহত হন। তার নাম অনিল রুদ্র (৪৮)। তিনি উপজেলার বড় হাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার দিন ভোররাতের দিকে বড় হাতিয়া গ্রামে হানা দেয় ডাকাত সদস্যরা। এরপর এলাকার বিভিন্ন দোকান ও বাড়িতে ডাকাতি শেষে পাহাড়ের দিকে চলে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী তাদের ধাওয়া করে। এই সময় ডাকাতরা গুলি করলে অনিল ঘটনাস্থলেই মারা যান। পায়ে গুলিবিদ্ধ হয় সঞ্জয় নামের অপর এক ব্যক্তি। ডাকাতদের ধরতে পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হন পুলিশ কর্মকর্তা কেফায়েত।
গত নভেম্বরে পটিয়া থানার ১শ’ গজের অদূরে ওয়ালটনের শো-রুমে রহস্যজনক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এই সময় ডাকাতরা শো-রুম থেকে ৮টি ফ্রিজ, ৫টি টেলিভিশন, নগদ ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। শো-রুমের মালিক মিজানুর রহমান এই ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ঘটনার রাতে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী দোকান ডাকাতি করে ট্রাকভর্তি মালামাল নিয়ে চলে যায়।
চট্টগ্রামের রাউজানে এই চিত্র আরও ভয়াবহ। স্থানীয় বিনাজুরী ইউনিয়নের জগন্দি চৌকিদার বাড়িতে ১০/১২টি ঘরে ডাকাতি হয়েছে সম্প্রতি। এই সময় বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে ডাকাতের গুলিতে এক গৃহকর্তা নিহত হন। ছুরিকাঘাতে জখম হন আরও ২ জন। ২০/২৫ জনের সশস্ত্র ডাকাতদল ১০/১২টি ঘরে ঢুকে কয়েক লাখ মালামাল নিয়ে সটকে পড়ে। এলাকাবাসী জানায়, এই সময় তাদের অনেকে হাফপ্যান্ট ও মুখোশ পরিহিত ছিল। ডাকাতির ঘটনায় ৬ ঘর থেকে মোট ১৪/১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ২০/২৫টি মোবাইল, নগদ টাকা ও কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান, পটিয়া, সাতকানিয়াসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার লোকজন জানান, ডাকাতদের হাত থেকে বাঁচতে অনেক গ্রামে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন অনেকে। পুলিশ প্রশাসনকে এই ব্যাপারে একাধিকবার জানালেও তারা লিখিত কোন অভিযোগ না পাওয়ায় কোন ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রাউজানের বিনাজুরী ইউনিয়নের বাসিন্দা মনমোহন দাশ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডাকাতের আতঙ্কে বাড়িতে থাকতে ভয় হচ্ছে আমাদের। কারণ তারা কেবল টাকাই লুট করছে না। পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রাণটাও কেড়ে নিচ্ছে। তাই সবাই মিলে একসঙ্গে রাত জেগে পাহারা দিয়ে সময় পার করছি।
প্রতিবাদ করতে গেলে দুই যাত্রী মারাত্মকভাবে আহত হন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পৌর এলাকার সিএনজি ট্যাক্সিচালক আবদুর রহিম জানান, সবাই প্রথমে মনে করেছিল আশপাশের পাহাড় থেকে বন্য হাতির পাল নেমেছে। পরে সন্ত্রাসীদের দেখে সবাই আঁৎকে ওঠে। সাতকানিয়া থানার এসআই মোজাম্মেল হক বলেন, এই ব্যাপারে লিখিত কোন বক্তব্য পাইনি। ডাকাতির বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। তারপরও আমরা খোঁজখবর করবো।
