জম্মু-কাশ্মীরে ওষুধ ও শিশু খাদ্যের জন্য হাহাকার
মোদি
সরকার কাশ্মীর পরিস্থিতি আগের থেকে স্বাভাবিক বলে দাবি করলেও বাস্তব চিত্র
কিন্তু তা বলছে না। ৩৭০ ধারা বিলোপ করার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি
অনুযায়ী, ছন্দে ফিরছে উপত্যকা, পরিস্থিতি একদম স্বাভাবিক রয়েছে। অথচ
বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলের নেতাদের। কেন? তাহলে কী যা বলা
হচ্ছে তা সত্য নয়? এইসব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কাশ্মীর স্বাভাবিক হয়নি। বেঁচে থাকার জন্য ওষুধ মিলছে না। শিশুদের খাদ্যের সরবরাহ নেই। এমনকি জীবনদায়ী ওষুধ না পেয়ে হাহাকার শুরু হয়েছে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়ের প্রেসক্রিপশন নিয়ে একাধিক ওষুধের দোকানে গিয়েছেন সাজিদ আলি কিন্তু খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। সাজিদের মা, ৬৫ বছর বয়সি সুরাইয়া বেগমের ওষুধ কিনতে বেরিয়ে ছিলেন ছেলে। কিন্তু উপত্যকায় যানবাহন চলছে না। স্থানীয় হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে শ্রীনগরে পৌঁছেছিলেন সাজিদ আলি। কিন্তু ৩ ঘণ্টা ধরে খোঁজার পরে শ্রীনগরেও ওষুধ মেলেনি। অবশেষে শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে নয়াদিল্লির টিকিট কেটে দিল্লি থেকে এক মাসের ওষুধ নিয়ে ফিরেছেন আলি।
অন্যদিকে ৫ আগস্ট থেকে স্তব্ধ কাশ্মীর উপত্যকা। শেষ হয়ে আসছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ। ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে প্রত্যাহার করা হয় ৩৭০ ধারা। দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। সেই সিদ্ধান্তের পর থেকেই বন্ধ দোকানপাট, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ ব্যাহত। ওষুধের সরবরাহ নেই।
গত ৫ আগস্ট থেকে নতুন কোনও সাপ্লাই আসেনি। কেবলমাত্র কিছু অ্যান্টিবায়োটিক পড়ে রয়েছে বলে জানান, জনৈক এক বিক্রেতা। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মত রোগ নিয়ে দূরদূরান্ত থেকে এসে ফিরে যাচ্ছেন মানুষ। বাবার জন্য ইনসুলিন পাচ্ছেন না মোহাম্মদ ইসমাইল নামের যুবক। অনন্তনাগের খুশ্রি বেগমের অ্যাসমা অ্যাটাকের পর ইনহেলার পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে যেতে যেতেই মারা গিয়েছেন তিনি।
ইএফএফ এএওয়াই ফার্মাসি ডিস্ট্রিবিউটরের কর্ণধার মনসুর আহমেদ জানালেন, মাত্র ৩০ শতাংশ স্টক পড়ে রয়েছে। নয়াদিল্লি থেকে কোনও নতুন স্টক আসছে না। গত ৩০ বছরেও এই ধরনের ওষুধের অভাব কাশ্মীরে হয়নি। গ্রামীণ অঞ্চলেও শিশুদের খাবারের যোগান না থাকায় হাহাকার শুরু হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে বেড়েছে রোগী সংখ্যা, কারণ সমস্যা একটাই ওষুধ নেই।
এছাড়া কাশ্মীরের অর্থনীতিতেও স্থবিরতা নেমে আসছে পর্যটন শিল্পে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায়। পর্যটক আগমন শূন্যের কোঠায় নেমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চরম বিপর্যয়ে পড়বে পুরো কাশ্মীরের অর্থনীতি।
জম্মু-কাশ্মীরকে যেন প্রকৃতি সাজিয়েছে তার নিজের মতো করে। সুন্দর এ রাজ্য সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ভ্রমণের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় স্থান। শুধু ভারতের মুকুট হিসেবেই নয়, সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ভূ-স্বর্গ হিসেবে পরিচিত জম্মু-কাশ্মীর। অঞ্চলটির পাহাড়, ঝরনা ও তুষারপাতের জন্য পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হলেও অন্যান্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বিমোহিত করে তাদের।
কিন্তু ৫ আগস্ট থেকেই কার্যত পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। বর্তমান অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে পর্যটক আগমন শূন্যের কোঠায় দাঁড়িয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কাশ্মীরের ব্যবসায়ী জানান, এই মুহূর্তে আমরা কোনো ব্যবসাই করতে পারছি না। ৫ আগস্টের পর থেকে সবকিছু বন্ধ। আমাদের ব্যবসার প্রয়োজন নেই। আমাদের মোবাইল-ইন্টারনেট দরকার নেই। আমাদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হোক। আমরা কাশ্মীরি। আমরা আমাদের পরিচয় নিয়ে বাঁচতে চাই।
আমরা এখন নানামুখী সমস্যার মধ্যে আছি। এখন যদি না খেয়ে মরেও যাই তবুও দেখার কেউ নেই। এখানে সবকিছু বন্ধ। চলা-ফেরা করতে পারছি না। মোবাইল-ইন্টারনেট বন্ধ। সব কিছু বন্ধ। এভাবে কি চলা যায়?
