একাত্তরে নৃশংসতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা-চুয়াত্তরের চুক্তিতেই নিষ্পত্তির অজুহাত পাকিস্তানের by মেহেদী হাসান
একাত্তরে গণহত্যা, নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্য বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার অব্যাহত দাবির মুখে ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে চাচ্ছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের কূটনীতিকরা বলছেন, ১৯৭৪ সালে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে এ দেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া ও অতীত ভুলে যাওয়ার আবেদনের কথা বলা হয়েছে।
তবে ঢাকায় সরকারি সূত্র ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ওই চুক্তি ছিল দুই দেশের সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কূটনৈতিক প্রয়াস। গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা বিচারে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিকভাবেই ক্ষমা চাওয়া উচিত।
বাংলাদেশে পাকিস্তানের নতুন হাইকমিশনার আফরাসিয়াব মেহদী হাশমী রবিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যুর পাশাপাশি একাত্তরের নৃশংসতার জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্বগ্রহণের পর এক সৌজন্য সাক্ষাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি পাকিস্তানি হাইকমিশনার আলমগীর বাশার খান বাবরকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার জন্য ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনার দাবিতে বাংলাদেশ অনড়। এর পরও দুই দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচনায় বাংলাদেশ বারবার দাবিটি উত্থাপন করেছে।
ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত বছরের নভেম্বরে ইসলামাবাদে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে একাত্তরের গণহত্যা, নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্য পাকিস্তানের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে বাংলাদেশ। তবে বৈঠকে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যুর মধ্যে একাত্তরে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি অন্যতম। সরকার মনে করে, এর সঙ্গে দেশের জনগণের আবেগ জড়িত। বিষয়টি অনুধাবনের জন্য পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের দাবির বিষয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল বাসিত ইসলামাবাদের অবস্থান জানিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি বলেন, 'ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টির নিষ্পত্তি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় হয়ে গেছে। পাকিস্তান একাত্তরের নৃশংসতার নিন্দা ও দুঃখ প্রকাশ করেছে। এর পরও ২০০২ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ একাত্তরের ঘটনাবলীর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এরপর আর নতুন করে ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন আছে বলে ইসলামাবাদ মনে করে না।'
ঢাকায় কর্মকর্তারা বলেছেন, একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যা, নারী নির্যাতন, ধ্বংসযজ্ঞ গোপন কিছু ছিল না। চার দশক পরও বাংলাদেশ চায়, পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে তার নৃশংসতার কথা স্বীকার করে এ দেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাইবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, '১৯৭৪ সালের চুক্তি ছিল পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার পথে অনেকটা কূটনৈতিক প্রয়াস। পাকিস্তান বাংলাদেশে যেভাবে নির্মমতা চালিয়েছে, তার জন্য যে ধরনের ক্ষমা চাওয়া দরকার_তা ওই চুক্তিতে তেমনভাবে আসেনি।' তিনি বলেন, 'পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ এখনো আছে। ওই দেশের সুশীল সমাজের অনেকে মনে করেন, পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত।'
সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান বলেন, 'পাকিস্তানের দাবি ভিত্তিহীন। ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ঢাকা সফরে এলেও বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাননি। বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার যে দাবি জানাচ্ছে, তা অত্যন্ত যৌক্তিক।'
বাংলাদেশে পাকিস্তানের নতুন হাইকমিশনার আফরাসিয়াব মেহদী হাশমী রবিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যুর পাশাপাশি একাত্তরের নৃশংসতার জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্বগ্রহণের পর এক সৌজন্য সাক্ষাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি পাকিস্তানি হাইকমিশনার আলমগীর বাশার খান বাবরকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার জন্য ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমাপ্রার্থনার দাবিতে বাংলাদেশ অনড়। এর পরও দুই দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচনায় বাংলাদেশ বারবার দাবিটি উত্থাপন করেছে।
ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, গত বছরের নভেম্বরে ইসলামাবাদে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে একাত্তরের গণহত্যা, নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্য পাকিস্তানের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে বাংলাদেশ। তবে বৈঠকে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যুর মধ্যে একাত্তরে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি অন্যতম। সরকার মনে করে, এর সঙ্গে দেশের জনগণের আবেগ জড়িত। বিষয়টি অনুধাবনের জন্য পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ২০০৯ সালে বাংলাদেশের দাবির বিষয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল বাসিত ইসলামাবাদের অবস্থান জানিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি বলেন, 'ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টির নিষ্পত্তি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় হয়ে গেছে। পাকিস্তান একাত্তরের নৃশংসতার নিন্দা ও দুঃখ প্রকাশ করেছে। এর পরও ২০০২ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ একাত্তরের ঘটনাবলীর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এরপর আর নতুন করে ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন আছে বলে ইসলামাবাদ মনে করে না।'
ঢাকায় কর্মকর্তারা বলেছেন, একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যা, নারী নির্যাতন, ধ্বংসযজ্ঞ গোপন কিছু ছিল না। চার দশক পরও বাংলাদেশ চায়, পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে তার নৃশংসতার কথা স্বীকার করে এ দেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাইবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, '১৯৭৪ সালের চুক্তি ছিল পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার পথে অনেকটা কূটনৈতিক প্রয়াস। পাকিস্তান বাংলাদেশে যেভাবে নির্মমতা চালিয়েছে, তার জন্য যে ধরনের ক্ষমা চাওয়া দরকার_তা ওই চুক্তিতে তেমনভাবে আসেনি।' তিনি বলেন, 'পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ এখনো আছে। ওই দেশের সুশীল সমাজের অনেকে মনে করেন, পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত।'
সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান বলেন, 'পাকিস্তানের দাবি ভিত্তিহীন। ১৯৭৪ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ঢাকা সফরে এলেও বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাননি। বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার যে দাবি জানাচ্ছে, তা অত্যন্ত যৌক্তিক।'
No comments