সাক্ষাৎকার- অভিমানে দল থেকে দূরে আছিঃ বাংলানিউজকে নাজমুল হুদা
অভিমান করে দল থেকে দূরে থাকছে এমন মনোভাবের কথা জানালেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। দলে তার অবস্থান সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি এমনটাই বললেন। হুদা বলেন, নেত্রী (খালেদা জিয়া) আমাকে আগের মতই চোখে দেখেন। তারা সঙ্গে সর্ম্পক খুবই চমৎকার। কারণ আমার আদর্শ হচ্ছে জিয়াউর রহমান, দল হচ্ছে বিএনপি এবং নেত্রী হচ্ছেন খালেদা জিয়া।
ব্যারিস্টার হুদা বলেন, আমার একটা বক্তব্যের কারণে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। তিনিই আবার সে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সুতরাং আমি দলের ভাইস চেয়ারম্যান এবং ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি পদে এখনো বহাল আছি। আমাকে এই পদ থেকে বাদ দিতে হলে সম্মেলনের মাধ্যেমে দিতে হবে। বিকল্প কিছু করার সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি নিজেকে এখনও দলের ভাইস চেয়ারম্যান দাবি করেন এ প্রতিবেদকের কাছে।
বাংলানিউজ: বিএনপির রাজনীতিতে আপনি কখন থেকে?
নাজমুল হুদা: জন্মলগ্ন থেকেই আছি। আমি নয় জনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে একজন। ঐ সময় আমি ছাড়া এই দলকে প্রতিষ্ঠা করতে আরও কাজ করেছেন দলের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বিচারপতি আব্দুস সাত্তার, মোমেন খান, হাবিবুল্লাহ খান, ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জামালউদ্দিন। এছাড়া এই দলটির জন্য নেপথ্য কাজ করছেন মেজর জেনারেল (অব.) নুরুল ইসলাম শিশু। জাগদল থেকেই এই দলের জন্য কাজ করে আসছি। প্রথমে ফ্রন্ট গঠন করা হয়। জাগদল, মুসলিম লীগ, ইউপিপি, তফসিল ফেডারেশন ও লেবার পার্টিসহ সাতটি দল নিয়ে ফ্রন্ট গঠনের মধ্যে দিয়েই বিএনপির সাংগঠনিক তৎপরতা চালানো হতো। এরপরই গঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান।
তিনি বলেন, ঐ দলে প্রথম ১২ জনের স্থায়ী কমিটির সদস্য গঠন করা হয়। এখানে সদস্য ছিলেন জিয়াউর রহমান, ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, শাহ আজিজুর রহমান, আব্দুস সাত্তার, আমেনা রহমান, আবদুর রাজ্জাক চৌধুরী, একরামুল হক, মহিবুল হাসান, শেখ রাজ্জাক আলী, জমিরউদ্দিন সরকার ও আমি।
বাংলানিউজ: আপনি দলীয় রাজনীতিতে কোণঠাসা হওয়ার কারণ কি?
হুদা: কোণঠাসা ঠিক নয়, দাবিয়ে রাখার জন্য কেউ কিছু করে নাই। আমিই দলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কাজকর্মে কতটা উদ্যোগী হবো তার ওপর নির্ভর করবে দলের অবস্থান।
তিনি বলেন, দেশে এখন হিংসাত্মক ও প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি চলছে। এতে প্রতিদিন আমি সংঘাতময় পরিস্থিতির আশঙ্কা করছি। যে রাজনীতি গুণাগুণ বিবর্জিত। পাল্টা-পাল্টির রাজনীতি সেখানে ভালো মন্দের কোনো হিসাব নেই। এ কারণেই রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে আমার যথেষ্ঠ অনিহা রয়েছে।
বাংলানিউজ: বাংলাদেশের রাজনীতি কোন পথে ?
হুদা: দলাদলির কারণে সমসাময়িক রাজনীতির সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রায়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা লুপ্তপ্রায়, সংসদ অকার্যকর, নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রশাসন কুলষিত এতেই বুঝতে পারেন দেশ কোন দিকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের সবার দেশকে ভালোবাসতে হবে, ক্যাডার ভালোবাসলে ও নিজের স্বার্থ বড় করে দেখলে দেশ কখনোই ভালো হবে না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহিষ্ণুতা নেই বললেই চলে। এখানে সরকারি দলের লোকেরা বিরোধী দলের ওপর অত্যাচার চালাবেম, এটাই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
বাংলানিউজ: দেশের এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ কী?
