বাঙালির ঘরে তুর্কি পদ

তুরস্কের খাবারের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। পদগুলোর নাম শুনলে মনে হয় রান্না বেশ কঠিন। বাস্তবে ঠিক তার উল্টো। বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারবেন তুর্কি পদ। রেসিপি দিয়েছেন আফরোজা নাজনীন
ফেটা চিজের ফেটুস সালাদ
উপকরণ: পিটা ব্রেড টুকরা করা ২ টেবিল চামচ, জলপাই তেল ১ টেবিল চামচ, শসা, টমেটো কিউব করে কাটা ৩ কাপ, জলপাই ১ চা-চামচ, পেঁয়াজকুচি অর্ধেকটা, পার্সলেকুচি ১ কাপের ৪ ভাগের ৩ ভাগ অংশ, পুদিনাপাতাকুচি ১ কাপের ৪ ভাগের ৩ ভাগ অংশ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, সামাক পাউডার ১ চা-চামচ, রসুন মিহিকুচি ১ কোয়া, লবণ স্বাদমতো, গোলমরিচের গুঁড়া পরিমাণমতো, ফেটা চিজ পরিমাণমতো।
প্রণালি: পিটা ব্রেড তেলে বাদামি করে ভেজে তুলে নিন। সালাদের সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে পরিবেশন করুন।
শিস কাবাব
উপকরণ: হাড় ছাড়া খাসির মাংস কিউব করে কাটা ১ কেজি, টক দই ৩ টেবিল চামচ, লাল মরিচের গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, পাপরিকা আধা চা-চামচ, জিরার গুঁড়া আধা চা-চামচ, রসুনের গুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, জলপাইয়ের তেল ৩ টেবিল চামচ।
প্রণালি: মাংসসহ সব উপকরণ একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে ফ্রিজে সারা রাত বা কমপক্ষে ২ ঘণ্টা ম্যারিনেট করুন। এরপর শিকে বা শাশলিক কাঠিতে গেঁথে ওভেনে ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে বাদামি রং না হওয়া পর্যন্ত গ্রিল করে নিন। সালাদ, নান বা পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করুন মাজাদার এই টার্কিশ কাবাবটি।
মাহালাবিয়া
উপকরণ: দুধ ৩ কাপ, কর্নফ্লাওয়ার ৬ টেবিল চামচ, ঠান্ডা পানি ১ কাপ, চিনি ১ কাপের ৪ ভাগের ৩ ভাগ অংশ, হুইপড ক্রিম ১ কাপ, গোলাপজল ১ টেবিল চামচ, এলাচ গুঁড়া সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: দুধ ও চিনি একসঙ্গে জ্বাল দিন। কর্নফ্লাওয়ার পানিতে ভালো করে গুলে নিন। এবার ওই দুধে মিশিয়ে মাঝারি আঁচে নাড়তে থাকুন। ঘন হয়ে এলে নামিয়ে এতে ক্রিম, এলাচ দানা ও গোলাপজল মিশিয়ে নিন। এরপর ফ্রিজে ২-৪ ঘণ্টার জন্য জমতে দিন। ইচ্ছা হলে এতে চালও দেওয়া যায়। ২ কাপ দুধে ১ কাপ চাল এভাবে।
টার্কিশ মিট বল
উপকরণ: গরুর মাংসের মিহি কিমা ৫০০ গ্রাম, ব্রেড ক্রাম্ব আধা কাপ, পেঁয়াজকুচি ২টি, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, শুকনা থাইম ১ চা-চামচ, লাল মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, চিলি ফ্লেক্স আধা চা-চামচ, জিরার গুঁড়া ১ চা-চামচ, ডিম ১টি, জলপাইয়ের তেল পরিমাণমতো, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: কিমাসহ সব উপকরণ একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে ফ্রিজে সারা রাত বা কমপক্ষে ২ ঘণ্টা মেখে রাখুন। খানিকটা নিয়ে হাত দিয়ে চ্যাপ্টা করে গোল বা ওভাল আকারে কাবাব বানিয়ে গরম তেলে ভেজে বা গ্রিল করে নিন। সালাদ ও নানের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
বেইটি শর্মা
উপকরণ পুরের জন্য: গরুর মাংসের মিহি কিমা ৫০০ গ্রাম, পেঁয়াজকুচি ১টি, পার্সলে কুচি ১ চা-চামচ, লাল মরিচের গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, পাপরিকা ১ চা-চামচ, রসুনের গুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, জলপাইয়ের তেল পরিমাণমতো।