২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০ সালে অশান্তির জেরে পর্যটন ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়েছিল কাশ্মীরে। এর পরের দুই বছর মোটামুটি শান্তি বজায় ছিল। শান্তির হাত ধরেই সমৃদ্ধি আসছিল পর্যটন শিল্পে। মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল উপত্যকার অর্থনীতি। কিন্তু চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর সব পাল্টে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় মোদি সরকারের নতুন পদক্ষেপ অঞ্চলটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরো সঙ্কটে ফেলেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কাশ্মীর স্বাভাবিক হয়নি। বেঁচে থাকার জন্য ওষুধ মিলছে না। শিশুদের খাদ্যের সরবরাহ নেই। এমনকি জীবনদায়ী ওষুধ না পেয়ে হাহাকার শুরু হয়েছে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়ের প্রেসক্রিপশন নিয়ে একাধিক ওষুধের দোকানে গিয়েছেন সাজিদ আলি কিন্তু খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। সাজিদের মা, ৬৫ বছর বয়সি সুরাইয়া বেগমের ওষুধ কিনতে বেরিয়ে ছিলেন ছেলে। কিন্তু উপত্যকায় যানবাহন চলছে না। স্থানীয় হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে শ্রীনগরে পৌঁছেছিলেন সাজিদ আলি। কিন্তু ৩ ঘণ্টা ধরে খোঁজার পরে শ্রীনগরেও ওষুধ মেলেনি। অবশেষে শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকে নয়াদিল্লির টিকিট কেটে দিল্লি থেকে এক মাসের ওষুধ নিয়ে ফিরেছেন আলি।
অন্যদিকে ৫ আগস্ট থেকে স্তব্ধ কাশ্মীর উপত্যকা। শেষ হয়ে আসছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ। ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে প্রত্যাহার করা হয় ৩৭০ ধারা। দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। সেই সিদ্ধান্তের পর থেকেই বন্ধ দোকানপাট, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ ব্যাহত। ওষুধের সরবরাহ নেই।
গত ৫ আগস্ট থেকে নতুন কোনও সাপ্লাই আসেনি। কেবলমাত্র কিছু অ্যান্টিবায়োটিক পড়ে রয়েছে বলে জানান, জনৈক এক বিক্রেতা। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মত রোগ নিয়ে দূরদূরান্ত থেকে এসে ফিরে যাচ্ছেন মানুষ। বাবার জন্য ইনসুলিন পাচ্ছেন না মোহাম্মদ ইসমাইল নামের যুবক। অনন্তনাগের খুশ্রি বেগমের অ্যাসমা অ্যাটাকের পর ইনহেলার পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে যেতে যেতেই মারা গিয়েছেন তিনি।
ইএফএফ এএওয়াই ফার্মাসি ডিস্ট্রিবিউটরের কর্ণধার মনসুর আহমেদ জানালেন, মাত্র ৩০ শতাংশ স্টক পড়ে রয়েছে। নয়াদিল্লি থেকে কোনও নতুন স্টক আসছে না। গত ৩০ বছরেও এই ধরনের ওষুধের অভাব কাশ্মীরে হয়নি। গ্রামীণ অঞ্চলেও শিশুদের খাবারের যোগান না থাকায় হাহাকার শুরু হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে বেড়েছে রোগী সংখ্যা, কারণ সমস্যা একটাই ওষুধ নেই।
এছাড়া কাশ্মীরের অর্থনীতিতেও স্থবিরতা নেমে আসছে পর্যটন শিল্পে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায়। পর্যটক আগমন শূন্যের কোঠায় নেমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চরম বিপর্যয়ে পড়বে পুরো কাশ্মীরের অর্থনীতি।
জম্মু-কাশ্মীরকে যেন প্রকৃতি সাজিয়েছে তার নিজের মতো করে। সুন্দর এ রাজ্য সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ভ্রমণের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় স্থান। শুধু ভারতের মুকুট হিসেবেই নয়, সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ভূ-স্বর্গ হিসেবে পরিচিত জম্মু-কাশ্মীর। অঞ্চলটির পাহাড়, ঝরনা ও তুষারপাতের জন্য পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হলেও অন্যান্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বিমোহিত করে তাদের।
কিন্তু ৫ আগস্ট থেকেই কার্যত পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। বর্তমান অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে পর্যটক আগমন শূন্যের কোঠায় দাঁড়িয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কাশ্মীরের ব্যবসায়ী জানান, এই মুহূর্তে আমরা কোনো ব্যবসাই করতে পারছি না। ৫ আগস্টের পর থেকে সবকিছু বন্ধ। আমাদের ব্যবসার প্রয়োজন নেই। আমাদের মোবাইল-ইন্টারনেট দরকার নেই। আমাদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হোক। আমরা কাশ্মীরি। আমরা আমাদের পরিচয় নিয়ে বাঁচতে চাই।
আমরা এখন নানামুখী সমস্যার মধ্যে আছি। এখন যদি না খেয়ে মরেও যাই তবুও দেখার কেউ নেই। এখানে সবকিছু বন্ধ। চলা-ফেরা করতে পারছি না। মোবাইল-ইন্টারনেট বন্ধ। সব কিছু বন্ধ। এভাবে কি চলা যায়?
২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০ সালে অশান্তির জেরে পর্যটন ব্যবসার অনেক ক্ষতি হয়েছিল কাশ্মীরে। এর পরের দুই বছর মোটামুটি শান্তি বজায় ছিল। শান্তির হাত ধরেই সমৃদ্ধি আসছিল পর্যটন শিল্পে। মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল উপত্যকার অর্থনীতি। কিন্তু চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর সব পাল্টে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় মোদি সরকারের নতুন পদক্ষেপ অঞ্চলটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরো সঙ্কটে ফেলেছে।
>>>সাউথ এশিয়ান মনিটর,
No comments