হুদা: আমি সেজন্যই বার বার বলে আসছিলাম দুই নেত্রীকে এক জায়গায় বসতে হবে। এ ব্যাপারে আমি অনেক আগেই উদ্যোগও নিয়েছি। কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের সর্মথনও পাচ্ছি। আশা করি, এই কর্মসূচী সফল হবে। দুই নেত্রীকে একত্র করতে পারবো। তিনি বলেন, তবে দেশকে রক্ষা করতে হলে বিএনপিকে বেশি উদ্যোগী হতে হবে। গণতন্ত্র রক্ষা, গণতন্ত্র সুসংহত ও দেশকে নৈরাজ্য থেকে রক্ষা করতে দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসাতে হবে ঠিকই। আর সেজন্য কারও না কারও উদ্যোগ নিতেই হবে।
বাংলানিউজ: সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের ব্যাপারে আপনার মতমত কি?
হুদা: নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে হলে ভোট প্রয়োগ ও গণনার আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি পাসপোর্টকে ভোটার আইডি কার্ড হিসাবে ব্যবহার করলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব উল্লেখ করেন।
বাংলানিউজ: দলে কোন পদে আছেন। নেত্রী আপনাকে ভালো চোখে দেখেন না কেন?
হুদা: দলে আমি ভাইস চেয়ারম্যান পদে আছি। আমাকে প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল সে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এখন আমি দলের ভাইসচেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি। আমাকে দল থেকে যে সব চিঠি দেয়া হয় তাতে ভাইচেয়ারম্যান হিসাবেই লেখা হয় ।
তিনি বলেন, নেত্রীর প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। তার নির্দেশেই এরশাদ পতনের আন্দোলনের সময় থেকে তার সঙ্গে কাজ করছি। নেত্রী আমাকে তার একজন বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সহকর্মী মনে করেন। সুতারাং নেত্রীর সঙ্গে দূরত্বের কোনো অবকাশ নেই। তিনি খারাপ চোখে দেখার প্রশ্নই আসে না।
বাংলানিউজ: বিএনপিতে নানা গ্রুপিং আছে। আপনি কোন গ্রুপে?
হুদা: আমার গ্রুপের নেতা হচ্ছে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। আর্দশ হচ্ছে বিএনপি। সুতারাং দলে আর কোনো গ্রুপ আছে কি না জানি না। নেত্রী আমাকে খুবই ভালো চোখে দেখেন। আমি যখনই তার কাছে যাই। তিনি আমার সব কথা ধৈর্য সহকারে শোনেন এবং আমাকে গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। আমি তার নিদের্শ পালন করার চেষ্টা করি।
বাংলানিউজ: আন্দোলনের নামে ধংসাত্মক কর্মসূচি দেওয়ার প্রয়োজন কতটুকু?
হুদা: আমি সহিংসতা ও হরতাল কর্মসূচী পছন্দ করি না। বিএনপি নেত্রীও হরতাল ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতি পছন্দ করেন না বলেই বিকল্প কর্মসূচী দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকতে এক মাসে যে হরতাল কর্মসূচী দিয়েছে বিএনপি তা বছরেও দেয়নি। খালেদা জিয়া সবসময়ই দেশ ও জনগণের কথা চিন্তা করেন বলেই বিএনপি কর্মসূচী কম দিচ্ছে। যেসব কর্মসূচী দিচ্ছে তা জনগণের স্বার্থেই দিচ্ছে।
বাংলানিউজ: ওয়ান ইলেভেনের সময় আপনার পরিবার বেশি অত্যাচারের শিকার হয়েছে, এর কারণ কি?
হুদা: আমি সবসময়ই সত্যি কথা বলতে পছন্দ করি। ঐ সময় আমেরিকার রাষ্ট্রদুত বিউটেনিস ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ করছিল ও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছিল। আমি এর প্রতিবাদ করি এবং যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত আনোয়ার চৌধুরীকে স্টুপিড বলি। একই সময়ে আমি যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার পরিস্থিতির জন্য কঠোর সমালোচনা করি এবং নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, এসব কারণেই আনোয়ার চৌধুরী ও তার দেশ ও আমার ক্ষুব্ধ ছিল। তাই তাদের সৃষ্টি ওয়ান ইলেভেনের সময় আমার এবং আমার পরিবারের ওপর অত্যাচার চালানো হয়েছে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা।
হুদা বলেন, আনোয়ার চৌধুরীর কারণে আজও যুক্তরাজ্যের ভিসা দেওয়া হয় না আমাকে। দেশের জন্য কথা বলতে গিয়েই আমার এ অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে।
বাংলানিউজ: বিএনপির নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন বর্জন করার কারণ কী?
