দুই পরিবারেই আটকে আছে সুনামগঞ্জের মেয়র নির্বাচন by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ
সুনামগঞ্জ
শহরের রাজনীতি যেন আটকে আছে দুটো পরিবারের মাঝেই। বৃত্ত ভেঙে কেউই উঠে
আসতে পারছেন না স্থানীয় রাজনীতিতে। পৌর নির্বাচনে আগেরবার দুই পরিবারের
বাইরে থেকে একজন উঁকি দেয়ার চেষ্টা করলেও এবার তিনিও ক্ষান্ত দিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ ফিরে এসেছে ‘রাজা-বখত’-এ দুই ঘরের লড়াইয়ে। সুনামগঞ্জ পৌরসভার
মেয়র পদে উপনির্বাচনে প্রার্থী এসেছে এ দুই পরিবার থেকেই। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে নৌকা নিয়ে লড়ছেন প্রয়াত মেয়র আয়ুব বখত জগলুলের ছোট ভাই নাদের বখত। স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াইয়ে আছেন মরমি কবি দেওয়ান হাছন রাজার প্রপৌত্র দেওয়ান গণিউল সালাদীন। সালাদীনের ভাই প্রয়াত
মমিনুল মউজদীনও ছিলেন সুনামগঞ্জের মেয়র। নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন সালাদীনের চাচাতো ভাই দেওয়ান সাজাউর রাজা সুমনও। তিনি লড়ছেন বিএনপির মনোনয়নে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে।
সুনামগঞ্জ শহরের কর্তার চেয়ারটি ঘুরেফিরে দখলে রয়েছে ‘রাজা-বখত’ পরিবারের মাঝেই। নাদের বখতের বড় দুই ভাইই ছিলেন সুনামগঞ্জ পৌরশহরের অভিভাবক। তাদের দশ ভাইয়ের পরিবারটি সুনামগঞ্জ শহরে প্রভাব বিস্তারকারী একটি পরিবার। সে প্রভাবেই মনোয়ার বখত নেক ১৯৮৫ সালে সুনামগঞ্জ পৌরসভার কর্তৃত্বও হাতের মুঠোয় নিয়েছিলেন। ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মাঝে অনেক ঘটনা, অনেক গল্পের পর আরেক ভাই আয়ুব বখত জগলুল সে চেয়ারের দখল পান। ২০১১ সাল থেকে মৃত্যুর পর্ব পর্যন্ত টানা দুবার তিনিই ছিলেন সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র। গত ১লা ফেব্রুয়ারি তার আকস্মিক মৃত্যুতে মেয়রের পদটি শূন্য হয়। আর এজন্যই আবার সুনামগঞ্জ পৌরসভায় ভোটের আয়োজন।
সুনামগঞ্জের মেয়র পদে নৌকার হয়ে লড়তে আরো ৪ প্রার্থীর নাম জমা পড়েছিল কেন্দ্রে। এর মধ্যে ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমনের বড় ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জেলা জজ কোর্টের অ্যাডিশনাল পিপি ড. খায়রুল কবীর রুমেন, দেওয়ান হাছন রাজার প্রপৌত্র জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা সম্পাদক দেওয়ান এমদাদ রাজা, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শঙ্কর দাশ, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র নূরুল ইসলাম বজলু। তবে সবাইকে ছাপিয়ে মনোনয়ন পান নাদের বখত।
সুনামগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদের বাকি দুই প্রার্থী একই পরিবারের সদস্য। স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান গণিউল সালাদীন ও বিএনপি প্রার্থী দেওয়ান সাজাউর রাজা সুমন সম্পর্কে চাচাতো ভাই। দেওয়ান আনোয়ার রাজার ছেলে হচ্ছেন গণিউল সালাদীন আর আনোয়ার রাজার সৎভাই দেওয়ান জোহায়ের রাজার ছেলে হচ্ছেন সাজাউর রাজা সুমন।
