ফিদেলের ধ্বংসের পর সাকিবদের লড়াই-ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১ম ইনিংস ৩৫৫, বাংলাদেশ : ১ম ইনিংস ২০৪/৭ (দ্বিতীয় দিন শেষে) by মাসুদ পারভেজ
প্রাণঘাতী বোলিংয়ে অপঘাতের ভয়ে ব্যাটসম্যানরা আত্মঘাতী!ফিদেল এডওয়ার্ডসের ৭ ওভারের প্রথম স্পেল মোটামুটি এ চিত্রনাট্য মেনেই এগিয়েছে। আর তাতেই বিপর্যস্ত বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে সেই পুরনো ছবি। যে বাংলাদেশ প্রায়ই টেস্ট খেলতে নেমে এটা ওয়ানডে কি না, এমন বিভ্রম তৈরি করতে অভ্যস্ত! এ দুয়ের যোগফলে অবস্থা যতটা করুণ হওয়ার কথা, ততটা অবশ্য হয়নি।তা না হওয়ার কারণ এমন দুর্যোগে বাংলাদেশের কেউ না কেউ ব্যতিক্রম হিসেবে আবির্ভূত হন। ভয়কে তুচ্ছজ্ঞান করে দলের প্রয়োজনে ঠিকই দাঁড়িয়ে যান।
কাল যেমন দাঁড়িয়ে গেলেন সাকিব আল হাসান। এরও আগে বল হাতে টেস্ট ক্রিকেটে অষ্টমবারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ায় সাফল্যধন্য হয়েছেন বলেই না ক্যারিবীয়দের ৩৫৫ রানে থামানো গেছে। আর নিজেরা ৭ উইকেটে ২০৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করায় নাঈম ইসলাম কিংবা নাসির হোসেনের অবদানের কথাও না উল্লেখ করলেই নয়।
দিনের শেষ সেশনের এসব প্রতিরোধ শুরুতে হলেও তো ফলোঅনের শঙ্কায় না পড়ে
ক্যারিবীয়দের পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার কথা ভাবতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু ফিদেল এডওয়ার্ডস যে শুরু থেকেই ক্রমাগত শর্ট বলে ব্যাটসম্যানদের শিরদাঁড়ায় ভয়ের হিমস্রোত বইয়ে দিচ্ছিলেন, সেটা তাঁদের ব্যাটিংই বুঝিয়ে দিচ্ছিল পরিষ্কার। ৭-০-৪০-৫! বার্বাডোজের এ ফাস্ট বোলারের এমন অবিশ্বাস্য প্রথম স্পেলকে সে ভীতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলেও ধরতে পারেন! আর তাতে নিজের অজান্তে অন্য এক অর্জনের আনন্দেও ভেসে গেলেন ফিদেল। পাঁচটি উইকেট তুলে নিয়েছেন ২৯ বলের মধ্যে! যা সবচেয়ে কম বলে ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার তালিকার পাঁচ নম্বরে ঠাঁই পেয়েছে। গালিতে মারলন স্যামুয়েলস শূন্য রানে দাঁড়ানো ইমরুল কায়েসের ক্যাচ না ফেললে কীর্তিটা আরো বড় হয়ে ২১ বলেই হয়ে যেত এবং তখন তালিকার তিন নম্বরেও উঠে আসতেন।
তাঁর করা ইনিংসের প্রথম দুটো ডেলিভারিই তামিম ইকবালের পাঁজর বরাবর উঠে গেল। বাংলাদেশের এ ওপেনারও একটু লাফিয়ে ব্যাকফুটে ডিফেন্স করলেন। এখান থেকেই ক্যারিবীয়দের মাথায় কোনো পরিকল্পনা খেলে গিয়ে থাকবে হয়তো বা। ফিদেল পরের ওভারের শুরুতেই তাই শর্ট লেগে একজন ফিল্ডার নিয়ে খাটো লেন্থের ওই বল করে যেতে থাকলেন। তৃতীয় বলেই মিলল সাফল্য। ব্যাকফুটে গিয়ে বল নামাতে গিয়ে শর্ট লেগে ড্যারেন ব্রাভোর দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হন তামিম (১৪)। একই ডেলিভারিতে একই জায়গায় শাহরিয়ার নাফীস (৭) অবশ্য আউট হয়েছেন দৃষ্টিকটুভাবেই। এর আগে কেমার রোচের বলে ৫ রানে গালিতে তাঁর ক্যাচ ফেলেছেন কার্ক এডওয়ার্ডস এবং অফ স্টাম্পের বাইরের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট ছোঁড়ার মতো কাণ্ড ঘটিয়ে বোঝালেন, চট্টগ্রামে ফিদেলের বলে পাওয়া চোটের চিহ্ন নাক থেকে মুছে গেলেও মনে এখনো আছে!
