সিরিয়া নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছে পশ্চিমা দুনিয়া
সিরিয়ার
বর্তমান পরিস্থিতির জন্য খানিকটা হলেও দায়ী পশ্চিম দুনিয়া। যে সময় এই
ইস্যুতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত ছিল, সে সময় তারা কার্যত নিষ্ক্রিয় ভূমিকা
পালন করেছে। আর এ নিষ্ক্রিয়তার পূর্ণ সুযোগ নিয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক
স্টেট (আইএস) এবং আসাদ সরকার। তবে পশ্চিমা দেশগুলোর সদিচ্ছা থাকলে ঘটনা
অন্যরকম হতে পারতো। সিরিয়া পরিস্থিতি আজকে ভিন্নরকম হতে পারতো। কিন্তু
বাস্তব অন্যরকম হয়েছে। কারণ, সিরিয়া নিয়ে পশ্চিম দুনিয়া যে অবস্থান নিয়েছে
তা অনেকটা ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’-র মতো। যার খেসারত দিতে হচ্ছে এখন।
সাত বছর হয়ে গেল সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। যদিও শুরুটা অন্যরকম ছিল। সে সময় সিরিয়ার আসাদ সরকারের পাশে অন্য কোনো দেশ ছিল না। তখন থেকেই দেশের সরকারবিরোধী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে একের পর এক ভয়ংকর অস্ত্র ব্যবহার করতে শুরু করেছিল আসাদ সরকার। বিশ্ব দেখেছিল রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার। তৎকালীন সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা। আসাদ সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেছিলেন, সিরিয়ার সরকার অবিলম্বে এ ধরনের অস্ত্রের প্রয়োগ বন্ধ না করলে যুক্তরাষ্ট্র কড়া ব্যবস্থা নেবে। বস্তুত ওবামা একটি বিশেষ বাক্য ব্যবহার করেছিলেন সে সময়। সিরিয়া ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করে ফেলছে। যার ফল তাদের ভুগতে হবে। কিন্তু ওবামার বক্তব্যকে কার্যত আমল দেয়নি আসাদ সরকার। একের পর এক রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে নিজের দেশের সাধারণ মানুষের ওপরেই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সে সময় এর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। কিন্তু কেন?
সাত বছর হয়ে গেল সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। যদিও শুরুটা অন্যরকম ছিল। সে সময় সিরিয়ার আসাদ সরকারের পাশে অন্য কোনো দেশ ছিল না। তখন থেকেই দেশের সরকারবিরোধী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে একের পর এক ভয়ংকর অস্ত্র ব্যবহার করতে শুরু করেছিল আসাদ সরকার। বিশ্ব দেখেছিল রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার। তৎকালীন সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন বারাক ওবামা। আসাদ সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেছিলেন, সিরিয়ার সরকার অবিলম্বে এ ধরনের অস্ত্রের প্রয়োগ বন্ধ না করলে যুক্তরাষ্ট্র কড়া ব্যবস্থা নেবে। বস্তুত ওবামা একটি বিশেষ বাক্য ব্যবহার করেছিলেন সে সময়। সিরিয়া ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করে ফেলছে। যার ফল তাদের ভুগতে হবে। কিন্তু ওবামার বক্তব্যকে কার্যত আমল দেয়নি আসাদ সরকার। একের পর এক রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে নিজের দেশের সাধারণ মানুষের ওপরেই। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সে সময় এর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। কিন্তু কেন?
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ইরাকে এবং লিবিয়ায় ভুল কৌশল অনুসরণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। বস্তুত উভয় জায়গাতেই তথাকথিত স্থায়ী সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা বিপ্লবে সহায়তা করেছিল আমেরিকা। কিন্তু সেই বিপ্লব যে ‘মিস ফায়ার’ করবে এবং বুমেরাং হয়ে আমেরিকার দিকেই ফিরে আসবে, মার্কিন কূটনীতিকেরা তা বুঝতে পারেননি। ইরাক এবং লিবিয়ায় বিপ্লবের পর উগ্র ইসলামিক শক্তির দাপট ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে আইএস জঙ্গিরা কার্যত মুক্তাঞ্চল তৈরি করে ফেলে। যা নিয়ে আমেরিকাকে যথেষ্ট সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল। ফলে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দ্বিধায় ছিলেন ওবামা। ভেবেছিলেন, সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে আবার তা ‘মিস ফায়ার’ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ওবামা এবং ইউরোপের অন্যান্য রাজনীতিকেরা যদি সে সময় সিরিয়ার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতেন, তাহলে সিরিয়ার এই চেহারা হতো না। অন্যদিকে, তাদের এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে রাশিয়া এবং ইরান। আসাদ সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে তারা বিশ্বরাজনীতিতে মেরুকরণ করেছে। ফলে এখন আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করলে তা অন্য চেহারা নেবে। পৃথিবী আরো একটি বিশ্বযুদ্ধের দিকে অগ্রসর হবে। আসলে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। একটা লম্বা সময় তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগেছে। যে সময় যে পদক্ষেপ করা উচিত ছিল, তখন তারা নীরব ছিল। এদিকে সিরিয়ার সমস্যা ক্রমশ জটিল হয়েছে। আইএস জঙ্গিরা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তুলেছে। আসাদের থেকে ফোকাস সরে গিয়ে সকলের ফোকাস চলে গিয়েছিল আইএসের দিকে। যে লড়াইয়ে পশ্চিম দুনিয়াসহ সকলেই জোটবদ্ধ হয়েছিল। আসাদ সরকারকে সাহায্য করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। আপাতত সিরিয়া আইএসমুক্ত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কূটনীতির চেহারা বদলে গিয়েছে। সব পক্ষই নিজের আখের গোছানোর চেষ্টা করছে। আর এই উদ্ভূত পরিস্থিতির পূর্ণ সুযোগ নিচ্ছে আসাদ সরকার এবং তুরস্ক। ফলে নতুন করে সিরিয়ার সাধারণ মানুষ আবার সমস্যার মুখোমুখি।
এমন অবস্থায়, একটাই উপায়। অযথা কথা না বলে সকলকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসা। পশ্চিমা বিশ্ব এখনই সে কাজ করতে না পারলে ভবিষ্যৎ আরো ভয়ংকর হবে।
No comments