২০শে নভেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারীর চৌধুরীহাট এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে এক বাড়িতে ঘটে আরেক ঘটনা। সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সন্ত্রাসীরা ওই বাড়িতে ঢুকে নিয়ে যায় দুই লাখ টাকার মালামাল। ঘটনাটি ঘটে অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়কের চৌধুরীহাট এলাকায় রাস্তার পাশের প্রবাসী সেকান্দর আলমের মালিকানাধীন দোতলা ভবনে। ঘটনার শিকার সেকান্দরের ছেলে হাটহাজারী থানায় এই বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। এতে তিনি জানান, পুলিশ পরিচয়ে অজ্ঞাত ডাকাত দল প্রথমে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর ইয়াবা তল্লাশির কথা বলে বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে নিয়ে যায় ল্যাপটপ, মোবাইল সেট ও স্বর্ণালঙ্কার।
হাটহাজারী থানার ওসি মো. ইসমাইল বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। কারা ঘটিয়েছে তা জানার চেষ্টা করছি। ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এর আগে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় ডাকাতের গুলিতে একজন নিহত হন। তার নাম অনিল রুদ্র (৪৮)। তিনি উপজেলার বড় হাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার দিন ভোররাতের দিকে বড় হাতিয়া গ্রামে হানা দেয় ডাকাত সদস্যরা। এরপর এলাকার বিভিন্ন দোকান ও বাড়িতে ডাকাতি শেষে পাহাড়ের দিকে চলে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী তাদের ধাওয়া করে। এই সময় ডাকাতরা গুলি করলে অনিল ঘটনাস্থলেই মারা যান। পায়ে গুলিবিদ্ধ হয় সঞ্জয় নামের অপর এক ব্যক্তি। ডাকাতদের ধরতে পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হন পুলিশ কর্মকর্তা কেফায়েত।
গত নভেম্বরে পটিয়া থানার ১শ’ গজের অদূরে ওয়ালটনের শো-রুমে রহস্যজনক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এই সময় ডাকাতরা শো-রুম থেকে ৮টি ফ্রিজ, ৫টি টেলিভিশন, নগদ ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। শো-রুমের মালিক মিজানুর রহমান এই ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ঘটনার রাতে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী দোকান ডাকাতি করে ট্রাকভর্তি মালামাল নিয়ে চলে যায়।
চট্টগ্রামের রাউজানে এই চিত্র আরও ভয়াবহ। স্থানীয় বিনাজুরী ইউনিয়নের জগন্দি চৌকিদার বাড়িতে ১০/১২টি ঘরে ডাকাতি হয়েছে সম্প্রতি। এই সময় বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে ডাকাতের গুলিতে এক গৃহকর্তা নিহত হন। ছুরিকাঘাতে জখম হন আরও ২ জন। ২০/২৫ জনের সশস্ত্র ডাকাতদল ১০/১২টি ঘরে ঢুকে কয়েক লাখ মালামাল নিয়ে সটকে পড়ে। এলাকাবাসী জানায়, এই সময় তাদের অনেকে হাফপ্যান্ট ও মুখোশ পরিহিত ছিল। ডাকাতির ঘটনায় ৬ ঘর থেকে মোট ১৪/১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ২০/২৫টি মোবাইল, নগদ টাকা ও কয়েক লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান, পটিয়া, সাতকানিয়াসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার লোকজন জানান, ডাকাতদের হাত থেকে বাঁচতে অনেক গ্রামে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন অনেকে। পুলিশ প্রশাসনকে এই ব্যাপারে একাধিকবার জানালেও তারা লিখিত কোন অভিযোগ না পাওয়ায় কোন ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রাউজানের বিনাজুরী ইউনিয়নের বাসিন্দা মনমোহন দাশ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডাকাতের আতঙ্কে বাড়িতে থাকতে ভয় হচ্ছে আমাদের। কারণ তারা কেবল টাকাই লুট করছে না। পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রাণটাও কেড়ে নিচ্ছে। তাই সবাই মিলে একসঙ্গে রাত জেগে পাহারা দিয়ে সময় পার করছি।
No comments