হুদা: ঠিকভাবে বলতে পারবো না। কারণ আমি দলের সিদ্ধান্তের কিছুই জানি না। তবে আমার মনে হয় সরকার এই নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করে আগামী জাতীয় নির্বাচন এই কমিশন দিয়ে হালাল করতে চেয়েছিল। সরকারকে এ সুযোগ বিএনপি দেয়নি। এ ছাড়া শামীম ওসমানের ওপর বিএনপির নেতা কর্মীরা ক্ষুব্ধ ছিল এই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই বিএনপির প্রার্থীকে বসিয়ে দেওয়া হয় এবং নৈপথ্য আইভীকে সমর্থন করে বিরোধী দল।
বিএনপি এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলের এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে। তবে তৈমূর আলম খন্দকারের বিরাট ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, তার জন্য ম্যাডাম হয়তো পুরস্কারও দেবেন।
বাংলানিউজ: অ্যাডভোকেট এম ইউ আহম্মদের হত্যার ব্যাপারে আইনজীবীদের ভূমিকা রজস্যজনক থাকার কারণ কি?
হুদা: কারণ তো আছেই। নিজেদের মধ্যে বিভক্তির কারণেই এম ইউ আহম্মদের হত্যার বিচারের ইস্যুটি বিএনপি ও আইজীবীরা কাজে লাগাতে পারেনি। এ ব্যাপারে এর বেশি বলতে চাননি তিনি। তবে দলের গ্রুপিং থাকলে যা হয় তাই হয়েছে উল্লেখ করেন।
বাংলানিউজ: বিএনপির বিকল্প বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠিত হচ্ছে, এর সঙ্গে আপনি জড়িত আছেন ? কতদূর এগুচ্ছে সংগঠনটি?
হুদা: এ রকম একটা সংগঠনের কথা আমি জেনেছি। আমাকে কয়েকজন এর সঙ্গে জড়িত করার চেষ্টাও করছে তবে আমি তাদের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছি। আমি জানি, এটা যারা করছেন তারা যতটা না লাভবান হবে তার চেয়ে যারা সংগঠন করতে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করছে তারাই উপকৃত হবে। এটার উদ্দেশ্য হচ্ছে বিএনপিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। আমি বিএনপি তথা জিয়ার আদর্শে রাজনীতি করতে চাই বাকি জীবন।
বাংলানিউজ: বিএনপির রাজনীতিতে আপনি কখন থেকে?
নাজমুল হুদা: জন্মলগ্ন থেকেই আছি। আমি নয় জনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে একজন। ঐ সময় আমি ছাড়া এই দলকে প্রতিষ্ঠা করতে আরও কাজ করেছেন দলের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বিচারপতি আব্দুস সাত্তার, মোমেন খান, হাবিবুল্লাহ খান, ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জামালউদ্দিন। এছাড়া এই দলটির জন্য নেপথ্য কাজ করছেন মেজর জেনারেল (অব.) নুরুল ইসলাম শিশু। জাগদল থেকেই এই দলের জন্য কাজ করে আসছি। প্রথমে ফ্রন্ট গঠন করা হয়। জাগদল, মুসলিম লীগ, ইউপিপি, তফসিল ফেডারেশন ও লেবার পার্টিসহ সাতটি দল নিয়ে ফ্রন্ট গঠনের মধ্যে দিয়েই বিএনপির সাংগঠনিক তৎপরতা চালানো হতো। এরপরই গঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান।
তিনি বলেন, ঐ দলে প্রথম ১২ জনের স্থায়ী কমিটির সদস্য গঠন করা হয়। এখানে সদস্য ছিলেন জিয়াউর রহমান, ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, শাহ আজিজুর রহমান, আব্দুস সাত্তার, আমেনা রহমান, আবদুর রাজ্জাক চৌধুরী, একরামুল হক, মহিবুল হাসান, শেখ রাজ্জাক আলী, জমিরউদ্দিন সরকার ও আমি।
বাংলানিউজ: আপনি দলীয় রাজনীতিতে কোণঠাসা হওয়ার কারণ কি?