শর্মার জন্য: পিটা ব্রেড ২টি, গলানো মাখন ১ চা-চামচ।
সসের জন্য: টক দই ও টমেটো সস আধা কাপ।
পরিবেশনের জন্য: পার্সলে ও সালাদ
প্রণালি: পুরের সব উপকরণ একসঙ্গে মেখে নিন। খানিকটা নিয়ে শিকে গেঁথে কয়লার আগুনে সেঁকতে হবে। ওভেনে বেক করুন কাবাব না হওয়া পর্যন্ত। একটু পরপর তেল দিয়ে ব্রাশ করে দিন। শিক থেকে কাবাবটা খুলে নিন। পিটা ব্রেডে মাখন ব্রাশ করে নিন। এই কাবাবটা দিয়ে রোল করে নিয়ে কেটে টক দই, টমেটো সস, সালাদসহ পরিবেশন করুন।
ফালাফেল
উপকরণ: কাবুলি ছোলা ১৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ ১টি, রসুন ৪-৫ কোয়া, কাঁচা মরিচ ১টি, পার্সলেপাতা আধা কাপ, লবণ ২ চা-চামচ, চিনি আধা চা-চামচ, ভাজা জিরার গুঁড়া ১ চা-চামচ, লেবুর রস ১টি, ভাজার জন্য সাদা তেল, পরোটা বা পিটা ব্রেড ২টি, তাহিনি সস ২ টেবিল চামচ, ধনেপাতা আর পুদিনাপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, শসা, টমেটো স্লাইস, লেটুসপাতা সাজানোর জন্য।
প্রণালি: কাবুলি ছোলা সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন পানি ঝরিয়ে নিন। এরপর এই ছোলার সঙ্গে পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা মরিচ এবং পার্সলেপাতা একসঙ্গে গ্রাইন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এই মিশ্রণের মধ্যে লবণ, ভাজা জিরার গুঁড়া, লেবুর রস মিশিয়ে ভালোভাবে মেখে নিন। খানিকটা করে নিয়ে চ্যাপ্টা প্যাটি করে বা গোল বল করে বানিয়ে নিয়ে গরম তেলে ভেজে নিন। এভাবে সব ফালাফেল ভেজে নিন। পরোটা বা পিটা ব্রেডের মধ্যে তাহিনি সস লাগিয়ে ফালাফেল, শসা, টমেটো, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, লেটুসপাতা দিয়ে রোল করে পরিবেশন করুন।
বাকলাভা
উপকরণ: পেস্তাবাদাম ২০০ গ্রাম, চিনি ১০০ গ্রাম (সুগার সিরাপের জন্য ১০০ গ্রাম), পানি সিকি কাপ, ফিলো পেস্ট্রি শিট ১৬টা, গলানো মাখন ১৫০ গ্রাম।
প্রণালি: প্রথমে গরম পানিতে পেস্তাবাদাম দিয়ে ঢেকে রেখে দিন ৫ মিনিট। তারপর পেস্তা পানি থেকে তুলে শুকনো কাপড় বা কিচেন টাওয়ালের মধ্যে রেখে দিন। একটু ঘষে পেস্তাবাদামের খোসা উঠিয়ে নিন। ওভেন বা শুকনা কড়াইতে ২ থেকে ৪ মিনিট ভেজে নিন। এরপর মিক্সিতে গুঁড়া করে তার সঙ্গে চিনি মিশিয়ে দিন। একটা সমান ট্রেতে পেস্ট্রি শিট বিছান। তার ওপরে গলানো মাখন ব্রাশ দিয়ে লাগান। আবার একটি পেস্ট্রি শিট বিছিয়ে গলানো মাখন ব্রাশ দিয়ে লাগান। এভাবে করে ৮টি পেস্ট্রি শিট বিছাতে হবে। তারপর পেস্তাবাদামের মিশ্রণটি এর ওপর ঢেলে দিন। তার ওপরে আবার ৮টি পেস্ট্রি শিট বিছিয়ে নিন। যেমন করে আগে গলানো মাখন ব্রাশ করে লাগিয়ে নেওয়া হয়েছিল, সেভাবে। মোট ১৬টি পেস্ট্রি শিট ব্যবহার করুন। প্রথমে ৮টি, তারপর পেস্তা বিছিয়ে আরও ৮টি। এরপর বাকি যে মাখন থাকবে সেটা একদম ওপরে ব্রাশ করে বরফির মতো বা নিজের পছন্দমতো কেটে বাকলাভা বানিয়ে ৩০ মিনিট ফ্রিজে রাখুন। ৩০ মিনিট পর ফ্রিজ থেকে বের করে নিন। প্রিহিট ওভেনে ১৮০ ডিগ্রি টেম্পারেচারে ১৫ মিনিট বেক করুন। বেক করার পর ১০০ গ্রাম চিনি ও সিকি কাপ পানি ফুটিয়ে সুগার সিরাপ বানিয়ে নিন। বেক করা পেস্ট্রি শিটের ওপরে ব্রাশ করে সুগার সিরাপ লাগিয়ে পছন্দমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।

No comments

Powered by Blogger.