রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া বন্ধ করছে মিয়ানমার: সীমান্তে বেড়া, কাঁটাতার, স্থল বোমা by জন এমোন্ট
বাংলাদেশের
সঙ্গে সীমান্তকে সুরক্ষিত করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তারা নতুন নতুন
সীমান্ত বেড়া নির্মাণ করছে। মোতয়েন করছে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের। পাতা
হয়েছে স্থল বোমা। এতে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে তাদের উত্তেজনাকর সম্পর্ককে
উস্কে দেয়া হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে উদ্বাস্তু শিবিরগুলোতে আশ্রয়
নেয়া কয়েক লাখ রোহিঙ্গাদের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। তা হলো
‘কিপ আউট’। অর্থাৎ দূরে সরে যাও। এমন বেড়া হলো চেইন-যুক্ত। নতুন করে এ বেড়া
নির্মাণ করা হয়েছে। সঙ্গে দেয়া হয়েছে কাঁটাতার। কোথাও কোথাও তা শক্তিশালী
করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে বাঙ্কার, সামরিক পোস্ট। তারাই ১৭০ মাইল দীর্ঘ
সীমান্ত পরিচালনা করছে।
রোহিঙ্গারা বলছেন, এই অবস্থায় যে দেশ তারা ছেড়ে এসেছেন সেখানে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা ও রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা বলছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সীমান্তকে অধিকহারে সুরক্ষিত করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এটা হতে পারে এমন একটি কর্মতৎপরতা, যাতে রোহিঙ্গাদেরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার নিশ্চিত করা যায়। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে আসছে। ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল ওয়্যার কলেজের প্রফেসর জাচারি আবুজা বলেছেন, (মিয়ানমার) মনে করছে তারা সফলতার সঙ্গে বিশাল পরিমাণ রোহিঙ্গাকে দেশ থেকে বের করে দিতে পেরেছে এবং রোহিঙ্গারা ফেরত গেলে তারা যেন নরকের মতো পরিস্থিতিতে পড়েন সে ব্যবস্থাই করতে যাচ্ছে তারা।
মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির সরকার বলেছে, যেসব রোহিঙ্গা প্রমাণ দিতে পারবে যে, তারা মিয়ানমার থেকে গিয়েছে শুধু তারাই ফিরে যেতে পারবে। কিন্তু এতে উচ্চ মাত্রায় একটি বাধা বা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে প্রত্যাখ্যান করা হবে। প্রথম ব্যাচের ৮০২৩ জনের তালিকা দেয়া হয়েছিল। তার মধ্য থেকে মাত্র কয়েক শতকে নেয়ার কথা বলেছে তারা, যদিও রোহিঙ্গাদের শিকড় প্রোথিত রয়েছে মিয়ানমারে। সেখানে তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম বসবাস করে আসছিলেন। ওদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সীমান্তের কাছাকাছি রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে নৃশংসতার সময়। সেসব গ্রাম মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে সেখানে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বিশেষ করে সেনাবাহিনীর জন্য ঘাঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। কিন্তু মিয়ানমার বলছে, তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করছে। এ মাসে এ জন্য বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিল বাংলাদেশ। তার কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে, এভাবে সামরিক স্থাপনা নির্মাণের ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। অং সান সুচির অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সীমান্তের বাইরে যেসব উদ্বাস্তু বসবাস করছে তাদের হুমকি থেকে নিরাপত্তার জন্য ওইসব অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। এখন সীমান্তের ৪০ মাইল বাদে বাকি অংশে নতুন বেড়া নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এমনটা বলেছেন রাখাইনে পুলিশের একজন কর্মকর্তা অং মিয়াত মোই। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে সীমান্তে বেড়া নির্মাণ বা সেটা আধুনিকায়ন করতে এক কোটি ৫০ লাখ ডলার অনুমোদন দেয় দেশটির পার্লামেন্ট।
ওদিকে ২৫ শে আগস্ট নৃশংসতা শুরু হওয়ার পর মিয়ানমার ছেড়ে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার তাদের নিজ দেশেও অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে অনেক রোহিঙ্গা। যারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন তারা ঠাঁই পেয়েছেন বিভিন্ন ক্যাম্পে। তবে তাদের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া খুব ধীর গতির। এ ছাড়া বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে কোনাপাড়ায় মিয়ানমার অংশে বিপদজনক অবস্থায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা। এর একদিকে সীমান্ত বেড়া। মিয়ানমারের ১৫০ ফুট ভিতরে তা। সেখানে রয়েছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। অন্যদিকে রয়েছে বাংলাদেশ। সেখানে ছোট্ট ছোট্ট চেকপয়েন্টে অবস্থান নিয়ে আছেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডসরা। তাদের হাতে রাইফেল। তারা পায়ে হেঁটে অথবা ট্রাকে করে প্রহরা দিচ্ছেন। মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের প্রধান ফ্যাব্রিজিও কারবোনি বলেছেন, এই স্থানে (এসব মানুষের) অবস্থান করা নিরাপদ নয়। সেখানে যেসব মানুষ আটকা পড়ে আছেন তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইছে না। তারা বলছে, তারা মিয়ানমারের নাগরিক। নিজের দেশ ছেড়ে যাবে না। কিন্তু রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার। তাদেরকে মিয়ানমার বাংলাদেশী হিসেবে আখ্যায়িত করে।