হুদা: কোণঠাসা ঠিক নয়, দাবিয়ে রাখার জন্য কেউ কিছু করে নাই। আমিই দলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কাজকর্মে কতটা উদ্যোগী হবো তার ওপর নির্ভর করবে দলের অবস্থান।
তিনি বলেন, দেশে এখন হিংসাত্মক ও প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি চলছে। এতে প্রতিদিন আমি সংঘাতময় পরিস্থিতির আশঙ্কা করছি। যে রাজনীতি গুণাগুণ বিবর্জিত। পাল্টা-পাল্টির রাজনীতি সেখানে ভালো মন্দের কোনো হিসাব নেই। এ কারণেই রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে আমার যথেষ্ঠ অনিহা রয়েছে।
বাংলানিউজ: বাংলাদেশের রাজনীতি কোন পথে ?
হুদা: দলাদলির কারণে সমসাময়িক রাজনীতির সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রায়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা লুপ্তপ্রায়, সংসদ অকার্যকর, নির্বাচন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রশাসন কুলষিত এতেই বুঝতে পারেন দেশ কোন দিকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের সবার দেশকে ভালোবাসতে হবে, ক্যাডার ভালোবাসলে ও নিজের স্বার্থ বড় করে দেখলে দেশ কখনোই ভালো হবে না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহিষ্ণুতা নেই বললেই চলে। এখানে সরকারি দলের লোকেরা বিরোধী দলের ওপর অত্যাচার চালাবেম, এটাই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।
বাংলানিউজ: দেশের এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ কী?
হুদা: আমি সেজন্যই বার বার বলে আসছিলাম দুই নেত্রীকে এক জায়গায় বসতে হবে। এ ব্যাপারে আমি অনেক আগেই উদ্যোগও নিয়েছি। কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের সর্মথনও পাচ্ছি। আশা করি, এই কর্মসূচী সফল হবে। দুই নেত্রীকে একত্র করতে পারবো। তিনি বলেন, তবে দেশকে রক্ষা করতে হলে বিএনপিকে বেশি উদ্যোগী হতে হবে। গণতন্ত্র রক্ষা, গণতন্ত্র সুসংহত ও দেশকে নৈরাজ্য থেকে রক্ষা করতে দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসাতে হবে ঠিকই। আর সেজন্য কারও না কারও উদ্যোগ নিতেই হবে।
বাংলানিউজ: সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের ব্যাপারে আপনার মতমত কি?
হুদা: নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে হলে ভোট প্রয়োগ ও গণনার আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি পাসপোর্টকে ভোটার আইডি কার্ড হিসাবে ব্যবহার করলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব উল্লেখ করেন।
বাংলানিউজ: দলে কোন পদে আছেন। নেত্রী আপনাকে ভালো চোখে দেখেন না কেন?
হুদা: দলে আমি ভাইস চেয়ারম্যান পদে আছি। আমাকে প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল সে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এখন আমি দলের ভাইসচেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি। আমাকে দল থেকে যে সব চিঠি দেয়া হয় তাতে ভাইচেয়ারম্যান হিসাবেই লেখা হয় ।
তিনি বলেন, নেত্রীর প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। তার নির্দেশেই এরশাদ পতনের আন্দোলনের সময় থেকে তার সঙ্গে কাজ করছি। নেত্রী আমাকে তার একজন বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সহকর্মী মনে করেন। সুতারাং নেত্রীর সঙ্গে দূরত্বের কোনো অবকাশ নেই। তিনি খারাপ চোখে দেখার প্রশ্নই আসে না।
বাংলানিউজ: বিএনপিতে নানা গ্রুপিং আছে। আপনি কোন গ্রুপে?
হুদা: আমার গ্রুপের নেতা হচ্ছে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। আর্দশ হচ্ছে বিএনপি। সুতারাং দলে আর কোনো গ্রুপ আছে কি না জানি না। নেত্রী আমাকে খুবই ভালো চোখে দেখেন। আমি যখনই তার কাছে যাই। তিনি আমার সব কথা ধৈর্য সহকারে শোনেন এবং আমাকে গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। আমি তার নিদের্শ পালন করার চেষ্টা করি।
বাংলানিউজ: আন্দোলনের নামে ধংসাত্মক কর্মসূচি দেওয়ার প্রয়োজন কতটুকু?
