বিপাকে রাজশাহীর কৃষক-ব্যবসায়ীরা-আলু নিয়ে ফায়দা লুটছে মধ্যস্বত্বভোগীরা by রফিকুল ইসলাম,

রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছীর একটি হিমাগারে প্রতি বস্তা (৮৫ কেজি) আলু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৮২০ টাকা দরে। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর দাম পড়ে ৯ টাকা ৬৪ পয়সা। শুধু বড়গাছীর এই হিমাগারে নয়, রাজশাহীতে গড়ে ওঠা ১৮টি হিমাগারেই পাইকারিভাবে একই দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। অথচ রাজশাহীর সব বাজারেই প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা দরে। সেই হিসাবে মধ্যস্বত্বভোগীরা মাঝ থেকে কেজিপ্রতি প্রায় সাড়ে পাঁচ টাকা মুনাফা লুটে নিচ্ছে।


আলুচাষি, কৃষক ও হিমাগার মালিকদের দাবি, বাজারে খুচরা দামে যে আলু বিক্রি হচ্ছে, সেই টাকা কৃষক ও আলু মজুদকারীদের পকেটে উঠলেও তাঁরা অনেকটা লাভবান হতেন। কিন্তু বর্তমান বাজারে পাইকারি যে দামে কৃষকরা আলু বিক্রি করছেন, তাতে প্রতি বস্তায় অন্তত এক থেকে দেড় শ টাকা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। তার পরও রাজশাহীর হিমাগারগুলোয় প্রায় ৩৪ লাখ বস্তা আলু এখনো মজুদ রয়েছে বিক্রি হওয়ার আশায়। সম্প্রতি রাজশাহীর হিমাগার মালিক ও আলুচাষিরা এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাঁদের কোটি কোটি টাকা ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রীসহ সরকারের শীর্ষ নেতাদের কাছে পাঁচদফা দাবি উপস্থাপন করেন।
হিমাগারের মালিকরা জানান, আলুচাষি এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ হিমাগারের মালিকরা প্রতি বস্তা আলু এখন মৌসুম শেষে বিক্রি করে এক-দেড় শ টাকা ক্ষতিতে পড়ছেন।
রাজশাহী হিমাগার মালিক সমিতির সভাপতি আবু বাক্কার আলী জানান, বাজারে আলুর মূল্য কমে যাওয়ায় চাষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি হিমাগার মালিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এতে চলতি মৌসুমে আলু চাষে কৃষকরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। ফলে এবার গতবারের চেয়ে অন্তত অর্ধেক জমিতে আলুর উৎপাদন হবে না বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর যদি তা হয়, তাহলে আগামী মৌসুম শেষে সেই আলুর দাম কয়েকগুণ বেড়ে যাবে এবং জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। কাজেই কৃষকদের আগ্রহ ফেরাতে আলুতে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানান তিনি।

No comments

Powered by Blogger.