চট্টগ্রামে ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া এক ইনিংস খেলে আসা রকিবুল হাসান (০) উইকেটে গিয়ে মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলেই পড়লেন লেগ বিফোরের ফাঁদে। এরপর এলেন মুশফিকুর রহিম, দলের বিপর্যয়ে ত্রাণকর্তা হওয়ার দাবি নিয়ে। কিন্তু তিনি আবার ড্যারেন সামির সঙ্গে একজোট হয়েছেন কি না কে জানে! ব্যাটিংয়ে সামি নিজে হিট উইকেট হয়েছেন এবং পরে নাসিরের ক্যাচও ফেলেছেন। আর বাংলাদেশ অধিনায়ক সেই নাসিরের বলেই ৯০ রানে কার্ক এডওয়ার্ডসের ক্যাচ ফেলে তাঁকে দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি করার সুযোগ দিয়েছেন। ব্যাটিংয়ে ছেড়ে দেওয়া বল চালিয়ে প্রথম বলেই স্লিপে শিবনারায়ণ চন্দরপলের ক্যাচ হন মুশফিক (০)। পরপর দুই বলে রকিবুল-মুশফিককে তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়ানো ফিদেলের ইয়র্কার সামলে নেওয়া সাকিব কিছুক্ষণ পরই দেখলেন ইমরুলকে (২৯) সাজঘরের পথ ধরতে!
ব্যর্থতার ধারা অব্যাহত রেখে ফিরে যাওয়া ইমরুল কিন্তু ছোট্ট ইনিংসে রোচকে মিডউইকেট দিয়ে একটা ছক্কাও হাঁকিয়েছেন। উইকেট টপাটপ পড়লেও শট খেলার উৎসাহে কোনো ঘাটতি ছিল না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। সে জন্যই মাত্র ৮.৫ ওভারেই ৫ উইকেট হারানো দলে পরিণত হওয়ার সময়ও বাংলাদেশের রান ৫৯! একপর্যায়ে তো রানরেট গিয়ে ঠেকেছিল সাতেরও ওপরে! নিজের সাফল্যের পেছনে এর ভূমিকাও দেখেছেন ফিদেল! দিনের শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে হাসতে হাসতে বলে গেলেন, 'বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বেশি বেশি শট খেলা আমার উইকেট নেওয়ার কাজটাকে আরো সহজ করে দিয়েছে।' তাতে সৃষ্ট দলের বিপর্যয় রোধে ধৈর্যশীল নাঈম ইসলামকে সঙ্গী হিসেবে পেলেন সাকিব। শেষবেলায় রান আউট হওয়ার আগে নাঈমের ১১৩ বলে ৪৫ রানের ইনিংস সে কথাই বলে। তাঁর সঙ্গে ৮৪ রানের পার্টনারশিপে ইনিংস মেরামতের কাজ অনেকটাই গুছিয়ে আনার পর লেগস্পিনার দেবেন্দ্র বিশুর টার্নে ব্যাট আর প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হওয়ায় নিজের ওপরই বেশি বিরক্ত সাকিব (৭৪ বলে ৭৩) নিজের স্পিন ভেলকিও দেখাচ্ছিলেন। প্রায় ৩৫ ওভার বোলিং করে ৬৩ রানে নেওয়া ৫ উইকেটের মধ্যে আছেন কার্ক এডওয়ার্ডসও (১২১)।
দুই 'এডওয়ার্ডস'-এর দিনে তাই উজ্জ্বল হয়ে আছেন সাকিবও। তবে সব ছাপিয়ে থাকছে ফিদেলের ওই ৭ ওভারই!
দিনের শেষ সেশনের এসব প্রতিরোধ শুরুতে হলেও তো ফলোঅনের শঙ্কায় না পড়ে
ক্যারিবীয়দের পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার কথা ভাবতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু ফিদেল এডওয়ার্ডস যে শুরু থেকেই ক্রমাগত শর্ট বলে ব্যাটসম্যানদের শিরদাঁড়ায় ভয়ের হিমস্রোত বইয়ে দিচ্ছিলেন, সেটা তাঁদের ব্যাটিংই বুঝিয়ে দিচ্ছিল পরিষ্কার। ৭-০-৪০-৫! বার্বাডোজের এ ফাস্ট বোলারের এমন অবিশ্বাস্য প্রথম স্পেলকে সে ভীতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলেও ধরতে পারেন! আর তাতে নিজের অজান্তে অন্য এক অর্জনের আনন্দেও ভেসে গেলেন ফিদেল। পাঁচটি উইকেট তুলে নিয়েছেন ২৯ বলের মধ্যে! যা সবচেয়ে কম বলে ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার তালিকার পাঁচ নম্বরে ঠাঁই পেয়েছে। গালিতে মারলন স্যামুয়েলস শূন্য রানে দাঁড়ানো ইমরুল কায়েসের ক্যাচ না ফেললে কীর্তিটা আরো বড় হয়ে ২১ বলেই হয়ে যেত এবং তখন তালিকার তিন নম্বরেও উঠে আসতেন।
তাঁর করা ইনিংসের প্রথম দুটো ডেলিভারিই তামিম ইকবালের পাঁজর বরাবর উঠে গেল। বাংলাদেশের এ ওপেনারও একটু লাফিয়ে ব্যাকফুটে ডিফেন্স করলেন। এখান থেকেই ক্যারিবীয়দের মাথায় কোনো পরিকল্পনা খেলে গিয়ে থাকবে হয়তো বা। ফিদেল পরের ওভারের শুরুতেই তাই শর্ট লেগে একজন ফিল্ডার নিয়ে খাটো লেন্থের ওই বল করে যেতে থাকলেন। তৃতীয় বলেই মিলল সাফল্য। ব্যাকফুটে গিয়ে বল নামাতে গিয়ে শর্ট লেগে ড্যারেন ব্রাভোর দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হন তামিম (১৪)। একই ডেলিভারিতে একই জায়গায় শাহরিয়ার নাফীস (৭) অবশ্য আউট হয়েছেন দৃষ্টিকটুভাবেই। এর আগে কেমার রোচের বলে ৫ রানে গালিতে তাঁর ক্যাচ ফেলেছেন কার্ক এডওয়ার্ডস এবং অফ স্টাম্পের বাইরের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট ছোঁড়ার মতো কাণ্ড ঘটিয়ে বোঝালেন, চট্টগ্রামে ফিদেলের বলে পাওয়া চোটের চিহ্ন নাক থেকে মুছে গেলেও মনে এখনো আছে!