হুদা: আমি সহিংসতা ও হরতাল কর্মসূচী পছন্দ করি না। বিএনপি নেত্রীও হরতাল ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতি পছন্দ করেন না বলেই বিকল্প কর্মসূচী দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকতে এক মাসে যে হরতাল কর্মসূচী দিয়েছে বিএনপি তা বছরেও দেয়নি। খালেদা জিয়া সবসময়ই দেশ ও জনগণের কথা চিন্তা করেন বলেই বিএনপি কর্মসূচী কম দিচ্ছে। যেসব কর্মসূচী দিচ্ছে তা জনগণের স্বার্থেই দিচ্ছে।
বাংলানিউজ: ওয়ান ইলেভেনের সময় আপনার পরিবার বেশি অত্যাচারের শিকার হয়েছে, এর কারণ কি?
হুদা: আমি সবসময়ই সত্যি কথা বলতে পছন্দ করি। ঐ সময় আমেরিকার রাষ্ট্রদুত বিউটেনিস ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ করছিল ও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছিল। আমি এর প্রতিবাদ করি এবং যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত আনোয়ার চৌধুরীকে স্টুপিড বলি। একই সময়ে আমি যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার পরিস্থিতির জন্য কঠোর সমালোচনা করি এবং নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, এসব কারণেই আনোয়ার চৌধুরী ও তার দেশ ও আমার ক্ষুব্ধ ছিল। তাই তাদের সৃষ্টি ওয়ান ইলেভেনের সময় আমার এবং আমার পরিবারের ওপর অত্যাচার চালানো হয়েছে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা।
হুদা বলেন, আনোয়ার চৌধুরীর কারণে আজও যুক্তরাজ্যের ভিসা দেওয়া হয় না আমাকে। দেশের জন্য কথা বলতে গিয়েই আমার এ অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে।
বাংলানিউজ: বিএনপির নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন বর্জন করার কারণ কী?
হুদা: ঠিকভাবে বলতে পারবো না। কারণ আমি দলের সিদ্ধান্তের কিছুই জানি না। তবে আমার মনে হয় সরকার এই নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করে আগামী জাতীয় নির্বাচন এই কমিশন দিয়ে হালাল করতে চেয়েছিল। সরকারকে এ সুযোগ বিএনপি দেয়নি। এ ছাড়া শামীম ওসমানের ওপর বিএনপির নেতা কর্মীরা ক্ষুব্ধ ছিল এই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই বিএনপির প্রার্থীকে বসিয়ে দেওয়া হয় এবং নৈপথ্য আইভীকে সমর্থন করে বিরোধী দল।
বিএনপি এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দলের এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে। তবে তৈমূর আলম খন্দকারের বিরাট ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, তার জন্য ম্যাডাম হয়তো পুরস্কারও দেবেন।
বাংলানিউজ: অ্যাডভোকেট এম ইউ আহম্মদের হত্যার ব্যাপারে আইনজীবীদের ভূমিকা রজস্যজনক থাকার কারণ কি?
হুদা: কারণ তো আছেই। নিজেদের মধ্যে বিভক্তির কারণেই এম ইউ আহম্মদের হত্যার বিচারের ইস্যুটি বিএনপি ও আইজীবীরা কাজে লাগাতে পারেনি। এ ব্যাপারে এর বেশি বলতে চাননি তিনি। তবে দলের গ্রুপিং থাকলে যা হয় তাই হয়েছে উল্লেখ করেন।
বাংলানিউজ: বিএনপির বিকল্প বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠিত হচ্ছে, এর সঙ্গে আপনি জড়িত আছেন ? কতদূর এগুচ্ছে সংগঠনটি?
হুদা: এ রকম একটা সংগঠনের কথা আমি জেনেছি। আমাকে কয়েকজন এর সঙ্গে জড়িত করার চেষ্টাও করছে তবে আমি তাদের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছি। আমি জানি, এটা যারা করছেন তারা যতটা না লাভবান হবে তার চেয়ে যারা সংগঠন করতে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করছে তারাই উপকৃত হবে। এটার উদ্দেশ্য হচ্ছে বিএনপিকে ক্ষতিগ্রস্ত করা। আমি বিএনপি তথা জিয়ার আদর্শে রাজনীতি করতে চাই বাকি জীবন।
No comments