১৯৯৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সময়ে সুনামগঞ্জের টানা তিনবারের মেয়র মমিনুল মউজদীনের ছোট ভাই গণিউল সালাদিন। সড়ক দুর্ঘটনায় মমিনুল মউজদীন নিহত হওয়ার পরই নির্বাচনে মেয়র হয়েছিলেন আয়ুব বখত জগলু। মমিনুল মউজদীনকে আদর্শ ধরেই নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন সালাদীন। সালাদীনদের সবচেয়ে বড়ভাই দেওয়ান সামসুল আবেদীন জিয়াউর রহমানের আমলে বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল পাল্টে পরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচন করেন। তারপর যোগ দেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিতে। সালাদিনের আরেক ভাই সুনামগঞ্জ পৌরসভারই সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা দেওয়ান জয়নুল জাকেরিন সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান।
সর্বশেষ নির্বাচনেও গণিউল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আয়ুব বখত জগলু ও বিএনপি প্রার্থী শেরগুল আহমদের বিপক্ষে। শেরগুল এবার লড়াইয়ের মাঠ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়ায় সুযোগ পেয়েছেন সাজাউর রাজা।
শুধু শহরকেন্দ্রিক রাজনীতি নয় পুরো সুনামগঞ্জের রাজনীতি আটকে আছে বিভিন্ন পারিবারিক বলয়ে। রাজা-বখত পরিবারের বাইরে বিস্তৃত্ব রাজনীতিও আটকে আরো কিছু পরিবারের মাঝে। তাই তৃণমূলের নেতাদের কোথাও কোনো সুযোগ মিলছে না। এ নিয়ে তাদের ক্ষোভও রয়েছে। সুনামগঞ্জের জেলা পর্যায়ের রাজনীতিতে দাপট রয়েছে মুকুট পরিবার, ইমন পরিবারসহ বেশ কিছু পরিবারের। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুটের ভাই খায়রুল হুদা চপল সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমনের বড় ভাই খায়রুল কবীর জেলা আওয়ামী লীগে দায়িত্ব পেয়েছেন সহসভাপতি হিসেবে, যিনি পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে লড়তে চেয়েছিলেন। বড় আরো এক ভাই ফজলুল কবীর আছেন সদস্য হিসেবে। জেলা সভাপতি মতিউর রহমানের ছেলে আছেন কমিটিতে সদস্য হিসেবে। সহসভাপতি আপ্তাব উদ্দিনের মেয়েরও জায়গা হয়েছে সদস্য হিসেবে। জেলার যুগ্ম সম্পাদক ও ছাতক পৌরসভার চেয়ারম্যান আবুল কালাম চৌধুরীর ভাই শামীম আহমেদ চৌধুরী পেয়েছেন তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকের পদ। কৃষিবিষয়ক সম্পাদক করুণাসিন্ধুর ছোট ভাই পেয়েছেন একই কমিটির সদস্য পদ।
মেয়র পদে উপনির্বাচনে প্রার্থী এসেছে এ দুই পরিবার থেকেই। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে নৌকা নিয়ে লড়ছেন প্রয়াত মেয়র আয়ুব বখত জগলুলের ছোট ভাই নাদের বখত। স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াইয়ে আছেন মরমি কবি দেওয়ান হাছন রাজার প্রপৌত্র দেওয়ান গণিউল সালাদীন। সালাদীনের ভাই প্রয়াত
মমিনুল মউজদীনও ছিলেন সুনামগঞ্জের মেয়র। নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন সালাদীনের চাচাতো ভাই দেওয়ান সাজাউর রাজা সুমনও। তিনি লড়ছেন বিএনপির মনোনয়নে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে।
সুনামগঞ্জ শহরের কর্তার চেয়ারটি ঘুরেফিরে দখলে রয়েছে ‘রাজা-বখত’ পরিবারের মাঝেই। নাদের বখতের বড় দুই ভাইই ছিলেন সুনামগঞ্জ পৌরশহরের অভিভাবক। তাদের দশ ভাইয়ের পরিবারটি সুনামগঞ্জ শহরে প্রভাব বিস্তারকারী একটি পরিবার। সে প্রভাবেই মনোয়ার বখত নেক ১৯৮৫ সালে সুনামগঞ্জ পৌরসভার কর্তৃত্বও হাতের মুঠোয় নিয়েছিলেন। ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মাঝে অনেক ঘটনা, অনেক গল্পের পর আরেক ভাই আয়ুব বখত জগলুল সে চেয়ারের দখল পান। ২০১১ সাল থেকে মৃত্যুর পর্ব পর্যন্ত টানা দুবার তিনিই ছিলেন সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র। গত ১লা ফেব্রুয়ারি তার আকস্মিক মৃত্যুতে মেয়রের পদটি শূন্য হয়। আর এজন্যই আবার সুনামগঞ্জ পৌরসভায় ভোটের আয়োজন।