চট্টগ্রামে ধৈর্যের পরিচয় দেওয়া এক ইনিংস খেলে আসা রকিবুল হাসান (০) উইকেটে গিয়ে মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলেই পড়লেন লেগ বিফোরের ফাঁদে। এরপর এলেন মুশফিকুর রহিম, দলের বিপর্যয়ে ত্রাণকর্তা হওয়ার দাবি নিয়ে। কিন্তু তিনি আবার ড্যারেন সামির সঙ্গে একজোট হয়েছেন কি না কে জানে! ব্যাটিংয়ে সামি নিজে হিট উইকেট হয়েছেন এবং পরে নাসিরের ক্যাচও ফেলেছেন। আর বাংলাদেশ অধিনায়ক সেই নাসিরের বলেই ৯০ রানে কার্ক এডওয়ার্ডসের ক্যাচ ফেলে তাঁকে দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি করার সুযোগ দিয়েছেন। ব্যাটিংয়ে ছেড়ে দেওয়া বল চালিয়ে প্রথম বলেই স্লিপে শিবনারায়ণ চন্দরপলের ক্যাচ হন মুশফিক (০)। পরপর দুই বলে রকিবুল-মুশফিককে তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়ানো ফিদেলের ইয়র্কার সামলে নেওয়া সাকিব কিছুক্ষণ পরই দেখলেন ইমরুলকে (২৯) সাজঘরের পথ ধরতে!
ব্যর্থতার ধারা অব্যাহত রেখে ফিরে যাওয়া ইমরুল কিন্তু ছোট্ট ইনিংসে রোচকে মিডউইকেট দিয়ে একটা ছক্কাও হাঁকিয়েছেন। উইকেট টপাটপ পড়লেও শট খেলার উৎসাহে কোনো ঘাটতি ছিল না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। সে জন্যই মাত্র ৮.৫ ওভারেই ৫ উইকেট হারানো দলে পরিণত হওয়ার সময়ও বাংলাদেশের রান ৫৯! একপর্যায়ে তো রানরেট গিয়ে ঠেকেছিল সাতেরও ওপরে! নিজের সাফল্যের পেছনে এর ভূমিকাও দেখেছেন ফিদেল! দিনের শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে হাসতে হাসতে বলে গেলেন, 'বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বেশি বেশি শট খেলা আমার উইকেট নেওয়ার কাজটাকে আরো সহজ করে দিয়েছে।' তাতে সৃষ্ট দলের বিপর্যয় রোধে ধৈর্যশীল নাঈম ইসলামকে সঙ্গী হিসেবে পেলেন সাকিব। শেষবেলায় রান আউট হওয়ার আগে নাঈমের ১১৩ বলে ৪৫ রানের ইনিংস সে কথাই বলে। তাঁর সঙ্গে ৮৪ রানের পার্টনারশিপে ইনিংস মেরামতের কাজ অনেকটাই গুছিয়ে আনার পর লেগস্পিনার দেবেন্দ্র বিশুর টার্নে ব্যাট আর প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হওয়ায় নিজের ওপরই বেশি বিরক্ত সাকিব (৭৪ বলে ৭৩) নিজের স্পিন ভেলকিও দেখাচ্ছিলেন। প্রায় ৩৫ ওভার বোলিং করে ৬৩ রানে নেওয়া ৫ উইকেটের মধ্যে আছেন কার্ক এডওয়ার্ডসও (১২১)।
দুই 'এডওয়ার্ডস'-এর দিনে তাই উজ্জ্বল হয়ে আছেন সাকিবও। তবে সব ছাপিয়ে থাকছে ফিদেলের ওই ৭ ওভারই!
No comments