কিছু রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু বলেছেন, জানুয়ারি পর্যন্ত তারা সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমারের বেশ গভীরে প্রবেশ করতে পারতেন। সেখানে গিয়ে তাদের নারকেল, তাল সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে পারতেন। আগস্টে যে বাড়ি তারা ফেলে এসেছেন তা দেখে আসতে পরতেন। রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু নেতা নূর আলম বলেন, এখন আমরা আর সীমান্ত অতিক্রম করে সেখানে যেতে পারি না। সীমান্ত এখন আর খোলা নেই। এ অবস্থায় সীমান্ত অতিক্রম করা হবে অত্যন্ত বিপদজনক।
(ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ)
রোহিঙ্গারা বলছেন, এই অবস্থায় যে দেশ তারা ছেড়ে এসেছেন সেখানে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা ও রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা বলছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সীমান্তকে অধিকহারে সুরক্ষিত করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এটা হতে পারে এমন একটি কর্মতৎপরতা, যাতে রোহিঙ্গাদেরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার নিশ্চিত করা যায়। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে আসছে। ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল ওয়্যার কলেজের প্রফেসর জাচারি আবুজা বলেছেন, (মিয়ানমার) মনে করছে তারা সফলতার সঙ্গে বিশাল পরিমাণ রোহিঙ্গাকে দেশ থেকে বের করে দিতে পেরেছে এবং রোহিঙ্গারা ফেরত গেলে তারা যেন নরকের মতো পরিস্থিতিতে পড়েন সে ব্যবস্থাই করতে যাচ্ছে তারা।
মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির সরকার বলেছে, যেসব রোহিঙ্গা প্রমাণ দিতে পারবে যে, তারা মিয়ানমার থেকে গিয়েছে শুধু তারাই ফিরে যেতে পারবে। কিন্তু এতে উচ্চ মাত্রায় একটি বাধা বা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে প্রত্যাখ্যান করা হবে। প্রথম ব্যাচের ৮০২৩ জনের তালিকা দেয়া হয়েছিল। তার মধ্য থেকে মাত্র কয়েক শতকে নেয়ার কথা বলেছে তারা, যদিও রোহিঙ্গাদের শিকড় প্রোথিত রয়েছে মিয়ানমারে। সেখানে তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম বসবাস করে আসছিলেন। ওদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সীমান্তের কাছাকাছি রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে নৃশংসতার সময়। সেসব গ্রাম মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে সেখানে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বিশেষ করে সেনাবাহিনীর জন্য ঘাঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। কিন্তু মিয়ানমার বলছে, তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ করছে। এ মাসে এ জন্য বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিল বাংলাদেশ। তার কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে, এভাবে সামরিক স্থাপনা নির্মাণের ফলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। অং সান সুচির অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সীমান্তের বাইরে যেসব উদ্বাস্তু বসবাস করছে তাদের হুমকি থেকে নিরাপত্তার জন্য ওইসব অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। এখন সীমান্তের ৪০ মাইল বাদে বাকি অংশে নতুন বেড়া নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এমনটা বলেছেন রাখাইনে পুলিশের একজন কর্মকর্তা অং মিয়াত মোই। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে সীমান্তে বেড়া নির্মাণ বা সেটা আধুনিকায়ন করতে এক কোটি ৫০ লাখ ডলার অনুমোদন দেয় দেশটির পার্লামেন্ট।
ওদিকে ২৫ শে আগস্ট নৃশংসতা শুরু হওয়ার পর মিয়ানমার ছেড়ে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার তাদের নিজ দেশেও অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে অনেক রোহিঙ্গা। যারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন তারা ঠাঁই পেয়েছেন বিভিন্ন ক্যাম্পে। তবে তাদের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া খুব ধীর গতির। এ ছাড়া বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে কোনাপাড়ায় মিয়ানমার অংশে বিপদজনক অবস্থায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা। এর একদিকে সীমান্ত বেড়া। মিয়ানমারের ১৫০ ফুট ভিতরে তা। সেখানে রয়েছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। অন্যদিকে রয়েছে বাংলাদেশ। সেখানে ছোট্ট ছোট্ট চেকপয়েন্টে অবস্থান নিয়ে আছেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডসরা। তাদের হাতে রাইফেল। তারা পায়ে হেঁটে অথবা ট্রাকে করে প্রহরা দিচ্ছেন। মিয়ানমারে আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের প্রধান ফ্যাব্রিজিও কারবোনি বলেছেন, এই স্থানে (এসব মানুষের) অবস্থান করা নিরাপদ নয়। সেখানে যেসব মানুষ আটকা পড়ে আছেন তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইছে না। তারা বলছে, তারা মিয়ানমারের নাগরিক। নিজের দেশ ছেড়ে যাবে না। কিন্তু রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার। তাদেরকে মিয়ানমার বাংলাদেশী হিসেবে আখ্যায়িত করে।
কিছু রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু বলেছেন, জানুয়ারি পর্যন্ত তারা সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমারের বেশ গভীরে প্রবেশ করতে পারতেন। সেখানে গিয়ে তাদের নারকেল, তাল সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে পারতেন। আগস্টে যে বাড়ি তারা ফেলে এসেছেন তা দেখে আসতে পরতেন। রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু নেতা নূর আলম বলেন, এখন আমরা আর সীমান্ত অতিক্রম করে সেখানে যেতে পারি না। সীমান্ত এখন আর খোলা নেই। এ অবস্থায় সীমান্ত অতিক্রম করা হবে অত্যন্ত বিপদজনক।
(ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ)
No comments