সুনামগঞ্জের মেয়র পদে নৌকার হয়ে লড়তে আরো ৪ প্রার্থীর নাম জমা পড়েছিল কেন্দ্রে। এর মধ্যে ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমনের বড় ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জেলা জজ কোর্টের অ্যাডিশনাল পিপি ড. খায়রুল কবীর রুমেন, দেওয়ান হাছন রাজার প্রপৌত্র জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা সম্পাদক দেওয়ান এমদাদ রাজা, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শঙ্কর দাশ, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র নূরুল ইসলাম বজলু। তবে সবাইকে ছাপিয়ে মনোনয়ন পান নাদের বখত।
সুনামগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদের বাকি দুই প্রার্থী একই পরিবারের সদস্য। স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান গণিউল সালাদীন ও বিএনপি প্রার্থী দেওয়ান সাজাউর রাজা সুমন সম্পর্কে চাচাতো ভাই। দেওয়ান আনোয়ার রাজার ছেলে হচ্ছেন গণিউল সালাদীন আর আনোয়ার রাজার সৎভাই দেওয়ান জোহায়ের রাজার ছেলে হচ্ছেন সাজাউর রাজা সুমন।
১৯৯৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সময়ে সুনামগঞ্জের টানা তিনবারের মেয়র মমিনুল মউজদীনের ছোট ভাই গণিউল সালাদিন। সড়ক দুর্ঘটনায় মমিনুল মউজদীন নিহত হওয়ার পরই নির্বাচনে মেয়র হয়েছিলেন আয়ুব বখত জগলু। মমিনুল মউজদীনকে আদর্শ ধরেই নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন সালাদীন। সালাদীনদের সবচেয়ে বড়ভাই দেওয়ান সামসুল আবেদীন জিয়াউর রহমানের আমলে বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। দল পাল্টে পরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচন করেন। তারপর যোগ দেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিতে। সালাদিনের আরেক ভাই সুনামগঞ্জ পৌরসভারই সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা দেওয়ান জয়নুল জাকেরিন সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান।
সর্বশেষ নির্বাচনেও গণিউল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আয়ুব বখত জগলু ও বিএনপি প্রার্থী শেরগুল আহমদের বিপক্ষে। শেরগুল এবার লড়াইয়ের মাঠ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়ায় সুযোগ পেয়েছেন সাজাউর রাজা।
শুধু শহরকেন্দ্রিক রাজনীতি নয় পুরো সুনামগঞ্জের রাজনীতি আটকে আছে বিভিন্ন পারিবারিক বলয়ে। রাজা-বখত পরিবারের বাইরে বিস্তৃত্ব রাজনীতিও আটকে আরো কিছু পরিবারের মাঝে। তাই তৃণমূলের নেতাদের কোথাও কোনো সুযোগ মিলছে না। এ নিয়ে তাদের ক্ষোভও রয়েছে। সুনামগঞ্জের জেলা পর্যায়ের রাজনীতিতে দাপট রয়েছে মুকুট পরিবার, ইমন পরিবারসহ বেশ কিছু পরিবারের। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুটের ভাই খায়রুল হুদা চপল সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমনের বড় ভাই খায়রুল কবীর জেলা আওয়ামী লীগে দায়িত্ব পেয়েছেন সহসভাপতি হিসেবে, যিনি পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে লড়তে চেয়েছিলেন। বড় আরো এক ভাই ফজলুল কবীর আছেন সদস্য হিসেবে। জেলা সভাপতি মতিউর রহমানের ছেলে আছেন কমিটিতে সদস্য হিসেবে। সহসভাপতি আপ্তাব উদ্দিনের মেয়েরও জায়গা হয়েছে সদস্য হিসেবে। জেলার যুগ্ম সম্পাদক ও ছাতক পৌরসভার চেয়ারম্যান আবুল কালাম চৌধুরীর ভাই শামীম আহমেদ চৌধুরী পেয়েছেন তথ্য ও গবেষণা সম্পাদকের পদ। কৃষিবিষয়ক সম্পাদক করুণাসিন্ধুর ছোট ভাই পেয়েছেন একই কমিটির সদস্য পদ।
No comments