শিশুর দাঁতের পরিচর্যা
যদি
শৈশব থেকেই শিশুর দাঁতের ঠিকমতো যত্ন নেয়া যায়, তাহলে পরবর্তীতে তাকে
দাঁতের অবাঞ্ছিত সমস্যায় ভুগতে হয় না। মানুষের সৌন্দর্যের একটা বিশাল অংশ
দখল করে আছে দাঁত। তা ছাড়া দাঁতের অসুখ মানে সারাটা জীবন অস্বস্তিতে ভোগা।
শিশুরা যেহেতু অবুঝ, তাই বাবা-মাকেই শিশুর দাঁতের পরিচর্যার ব্যাপারে
দায়িত্ব নিতে হবে। সাধারণত পাঁচ থেকে সাত মাসের সময় শিশুর দাঁত ওঠা শুরু
করে। এগুলো যদিও অস্থায়ী দাঁত, তবু মনে রাখতে হবে; এই অস্থায়ী দাঁতগুলো
স্থায়ী দাঁত ওঠার ক্ষেত্রে গাইড লাইন হিসেবে কাজ করে। যদি অস্থায়ী দাঁতের
ক্ষতি-সাধন হয়, তাহলে তার প্রভাব স্থায়ী দাঁতের উপর পড়ে। এবার দেখা যাক
কিভাবে শিশুর দাঁতের সঠিক পরিচর্যা নিতে হবে- পাঁচ-সাত মাসে শিশুর দাঁত ওঠা
শুরু করলেও যেহেতু দাঁতে গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয় গর্ভাবস্থা থেকে, তাই
সুস্থ সবল দাঁত গঠনের জন্য গর্ভবতী মাকে ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
দুধ, ছোট মাছ, বিট, বিচি, বরবটি ও বেল ক্যালসিয়ামের চমৎকার উৎস। জন্মের পর
শিশুকে প্রথম পাঁচ মাস কেবল বুকের দুধ খাওয়াতে হবে এবং এ সময় থেকেই শিশুর
মুখ ও মুখ গহ্বর পরিষ্কার করে দিতে হবে। শিশুর পাঁচ মাস বয়সের পর যখন
শিশুকে দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবারও দেয়া হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে, তা যেন
পুষ্টিসমৃদ্ধ হয়। শিশুর দাঁত ওটার পর দাঁত ও মাড়ি প্রতিদিন পরিষ্কার করে
দিতে হবে। শিশুর মাড়ির গোড়ায় মাঝে মধ্যে ম্যাসাজ করে দিতে হবে। শিশু যাতে
ঘন ঘন আঙ্গুল না চোষে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শক্ত চামচ কিংবা অন্য কোনো
বস্তু যাতে মুখে না দেয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শিশুর স্থায়ী দাঁত ওঠে
সাধারণত সাত বছর বয়সে।
এ সময়ে তাকে দাঁতের যত্ন নেয়ার প্রয়োজনীয়তা ও কৌশল
শেখাতে হবে। দৈনিক দুইবার দাঁত ব্রাশ করতে হবে। দাঁতের ওপরের পাটির জন্য
ব্রাশটি উপর থেকে নিচে এবং নিচের পার্টির জন্য ব্রাশটি নিচ থেকে উপরে
ঘুরাতে হবে। দাঁতের ফাঁকে খাদ্য কণা আটকে থাকলে ভালো করে ব্রাশ ও কুলকুচি
করে তা বের করে দিতে হবে। দাঁত কিংবা মাড়ি দিয়ে কোনো রক্তক্ষরণ হলে সাথে
সাথে দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শিশুকে চকলেট, আইসক্রিম কিংবা
চুইংগাম দেয়া যাবে না। এগুলোর দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। ১২ বছরের আগে শিশুকে
টেট্রাসাইক্লিন ওষুধ দেয়া যাবে না। কখনো কোনো ধাতব কাঠি দিয়ে শিশুর দাঁত
খোঁচানো যাবে না। দাঁতে কোনো ক্ষয় দেখা দিলে কিংবা দাঁতের বর্ণ পরিবর্তিত
হলে, দাঁতে ব্যথা হলে বা শির শির করলে অথবা দাঁত ভেঙে গেলে সাথে সাথে দন্ত
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
No comments