খুনীদের ফাঁসির মাধ্যমে আইনের শাসন ফিরে পেল দেশ- আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রতিক্রিয়া ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন
বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচারের রায় কার্যকর হওয়ায় সনত্মোষ প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন শেষে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলেছেন, খুনীদের ফাঁসির মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলো।
জাতি হলো কলঙ্কমুক্ত। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো, হত্যার মতো নিষ্ঠুরতার মাধ্যমে সাময়িক জয়লাভ করা যায়; কিন্তু চূড়ানত্মভাবে জনগণই জয়ী হয়। তাঁরা বিদেশে পলাতক থাকা মৃতু্যদ-প্রাপ্ত অবশিষ্ট খুনীদেরও দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকরের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা ধানম-ির ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পসত্মবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, ওবায়দুল কাদের, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, মৃণাল কানত্মি দাস, এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, সুজিৎ রায় নন্দী, নগর আওয়ামী লীগের মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ফয়েজউদ্দিন মিয়া, বজলুর রহমান, আওলাদ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের পঙ্কজ দেবনাথ, যুব মহিলা লীগের অপু উকিল এমপি, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের ডা. আবদুর রৌফ সর্দার এবং ডা. এহসান কবির জগলু।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংৰিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেন, খুনীদের ফাঁসির মধ্য দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। জনগণকে ধন্যবাদ জানাই, তারাও বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসির অপোয় দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন; ধৈর্য ধরেছেন।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, এ ফাঁসির মধ্য দিয়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেসব খুনী এখনও বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছে, তাদের ফিরিয়ে দেয়া হোক। এর জন্য যেসব আনত্মর্জাতিক প্রক্রিয়া রয়েছে, তা শেষ করে বাকিদেরও ফাঁসি কার্যকর করা হোক।
তোফায়েল আহমেদ তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, জাতি অধীর আগ্রহে অপো করছিল এ রকম একটি মুহূর্তের জন্য। তারা অপো করছিল ফাঁসির রায় কার্যকরের জন্য। আজ বাঙালী জাতিসহ গোটা বিশ্ববাসী আনন্দিত।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, এ ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে বাঙালী স্বাধীন-সার্বভৌম এবং সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পেয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো, হত্যার মতো নিষ্ঠুরতার মাধ্যমে সাময়িক জয়লাভ করা যায়। কিন্তু চূড়ানত্মভাবে জনগণই জয়ী হয়।
কোলকাতা থেকে চিকিৎসা নিয়ে দুপুরে ফিরেই ৩২ নম্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেল হত্যাকা-ে পিতৃহারা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তাৎৰণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ৩৪ বছর পর জাতির জনকের হত্যার বিচার পেয়ে পুরো জাতি আজ স্বসত্মির নিঃশ্বাস ফেলছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এতেও জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে না। কেননা বঙ্গবন্ধুকে এ বাঙালী জাতির কিছু কুলাঙ্গার ঘৃণ্য পশুরাই হত্যা করেছে। এ কলঙ্ক সারাজীবন আমাদের বইয়ে বেড়াতে হবে। তিনি বলেন, অনেক প্রতিকূল-প্রতিবন্ধকতা এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সকল বিতর্কের উর্ধে থেকে স্বাভাবিক আইনে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার সম্পন্ন ও কার্যকর করা একমাত্র শেখ হাসিনার পৰেই সম্ভব হয়েছে।
শুধু বৃহস্পতিবার সকালে নয়, বুধবার মধ্যরাত থেকেই মানুষের ঢল ছিল ৩২ নম্বরে। প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ধানম-ির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনেও। সেখানেও সকাল থেকে দিনভর নেতাকর্মী-সমর্থকদের দফায় দফায় আনন্দ মিছিল, সেস্নস্নাগানসহ আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে। মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুপ্রেমী মানুষের মধ্যে।
No comments