চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বাড়াতে ৮ সুপারিশ

চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা ও সেবার মান বাড়াতে আট দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য এখন সুপারিশ আকারে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বন্দর উপদেষ্টা কমিটির এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এতে সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন সাংসদ মঈন উদ্দীন খান বাদল, আখতারুজ্জামান চৌধুরী, শামসুল হক চৌধুরী, সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মান্নান হাওলাদার, বন্দর চেয়ারম্যান কমোডর আর ইউ আহমেদসহ সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা।
বৈঠকে মন্ত্রী বলেন, শ্রম অসন্তোষ পুরোপুরি দূর না করা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা হবে না। আর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
নগরের সার্কিট হাউসে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বন্দরের ২৭টি আলোচ্যসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত ৬ অক্টোবর ৪২ সদস্যের এই উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। পরে বাড়িয়ে ৪৬ সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। এর আগে উপদেষ্টা কমিটির দুটি বৈঠক হয়েছিল।
শ্রম অসন্তোষের মুখে গত বছরের ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরে বাড়তি এক কোম্পানি সেনা মোতায়েন করা হয়। এর আগে থেকে বন্দর নিরাপত্তায় নিয়মিত এক কোম্পানি সেনা মোতায়েন আছে।
উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের মধ্যে আছে: চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালন কর্মকাণ্ডের দক্ষতা বাড়াতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ; কর্ণফুলী নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা; ট্রাস্ট-কমিশন, না কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বন্দর পরিচালনা হবে, তা নির্ধারণ করতে একটি কমিটি গঠনের সুপারিশ ইত্যাদি। এ ছাড়া যানজট কমাতে একটি ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, শ্রমিকদের নিয়োগের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়গুলোও এসেছে।
জানা যায়, বৈঠকে উপদেষ্টা কমিটির ৪৬ জন সদস্যের মধ্যে প্রায় অর্ধেকসংখ্যক সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় অংশ নেন বন্দর ব্যবহারকারী চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কামাল হায়াত, বার্থ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলে একরাম চৌধুরী, চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনালের অপারেটর সাইফ পাওয়ার টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টি আর আমিন, মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক এ এম মাহবুব চৌধুরী প্রমুখ।
বৈঠকে সাংসদ মঈন উদ্দীন খান বাদল বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে কর্ণফুলী নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং দরপত্রের অনুমোদন পাওয়া যায়নি। শীত মৌসুম পেরিয়ে গেলে বর্ষা মৌসুমে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাবে না। বন্দরের একটি দরপত্রে বিশেষ প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার জন্য পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘কাউকে কাজ দিতে চাইলে দরপত্রের দরকার নেই। ডেকে কাজ দিয়ে দিন।’
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কামাল হায়াত বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মতো বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে প্রেষণে লোক নিয়োগ দিয়ে কখনোই ভালো করা যাবে না।

No comments

Powered by Blogger.