তিউনিসিয়ায় বেন আলীর ৩৩ আত্মীয় গ্রেপ্তার

তিউনিসিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট জয়নুল আবেদিন বেন আলীর ৩৩ জন আত্মীয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এ কথা জানায়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট লোকজনকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, সাবেক সরকারের সঙ্গে কোনো রকম সংশ্লিষ্টতা রাখা হবে না। তিনি জানান, সব রাজবন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের সাত মন্ত্রী বেন আলীর দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। গতকালও রাজধানী তিউনিসসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
তিউনিসিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন গতকাল জানিয়েছে, বেন আলীর ৩৩ জন আত্মীয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, বেন আলীর পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়দের স্বর্ণালংকার, আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডসহ বিভিন্ন সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে। এর আগে গত বুধবার প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছেন কর্মকর্তারা। এ ছাড়া বেন আলীর এক আত্মীর মালিকানাধীন একটি ব্যাংক আত্মীভূত করে নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রায় মাসব্যাপী গণবিক্ষোভের মুখে গত সপ্তাহে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট বেন আলী। এরপর অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন পার্লামেন্টের স্পিকার ফুয়াদ মেবাজা। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ ঘানুচির নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন মতৈক্যের সরকার। কিন্তু ওই সরকারে বেন আলীর মন্ত্রিসভার সাত সদস্য স্থান পাওয়ায় সরকারকে বৈধতা দিতে অস্বীকৃতি জানায় বিক্ষোভকারীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন ওই সাত মন্ত্রী। গতকাল এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘বেন আলীর দল কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক র‌্যালি বা আরসিডি থেকে পতদ্যাগ করেছেন ওই মন্ত্রীরা।’
তিউনিসিয়ান প্রেস এজেন্সিও (টিএপি) জানায়, আরসিডির মন্ত্রীরা তাঁদের দলের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। প্রেসিডেন্ট ফুয়াদ মেজাবা ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ ঘানুচিও এর আগে গত মঙ্গলবার আরসিডি থেকে পদত্যাগ করেন।
গতকাল জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট মেজাবা প্রতিশ্রুতি দেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সাবেক শাসক দলের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। গত শনিবার শপথ নেওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম প্রকাশ্য বক্তব্য। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে দেশের ইতিহাসের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারি।’ এ সময় তিনি রাজবন্দীদের মুক্তি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন। গতকাল নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

No comments

Powered by Blogger.